স্থান ~ বনগ্রাম পরমানন্দ মিশন । সময় ~ ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দ ৷ উপস্থিত ব্যক্তিগণ ~ সিঙ্গুরের ধীরেনবাবু, সব্যসাচী ও অন্যান্য আশ্রমিক ভক্তগণ ।
জিজ্ঞাসু :— আচ্ছা আজকাল রামজন্মভূমি বাবরি মসজিদ নিয়ে চরম বিবাদ উপস্থিত হয়েছে, খবরের কাগজ খুললেই ঐ সংক্রান্ত খবর, ওটা প্রকৃতই রামায়ণের শ্রীরামচন্দ্রের জন্মস্থানের চিরাচরিত মন্দির না অন্যকিছু ছিল — পরে মন্দির হয়েছে?
গুরুমহারাজ :— দ্যাখো তোমরা যারা বিতর্ক ভালোবাস, তারা বিতর্কে জড়াবে। শুধু আজ কেন, বহুকাল থেকেই অযোধ্যার ওই বির্তকিত জায়গা নিয়ে দুই সম্প্রদায়ে লড়াই চলছে — বহু মানুষ পূর্বে পূর্বে মারাও গেছে। অতিসম্প্রতি এটা নিয়ে আবার বিবাদ উপস্থিত হয়েছে এবং খবরের কাগজের একটা অন্যতমমুখরোচক সংবাদ এটা তাই সাংবাদিকরা এটাই এখন মানুষকে খাওয়াচ্ছে তাই বহু মানুষ অনেক কিছু জানতেও পারছে। কিন্তু যদি আমার মতামত জানতে চাও তো আমি বলব রাম-জন্মভূমি নিয়ে বিতর্কে না জড়িয়ে ‘রাম কে’ বা ‘রাম কি’ _তা জানার চেষ্টা করাই অধিকতর বুদ্ধিমানের কাজ। তবে ওই যে বললাম সবাই তো সে কাজ করবে না, গোলমাল পাকানো যাদের কাজ তারা কোন না কোন issue বের করে গোলমাল পাকাবে। বিভিন্ন সম্প্রদায় বা ধর্মীয় সম্প্রদায় এত গোঁড়া, এত কুসংস্কারাচ্ছন্ন যে প্রকৃত ধর্ম কি, ধর্মের প্রকৃত শিক্ষা কি, মহাপুরুষগণ– নবী অথবা prophet-রা ঠিক কি কি পালন করতে উপদেশ করে গেছেন — এইসব নিয়ে interest নেই ! কোন না কোন ছুতো বা বাহানা বের করে ঝগড়া করছে, মারামারি করছে, খুন-জখম-লড়াই করছে। সুস্থবুদ্ধির মানুষ এই ধরনের গোঁড়ামিকে কি করে মানবে? অন্য সম্প্রদায়ের কথা বাদ দিচ্ছি, রামপূজক রামায়েৎ সম্প্রদায়ের লোকেরা রামছাগলেরও পুজো করে — এটাকে কি করে তুমি মেনে নেবে? সুতরাং বুদ্ধিমান মানুষ যুক্তি দিয়ে, বুদ্ধি দিয়ে, বিবেক দিয়ে বিচার করে মতামত গ্রহণ করবে — এটাই তো হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু সমাজে তা হচ্ছে না বা হয়ও না। কোন স্বার্থান্বেষী ধর্মনেতা বা রাজনেতা কিছু মানুষকে ধর্মীয় sentiment-এ সুড়সুড়ি দিয়ে খেপিয়ে তুলে ঘটনা থেকে ‘ফায়দা’ তুলতে চায়। এটাই তো হচ্ছে আর বেচারা layman কিছু মারা যাচ্ছে।
