জিজ্ঞাসু : এর আগে চীনা সৈন্যরাও আপনাদের আকেছিল আবার ওনারা আকাল। কেন ওরা সাধু-সন্ন্যাসীদের ছেড়ে দেয় না ?
গুরুমহারাজ : না তা আর কই দেয়—তাহলে ধরল কেন ? তবে ওদের আর কি দোষ ? সীমান্ত রক্ষা করাই তো ওদের কাজ। কেউ যদি অন্য সীমান্ত লঙ্ঘন করে তখন তাকে তো আট্কাতেই হবে। কিন্তু ধরুক ক্ষতি নেই, যখন তারা দেখল যে, সাধু-সন্ন্যাসী মানুষ—এমনকি তাদের দেহে বস্ত্রও নেই, তখন তাদের ছেড়ে দেওয়াই কর্তব্য ছিল। চীনারা তাই করেছিল, যতক্ষণ না ওদের Com – mander এসে পৌঁছাল ততক্ষণ চা বা বিভিন্ন খাবার খেতে দিয়েছিল কিন্তু পাকিস্তানী সৈন্যরা আমাদের সঙ্গে খুব অমানবিক ব্যবহার করেছিল।
জিজ্ঞাসু : চীনা সৈন্যরা আপনাদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করেছিল ?
গুরুমহারাজ : আমার বয়স তখন খুবই কম আর নাঙা দু’জনের মধ্যে একজনের চেহারা একটু বিশাল আর অন্যজনও কম যায় না। চীনারা বুঝতে পারল যে, আমরা সাধু-সন্ন্যাসী ব্যক্তি এবং এটা ওদের জানাও রয়েছে। ফলে প্রথমে আমাদের বসার ব্যবস্থা করার পর কিছু খাদ্য আর পানীয় নিয়ে এল।
আমার তো তেমন কোন খাদ্য তখন প্রায় তিন মাস গ্রহণ করা হয়নি আর নাঙাদের তো আমি কখনই খেতে দেখিনি, প্রস্রাব- পায়খানা করতেও দেখিনি—ওঁরা কিভাবে জীবনধারণ করতেন তা ওঁরাই জানেন ! ফলে চীনারা যখন বড় বড় মগে করে চমরী গায়ের দুধ দিয়ে কাঁচা পাতার চা ফোটানো খেতে দিল, তখন খাদ্য দেখে আমার মনে হল ঐ তিন মগ চায়ের পুরোটাই খেয়ে ফেলি। এছাড়া দিয়েছিল কিছু কাজু আর আখরোট এইসব। ঐ প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় সীমান্তরক্ষীরা কাঁচা চা পাতা ফুটিয়ে খায়, এতে শরীর গরম থাকে, Nerve Strong থাকে। যাইহোক আমি ইঙ্গিতে ওনাদের Permis – sion চাইতেই ওনারা মৃদু হেসে আমাকে অনুমতি দিলেন। আমি বড় বড় মগের তিন মগ চা আর সব কাজু-আখরোট মুহূর্তের মধ্যে খেয়ে নিলাম। এক-একটা মগে চা মানে প্রায় ১ লিটার হবে। ঐগুলি খাবার পরই শরীরে ক্লান্তি এল। ফলে দীর্ঘক্ষণ Rest নিতে হল। তারপর ওদের কমাণ্ডার এলে আমাদের ছেড়ে দিল। যাইহোক এর বেশ কয়েকদিন পর—আমার আবার খাই খাই মনে হচ্ছিল, অর্থাৎ বুঝতে পারলাম খাদ্যগ্রহণ না করাই ঠিক ছিল—খেয়েই ঐ রকম বিপত্তি হল। তবে দু-চারদিনের মধ্যেই ওটা আবার ঠিক হয়ে গিয়েছিল।