স্থান ~ পরমানন্দ মিশন ৷ উপস্থিত ব্যক্তিগণ ~ আশ্রমস্থ ব্রহ্মচারী, সন্ন্যাসীবৃন্দ ও বহিরাগত ভক্তগণ। ।
জিজ্ঞাসু :– গুরুজী, বর্তমানের ছেলেমেয়েরা ঠিকমতো মানুষ হচ্ছে না, স্বার্থপর-একগুঁয়ে হয়ে যাচ্ছে — এটা কি পিতামাতার শিক্ষা দেবার ভুল না যুগপ্রভাব?
গুরুমহারাজ :– যুগপ্রভাব ব্যাপারটা তো সবসময়ই রয়েছে ! তবে এর একটা দিক হয়ত খারাপ দেখছ কিন্তু এটা তো বলছ না যে, আগের চেয়ে এখনকার ছেলেমেয়েরা অনেক smart, বুদ্ধিদীপ্ত, talent-যুক্ত। যুগটা যেহেতু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ, তাই আধুনিক ছেলেমেয়েরাও যুগোপযোগী ও বিজ্ঞানমনস্ক হচ্ছে — এরা একটা In born talent নিয়েই জন্মাচ্ছে। আর স্বার্থপরতা ইত্যাদি যেটা বলছ, এটার কারণ ওরা একটা system-এর শিকার ! আগেকার পরিবারগুলো ছিল একান্নবর্তী, সেখানে বাবা-জ্যাঠা-কাকা ও তাদের সকলের ছেলেমেয়েরা একসাথে মানুষ হোত। বড় জ্যাঠাইমা হয়তো সংসারের কর্ত্রী, তাকেই সবাই ‘মা’ বলতো। তিনি সকলকেই সমানভাবে ভাগ করে খেতে দিতেন, কোন জিনিস পেলে মায়েরা বলতেন ‘সকলে ভাগ করে খাও’। এই যে অভ্যাস_ ছোটবেলা থেকে তৈরি হোত, এটাই পরবর্তী জীবনে মিলেমিশে থাকার বা অপরকে সাহায্য করার, সেবা করার, অপরের জন্য sacrifice করার মানসিকতা তৈরি কোরতো। আর এখন quarter-life! নিজের বাড়ি থাকলেও তা ওই quarter-এরই সামিল। দুটো ঘর, সংলগ্ন পায়খানা-বাথরুম, বেশিরভাগেরই উঠোন নেই কিংবা একটুখানি উঠোন। সেখানে ছেলেমেয়েরা একটু ছুটোছুটি করে খেলতেও পায় না। এখন প্রায় প্রতিটি শিক্ষিত family-তে ১টা অথবা দুটো ছেলেমেয়ে। ফলে একা একা মানুষ হচ্ছে। বাবা বাজার-দোকান থেকে বেছে বেছে অল্পকিছু আনছে মা তাই রান্না করছে _কিন্তু তাতো ঐ সীমিত ক’জনের! অনেকের সাথে মিলেমিশে থাকা বা খাওয়ার মানসিকতা তো গড়ে উঠছে না!