এবার তোমার জিজ্ঞাসায় আসি_তুমি জিজ্ঞাসা করছিলে প্রকৃতপক্ষে রামের জন্মস্থান ওটাই কিনা — এইতো? রামচন্দ্রকে তো আধুনিক পণ্ডিতরা ঐতিহাসিক রাজা হিসাবে এখনও স্বীকারই করেনি। ওরা বলছে রামচন্দ্র পৌরাণিক রাজা এবং এটা কাল্পনিক_ এর বাস্তবে কোন অস্তিত্ব নেই ! তাহলে বোঝ কাণ্ডকারখানা ! আবার হিন্দু সমাজের কিছু মানুষ _মহাকাব্য এবং পুরাণগুলিকেই ইতিহাস মেনে নিয়েছে ! সুতরাং তারা নিশ্চিত যে, বর্তমান অযোধ্যাই ইক্ষ্বাকু বংশে(যে বংশে রামচন্দ্র জন্মেছিলেন)-র রাজধানী এবং সেই রাজ্যের ওই বিশেষ জায়গাতেই রাজপ্রাসাদ ছিল এবং সেখানকার কোন আঁতুড়ঘরে বা যজ্ঞস্থলে ভগবান রামচন্দ্রের জন্ম হয়েছিল ! অতএব হিন্দু সংস্কার অনুযায়ী সেই স্থানকে রামজন্মভূমি হিসাবে ধরে নিয়ে একটা মন্দির বানাতেই হবে ! বানানোও হয়েছিল _কিন্তু মুঘলেরা যখন ভারতবর্ষের উত্তর অঞ্চল দখল করে নিয়ে নিজেরাই রাজা হয়ে বসলো তখন মুসলমান সম্রাটগণ তাদের ধর্মকেই শ্রেষ্ঠ ধর্ম হিসাবে বিজিত জাতির কাছে প্রতিষ্ঠা করতে চাইলো, ফলে ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ভেঙে দিয়ে সেই জায়গায় মসজিদ গড়ে উঠতে শুরু করলো।
তবে মুসলমানদের আগমনের অনেক আগে যখন ভারতবর্ষে বৌদ্ধ প্লাবন চলেছিল, তখন ভারতবর্ষের বিখ্যাত মন্দিরগুলি বৌদ্ধস্তূপ বা বৌদ্ধমঠে পরিণত হয়েছিল_অবশ্য এটা ঠিক যে, বৌদ্ধ শ্রমনেরা লুটপাট-হিংসা-রক্তপাত ঘটায় নি, কিন্তু ধর্মকেন্দ্রগুলির ধর্মাচরণ পদ্ধতির পরিবর্তন ঘটেছিল। এই তালিকায় পুরীর বিখ্যাত জগন্নাথ মন্দিরও পড়ে যাবে!
তাহলে বলোমহাকালের লীলা জগতে কোন একটা নির্দিষ্ট স্থানে কোন নির্দিষ্ট মত বা পথের চিরাচরিত শাশ্বত কোন মন্দির বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থাকছে কই? কোন না কোন শক্তিশালী রাজবংশ যখন যেদেশে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, তখন সেই দেশে ‘রাজার ধর্মই রাজ্যের ধর্ম বা প্রজার ধর্ম’ হিসাবে পরিগণিত হচ্ছে বা হতে বাধ্য করানো হচ্ছে! ফলে সেই সেই নতুন ধর্ম অনুযায়ী_ ধর্মীয়স্থান, ধর্মপুস্তক, art, culture সবই বদলে বদলে যাচ্ছে ! এটাই ইতিহাস — এটাই ইতিহাসের ক্রম ! এখানে নিত্য, শাশ্বত, চিরাচরিত এসব খুঁজতে গেলেকিছুই পাবে না। যেটা নিত্যসেটাকেই বলা হচ্ছে ‘তত্ত্ব’। তাই বললাম রাম জন্মভূমি খুঁজে লাভ নেই — রাম-তত্ত্বটি খোঁজো।
পুরাতাত্ত্বিকরা, ঐতিহাসিকরা প্রকৃত রাম জন্মভূমি কখনই খুঁজে পাবে না। একমাত্র মহাপুরুষরা জানেন সঠিকটা কি? পুরাণপুরুষ সত্য, ভূমি সত্য, পুরাণের অনেকটাই হয়তো সত্য, আবার কোনোটি হয়তো অসত্য — এই সবকিছুর জ্ঞান তাঁদের রয়েছে, কারণ তাঁরা ত্রিকালজ্ঞ বা ত্রিকালদর্শী। এমন ঘটনা পূর্বে অনেক ঘটেছে, তার উদাহরণ রয়েছে। যেমন দ্বাপরে কৃষ্ণলীলা ঘটেছিল