জিজ্ঞাসু —আর মধ্যমগ্রামের ঘটনা কিছু বলুন ?

গুরুমহারাজ—মধ্যমগ্রাম বা মাঝেরগাঁয়ে যখন আমাদের camp হল তখন ওখানে আমাদের দলের সঙ্গে গিয়ে উঠলাম। ওখানে গিয়ে তো আমি তৃষাণকে খুঁজছি, আর তৃষাণরা খুঁজছে ঠাকুর রামকৃষ্ণকে। মধ্যমগ্রামের শম্ভু মহারাজের আশ্রমে তখন রামকৃষ্ণের ভাব চলছে। কেউ বিবেকানন্দ, কেউ নিরঞ্জন, কেউ রাখাল আর শম্ভুমহারাজ নিজে রামকৃষ্ণ। ওখানকার একটি ছেলে তৃষাণের সঙ্গে প্রথম আমার আলাপ করায়। ওখানে তখন শংকরানন্দ মহারাজও যাওয়া-আসা করতো বা মাঝে মাঝে থাকতো। তৃষাণ তখন ঐ আশ্রমে খুব জোরে জোরে মন্ত্র উচ্চারণ করে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের পূজা করতো। সেই সময় আমার বড় বড় চুল ছিল আর আমি খুব যীশুর কথা বলতাম, সবাই জানতো আমি খৃষ্টান। এক মাষ্টারমশাই আমার রবীন নাম জানতে পেরে নাম দিয়েছিলেন রবীনসন ক্রুশো। এটাই পরে রবার্ট ডি ক্রুজ হয়। ওখানে একটা চায়ের দোকানে আমি চা খেতাম, তখন এক ভাঁড় চা ১০ পয়সা / ২ আনা। তাতেই মাসের শেষে দোকানে আমার নামে ২০০/২৫০ টাকা বিল হয়ে যেত। ওখানকার যুবক ছেলেরা সবাই আমার নামে চা খেত, বয়স্করাও বাদ যেত না। তৃষাণের বাবাও ঐ দোকানে চা খেতে আসতেন। আলাপ হয়েছিল মাষ্টারমশাই হিসাবে। তবে ওখানকার ছেলেরা খুব বদ ছিল। এক মুসলমান ফলওয়ালার দোকান থেকে ফল চুরি করলো চাঁদা দেয়নি বলে। মুসলমান লোকটি খুব ভদ্র ছিল। তাছাড়া ওরা প্রায়ই কুকুর সেজে মিষ্টির দোকান থেকে জিলিপি চুরি করতো।

যাইহোক তৃষাণ প্রতিদিন সকালে রামকৃষ্ণ খুঁজতে বেরুতো আর সন্ধ্যার সময় ক্লান্ত হয়ে ফিরে আসতো। প্রতিদিনই কিন্তু যাবার পথে এবং ফেরার পথে আমার সঙ্গে দেখা হতো। ও নিজে থেকে আমাকে কোন দিন কিছু বলেনি—কি জন্য যাচ্ছে। ঘটনা ঘটেছে কি—তৃষাণ দেবেন্দ্র, সম্বিৎ, সুব্রত এদের সবার প্রায়ই স্বপ্নে দর্শন হতো যে, ভগবান রামকৃষ্ণ আবার শরীরধারণ করেছেন এবং তিনি বর্ধমানেই কোথাও রয়েছেন। তাই ওরা এই কর্ম করতো। দেবেন্দ্র, সম্বিৎ ছিল ভূপাল ইঞ্জিনীয়ারিং কলেজের ছাত্র। ফলে ছুটি-ছাটাতে ওরা এখানে আসতো আর তৃষাণ সারা বছরটাই কাজের ফাঁকে খোঁজাখুঁজির কাজ চালাতো। শম্ভুমহারাজের আশ্রমকে ঘিরে একটা রামকৃষ্ণভাবের জোয়ার চলছিল বটে কিন্তু সেটা তৃষাণের খুব একটা মনঃপুত ছিল না। শম্ভুমহারাজের আশ্রমে আমি পুতুলমাকে দেখলাম। উচ্চ আধ্যাত্মিক অবস্থা, তখন পূর্ণশক্তির ক্রিয়া চলছে।