বর্তমানে মানুষের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা বেড়েছে, ফলে ঘরে বিস্কুট, চকোলেট, ফল-মূল, মিষ্টি প্রায়শই থাকে। আর স্থান নিয়েছে Fast-food, Tinned food,packed food, Bottled food। বিজ্ঞাপনের যুগ এটা_ এমন করে T.V-তে বিজ্ঞাপন পরিবেশন করে যে, বাবা-মায়েরা impressed না হয়ে পারে না _সেই সামগ্রীটাই কিনে আনে! কিন্তু এর ফলটা কি হচ্ছে বলো তো — ছেলেমেয়েগুলো অল্প বয়সেই fatty হয়ে পড়ছে — যেন এক একটা পাকা টম্যাটো! গ্রাম-গঞ্জে এখনও এই জিনিসটা ততটা আসেনি কিন্তু প্রবণতা শুরু হয়ে গেছে। এই ছেলেমেয়েদের মোটাসোটা শরীর বাবা-মায়ের দৃষ্টিনন্দন হতে পারে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা খারাপ। এখন একে তো ছোট বয়স থেকেই education-এর চাপ। দু'-আড়াই বছর বয়স থেকে নাচের স্কুল, গানের তালিম, প্রি-নার্সারি স্কুল — বোঝ তাহলে ব্যাপারটা কোথায় দাঁড়াচ্ছে! তারপর Primary স্কুল, Secondary স্কুল,কলেজ, ইউনিভার্সিটি! শিশুটির জীবনে শুরু হয়ে গেল পরীক্ষা আর পরীক্ষা__ Weekly, Monthly, Half-yearly, Annual, Competitive __পরীক্ষার আর শেষ নাই! ছোট ছোট শিশুগুলির শৈশবের যে সুকুমার বৃত্তির বিকাশ, তাদের শৈশবের শিশুসুলভ চপলতা, শিশুমনের উদারতা — এগুলির কোনটারই বিকাশ হতে পারছে না। এদের শৈশবটাই যেন কেড়ে নিচ্ছে বাবা-মা, পরিস্থিতি, সমাজব্যবস্থা! আর guardian-দেরই বা কি দোষ__এত জনসংখ্যা, এত বিপুল সংখ্যক ছেলেমেয়ে — সে তুলনায় চাকরির বাজার সীমিত, লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত বেকারদের চোখের সামনে দেখছে তারা। তাই সকলেই ভাবছে তার ছেলে বা মেয়ে যেন একটু পৃথক হয়, যেন চাকরির Competition-এ সে আর পাঁচজনের চেয়ে এগিয়ে থাকে। এই কারণে ছোট থেকেই এতো প্রস্তুতি। নাচে, গানে, খেলায়, সাঁতারে, পড়াশোনায় — যাতে হোক — যে কোন একটায় যেন নাম করতে পারে — যেন ভবিষ্যতে সেটা ভাঙিয়ে করে-কম্মে খেতে পারে। কারও কারও ছেলেমেয়েকে নিয়ে আরও বেশি আশা_তারা টাকা-পয়সা donation দিয়ে বা ঘুষ দিয়েও ছেলেমেয়েদের ভালো স্কুলে ভর্তি করে। প্রচুর টাকার বিনিময়ে V.I.P কোটায় ছেলেমেয়েদেরকে ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ায় ___আর টাকা রোজগারের যন্ত্র হিসাবে তৈরি করে।
ৎএইসব চিত্রই চলছে সমাজে। আমার কাছে অনেক Guardian-রা আসে, বলে, 'আমাদের একটাই মেয়ে কিন্তু কিছু খায় না।' আমি মনে মনে ভাবি, না খেয়ে বেঁচে আছে, তাহলে তো সে মেয়ে নয় যোগী রে! আসলে সকাল থেকে হরলিকস্, কমপ্ল্যান, বিস্কুট, চকোলেট এসব এত বেশি খাচ্ছে আর ছোটাছুটি নেই, পরিশ্রম নেই__ তাই ঐ মেয়েটি ভাত-রুটি বেশি পরিমাণে খাচ্ছে না। এটা তো সহজ কথা! ভালো করে দ্যাখ কোনখাবারটায় তার আসক্তি বেশি, সেটাই পরিমাণ মতো খাওয়া! শিশুটিকে পরিমিত সুষম আহার দেওয়াটাই তো উদ্দেশ্য, সেটা যেভাবেই হোক না কেন?
