জিজ্ঞাসু :— হাতি পাগল হয় কেন ?
গুরুমহারাজ :—- বিভিন্ন কারণে হয়, আহত হোলে হয় বা অন্যান্য অনেক কারণেও হয়। কিন্তু মদমত্ত হাতি যেটা বলা হয়, ওটা হয় Mating Season-এ ! দ্যাখোনা, ভাদ্র-আশ্বিন মাসে কুকুরের Mating Season-এ কুকুর পাগল হয়ে যায়। জীবের একটা অন্যতম ধর্মই তো হোলো বংশবিস্তার। ফলে যে কোনো জীবের প্রবৃত্তিতে এটা অবশ্যম্ভাবী ভাবে রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির জীব, শুধুমাত্র বংশবৃদ্ধি করার জন্য কতভাবে Sacrifice করে-—জানলে অবাক হয়ে যাবে। এক ধরণের মাকড়সা আছে, যাদের পুরুষগুলো প্রচণ্ড ভয়ে ভয়ে এবং সুযোগ-সুবিধা পেলে তবেই স্ত্রী মাকড়সার সাথে মিলিত হয় ! কারণ Mating-এর পর যদি স্ত্রী মাকড়সাটি ঐ পুরুষটিকে ধরতে পারে_ তো সঙ্গে সঙ্গে সেটাকে খেয়ে ফেলবে। মাকড়সাকে সংস্কৃতে ‘ভর্তাখাদিকা’ বলা হয় ! ‘ভর্তাখাদিকা’ বা ভাতারখাকী গালাগালিটা এখান থেকেই এসেছে।
যাইহোক, মাকড়সার mating -এর সময় ঐ পুরুষটির শরীরের অংশবিশেষ খেলে ঐ প্রজাতির মাকড়সার ডিমটি পুষ্ট হয় বা স্ত্রী মাকড়সার শরীরের পুষ্টিলাভ হয়। তাহলে দ্যাখো, শুধু প্রবৃত্তির তাড়নায় প্রাণও তুচ্ছ হয়ে যাচ্ছে। জ্যৈষ্ঠ- আষাঢ় মাসে মাগুর, কইসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছেরা বর্ষার বৃষ্টির জলের ধারার সাথে জলাশয় থেকে উঠে আসে এবং মানুষের হাতে ধরা পড়ে, তার কারণও এই জৈবিক তাড়না। মাছগুলি এই পুকুর থেকে ওই পুকুরে পালাবার জন্য ওঠে না ! আগে আগে ডিমওয়ালা স্ত্রী মাছটি পেট ঘষতে ঘষতে ডিম্বাণু বা ডিমগুলি ছাড়তে ছাড়তে এগিয়ে যায়_ আর তার পিছনে পিছনে পুরুষ মাছের ঝাঁক শুক্রাণু ছাড়তে ছাড়তে ডিম্বানুগুলিকে নিষিক্ত করতে করতে যায়। আর তা করতে গিয়েই অসহায়ভাবে ওরা মানুষের হাতে ধরা পড়ে বা মারা পড়ে !
