[আগের দিন আমরা দেখেছিলাম__গুরু মহারাজ আলোচনা করছিলেন যে, অনাথ আশ্রম শুরু করতে গিয়ে প্রথমেই বেশ কিছু বাধার সন্মুখীন হোতে হয়েছিল।]
জিজ্ঞাসু :– তাহলে অনাথ আশ্রমে ছাত্র সংখ্যা বাড়তে শুরু করলো কিভাবে ?
গুরুমহারাজ :– সময় – ! সময় সব কিছুকেই গ্রাস করে। সাধারণ মানুষ যতো আমাদের সাথে পরিচিত হোতে থাকলো, আশ্রমের কাজকর্ম দেখলো, তখন তাদের ধারণা পাল্টে গেলো। আমাদের আশ্রমেরও ভক্তসংখ্যা বাড়তে থাকলো –এদের অনেকেই তাদের ছেলেদেরকে আশ্রমে রাখতে চাইছিল। কিন্তু আমাদের তো তখন অতো জায়গা ছিল না,আর তেমন ব্যবস্থাও ছিল না। যেমন যেমন থাকার জায়গা তৈরি হচ্ছিলো – তেমন তেমন ছাত্রসংখ্যা বাড়ানো হচ্ছিলো। কিন্তু main critaria ছিল – ছাত্রদেরকে অনাথ হোতে হবে অর্থাৎ যাদের পিতা-মাতা নাই, আর মা থাকলেও পরিবারটি খুবই দুঃস্থ __এমন ছাত্রদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই শর্তগুলো মেনে বেশিরভাগ ছেলেদেরকে আশ্রমে নেওয়া হচ্ছিলো !
আমি ছোটবেলায় ঘুরে বেড়ানোর সময় মানুষের কাছে যে লাঞ্ছনা পেয়েছি, আমি চাইতাম পথশিশু বা মাতা-পিতৃহীন বালকেরা যেন লাঞ্ছনা মুক্ত জীবন যাপন করতে পারে। সেই জন্যেই এখানে ছেলেদের নেওয়ার ব্যাপারে একটু কড়াকড়ি ! ছাত্রদেরকে নেবার আগে enquiry করা হয়, ভালো করে যাচাই করে__তবেই নেওয়া হয়। আমাদের আশ্রমে ৫০০ ছেলে রাখা হবে আগামীতে। সমস্ত রকমভাবে সেই ধরনের পরিকাঠামোও হবে। এখানে প্রথমে প্রাইমারি এবং পরে সেকেন্ডারি স্কুলও হবে। প্রথাগত শিক্ষার চাইতে কারিগরি শিক্ষা বা হাতে-কলমে শিক্ষার training school করার ব্যাপারে বেশি জোর দেওয়া হবে – যাতে এখান থেকে পাশ করে ছেলেরা কিছু কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। যেমন ধরো সেলাই, কাঠের কাজ, ইলেকট্রিকের কাজ, কম্পিউটার ট্রেনিং – এছাড়া যোগ সেন্টার হবে, এতে আশ্রমিকদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং অন্যদেরও স্বাস্থ্য যাতে ঠিক থাকে, তার জন্য training দেওয়া হবে। আশ্রমের মহারাজেরা যোগ শিখে, যোগের দ্বারা বিভিন্ন রোগ আরোগ্যও করতে পারবে।
500 ছেলের খাওয়ার সংস্থান, থাকার জায়গা, পড়াশোনার ব্যবস্থা, উপযুক্ত দেখভালের লোক, তাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা এবং শিক্ষান্তে কোনোভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করা – এসবের ব্যবস্থা হোলে তবেই এই project fulfilted হবে।
এখন আশ্রম থেকে free Homeopathic চিকিৎসা-পরিষেবা দেওয়া হয়। এতে আশ্রমিকরা ছাড়াও স্থানীয় বহু মানুষেরা উপকৃত হচ্ছে। বাইরের নামী চিকিৎসকেরাও আসেন মাসে এক-দুবার বা প্রতি সপ্তাহে। তাছাড়া বনগ্রাম আশ্রমে আকুপাংচার চিকিৎসা করা হয় – এটি একটু খরচসাপেক্ষ কিন্তু বিভিন্ন critical রোগে খুবই ফলদায়ক। খরচসাপেক্ষ বলতে – যে সুচ বা needle ফোটাতে হয় সেগুলি তো বাজার থেকে কিনতে হয়। ওগুলো আবার দু’ধরনের, দেশি আর বিদেশি। বিদেশিগুলোর মান ভালো, তাই দামও বেশি পড়ে যায়৷ এবার আমি যখন ইউরোপ থেকে এলাম, আমি অনেকটা পরিমাণে আকুপাংচারের needle নিয়ে এসেছি। যা এনেছি তাতে ওদের দু’বছর চলে যেতে পারে।
এমন অনেক রোগ আছে যেগুলি Allopathic treatment-এ সাড়ে না, অন্যদিকে আবার খুবই ব্যয় সাপেক্ষ ! গ্রামের সাধারণ মানুষ এতো পয়সা কি করেই বা যোগাড় করে ! তাই এই ব্যবস্থা !
