জিজ্ঞাসু : আপনার শরীরে হয়তো হয়নি, অন্য শরীরে তো হতেও পারে ? 2015 WRS FOS

গুরুমহারাজ : কথাটা ঠিকই বলেছ। আমার শরীরে বিষের তেমন effect হয় না, অনেক সময় দেখেছি শরীর ওটাকে ঘা বা ফোড়ার আকারে বাইরে বের করে দেয়। সিগারেট, চা বা কোন নেশার দ্রব্যে যে উপক্ষার জাতীয় বিষ থাকে, তাও আমার শরীরে কোন ক্রিয়া করতে পারে না। আবার বিভিন্ন বিষাক্ত কীট, পতঙ্গ, সরীসৃপের যে অ্যাসিড জাতীয় বিষ থাকে তাও আমার শরীরে ক্রিয়াশীল হয় না। আমি পরীক্ষামূলকভাবে একবার এক সাধুর কাছ থেকে অনেকটা ‘হেরোইন’ নিয়ে খেয়েছিলাম। কিছুক্ষণ কাটার পর আমার কিছু হয়নি দেখে সাধুটি বিস্মিত হয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আপনি মানুষ তো !” আমি একথা বলার কারণ কি তা জানতে চাইলে উনি বললেন, ‘যেটা আপনি খেলেন ওটা জানেন কি ? ওটা হেরোইন, একজন বিদেশী আমার কাছে ওটা রেখে গিয়েছিল। যে পরিমাণ আপনি খেলেন, তার ১/১০ ভাগ খেলেই একজন Ad- dicted ব্যক্তিরও নেশা হবার কথা, কিন্তু এতটা খেয়েও আপনি স্বাভাবিকভাবে কথা বলছেন কি করে ?’ আমি আমার শরীরের বৈশিষ্ট্যের কথা ওনাকে বোঝালাম, তারপর ওনার সাথে আমার বেশ ভাব জমে গেল।


যাইহোক এইভাবে আমি দেখেছি আমার শরীরে অ্যালকোহলের কোন ক্রিয়া হয় না। রায়নার জগাদার সাথে Challenge করে একবার কয়েক লিটার Alcohol খেয়ে নিয়েছিলাম, শরীরে কোন প্রভাবই পড়েনি। পরে যখন বমনধৌতি করলাম, দেখলাম বড় বালতির প্রায় ১ বালতি হয়ে গেল। বিষধর সাপেও কয়েকবার কামড়ালো, কিন্তু কিছু হয়নি। একবার একটা চন্দ্রবোড়া বনগ্রাম আশ্রমে আমার বিছানাতেই বালিশের পাশে গরম পেয়ে শুয়েছিল। পাশ ফিরতেই গায়ে চাপ পড়ায় ঘাড়ের কাছে কামড়ে দিল। এত তীব্র বিষের জ্বালা যে কি বলব ! ঠিক সে সময় পাশের গ্রাম কান্টিপুরের রাস্তায় একটা বিয়ে বাজনা বাজিয়ে আনন্দ করতে করতে যাচ্ছিল। ভাবলাম, এই রকমই হয়, একই সময়ে কেউ আনন্দ করছে, কেউ জ্বলছে! সেইজন্য বারবেলা, কালবেলা, খারাপ সময় এসব সার্বজনীন নয়। যাইহোক পরের দিন ন’কাকাকে আমার সাপে কেটে যন্ত্রণা পাওয়ার কথা বলতে গেলাম, ভাবলাম ন’কাকা বোধহয় সমব্যথী হয়ে দুঃখপ্রকাশ করবে। ওমা—তা না করে ন’কাকা বলল, ‘সাপের মাথায় কত নেচেছ, এখন সাপের বিষের জ্বালা ভোগ কর !”


সাধারণত গোক্ষুরা প্রজাতির যে সমস্ত সাপ রয়েছে, তারা সবাই ফণাধর। এদের বিষ খুবই তীব্র। মানুষের শরীরে এই বিষের ক্রিয়া কেমন জানো তো, ঠিক যেন মনে হবে—একটি জ্বলন্ত শলাকা শরীরের চামড়া বা মাংসের ভিতর দিয়ে পাশ করানো হচ্ছে। অর্থাৎ বুঝতে পারছো – হু-হু করে জ্বলবে, যাকে বলে burning pain আর চন্দ্রবোড়া সাপে কামড়ালে প্রথমটায় জ্বালা করে, পরে স্থানটা অবশ হয়ে যায়। এক ধরণের লতাগাছ রয়েছে, ঐ লতার ১ ফুট মতো পাতাসমেত বেঁটে এক গ্লাস জলে গুড় দিয়ে খেয়ে নিলে সাপের বিষের ক্রিয়া—যা শরীরের উপর পড়ে, তাকে প্রাথমিকভাবে রুখে দেওয়া যায়। এটা গরু, মোষ, মানুষ সবার উপরেই প্রয়োগ করা যায়, এটা পরীক্ষিত সত্য।