গুরুমহারাজ — তুমি যাদের কথা বলছো – ওগুলোকে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা যায়_ crisis of pigmanto. ডাক্তারিবিদ্যায় ওদেরকে মোঙ্গল (Mongolied ) Child বলে। ওদের মুখের গঠন মোঙ্গলিয়ানদের মতো দেখতে হয়। ভারতবর্ষের যে কোনো প্রান্তে যে কোনো জাতির মধ্যে ঐরকমটা দেখতে পাবে।
ভারতবর্ষে বিভিন্ন জাতির সংমিশ্রণ ঘটেছে, ফলে ভিন্ন ভিন্ন মুখের মানুষ এখানে দেখতে পাওয়া যায় কিন্তু এটা জেনে রাখবে যে, gene-এ original ধৰ্ম অপরিবর্তিত থেকে যায়। যখনই কোনো পিতামাতার মধ্যে বা সেই বংশের পূর্ব পুরুষদের রক্তে এমন কিছু অন্যআয় বা অপকর্ম অর্থাৎ প্রকৃতি-বিরুদ্ধ কাজ হয়েছে, যা nature আর accept করতে চাইছে না__ তখন তার genetic ধারা ব্যাহত হয়ে original-a ফিরে যায় ! এই অবস্থায় প্রকৃতি ঐ বংশের চলমান ধারাকে withdraw করে নেয় বা বলা যায় ঐ বংশগতি বন্ধ হয়ে যাবার নির্দেশ দেয়। এরকমভাবে সমাজে দেখবে, যে সমস্ত পরিবারে পুরুষরা অত্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করেছে বা করছে, কয়েক generation-এর মধ্যেই সেই পরিবারে হয় সন্তান আসবে না অথবা সন্তান কঠিন ব্যাধিগ্রস্ত হবে বা তার অকালমৃত্যু হয়ে যাবে। হয়তো কন্যারা বেঁচে থাকলো – পুত্রসন্তান থাকলো না। অর্থাৎ প্রকৃতি ঐ পরিবারের ধারাকে আর সমাজে টিকিয়ে রাখতে চাইছে না, যেহেতু ঐ বংশপরম্পরা থাকলে আরও খারাপ হবে। এইভাবে প্রকৃতি বহু জেনেটিক ধারাকে with draw করে নেয় বলেই সমাজে এখনও অনেকটা সাম্যভাব দেখতে পাচ্ছো, আর নাহলে এক-একটা মানবগোষ্ঠী কবেই শেষ হয়ে যেতো।
আর ঐ ধরণের child -দের রোগ সারার যে ব্যাপারটা বলছো – সেটা বলছি শোনো__! মানবশরীরকে কেন্দ্র করে তিনরকম রোগ হয় আধি, ব্যাধি ও উপাধি। আধি হোচ্ছে ব্যাধির কারণ, যা সূক্ষ্মশরীরকে কেন্দ্র করে অর্থাৎ মনোজগতে মনঃকুন্ডয়নরূপে প্রথমে সৃষ্টি হয়। অনেক পরে তা নানান ব্যাধিরূপে আত্মপ্রকাশ করে। ব্যাধির ঔষধ হচ্ছে তিনপ্রকার ঔষধি, রসায়ন ও প্রাণায়াম। Acute desease অর্থাৎ Life cell যখন আক্রান্ত হয় তখন সেই রোগ নিরাময়ের জন্য প্রয়োজন হয় ঔষধি। আয়ুর্বেদবিজ্ঞান এবং বর্তমান অ্যালোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি ঔষধ এর মধ্যে পড়ে। ক্রনিক ডিজিজ বা জেনেটিক ডিজিজ সারে রসায়নে অর্থাৎ কিছু হোমিও এবং বায়োকেমিক ঔষধে। কিন্তু নিউরোসেল-এর রোগে কোনো মেডিসিন কাজ করে না। এটা সারাতে গেলে প্রয়োজন হয় প্রাণায়ামের। কিছু বৈদিক মন্ত্র উচ্চারণ করার সঙ্গে সঙ্গে যদি প্রাণায়াম করা যায়, তাহলেই এইসব ব্যাধি সারতে পারে—অন্যথায় নয়। এইভাবে আয়ুর্বেদিক বিধান অনুযায়ী চললে মানুষের দেহ ও মন সুস্থ থাকে। কিন্তু তখনও চিত্তের চিত্তধর্ম থেকে যায়। হোমিওপ্যাথিকের জনক হ্যানিম্যান বলেছিলেন – ‘জাতক সুস্থ মন নিয়ে জন্মায়’ —কিন্তু এই কথাটা ঠিক নয়। এক-একজন মানুষ পৃথক পৃথক সংস্কার নিয়ে জন্মায়। ঐ সংস্কার জন্মাবার সময়েই প্রত্যেকের চিত্তে সুপ্ত থাকে। এগুলি বিভিন্ন বৃত্তিরূপে পরে পরে আত্মপ্রকাশ করে, যেমন মনোবৃত্তি, বুদ্ধিবৃত্তি, অহংবৃত্তি ইত্যাদি। জাতকের উপর পরিবেশের প্রভাব নিয়ে প্রচুর গবেষণা হোচ্ছে আজকাল। আমরা লক্ষ্য করেছি মানুষের উপর পরিবেশের প্রভাব রয়েছে কিন্তু শুধু পরিবেশের প্রভাব মানবজীবনে সাময়িক ফল দেয়। যেমন কোনো জাতকের হয়তো কুপরিবেশের প্রভাবে তার মধ্যে অশুভ গুণ প্রকট হয়েছে কিন্তু তার মধ্যে যে শুভ গুণ রয়েছে তা ভাল পরিবেশে থাকলে– যে কোনো সময়ে প্রকট হোতে পারে। এই ভাবে রত্নাকর বাল্মীকি হোতে পারে—আশ্চর্য হবার কিছু নেই আবার মহিষও মহর্ষি হোতে পারে। সম্ভাবনা সব সময় রয়েছে, আর সম্ভাবনা আছে বলেই তো জীবের উৎক্রমণ এবং জীবনের উৎকর্ষতা হয়ে চলেছে—জড়বিজ্ঞানও এখন এই কথাগুলি মেনে নিচ্ছে ৷৷