মানিক (অখন্ডানন্দ) আর অমূল্য (অভয়ানন্দ), ওদের বাঁকুড়া-পুরুলিয়া অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে আয়ুর্বেদ নিয়ে গবেষণা করা এবং মানুষের চিকিৎসা করার জন্য। ওইসব অঞ্চলে মানুষের চরম অভাব। বর্ধমান অঞ্চলে যেহেতু ব্যাপক কৃষিকাজ হয়, তাই এখানে মানুষ কাজ পায়, দুটো পেট ভরে খেতে পায়। কিন্তু জঙ্গলমহল এলাকাগুলো আমি পায়ে হেঁটে হেঁটে ঘুরেছি, দেখেছি মানুষের কি নিদারুণ দারিদ্র্য ! আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনেরা জঙ্গলকে ঘিরে থাকতেই ভালোবাসে। ওখানকার সম্পদই ওদের জীবিকা। প্রচণ্ড অভাব, তাই স্বভাব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছোটখাটো ছিনতাই করে, উগ্রপন্থী দলে অনেকে নাম লেখাচ্ছে। ওদের অভাব দূর হয়ে গেলেই এগুলি থাকবে না। আমাদের অনাথ আশ্রমে ঐ অঞ্চলের ছেলেরাই এখন বেশি আসছে।
জিজ্ঞাসু :– তাহলে অনাথ আশ্রমে ছাত্র সংখ্যা বাড়তে শুরু করলো কিভাবে ?
গুরুমহারাজ :– সময় – ! সময় সব কিছুকেই গ্রাস করে। সাধারণ মানুষ যতো আমাদের সাথে পরিচিত হোতে থাকলো, আশ্রমের কাজকর্ম দেখলো, তখন তাদের ধারণা পাল্টে গেলো। আমাদের আশ্রমেরও ভক্তসংখ্যা বাড়তে থাকলো –এদের অনেকেই তাদের ছেলেদেরকে আশ্রমে রাখতে চাইছিল। কিন্তু আমাদের তো তখন অতো জায়গা ছিল না,আর তেমন ব্যবস্থাও ছিল না। যেমন যেমন থাকার জায়গা তৈরি হচ্ছিলো – তেমন তেমন ছাত্রসংখ্যা বাড়ানো হচ্ছিলো। কিন্তু main critaria ছিল – ছাত্রদেরকে অনাথ হোতে হবে অর্থাৎ যাদের পিতা-মাতা নাই, আর মা থাকলেও পরিবারটি খুবই দুঃস্থ __এমন ছাত্রদেরকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই শর্তগুলো মেনে বেশিরভাগ ছেলেদেরকে আশ্রমে নেওয়া হচ্ছিলো !