এদিকে আমি ওখানে হাজির হবার পর থেকেই শম্ভুমহারাজের আশ্রমে সব ভাব ছুটে গেল। এরপর
আশ্রমে চুরি হল কয়েকবার, বিরাট মারামারি হয়ে গেল। পরে আশ্রমে আগুন লেগে সব পুড়ে গেল। মারামারির দিন আর পুড়ে যাবার দিন দু’দিনই পুতুলমা আহত হল। মারামারির দিনই প্রথম পুতুলমাকে বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়ে তৃষাণদের বাড়ি যাই। আলাপ হয় বাবা-মা-র সাথে। মাষ্টারমশাই-এর সাথে চায়ের দোকানে আলাপ ছিল কিন্তু ইনি যে তৃষাণের বাবা সেদিনই জানতে পারলাম। আর পুতুলমা যেদিন পুড়ে গেল—সে কি কাণ্ড ! মারাত্মকভাবে পোড়া—আরতি করতে গিয়ে ভাবস্থ হয়ে পুড়ে গিয়েছিল। ওই অবস্থায় তৃষাণ আর আমি প্রথমে বর্ধমান Hospital-এ নিয়ে গেলাম। ভর্তি করার পরে তৃষাণকে বললাম বিভিন্ন আত্মীয়দের খবর দিতে ও কখনও telegram করেনি, আমি নিজে গিয়ে শিখিয়ে দিলাম। বর্ধমান Hospi- tal-এ বিশেষ কোন চিকিৎসা হলো না। ওখান থেকে ambulance-এ করে কোলকাতার P. G. Hospital-এ নিয়ে গিয়েছি। পরে প্লাস্টিক সার্জারী করার সময় আবার পুতুলমাকে কোলকাতায় ট্রেনে করে নিয়ে গিয়েছি। ওরকম অসুস্থ আবার সেদিন ট্রেনে প্রচণ্ড ভিড়, আমি পায়ের ফাঁক দিয়ে গলে গিয়ে ঠেলাঠেলি করে জায়গা করে নিলাম তারপর পাঁজাকোলা করে পুতুল মায়ের পোড়া শরীর দু’হাতে ধরে সীটে বসে থাকা লোকেদের দেখাতেই তারা সীট্ ছেড়ে দিল। যমে মানুষে টানাটানি করে পুতুলমাকে সুস্থ করে ফিরিয়ে আনা হয়।

মধ্যমগ্রামে থাকাকালীন দু’বার আমার কাছে বিবাহের প্রস্তাব আসে। প্রথম প্রস্তাবটি একটি মেয়ে নিজেই করেছিল। ও আমাকে ‘দাদা’ বলতো, ভাইফোটাও দিয়েছিল। তারপর একদিন হঠাৎ আমাকে সলজ্জ ভঙ্গিতে বললো, ‘রবীনদা আমি তোমাকে ভালোবাসি।’ বলে মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে রইল। আমি তৎক্ষণাৎ তার থুতনিটা ধরে মুখটা তুলে ওর চোখের দিকে চেয়ে বললাম, ‘কিন্তু আমি যে তোর বাবা রে !’ সে ঘাবড়ে গিয়ে বলল, ‘আমি তো তোমাকে দাদা বলি।’ আমি বললাম, “এখন তাই বল তবে দু’দিন পরে ‘বাবা’ বলবি।” আশ্রম হওয়ার পরে ও আমার কাছে দীক্ষা নিয়েছে। ওকে তখনই বলেছিলাম তুই মন দিয়ে লেখাপড়া কর, তোর অনেক পড়াশুনা হবে আর তোর ভাল বিয়ে হবে। হয়েছেও তা।