বৃন্দাবনে। শ্রীকৃষ্ণকেও ঐতিহাসিকপুরুষ হিসাবে ঐতিহাসিকরা মেনে নেয়নি। পরবর্তী কয়েক হাজার বছরের ব্যবধানে মানুষ ভুলেগিয়েছিল বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণের কোথায় কোন লীলাটি সংগঠিত হয়েছিল। শ্রীমদ্ভাগবত বা অন্যান্য শাস্ত্রে ঘটনাসমূহের উল্লেখ রয়েছে, স্থানের নামও রয়েছে কিন্তু কোনটি কোথায়_ তা মানুষ বিস্মৃত হয়েছিল। মাত্র ৫০০ বছর আগে নবদ্বীপের শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু যখন বৃন্দাবনে গেলেন, তখন বৃন্দাবন জঙ্গলে পরিপূর্ণ। ওই বনে বনে ঘোরার সময় বিভিন্ন স্থানে তাঁর ‘ভাব’ হতে থাকলো এবং চেতনায় উনি বুঝতে পারলেন যে, শ্রীকৃষ্ণের বিশেষ বিশেষ লীলাস্থলে তাঁর শরীরেও বিশেষ বিশেষ ভাবের উদয় হচ্ছে। কারণ তাঁর রাধাভাবের সাধনা ছিল, তাছাড়া তাঁর পূর্বস্মৃতিরও স্মরণ ঘটছিল। পরবর্তীকালে তিনি রূপ গোস্বামী ও সনাতন গোস্বামীকে পাঠালেন বৃন্দাবনে লুপ্ততীর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য। তাঁরা ওখানে বসবাস করতে লাগলেন এবং জঙ্গল কেটে আবিষ্কার করলেন রাধাকুণ্ড, শ্যামকুণ্ড, নিধুবন, কুঞ্জবন, রাসমঞ্চ। এরপর থেকেই দলে দলে বৈষ্ণব সম্প্রদায় এসে ওখানে বসবাস শুরু করলো। ধীরে ধীরে বৃন্দাবন ধাম তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হোল। ফলে দেখবেআজকের বৃন্দাবনে যত নামকরা মঠ-মিশন, মন্দির রয়েছে সেগুলির মধ্যে ৫০০ বছরের বেশি পুরোনো কোনটিই নয়।
আবার দেখো মাত্র ৫০০ বছর আগে নবদ্বীপে মহাপ্রভু জন্মগ্রহণ করলেন কিন্তু তাঁর জন্মস্থানটি সঠিক কোথায়? এই জন্মস্থান নিয়েও বৈষ্ণবসমাজে তুমুল বিতর্ক। কেউ বলে গঙ্গার এই পারে, কেউ বলে গঙ্গার ঐ পারে —অর্থাৎ বর্তমান মায়াপুরে। গৌড়ীয় মঠ সমর্থিত বৈষ্ণবেরা এপারে বিভিন্ন মন্দির, বিগ্রহ প্রতিষ্ঠা করে ধুমধাম সহকারে পূজা করে থাকে। আর কিছু বৈষ্ণব মায়াপুরে জন্মস্থান বলে ওখানেই মঠ-মন্দির বানিয়ে ফেলেছে। এরপর মাত্র কিছুদিন আগে প্রভুপাদ শ্রীল অভয়চরণ ভক্তিবেদান্ত আমেরিকায় গিয়ে “ইসকন” প্রতিষ্ঠা করলেন। তারাও মায়াপুরে বিশাল মন্দির বানিয়েছে। আগামীতে আরও বড় মন্দির বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে, প্রচুর জায়গা কিনেছে, বড় বড় building তৈরি করছে ! এখন যদি ওখানে যাও তো দেখতে পাবে বিরাট সব কর্মকাণ্ড চলছে ! ওনারাও বলেন মহাপ্রভুর জন্ম ওপারে অর্থাৎ মায়াপুরে।
