সময় ~ 1986, অক্টোবর । স্থান ~ বনগ্রাম মুখার্জিদের বাড়ি । উপস্থিত ব্যক্তিগণ ~ পূর্ণানন্দ মহারাজের মা, তপীমাতা, ন’কাকা, সেজো কাকা ইত্যাদি ।
জিজ্ঞাসু(পূর্ণানন্দ মহারাজের মা) :— বাবা, আপনি অনেকক্ষণ চুপ করে বসে আছেন, নিশ্চয়ই কোথাও থেকে ঘুরে এলেন ?
গুরু মহারাজ :– ঠিকই ধরেছো জননী, একবার আশ্রমে গিয়েছিলাম । আমার ঘরের জানালাটা খোলা ছিল, ফলে একটা বেড়াল ঢুকেছিল ঘরে । প্রসাদ থাকে তো, ওগুলো খাবার জন্য যায়, তারপর বিছানাতেই শোয়, অনেক সময় পায়খানা-পেচ্ছাপ পর্যন্ত করে রাখে । তাই বেড়ালটাকে ঘর থেকে বের করে দিলাম ৷ যে ঘর পরিষ্কার করেছিল, সে জানালা বন্ধ করতে ভুলে গেছে । সত্যি কথা বলতে কি জানো – সবাই তো সেবা করতে জানে না, খিদমত খাটে, ঠিক ঠিক সেবায় কখনও ভুল হয় না – সেবাই সাধনা হয়ে যায় । অনেকে আমাকে হাতপাখা দিয়ে হাওয়া করতে আসে, আমি নিষেধ করি ৷ কারণ পাখা করতে গিয়ে ফটাস্ ফটাস্ করে গায়ে লাগায় আর মাটিতে ঠোকে ৷ আরে যেটা করছিস ধ্যানসে কর ৷ ধ্যানের সঙ্গে কর্ম করলেই তো জ্ঞান হয়ে যাবে ৷ খেয়াল করে দেখবে ; আমাকে পাখা করতে এলেই পাখাটা আমি নিজেই হাতে নিয়ে নিই । খিদমত আর সেবার পার্থক্য জানোতো ? – সেবা হচ্ছে আত্মসুখের ইচ্ছা বলিদান দিয়ে শুধু যার সেবা করা হচ্ছে, তার প্রসন্নতা অর্জনের চেষ্টা করা, আর খিদমত হচ্ছে – কোন কিছুর বিনিময় সেবা করা, এখানে কিছু পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে । কিন্তু সেবায় পাওয়ার আকাঙ্ক্ষাও থাকে না আবার হারাবারও ভয় থাকে না ৷ তখন সেবাই সাধনা হয় ৷ সেবা ও সাধনা, আবার সেবাই সাধনা – দুয়েই এক ৷ ব্যাপারটা ধরা গেল জননী !
জিজ্ঞাসু(সেজোকাকা) :– আচ্ছা বাবা ; সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে নাবিক হারানোর খবর প্রায়ই পাওয়া যায় তা এইসব জাল দিয়েই কি সমুদ্রে মাছ ধরে ?
