জিজ্ঞাসু : গুরুমহারাজ, আপনি এসব কথা বলছেন, শুনেই আমরা শিহরিত হয়ে উঠছি। তাহলে যাদের জীবনে এগুলি প্রত্যক্ষ হয়েছে, তাদের কি সৌভাগ্য ! আচ্ছা আপনার স্কুল জীবনে কি এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটেছিল ?
গুরুমহারাজ : আমার আর স্কুলজীবন কতটুকু ! মা তো আমাকে লেখাপড়া শিখতে দিল না। বলল, “তোর আর লেখাপড়া শিখে কাজ নেই, তুই মূর্খ হয়েই থাক্, তোর জন্য তো আমি আছি।” তা দ্যাখো, দেশে-বিদেশে কত পণ্ডিত মানুষের সঙ্গলাভ হল, কিন্তু মা আমাকে কখনও কোন অসুবিধায় পড়তে দেয়নি। আমি লেখাপড়া জানিনা বলে তোমাদের কি আমার সাথে মিশতে অসুবিধা হয় নাকি ? ও হয় না—তবে সব্যকে চেনোতো, সিঙ্গুরের সব্যসাচী মান্না, আমার বন্ধু, ও কিন্তু আমাকে যখন কবিতা দেখাতে আসে, ওর অনেক কবিতা হয়তো আমি বুঝতে পারিনা বা বলি—এটা ঠিক হয়নি। ও রেগে-মেগে বলে দুঃখটা কি জানেন মহারাজ! একজন অশিক্ষিত লোক, শিক্ষিত লোকের কবিতার সমালোচনা করছে।”
তবে বিদেশে Passport-visa সংক্রান্ত নানান form fill up করতে হয় বিভিন্ন জায়গায়। বিশেষত বিমানবন্দরগুলোয়, তখন লিখতে অসুবিধা হয়, বানান ভুল হয়। আমার লেখায় বানান ভুল হয় খুব জানতো। এছাড়া দেরি হয়, দেখেছি, তখন কেউ না কেউ helf করে দিতো—বুঝতাম মা-ই করাচ্ছেন।
ছোটবেলায় লেখাপড়া তো ভাল করতে পারিনি। তবে সবচেয়ে গোলমেলে লাগতো অঙ্ক। ওরে বাপরে ! অঙ্ক আমি কিছুতেই মাথায় ঢোকাতে পারতাম না। বিয়োগ আর ভাগ তো আমার একেবারেই হত না, যোগ করে গুণ করতে গেলাম ইনফিনিটি হয়ে গেল, তাহলে আমার দ্বারা অঙ্ক আর কি করে হয় বল !
ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় আমার মাষ্টারমশাইদের মধ্যে অনেকের উপর আমার প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল। একজন মুসলমান মাষ্টারমশাই ছিলেন, তিনি কি বুঝেছিলেন কে জানে, খুবই প্রাধান্য দিতেন আমাকে। এটা অপরের কাছে দৃষ্টিকটু ছিল, তাছাড়া তিনি তাঁর বোঝাটা অন্যের ঘাড়ে চাপাতে চাইছিলেন। ফলে নানা অঘটন ঘটতে লাগল, তাছাড়া বাইরে আমার অনেক কাজ—এসব চিন্তা করেই আমি স্কুল ছেড়ে দিলাম।