মানুষ আড়ম্বর, জাঁকজমক ভালোবাসে সুতরাং দর্শনার্থী, ভক্ত সব এখন ওঁরাই টেনে নিচ্ছেন। পুরোনো নবদ্বীপের জৌলুস অনেকটাই যেন ম্লান। তাহলে মাত্র ৫০০ বছরের বিতর্ক মিটছে না — তুমি ৫ হাজার বা ১০ হাজার বছরের পুরোনো সমস্যা মেটাতে পারবে? আর মেটাতে যাবেই বা কেন? মন্দিরে বা মসজিদে কি ঈশ্বর থাকে? ঈশ্বর তো সর্বত্র বিরাজমান, তোমার মধ্যেও রয়েছেন — সমস্ত জড়জগৎ, জীবজগৎ সর্বত্র বিরাজমান। সেদিক থেকে দেখতে গেলে তো বলতে হয়_ মুসলিম সমাজের ধর্মনেতারা এ ব্যাপারে খানিকটা উদার, কারণ তাঁরা বিধান দিয়েছিলেন_ মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ না হলে ময়দানেও নামাজ পড়া যায়। অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে আমি দেখেছি পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য নির্দিষ্ট সময় হলেই মাঠের মধ্যেই কোন গাছতলায় বা রাস্তার পাশে তারা গামছা বা তোয়ালে বিছিয়ে নামাজ পড়ে নেন। সুতরাং নির্দিষ্ট স্থানেই ঈশ্বরকে ডাকতে হবে তার তো কোন মানে নেই। ঈশ্বর পিপীলিকার নূপুরধ্বনি (চরণধ্বনি) শুনতে পান, আর ভক্তের প্রার্থনা শুনতে পাবেন না? ভক্তি, বিশ্বাস ও নিষ্ঠা থাকলে যে কোন স্থানে থেকেই ঈশ্বরকে ডাকা যায়_ আর আন্তরিক হলে তাঁর প্রসন্নতাও অর্জন করা যায়। তাহলে মন্দির, মসজিদ, গীর্জার কি প্রয়োজন নেই —হ্যাঁ, তারও প্রয়োজন আছে। যেমন শোলার আতা দেখলে আসল আতার কথা মনে হয় তেমনি গীর্জা, মন্দির, মসজিদে দেব-দেবীর অধিষ্ঠান রয়েছে এই বিশ্বাসেও উদ্দীপনা আসে। তাছাড়া এই স্থানগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন -পবিত্র কারণ এখানে সর্বদা ধ্যান, প্রার্থনা, পূজাদি হয় — কোন খারাপ কাজ হয় না। বহু মানুষ শুধু ভালো চিন্তা নিয়েই এখানে সমবেত হন এইসব কারণে অন্যান্য স্থান অপেক্ষা এই স্থানগুলি মানুষের চেতনাকে ঊর্ধ্বমুখী করতে সাহায্য করে ! এইজন্যেই দেখবেমন্দির, মসজিদ, গীর্জায় গেলে মানুষের মনে একপ্রকার ভাবান্তর আসে। মানুষ সাময়িকভাবে শান্তি পায়_ মানুষের লোভ-লালসা-জিঘাংসার উপশম হয়। তাছাড়া বিভিন্ন উন্নত আধার বা মহাপুরুষগণ তীর্থদর্শনের অছিলায় বিভিন্ন ধর্মস্থানে গিয়ে তাঁদের সাধনলব্ধ উন্নত vibration সেইসব স্থানে ছড়িয়ে দিয়ে আসেন। ফলে ওইসব ধর্মস্থানে গেলেই সাধারণ মানুষের কিছু না কিছু উপকার হয় — তা সে বুঝতে পারুক বা না পারুক।