'শিশুদের জন্য সবচাইতে ভালো আহার কি হবে'__এই কথা জানতে চাইলে,আমি আমার অনেক সন্তানদেরকেই বলি__তারা যেন তাদের শিশুর খাদ্য হিসাবে__ একমুঠো মুসুরডাল, সবরকম seasonal সবজি কাটা, দুটো চারটা সোয়াবিন বড়ি, পাকা কুমড়ো বা পেঁপের টুকরো ইত্যাদি সবগুলো pressure-cooker-এ সুসিদ্ধ করে (অন্তত ৮/১০-টা সিটি দিতে হবে) ডাল-কাঁটা দিয়ে ঘেঁটে ঘেঁটে একেবারে মোলায়েম করতে হবে। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে ঘন Juice বানাতে হবে। এবার যখনই বাচ্ছার খিদে লাগবে_ গরম ঘন দুধের সাথে পরিমাণ মত ঐ Juice-এর সঙ্গে মিশিয়ে ১ কাপ মতো বাচ্ছাকে খাওয়াতে হবে। Juice-টা সকালে একবার করে রাখলে, দু-তিনবার গরম করে সারাদিন ব্যবহার করা যাবে। এটা ৪/৫ বছর পর্যন্ত যে কোন বাচ্ছাকে খাওয়াতে পারা যায়। ভাত-মুড়ি-রুটি খাওয়াবার বা অন্য খাবার খাওয়ানোর কোন প্রয়োজন নেই তো। ছোটবেলা থেকে শিশুকে ডিম-মাংস খাওয়ানোর প্রবণতা ভাল নয়। দেখবে প্রথমদিকে শিশুরা এসব খেতেও চায় না__যেহেতু বাবা-মা ওইসব খেতে ভালোবাসে, তাই প্রথম দিকটায় জোর করে এগুলো শিশুকে খাওয়ায়। পরে অবশ্য শিশুটিও ঐ খাবারে অভ্যস্ত হয়ে যায় কিন্তু এতে শিশুর উপকার হবার থেকে লিভারের ক্ষতিই হয় বেশি।
এখানে অনেক পিতামাতারা তাদের সন্তানদের নিয়ে আসে, আমি লক্ষ্য করে দেখেছি সন্তানের উপর পিতামাতার যে মমতা থাকা প্রয়োজনঅধিকাংশেরই সেটা নেই। মায়েদের ক্ষেত্রে দেখেছিমমতার থেকে মোহ বেশি। দুধ অপেক্ষা জল বেশি হলে যেমন দুধের স্বাদ জোলো হয়ে যায় — ঠিক তেমনি শিশুকে অহেতুক আদর দিয়ে দিয়ে বাঁদর করে তুলছে। ‘আদর’ কথাটা বলাও ভূলওগুলো আদিখ্যেতা ! ফলটা কি হচ্ছে বলো তো — ছেলে বা মেয়েরা যখন বড় হচ্ছে অর্থাৎ যুবক-যুবতী হচ্ছে ততদিনে পিতামাতা পৌঢ় বা বৃদ্ধ হচ্ছে, আর তখনই মোহভঙ্গ হচ্ছে। আচার্য শঙ্কর লিখেছিলেন ‘মোহমুদগর’। মোহ ভাঙতে গেলে মুদগর দিয়ে ভাঙতে হয়। এখানে ছেলে-মেয়েরা যখন বড় হয় —তারা তখন নিজেদের জীবনের সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, ভোগ-ঐশ্বর্যকে বড় করে দেখেপিতামাতার কথা তখন আর অতটা মনে থাকে না — তখন পিতামাতার মোহভঙ্গ হয়। মা ছেলেকে গর্ভে ধারণ করে, বাবা-মা ছেলে-মেয়েদের লালন-পালন করে কিন্তু এটা করতে করতেই সন্তানের কাছে কিছুটা আশাও করে বসে তারা। কিন্তু পুত্র বা কন্যার কাছে প্রত্যাশা পূরণ হয় না বরং তারা নানাভাবে ওদের কাছ থেকে যখন আঘাত পায় তখনই মোহভঙ্গ হয়। ঈশ্বর এইভাবেই সকলকে শিক্ষা দেন। ঘা না খেলে মানুষ শেখে না। বিবেকীরা দেখে শেখে — কিন্তু তাও ঘা খেতে হয়, আর অবিবেকীরা ঠকে ঠকে ঘা খেয়ে খেয়ে শেখে। তাই বুড়ো বয়সে বাবা-মা বলে, ‘হরিই ভরসা’, ‘আল্লা-ভরসা’, ‘রাম-ভরসা’। তবে জানোএই যে ঈশ্বর নির্ভরতা বলছে ‘হরি ভরসা’ — এই কথাটি সত্য। বুড়ো বয়সে মানুষের এই সত্যের ধারণা হয় যে, সন্তান নয় — হরি(ঈশ্বর)-ই ভরসা। বার্ধক্যজনিত যে কষ্ট — তা শুধু দেহের, মনেরই নয় —একাকীত্বের কষ্ট, সারাজীবনে নানান অপ্রাপ্তির কষ্ট,নানান স্মৃতি রোমন্থন চলছে কিন্তু সেগুলি কারুকে বলতে না পারার অথবা সমবেদনা জানানোর সাথী না পাবার কষ্ট ! সন্তান অথবা কোন আত্নীয়স্বজন কি এই সমস্ত কষ্টের লাঘব করতে পারে? — না তা পারে না !