তোমরা নিশ্চয়ই দেখেছো_ অন্য সময়ে জলের মধ্যে থেকে ঐ সব প্রজাতির মাছ ধরা কত কষ্টকর কিন্তু mating season -এ এদের ধরা কতো সহজ ! এইভাবে অজস্র উদাহরণ দেওয়া যায়।
বুনোহাতিকেও ধরা হয় ঐ একই কায়দায়। Matured শিক্ষিত মাদি হাতিকে বনে ছেড়ে দেওয়া হয়। এবার ওর স্পর্শ পাবার জন্য কয়েকটা পুরুষ হাতি ওকে follow করতে থাকে, আর মাদি হাতিটি ওদেরকে নিয়ে নির্দিষ্ট অংশ স্থানে চলে আসে। সেখানে বিশেষ ব্যবস্থায় কিছুদিন হাতিগুলোকে বন্দী অবস্থায় রাখার পর আস্তে আস্তে পোষ মানানো হয়।
যাইহোক্ যা বলছিলাম, জীবের এই স্বাভাবিক জৈবিক তাড়না বড়ো সাংঘাতিক ! কথায় আছে না—জীবনের ধর্মই হচ্ছে 'বাঁচা এবং বৃদ্ধি। এখানে বৃদ্ধি বলতে বংশবিস্তার। পৃথিবী গ্রহের শ্রেষ্ঠ জীব মানুষও কিন্তু এই দুর্বলতা থেকে মুক্ত নয়, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবার অন্য জীবের থেকেও বেশীরকম দুর্বল। পন্ডিতদের লেখা ইতিহাস পাঠ করলে তুমি দেখতে পাবে বড় বড় যুদ্ধ হয়ে গেছে শুধুমাত্র 'নারী'র অধিকার নিয়ে! এই পৃথিবীর বহু সমাজে এখনও একটা নারীর জন্য duel fight বা দ্বন্দ্বযুদ্ধ হয়। খবরের কাগজে পাবে একজন যুবক অন্যজনকে খুন করেছে কোন এক বিশেষ নারীকে পাবার জন্য। জানো তো_ ঠিকমতো তুলনামূলক বিচার করলে দেখা যায় যে, পুরুষজাতির সদস্যরা অপেক্ষাকৃত বোকা—তুলনায় নারীরা অনেক চালাক। যে Mating-এর জন্য মানুষ পাগল, সেখানেও পুরুষ ভোগ করে কোথায় ! নিজের শরীরের সারভূত অংশ ক্ষয় করে তারা নারীকে ভোগ করায়_ আর এতেই তার আনন্দ। অপরপক্ষে শৃঙ্গারে ভোগ করে নারী ! এই ক্রিয়ায় নারীর ক্ষয় হয় না, বরং লাভ হয়। ভারতীয় শাশ্ত্রে রয়েছে যে, কোনো এক ঋষি এই ব্যাপারটা জানতে পেরে তিনি একবার স্বেচ্ছায় নারীশরীর গ্রহণ করে নারীশরীরে ভোগের যে কি taste তা অনুভব করেছিলেন।
মানুষের ক্ষেত্রে এইজন্য নারীকে শক্তি বলা হয়েছে, তাছাড়া নারী আজন্ম ব্রহ্মচারিণী। নারীকে আলাদা করে ব্রহ্মচর্য দীক্ষা না নিলেও হয়—এদের ব্রহ্মচর্যের হানি হয় না __ঋতুস্নান করলেই নারী শুদ্ধ।
অপরপক্ষে পুরুষ শক্তিমান, তার শুক্রাণু তৈরি করার ক্ষমতা নারীর ডিম্বানু তৈরি করার ক্ষমতা অপেক্ষা অনেক বেশী। পূর্ণবয়স্ক পুরুষের শুক্রে কয়েক লক্ষ শুক্রাণু থাকে এবং তা একমাসে বহুবার ব্যবহৃত হতে পারে । আবার সাথে সাথে তা তৈরিও হতে পারে। কিন্তু নারীর একমাসে সাধারণত একটিই পুষ্ট ডিম্বাণু তৈরি করার ক্ষমতা রয়েছে, তাই নারীর ক্ষয় অনেক কম! একমাত্র সন্তান উৎপাদন করতেই তার শরীরের শক্তি ক্ষয় হয়। পুরুষের ক্ষমতা বেশী কিন্তু শক্তি কম! আর নারীর শারীরিক গঠনের জন্য হয়তো ক্ষমতা কম কিন্তু শক্তি অনেক বেশী। এইজন্য দেখবে ধৈর্যশক্তি, সহ্যশক্তি এসব বোঝাতে নারীকে উদাহরণ হিসাবে টানা হয়। ..... [ক্রমশঃ]