গুরুজী :– সমুদ্রের তলদেশ থেকে ছেঁকে মাছ ধরা হয় এমন ভেবে বসবেন না ? কারণ সুপারসোনিক সাউন্ড ওয়েভ পাঠিয়ে তবেই সমুদ্রের তল মাপা হয়, সেখানে তলা ছেঁকে মাছ ধরা অসম্ভব ব্যাপার ! তাছাড়া জলের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন প্রজাতির মাছেরা থাকে ৷ পুকুরেই দেখুন না, কাতলা মাছ উপরের স্তরে, রুই মাছ মাঝের স্তরে এবং মৃগেল, মাগুর ইত্যাদিরা তলার স্তরে থাকে ৷ সমুদ্রেও ঠিক তেমনি ভিন্ন ভিন্ন স্তরে ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মাছেরা ঘুরে বেড়ায় । কোন গভীরতায় কোন মাছ থাকে তা তাদের আকৃতি দেখে ধরা যায় । এমনিতেই সামুদ্রিক মাছ পুকুরের মাছের থেকে চ্যাটালো হয়, এক এক দলে ৫০/৬০ টন পর্যন্ত মাছ থাকে ৷ আর গভীর সমুদ্রে এক-একটা মাছ প্রায় ১০ টন থেকে ২০ টন পর্যন্ত ওজন হতে পারে । সুতরাং পুকুরে ব্যবহৃত জাল কোনভাবেই সমুদ্রে চলবে না ।
এখন আধুনিক বিজ্ঞানের যুগ । উন্নত ট্রলার, উন্নত শক্ত সুতোর জাল, শক্ত দড়ির আবিষ্কার হয়েছে । এছাড়া মাছ ধরার জন্য Hydro phone ব্যবহার করা হচ্ছে । জলের তলায় বিভিন্ন Music দিকে মাছকে আকর্ষণ করে টেনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে । সাগরগুলোতেও সীমান্ত রয়েছে । এদেশের মাছকে অন্য দেশে টেনে নিয়ে গিয়ে ধরা হচ্ছে । চীনারা এটা খুব করে, ভারত মহাসাগরের মাছকে ওরা আকর্ষণ করে নিয়ে গিয়ে নিজের এলাকায় গিয়ে ধরে ৷ বহুকাল থেকেই এ ব্যাপারটায় ওরা ভারতীয়দের থেকে উন্নত । গভীর সমুদ্রে বঁড়শি দিয়েও মাছ ধরা হয়, তবে বঁড়শিগুলো নোঙরের মতো বড়, আর সুতোও তেমনি শক্ত – তবে তো ১০ টন ওজনের এক একটা মাছ ধরা সম্ভব হবে ?
আমার মনে পড়ে কোন সময় বাল্টিক সাগরে আমি মাছ ধরতাম, তখন অবশ্য আধুনিক কোনো উপকরণ ছিল না । মনে আছে বড় মাছের হাড় দিয়ে নৌকার স্ট্রাকচার বানানো হত, তারপর ওদেরই ছাল বা অন্য চামড়া দিয়ে খোলটাকে বানানো হোত । নৌকা বাঁধা হোত শক্ত বুনো লতা দিয়ে । মাছের দেহের Chordথেকে সুতো বানানো হত । বঁড়শি কিন্তু ছিল ধাতুর তৈরি । গভীর সমুদ্রে একজন বা দুজন এক-একটা ঐরকম নৌকায় চেপে সুতো, বঁড়শি, টোপ (মাছ বা মাংসের বড় বড় টুকরো), ধারালো অস্ত্র এবং নিজেদের খাবার ও জল নিয়ে অজানায় পাড়ি দিত । কারণ কখন যে মাছ টোপ গিলবে তার ঠিক নেই, লাগবে কিনা তাও জানা নেই, আর লাগলেই যে তাকে তোলা যাবে এমন নিশ্চয়তা নেই । তারপর ৫/৭ টন ওজনের মাছ একটা লেগে গেলে তাকে সামাল দিতে না পারলে নির্ঘাত মাঝ-সমুদ্রে মৃত্যু ৷ এরকম কত লোক যে মাছ ধরতে বেরিয়ে গিয়ে আর ঘরে ফিরতে না তার ঠিক নেই । বহুদিন পর নৌকাখানা ঢেউয়ের ধাক্কায় ধাক্কায় তীরে ফিরে আসতো, তখনই গ্রামের লোক বুঝতে পারতো আরোহীরা মারা গেছে । সে যাই হোক মাছ ধরা না হওয়া পর্যন্ত নৌকা ভাসিয়ে অপেক্ষা করা আর সীমিত খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করা ছিল তাদের কাজ । এইভাবে হঠাৎ কোন সময় সুতোয় টান ধরত । তখন টান দেখেই দক্ষ মৎস্য শিকারীরা অনুমান করে নিতো যে মাছটা কতটা বড় । যদি খুব বড় মাছ হতো, তাহলে সুতোঅনেক ছেড়ে দিয়ে, সেই মাছের টানে টানে ঘুরে বেড়াতে হত কয়েক ঘণ্টা বা হয়তো কয়েকদিন ৷ এই সময় সুযোগ পেলেই বর্শা দিয়ে মাছটাকে আঘাত করার চেষ্টা করা হতো । বঁড়শির আঘাতে বা অন্যান্য আঘাতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মাছটা যেন জীবনীশক্তি হারায় ৷ অবশেষে পুরো মাছটা একসময় জলে ভেসে উঠতো । তখন সুতো ধরে ধরে তার কাছে গিয়েও দূর থেকে আঘাত করে দেখতে হত যে, মাছটা তখনও জীবিত কিনা ! কারণ লেজের একটা ঝাপটাতেই নৌকা ভেঙ্গে চুরমার করতে পারে তারা । সম্পূর্ণরূপে নিষ্ক্রিয় হয়েছে দেখে তখন মাছটার কাছে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ঝপাঝপ্ চালিয়ে মাছটার মাংস নৌকা ভর্তি করে ঘরে ফিরে আসতো । মাছটাকে টানতে টানতে উপকূলে নিয়ে আসা হত না কারণ আহত মাছকে আনতে আনতেই হাঙর বা অন্যান্য মাছের দল একেবারে কঙ্কাল ছাড়া আর কিছুই রাখতো না, তাই মাছের মাংস নৌকার খোলে ভরে নিয়ে আসতে হত । এইরকম বড় শিকার নিয়ে কেউ ফিরলে, গ্রামে তাকে নিয়ে উৎসব শুরু হয়ে যেত । কোন এক জন্মের ঘটনা তোমাদের বললাম ৷ আমার স্মৃতিতে এরূপ বহু জন্মের ঘটনা এত স্পষ্ট মনে আছে, বোধ হয় যেন ঘটনাগুলো সদ্যই ঘটে গেছে ।
জিজ্ঞাসু :– আচ্ছা মহারাজ ! জন্মান্তর যেমন সত্য, তেমনি পৃথিবীর বাইরে কোন জগতে মানুষ আছে – এটাও কি সত্য ?
গুরুজী :– তা সত্য বইকি ৷ এই জগৎটাই কি শেষ কথা, না এই সৌরমন্ডলটাই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ? তোমার ধারণাটি কি ? এই মহাবিশ্বের তুলনায় ওসব এক-একটা বিন্দু । সেখানে পৃথিবীগ্রহ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিন্দু । তার মধ্যে আবার মানুষ কত ক্ষুদ্র, সে ভাবে আমি সব জেনেছি । এটাই মহাভ্রান্তি ।
এই সৌরমণ্ডলের বিভিন্ন গ্রহ বা উপগ্রহগুলোয় অনুসন্ধান চালানো হয়েছে, সেখানে কোন প্রাণের সন্ধান পাওয়া যায় নি । পৃথিবী ছাড়া চাঁদ বা মঙ্গলগ্রহে প্রাণ-স্পন্দনের সম্ভাবনা ছিল, তাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এগুলোতে বহু খরচ করে উপগ্রহ পাঠিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছিল ৷ সূর্যের আরও কাছের গ্রহগুলির তাপমাত্রা এতো বেশি যে, সেখানে প্রাণধারণ সম্ভব নয় আবার সূর্য থেকে দূরবর্তী গ্রহগুলোর তাপমাত্রা এত কম যে, সেখানে সবকিছুই জমে স্ফটিকাকারে হয়ে আছে ৷ তবে এই সৌরমণ্ডলের বাইরে যে সব সৌরমণ্ডল আছে, সেখানের গ্রহগুলিতে প্রাণের অস্তিত্ব থাকতে পারে ৷ বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালাচ্ছে এর খোঁজ নিতে । আলোর গতিবেগে শব্দতরঙ্গ পাঠানো