ফলে এই বৃদ্ধ বয়সে এসে মানুষ তার অন্তর্জগতে ঈশ্বরের কাছেই নিজের কৃতকর্মের জবাবদিহি করে, আর তা ছাড়া করবেই বা কি? ইন্দ্রিয়সকল দুর্বল হয়ে পড়েছে, পা চলচ্ছক্তিহীন, চোখে ভালো দেখা যায় না, কানেও ভালো শুনতে পাওয়া যায় না, হাতের জোর কমে গেছে, মস্তিষ্ক ভালো কাজ করে না — কেই বা তাকে সম্মান করবে? যারা চাকরি-বাকরি কোরতো — তাদের কিছুটা টাকা-পয়সা থাকে ফলে বাড়িতে সম্মান না থাকলেও হয়তো সেবা করার লোক রাখতে পারে অথবা বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে থাকতে পারে_ কিন্তুতাই করুক না কেন তার মনের জ্বালা কি মেটে? সারাজীবনের স্মৃতিসকল কি পিছু হটে?
অনেকে বলে যে, মানুষটা সারাজীবন ভালো কাজ করেছে, অন্যায় করেনি অথবা ধর্ম-কর্ম করেছে — তাহলে মৃত্যুকালীন এত কষ্টভোগ করছে কেন? অনেকসময় দেখা যায় সাধুসন্তদেরও মৃত্যুকালীন বেশ কিছুটা ভোগান্তি হয়। কারণ ঈশ্বরকৃপায় বা গুরুকৃপায় যাদের এই জন্মই শেষ বা যারা বেশ কয়েক জন্ম অতিক্রম করে যাচ্ছে — তাদের শেষ বয়সে একটু ভোগান্তি হবে বৈকি! জীবন তো এক দীর্ঘ যাত্রাপথ — তার অন্ত হয়ে যাচ্ছে, তাহলে যে দেহটাকে কেন্দ্র করে সেই অন্তকাল এগিয়ে এসেছে — তার একটু ভোগ-ভোগান্তি হবে না! পূর্ব পূর্ব জীবনসমূহের কত কর্ম, কত কর্মফল, কত অভিজ্ঞতা, কত অনুভূতি, কত উপলব্ধির অন্ত হয়ে যাচ্ছে— ভাবতে অবাক লাগছে না! সুতরাং এই দীর্ঘ যাত্রাপথের বিচারে কয়েক মাস, ১/২ বছর অথবা ৫/৬ বছর ভোগান্তি কিছুই নয়। এটা অতি নগণ্য — যদিও যারা কোন বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার এই ধরনের ভোগান্তি দেখে _তারা মনে করতে পারে যে, এটা বোধহয় সুদীর্ঘকাল! কিন্তু এই ভোগান্তি কেটে গেলেই যোগমায়া-শক্তি ঐ জীবকে আশ্রয় দেন। যোগমায়াশ্রিত জীবের আর মহামায়ার চক্রে পড়তে হয় না অর্থাৎ সাধারণ জীবের মত তাকে আর সংসারচক্রের আবর্তে ঘুরতে হয় না। জগদম্বার প্রয়োজন মতো তার শরীর-ধারণ হয় এবং কর্ম সমাপনান্তে সে পুনরায় তাঁর কোলেই আশ্রয় নেয়।
জিজ্ঞাসু :— আপনি বিভিন্ন শিশুর যে নামকরণ করেন – সেটা কিভাবে নির্ধারিত হয়?