আর এক দিন এক ভদ্রলোকের স্ত্রী আমাকে বাড়িতে নেমন্তন্ন করে ডেকে নিয়ে গেল, খুব যত্ন করে খাওয়াল। ভদ্রলোক সেরকম কিছু বলছেন না, কেবল একথা সেকথা, কিন্তু ওনার স্ত্রী সরাসরি তাঁদের মেয়ের সঙ্গে আমার বিবাহের প্রস্তাব দিয়ে বসলেন। বললেন, ‘বাবা হলেই বা তুমি খ্রীষ্টান—এমনতো আজকাল কতই হয়।’ আমি ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বললাম, ‘মাসিমা আমাদের কিন্তু বংশে পাগলামির একটা ধারা আছে। আমার বাবার ছিল আর আমার তো আরও বেশী। ছোটবেলায় একবার খুবই বেশী হওয়ায় আমাকে সতেরবার ইলেকট্রিক চার্জ দিতে হয়েছিল। তবে এখন অবশ্য অনেকটা সুস্থ কিন্তু কি জানি কখন আবার বাড়াবাড়ি হয় ।’ আমার মুখের কথা শেষ না হতেই ভদ্রলোক তেড়েমেড়ে উঠলেন – এইজন্যই বলে মেয়েমানুষের বুদ্ধি, খোঁজ- খবর না নিয়েই প্রস্তাব দিয়ে বসলে – আমি আগেই নিষেধ করেছিলাম—ইত্যাদি ইত্যাদি । আমি মনে মনে হাসতে হাসতে ওনাদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে camp-এ ফিরে এলাম। যাইহোক সাধুদের এরকম নানান রক্ষাকবজের দরকার হয়। প্রয়োজনে উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে তা প্রয়োগ করতে হয় নানারকম সামাজিক অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচার জন্য।

মধ্যমগ্রামে camp-এ থাকাকালীন আমরা এক বন্ধুর বিয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের camp-এর এক বন্ধুর সাথে একটি মেয়ের ভাব- ভালোবাসা হয়। কিছুদিন মেলামেশা করার পর মেয়েটি সন্তানসম্ভবা হয়। ছেলেটির বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব দিলেও ছেলের বাবা এ বিয়ে কিছুতেই মেনে নেবে না, আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে মেয়ের বাবাকে রাজি করিয়ে camp থেকেই মেয়েটির বাড়িতে বাসে করে গিয়ে বিয়ে দিয়ে দিলাম। আমিই আয়োজক, আমিই বরকর্তা। আমি ঐ একটি বিয়ের অনুষ্ঠানেই অংশগ্রহণ করেছিলাম বা বরযাত্রী গিয়েছিলাম। তারপর একজনের একটা বাড়ি ঠিক করে সেখানেই বৌভাত খাওয়ানো বা ফুলশয্যার ব্যবস্থা করা হল। আমরা সবাই মিলে চাঁদা দিয়ে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা করলাম। হৈ-হৈ করে বিয়ে হয়ে গেল। পরে বাবা-মা ঐ বউকেই মেনে নিয়েছে, এখন ওরা সুখী দম্পতি।

মধ্যমগ্রামে কয়েক মাস ছিলাম তাতেই কত ঘটনা ! মাঝে আমার এমন একটা ভাব হল — সবার মুখ দেখেই তার অতীত জীবনের ঘটনা হুড় হুড় করে বলে দিতাম। এবার প্রত্যেকের জীবনেই কিছু গোপনীয় দিক থাকে, সে সব ফাঁস হবার ভয়ে অনেকেই আমাকে এড়িয়ে চলতে লাগল। তৃষাণ এই ব্যাপারটাতেই আকৃষ্ট হল। ও প্রথমটায় ভাবল আমি বোধহয় প্লানচেট জানি। ও জিজ্ঞাসা করল, ‘রামকৃষ্ণের দেখা পাব কিনা ?’ ওর মাথায় তখন ঐ একটাই চিন্তা, আমি বললাম, ‘রামকৃষ্ণ যদি শরীরধারণ করেনও তবে তো তাঁর নতুন শরীর হবে। তাহলে সেই দাঁত-ফাঁক, দাড়িওয়ালা প্রৌঢ় যে ছবি তুমি মনে গেঁথে রেখেছ সেই শরীরের কাউকে তো পাবে না, কারণ সে শরীর কাশীপুর শ্মশানে পুড়িয়ে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’