হচ্ছে প্রতিনিয়ত মহাবিশ্বে, যদি কখনও কোন গ্রহ এই শব্দ তরঙ্গের কোড্ ধরতে পারে – এই আশায় । সেই কোড্-এ হয়তো আছে ‘আমরা পৃথিবী গ্রহের অধিবাসী, এটা অমুক সৌরমণ্ডলের অন্তর্গত’। – ইত্যাদি ইত্যাদি । এর সঙ্গে পৃথিবী গ্রহের অধিবাসীদের কিছু পরিচয়ও দেওয়া আছে । কিন্তু বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছি যে, আলোর গতিবেগে এইসব সাংকেতিক বার্তাপাঠিয়েও তা সবচাইতে কাছাকাছি নক্ষত্রলোকের কোন উন্নত গ্রহের অধিবাসীদের কাছে পৌঁছতেই কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ বছর লেগে যাবে ৷ আরো দূরবর্তী নক্ষত্রমন্ডলের কোন গ্রহে তা পৌঁছাতে হয়তো ১০০ বা ১৫০ বছর লাগতে পারে ৷ ২৫/৩০ বছর ধরে এই মেসেজ পাঠানো সত্বেও এখনো কোনো রিটার্ন আসেনি । অনেক সময় গ্রাহকযন্ত্রে নানান সাংকেতিক তথ্য আসছে, সেগুলো ধরা যাচ্ছে না ৷ নিকটতম নক্ষত্র আলফা সেনটাউরী ৪.৪ ও সাইরাস ৮.৮ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত । কিন্তু সেখান থেকে কোনো উত্তর বিজ্ঞানীরা পায়নি । এরপর আবার তাদের যে মেসেজ উত্তর হিসাবে আসবে, তাও ধরার জন্য উপযুক্ত গ্রাহকযন্ত্র চাই । এইসব নানা ব্যাপার, তবু বিজ্ঞানীরা চেষ্টা চালাচ্ছে, একদিন না একদিন যদি Communication হয় ৷
এই ধরনের প্রচেষ্টা চালানোর একটা কারণও রয়েছে ৷ বেশ কয়েক বছর আগে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্গত কোন এক প্রদেশের প্রত্যন্ত প্রান্তে অদ্ভুত একটি যন্ত্রযান পাওয়া গিয়েছিল, যার ভিতরে কিছু অদ্ভুত জীব ছিল যারা খানিকটা মানুষেরই ন্যায় আকৃতিবিশিষ্ট । জীবগুলির উচ্চতা ছিল ৩–৩১½ ফুট এবং তাদের চুল বা ভ্রূ ছিল না । কিন্তু সকলকেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, যন্ত্রযানটির উপাদান পৃথিবীর কোন ধাতুর সাথে মেলেনি । এটা থেকেই গবেষণা শুরু । ওরা খুব একটা প্রচার করেনি, ভিতর থেকেই খবরটা বেরিয়েছে ৷ কারণ আমেরিকায় গবেষণারত বিজ্ঞানীদের মধ্যে অধিকাংশই তো বিদেশি । এশিয়ানই হয়তো চল্লিশ ভাগ রয়েছে ।
যাইহোক বিজ্ঞানীমহল এটা নিয়ে খুব চিন্তায় পড়েছিল ৷ কারণ ওই যে বললাম বিজ্ঞানীদের ধারণা এই সৌরমন্ডল থেকে পরবর্তী জীবনধারণোপযোগী সৌরমণ্ডলের দূরত্বই প্রায় ৫০ আলোকবর্ষ । তাহলে আরোহী নিয়ে, কমপক্ষে আলোর গতিবেগে ওই যন্ত্রযানকে যাতায়াত করতে হয় ৷ কিন্তু আলোর গতিবেগ প্রাপ্ত হলেই কোন বস্তু আর বস্তু থাকে না শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে যায় ৷ তাহলে এমন কি বিজ্ঞান রয়েছে যা কোন ধাতুকে শক্তিতে পরিণত করছে আবার বেগ কমালে তা আবার বস্তুতে পরিণত হচ্ছে ৷ আর এ অবস্থায় যন্ত্রযানেরর ভিতরের জীবদেরই বা কি পরিবর্তন ঘটছে, তারাও কি শারীরিকভাবে একই থাকছে না পরিবর্তিত হচ্ছে ? এইসব নানান গবেষণায় মত্ত রয়েছে একদল বিজ্ঞানী । যদি কোনদিন এসব রহস্যের সমাধান হয় তাহলে তোমরাও তা জানতে পারবে ।