যাইহোক, কথা হচ্ছিল মহাপুরুষের জন্মস্থান নিয়ে, তাহলে ৫০০ বছরের ইতিহাসই মানুষ ভুলে গেছে,৫/১০ হাজার বছরের ইতিহাসের প্রমাণ কে দেবে? হ্যাঁ, দেবার লোক রয়েছেআর তারা হোলেন ত্রিকালদর্শী মহাপুরুষগণ। চৈতন্যদেবের জন্মস্থান কোথায় বিতর্কে না গিয়ে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ নবদ্বীপ বেড়াতে এসে এপার, ওপার দুপারের যত মঠ-মন্দির ঘুরলেন, দেখলেন, সব জায়গায় নমস্কারও করলেন কিন্তু নৌকায় করে যখন গঙ্গার তীর ঘেঁষে চলেছেন, একটা চড়ার কাছে আসতেই তাঁর শরীরে ভাব এল ! তিনি ভাবস্থ অবস্থায় জলে প্রায় পড়ে যাচ্ছিলেন — হৃদয় তাঁকে ধরে আটকালেন। বাহ্যজ্ঞান লাভ হলে বললেন — “দুটি গৌরবর্ণ শিশুর দর্শন লাভ হল” ভক্তরা বুঝলেন মহাপ্রভুর প্রকৃত জন্মস্থান এপারেও নয়, ওপারেও নয় বর্তমানে তা গঙ্গাগর্ভে নিহিত ! ইসকন্ আর গৌড়ীয় মঠ যতই বিবাদ-বিতর্ক করুক তারা কোন দিনই সিদ্ধান্তে আসতে পারবে না, বিবাদ বাড়তে পারে, মারামারিও হোতে পারে কিন্তু ঠিকটা কি কেউই জানতে পারবে না।
তাই বলছিলাম বিতর্ক নয়, বিবাদ নয় —একমাত্র প্রয়োজন ‘বোধ’ ! ধারণা-ধ্যান-সাধন-ভজনের দ্বারা বোধে উপনীত হয়ে ‘বোধী’ হতে হবে__ তবেই মানবজীবনের সার্থকতা ! নাহলে শুধু দ্বন্দ্ব, অশান্তি, অকারণ রক্তপাত — যা ঘটে চলেছে পৃথিবীতে অনেককাল ধরে।
যে কথাগুলি আমি তোমাদের বলছি — এই একই কথা পূর্বে পূর্বের মহাপুরুষগণও তাঁদের সামনে উপস্থিত ভক্তদের কাছে বলে গিয়েছিলেন, কিন্তু তাদের মধ্যে হয়তো দু-চারজন সে কথা মেনে চলেছে_বাকিরা শুনে প্রথমটায় একটু "আহা-আহা" করেছে_তারপর বিস্মৃত হয়ে গেছে! এখন আমি আবার বলছি_তোমাদের মধ্যে যারা জীবনে যোজনা করবে— তাদেরই জীবন ধন্য হয়ে যাবে। যুগে যুগে এমনটাই হয়ে আসছে__বেশিরভাগ মানুষেরাই কথাগুলি ভালো করে শোনে না, আর শুনলেও গ্রাহ্য করে না বা জীবনে আচরণে আনে না। বরং তারা 'বাদ' নিয়ে বিবাদ করতেই বেশি ভালোবাসে ! ব্যক্তিগত এই 'ভালোলাগা' যখনই সম্মিলিত রূপ পায়__তখনই শুরু হয়ে যায়__ জেহাদ- ক্রুসেড অর্থাৎ ধর্মমত প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ, সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য বা অর্থনীতির দখলের জন্য যুদ্ধ ! বিভিন্নভাবে পৃথিবীতে বারবার যুদ্ধ হয়েছে আর পৃথিবী রক্তাক্ত হয়েছে। বর্তমান পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে দেখতে পাচ্ছি__ আবার পৃথিবীতে সেইরকম একটা ভয়ঙ্কর যুদ্ধের পটভূমি তৈরি হয়েছে ! দেখা যাক্ কি হয় _ আর বারবার এই রক্তপাতের episode কবে এবং কিভাবে শেষ হয় ! তবে অনেক মহাপুরুষ স্থুলে এবং সূক্ষ্মভাবে পৃথিবীতে শান্তির বাতাবরণ আনার জন্যেও নিরন্তর চেষ্টা করে চলেছেন ! তাঁদের এই সকল কাজের সুফলও পাবে আগামী পৃথিবীর মানুষ।