একথা শুনে তৃষাণ হতাশ হল –এরকম করে ও কখনও ভাবেনি। বলল, ‘তাহলে কি খুঁজে পাবো না ?’ আমি বললাম, ‘চিনবে কি করে ? তবে ঠিক ঠিক খোঁজ থাকলে তিনিই তোমাকে চিনে নেবেন। তাই বাইরে না খুঁজে নিজের অন্তর্জগতে খোঁজ। সময় হলেই তিনি তোমার হাত ধরবেন।

এই ঘটনার পর থেকেই তৃষাণ আমাকে একটু অন্য চোখে দেখতে শুরু করল। তবে এই বিশ্বাস তো আবার অবিশ্বাস। এই সময় থেকেই তৃষাণের সঙ্গে আমার একান্তে অনেক আলোচনা হত। তার আগে পর্যন্ত তৃষাণ আমাকে বিশেষ পাত্তা দেয় নি, কারণ ওর ধারণা ছিল আমি খ্রীষ্টান, রামকৃষ্ণ সম্বন্ধে আমার বিশেষ কোন শ্রদ্ধা নেই। যাইহোক এর পর থেকে তৃষাণ আর আমার সঙ্গ ছাড়েনি, যেখানেই camp উঠে গেছে, তৃষাণ যোগাযোগ রেখেছিল। তারপর আমার চাকরি ছেড়ে দেবার কিছুদিন আগে একটা মজার ঘটনা ঘটেছিল। সম্বিৎ, দেবেন্দ্র ও অন্যদের সকলেরই দর্শন হয়েছিল—২৫শে ডিসেম্বর ভগবান রামকৃষ্ণ সম্বিতের বাড়ি 10, Ballygange Circular Road-এ ওদের সঙ্গে দেখা করতে আসবেন। ফলে ওরা সকলে সকাল থেকেই বাড়িঘর সাজিয়ে খাবার-দাবার ready করে প্রস্তুত হয়ে বসে আছে। এদিকে সে সময় হোত কি, ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে সারাবছরের হিসাব-নিকাশ করে আমি বেশ কিছু টাকা হাতে পেতাম, আর প্রতি বছরই 25th December-দিনটা এখানে ওখানে গিয়ে কাটিয়ে দিতাম। গরীবদের বা খেটে খাওয়া মানুষদের মাঝে কাটাতাম। সেবারও ২৪শে ডিসেম্বর হিসাব করে প্রায় দুই/আড়াই হাজার টাকা হাতে পেলাম। মায়ের জন্য কিছু রেখে বাকী টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। হাওড়া স্টেশনে সকাল হল, ওখানে কিছু টাকার কেক্ কিনে ভিখারিদের, কুলীদের দিয়ে দিলাম। তারপর ওখান থেকে বেরিয়ে হাওড়া ব্রীজের উপর দিয়ে যাবার সময় আরও কিছু খাবার-দাবার সবাইকে খাওয়াতে খাওয়াতে এগিয়ে যেতে লাগলাম। এই করতে করতে কখন যে 10, Ballygange Circular Road-এ চলে এসেছি খেয়াল করিনি। Liftman ডাকছে, ‘আসুন ! ক’তলা ?’ আমি বললাম ‘১১ তলা।’ ওখানে পৌঁছে দেখি ঘর সাজানো —সবাই যেন কারও প্রতীক্ষায়। একমাত্র তৃষাণকে আমার বলা ছিল যে, দুপুরের পর আমি ওখানে যাবো। তৃষাণ ওদের বলে ছিল যে, তোমরা যাকে ঠাকুর বলছ সে ঠিক এসে যাবে। ওরা তো রামকৃষ্ণ আসবে বলে কেউ কিছু খায়নি – আমিও ওদের পাল্লায় পড়ে কিছুক্ষণ না খেয়ে থাকার পর সম্বিতের মাকে বললাম, ‘মা ওরা না থাক আমাকে খেতে দাও।’ ওরাই বা কি করে, বাধ্য হয়ে আমার সাথে বসে খেল। তারপর সারারাত ধরে চলল আলোচনা। দেবেন্দ্র প্রথমটায় খুব তর্ক করল, তারপর ধীরে ধীরে শান্ত হয়ে গেল। সম্বিতের মা ওদের কাছে আমার কথা শুনেছিলেন। উনি বললেন, ‘বাবা তোমার সাথে দেখা হয়ে– আলাপ হয়ে আমার খুব আনন্দ হল।’ আমারও সম্বিতের মাকে দেখে খুব আনন্দ হয়েছিল—যেন কত আপনার। যাইহোক এরপর থেকেই ধীরে ধীরে ওরা—বিশেষ করে তৃষাণ আমার অন্তরঙ্গ হয়ে গেল। আর তখন থেকেই পরবর্তী অধ্যায়ের কাজ অর্থাৎ আশ্রম পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেল।