তবে আমি অন্যভাবে বিভিন্ন সৌরমণ্ডলের প্রাণীদের সাথে যোগাযোগ করেছি এবং এও দেখেছি প্রতিনিয়ত বিভিন্ন Planet থেকে সাংকেতিক Message আসে পৃথিবীগ্রহে । এখানকার বিজ্ঞান এত উন্নত এখনও হয়নি বলেই সেইসব Message ধরতে পারে না । ধরতে পারলে পৃথিবী গ্রহের উপর মহাজাগতিক বিপর্যয়গুলো এড়ানো যেতো । কারণ ওরা এইরকম কোনো বিপর্যয় হলে সমস্ত মহাবিশ্বে তার সংকেত পাঠিয়ে দেয় ৷
যাইহোক শুধু এক জায়গায় নয়, বিভিন্ন সৌরমণ্ডলের বিভিন্ন গ্রহে প্রাণের স্পন্দন রয়েছে । তবে কারোর চেহারাই অন্যকারোর মতো নয় ৷ বুদ্ধিবৃত্তি বা মস্তিষ্কের ক্রিয়া রয়েছে সব জায়গাতেই, তবে সেখানকার পরিবেশ, খাদ্য, শ্বাসক্রিয়া সবই পৃথিবী গ্রহ থেকে আলাদা ৷ ফলে শরীরও মানুষের চেয়ে আলাদা ৷ কোন জায়গায় Span of life এত কম যে, সবকিছুই দ্রুত সংঘটিত হচ্ছে আবার কোথাও Span এত Lengthy যে, বহুকাল একই অবস্থায় জীবের বিবর্তন রয়ে গেছে । অন্য কোন জায়গায় দেখেছি – উদ্ভিদ রয়েছে, কিন্তু সব উদ্ভিদই লাল রঙের ৷ শ্বাসকার্যে অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় না । যে কোন উন্নত প্রাণীরা হয়তো খনিজ থেকে নিজেদের শরীরের পুষ্টি সম্পাদন করে ৷ ফলে ফসল ফলানোর তাগিদ নেই ৷ প্রচুর সময় অন্য কাজে ব্যয় করতে পারে ৷ দ্যাখো, আমার এরূপ অনেক কথা পর পর মনে আসছে – কিন্তু এগুলো যেহেতু আধুনিক বিজ্ঞান স্বীকার করেনি, তাই অনেকের কাছে এগুলো হাস্যকর মনে হতে পারে, কাজেই এইটুকুইথাক্ ৷
জিজ্ঞাসু :— বেশ কিছুক্ষণ আগে আপনি যে বললেন আশ্রম থেকে ঘুরে এলাম, তাহলে গেলেনই বা কখন আর এলেনই বা কিভাবে ?
গুরু মহারাজ :– এই দ্যাখ্, এ সম্বন্ধে আলোচনা তো করলাম এতক্ষণ, তাহলে বুঝলিটা কি ? ধর আলোর গতিবেগে যদি কেউ এখান থেকে আশ্রম যায় এবং ফিরে আসে চোখ ধরতে পারবে তার অনুপস্থিতি ? চোখ তো আর দ্যাখে না ৷ দ্যাখে কি ! ধর চোখের রেটিনা, কর্নিয়া, লেন্স সবই ঠিক আছে অথচ অপটিক নার্ভও ঠিক আছে কিন্তু Brain Cell-এর Optic point গুলোর কেউ damage হয়ে গেল, সে কি দেখতে পাবে ? তাহলে দ্যাখো – এটা একটা System । চোখে কোন জিনিসের আলোক তরঙ্গের অভিঘাত হলো, Optic Nurve সেই সংবেদন মস্তিস্ক কোষের পার্টিকুলার পয়েন্টে নিয়ে গেল, সেই পয়েন্ট ওটা গ্রহণ করল ও পুনরায় যখন সংবেদন প্রেরণ করল তখনই তুই বুঝলি – জিনিসটা এই । ব্যাপারটা বুঝলি ? তা, এগুলো করতে সময় লাগছে, ফলে সময়ের ফাংশনটাও দর্শনের একটা ফ্যাক্টর I তাছাড়াও চোখের দৃষ্টিরও একটা সীমাবদ্ধতা আছে । নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের আলো ছাড়া তার চাইতে উচ্চ কম্পাঙ্ক-বিশিষ্ট বা নিম্ন কম্পাঙ্ক-বিশিষ্ট আলোও চোখ ধরতে পারে না । যাইহোক, জীবনবিজ্ঞানের আলোচনা সবার ভালো লাগছে না, অনেকেরই Bore feel হচ্ছে ৷