গুরুমহারাজ :– আমি শিশুদের মধ্যে বেশীরভাগ ছেলেদের নাম রাখি যাদের আদ্যক্ষর ‘অ’ ! তবে প্রথম অক্ষর ‘অ’ছাড়াও তাদের সংস্কার বা স্বভাব বূঝে আমি অন্য নামও দিই!! ‘কিন্তু জানো_ প্রকৃতপক্ষে নামকরণ হওয়া উচিত পূর্ব পূর্ব জীবনের সংস্কার অনুযায়ী! ব্যাপারটা বোঝা গেল না তো – বলছি শোন! যে কোন জাতকের পূর্ব পূর্ব জন্মের সংস্কার অনুযায়ীই তার নামকরণ হওয়া উচিত, এতে জাতকের মঙ্গলও হয় আর নামকরণের সার্থকতাও আসে। অন্যথায় তো নামকরণটা শুধু ব্যক্তি-পরিচয়রূপেই থাকে। “সার্থকনামা” বলে একটা কথা আছে না – এটি ঠিক ঠিক হয় যখন নামকরণটিও সংস্কার অনুযায়ী ঠিক ঠিক হয়। আবার অন্যদিকে নামকরণ ঠিক ঠিক না হোলে জাতকের জীবনে বিপরীত হয়ে থাকে। অনেকটা – ‘কানা ছেলের নাম পদ্মলোচন’ -এর মতো। আমাদের একজন ভক্ত আছে তার একটা কান ছোট – প্রায় নেই বললেই চলে। তাই কান-নাই – এই অর্থে কানাই বা কানু হয়ে গেছে।
আমাদের এখানে অনেক ভক্তের ছেলেমেয়েদের নামকরণের জন্য যখন আমাকে বলে তখন আমি সেই জাতকের পূর্ব পূর্ব সংস্কার অনুযায়ীই নামকরণ করি। এখানে অনেক ছেলের নাম দিয়েছি 'সুব্রত'। এরা কেউ গ্রামের, কেউ শহরের, কেউ ধনী, কেউবা গরীব পরিবারের। কেউ বাংলার, কেউ বাংলার বাইরের, অর্থাৎ এরা বিভিন্ন caste-এর, বিভিন্ন District বা বিভিন্ন Province-এর। প্রায় সমবয়সী__ এই যে একদল ছেলে - যাদের প্রত্যেকের নাম সুব্রত(সু-ব্রত) এদের বাবা-মায়েরাও যেহেতু আশ্রমের ভক্ত__ ফলে এরাও পরবর্তীতে আশ্রমে আসবে, এদের মধ্যে একটা ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরী হবার সম্ভাবনা থাকবে - হয়তো সখ্যতাও হয়ে যেতে পারে - এটা একটা উদ্দেশ্য। তাছাড়া পূর্ব সংস্কার অনুযায়ী এরা কোন না কোন 'ব্রত' পালন করতে পারবে, তাই এরা সুব্রত। কারও যদি এ জীবনে না হয় পরবর্তী জীবনেও তা করতে হবে।
এইরকম নানান চিন্তাধারা থাকে নামকরণের পিছনে। তবে দেখা গেছে যে, গুণ ও কর্ম বা সংস্কার অনুযায়ী যদি নামকরণ হয় তাহলে সেই জাতকের জীবন শুভ ও মঙ্গলময় হয়। অন্যথায় জাতকের জীবনে নানান বিপর্যয় ঘটতে থাকে। তবে মজার কথা কি জানো – ভগবৎ-অনুরাগী পরিবারে ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই নামকরণআপনা-আপনি ঠিকঠাক হয়ে যায়। এটাকেই ভগবৎ-কৃপা বলতে পারো।