“এই উৎসবটি ভারতীয়দের খুব প্রাচীন উৎসব। বৈদিক কাল থেকে চলে আসছে। এখন একমাত্র বাংলাতেই এটা ঠিকঠাক পালন করা হয় _অন্যান্য প্রদেশের লোকেরা অন্য অন্য নামে তাদের মতো করে পালন করে।
বাঙালিদের মধ্যে আবার বর্ধমান জেলার লোকেরা নবান্ন উৎসবকে অনেকটাই যথাযথ ধরে রেখেছে। নব+অন্ন=নবান্ন। এই হিসাবে এই উৎসবটি নতুন ফসল ঘরে তোলার আনন্দ প্রকাশের উৎসব। কিন্তু ‘নব’ কথাটি নয়( 9)-কেও বোঝায়। তাই ন’প্রকারের উপকরণ [গোবিন্দভোগ চালগুঁড়ি(একদম মিহি নয়) গরুর দুধের ক্ষীরের সাথে মিশিয়ে তাতে কাঁঠালি কলা, কমলা লেবু, আদা, আখ, রাঙা আলু, মুলো(এগুলি সব কুচি করে কাটা)এবং নলেন গুড় এই নয় রকমের] একত্রে মিশিয়ে ঠাকুরকে নিবেদন করতে হয়। তারপর গৃহের বাস্তুদেবতা, পাখ-পক্ষী, অরন্যদেবতা ইত্যাদি সকলকে নিবেদন করে বাড়ির সকলে সেই প্রসাদ গ্রহণ করে এবং প্রতিবেশীদের কেও ডেকে ডেকে খাওয়ায়!
এতে কি হয় _পারস্পরিক সম্পৃতি বাড়ে।একের আনন্দ অপরের সাথে ভাগ করে নেবার ভারতীয় প্রাচীন রীতিটি বজায় থাকে। আর তাছাড়া ঐ বিশেষভাবে মাখানো খাদ্যটির একটা বিশাল hygienic value রয়েছে ।
এই সময় হেমন্তকাল। সবে শীত পড়তে শুরু হয়েছে। এই সময় আগেকার দিনে বিভিন্ন রোগব্যাধিতে প্রচুর লোক মারা যেতো। বলা হোত শরৎ ও হেমন্তকালে ‘যমের দক্ষিণদুয়ার’ খোলা থাকে।
এই বিশেষ খাবারটি খেলে intestine-এর যাবতীয় বর্জ্য( ভাইরাস _ব্যাকটেরিয়া সমেত) চালগুঁড়ির সাথে পাক খেতে খেতে পায়খানার মাধ্যমে নেমে যায়। ফলে মারাত্মক রোগব্যাধি থেকে মুক্ত হয় মানুষ! “