মধ্যমগ্রামে থাকাকালীন এক জেলে বৌ আমাকে খুব যত্ন করে খেতে দিত। একদিন হয়েছে কি, দুপুরবেলায় চায়ের দোকান থেকে আমি চা-বিস্কুট খেয়ে উঠে আসছি—এটা দেখেই ঐ মা আমাকে ডাকল। আমি কাছে যেতেই বলল, ‘দুপুরবেলায় চা-বিস্কুট খেলেন আর কি কিছু খাবেন না—তাহলে আমার বাড়িতে আসুন ভাত খেয়ে যাবেন।’ দ্যাখো, গরীব মানুষ কিন্তু অন্তঃকরণ কত উদার ঠিক খেয়াল করেছে। হয়তো ভেবেছে নিজে রান্না করে আর হয়তো আজকে খাবে না। তাই অনুনয় করতে লাগল ভাত খাবার জন্য। মা-টির অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারলাম না—তার বাড়ি গিয়ে ভাত খেলাম। খুব যত্ন করে খেতে দিল—আমিও চরম তৃপ্তি করে খেলাম। যাইহোক এরপর ঐ জেলে বৌ আমার ঘরের চাবি চেয়ে নিল এবং রোজ আমার ঘরে খাবার দিয়ে যেত। আমি যে বাড়িতে থাকতাম সেখানকার বাড়িওয়ালা রান্না করত। সে আমাকে ঠকাত, বেশি করে bill করতো। কিন্তু দেখ ‘মা সস্নেহে আমাকে খেতে দিত কোন প্রত্যাশার বিনিময়ে নয় আর আমিও ওর খাবার খুব তৃপ্তি করে খেতাম।

তবে আমার স্বভাবই এরকম যে, আমি যখনই কোন খাবার খাই, খুব প্রসন্নচিত্তে খাই। যখন কোন গান শুনি খুব আরাম করে শুনি। আমি পণ্ডিত নই যে, গানের বিচার করবো। তাই কে গাইছে, কি গাইছে বিচার করি না। জানি ফুচকা খেতে এসে রাবড়ির স্বাদ আশা করা ভুল –তাই ফুচকার স্বাদই প্রাণভরে গ্রহণ করি। আশ্রমের জগবন্ধুর মেঠো গানও খুব মন দিয়ে শুনি এবং আনন্দ পাই। গানের কথায় হয়তো ভুল আছে, হয়তো সুরটা বেশী চড়া হয়ে গেল—এই নিয়ে বিচার করি না —গানের আনন্দ গ্রহণ করি।