আমি ছোটবেলায় ঘুরে বেড়ানোর সময় মানুষের কাছে যে লাঞ্ছনা পেয়েছি, আমি চাইতাম পথশিশু বা মাতা-পিতৃহীন বালকেরা যেন লাঞ্ছনা মুক্ত জীবন যাপন করতে পারে। সেই জন্যেই এখানে ছেলেদের নেওয়ার ব্যাপারে একটু কড়াকড়ি ! ছাত্রদেরকে নেবার আগে enquiry করা হয়, ভালো করে যাচাই করে__তবেই নেওয়া হয়। আমাদের আশ্রমে ৫০০ ছেলে রাখা হবে আগামীতে। সমস্ত রকমভাবে সেই ধরনের পরিকাঠামোও হবে। এখানে প্রথমে প্রাইমারি এবং পরে সেকেন্ডারি স্কুলও হবে। প্রথাগত শিক্ষার চাইতে কারিগরি শিক্ষা বা হাতে-কলমে শিক্ষার training school করার ব্যাপারে বেশি জোর দেওয়া হবে – যাতে এখান থেকে পাশ করে ছেলেরা কিছু কাজ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারে। যেমন ধরো সেলাই, কাঠের কাজ, ইলেকট্রিকের কাজ, কম্পিউটার ট্রেনিং – এছাড়া যোগ সেন্টার হবে, এতে আশ্রমিকদের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং অন্যদেরও স্বাস্থ্য যাতে ঠিক থাকে, তার জন্য training দেওয়া হবে। আশ্রমের মহারাজেরা যোগ শিখে, যোগের দ্বারা বিভিন্ন রোগ আরোগ্যও করতে পারবে।
500 ছেলের খাওয়ার সংস্থান, থাকার জায়গা, পড়াশোনার ব্যবস্থা, উপযুক্ত দেখভালের লোক, তাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা এবং শিক্ষান্তে কোনোভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহের ব্যবস্থা করা – এসবের ব্যবস্থা হোলে তবেই এই project fulfilted হবে।
এখন আশ্রম থেকে free Homeopathic চিকিৎসা-পরিষেবা দেওয়া হয়। এতে আশ্রমিকরা ছাড়াও স্থানীয় বহু মানুষেরা উপকৃত হচ্ছে। বাইরের নামী চিকিৎসকেরাও আসেন মাসে এক-দুবার বা প্রতি সপ্তাহে। তাছাড়া বনগ্রাম আশ্রমে আকুপাংচার চিকিৎসা করা হয় – এটি একটু খরচসাপেক্ষ কিন্তু বিভিন্ন critical রোগে খুবই ফলদায়ক। খরচসাপেক্ষ বলতে – যে সুচ বা needle ফোটাতে হয় সেগুলি তো বাজার থেকে কিনতে হয়। ওগুলো আবার দু’ধরনের, দেশি আর বিদেশি। বিদেশিগুলোর মান ভালো, তাই দামও বেশি পড়ে যায়৷ এবার আমি যখন ইউরোপ থেকে এলাম, আমি অনেকটা পরিমাণে আকুপাংচারের needle নিয়ে এসেছি। যা এনেছি তাতে ওদের দু’বছর চলে যেতে পারে।
এমন অনেক রোগ আছে যেগুলি Allopathic treatment-এ সাড়ে না, অন্যদিকে আবার খুবই ব্যয় সাপেক্ষ ! গ্রামের সাধারণ মানুষ এতো পয়সা কি করেই বা যোগাড় করে ! তাই এই ব্যবস্থা !
মানিক (অখন্ডানন্দ) আর অমূল্য (অভয়ানন্দ), ওদের বাঁকুড়া-পুরুলিয়া অঞ্চলে পাঠানো হয়েছে আয়ুর্বেদ নিয়ে গবেষণা করা এবং মানুষের চিকিৎসা করার জন্য। ওইসব অঞ্চলে মানুষের চরম অভাব। বর্ধমান অঞ্চলে যেহেতু ব্যাপক কৃষিকাজ হয়, তাই এখানে মানুষ কাজ পায়, দুটো পেট ভরে খেতে পায়। কিন্তু জঙ্গলমহল এলাকাগুলো আমি পায়ে হেঁটে হেঁটে ঘুরেছি, দেখেছি মানুষের কি নিদারুণ দারিদ্র্য ! আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষজনেরা জঙ্গলকে ঘিরে থাকতেই ভালোবাসে। ওখানকার সম্পদই ওদের জীবিকা। প্রচণ্ড অভাব, তাই স্বভাব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ছোটখাটো ছিনতাই করে, উগ্রপন্থী দলে অনেকে নাম লেখাচ্ছে। ওদের অভাব দূর হয়ে গেলেই এগুলি থাকবে না। আমাদের অনাথ আশ্রমে ঐ অঞ্চলের ছেলেরাই এখন বেশি আসছে।