জিজ্ঞাসু :– ইসলামীয় চিন্তা দিয়ে ভারতীয় আর্য চিন্তার ‘আধ্যাত্মিকতা’-কে কিভাবে ব্যাখ্যা করা যায় ?
গুরুমহারাজ :– তুমি এটা কি জিজ্ঞাসা করলে ? শব্দজাল সৃষ্টি করে – ভাবলে বোধহয় খুব একটা ভারী ধরনের জিজ্ঞাসা করেছো !! কিন্তু তোমার শব্দচয়নটাই তো ভুল হয়েছে ! ‘আধ্যাত্মিকতা’ কথাটি এসেছে ‘অধ্যাত্ম’ থেকে, “অধিত আত্ম বিদ্যা”-ই আধ্যাত্মিকতা। ইসলামীয় চিন্তায় আত্মবিদ্যা-র শিক্ষা কোথায় ? সেটা কিছুটা রয়েছে সুফীদের পরম্পরায় ! আউল-বাউল-ফকির ইত্যাদি নামের সাধকেরা আত্মবিদ্যার সাধনার ব্যাপারটা জানে। কিন্তু প্রচলিত যে আল-কোরআন পাওয়া যায়, সেই অনুযায়ী – ইসলামীয়গণের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হলো কলমা-রোজা-নামাজ-জাকাত-হজ।
১)__প্রত্যেক মুসলমানকে প্রত্যহ কলমা পাঠ করতে হবে।
২)__রমজান মাসে ‘রোজা’ রাখা অর্থাৎ সারাদিন উপোস করে সন্ধ্যার নামাজ অন্তে একবার আহার্য্য গ্রহণ করা। এতে কি হয় – না শরীরে সংযম আসে।
৩)__পাঁচ ওয়াক্ত নমাজ অর্থাৎ সারা দিনে পাঁচবার নামাজ পড়তে হবে।
৪)__জাকাত অর্থাৎ ধনী ব্যক্তিরা তাদের আয়ের এক-পঞ্চমাংশ দান করবে (গরীবদের বা ধর্মস্থানে)।
৫)__আর শেষ মাস বা জেলহজ্জ মাসে মক্কার কাবা শরীফ দর্শন করতে হবে _অন্ততঃ জীবনে একবার। এটাই প্রচলিত ইসলামীয় ধর্মাচারণ। ____ তাহলে এখানে আত্মবিদ্যা অর্থাৎ “আত্মানাং বিদ্ধি” বা “know thyself”-এর concept কোথায় ?
ইসলামীয় রীতি এসেছে semitic বা সুমেরীয়দের চিন্তা থেকে। প্রাচীন সুমেরীয়, অ্যাসিরিয়, আক্কাদীয়, ইহুদি, খ্রিস্টান, ইসলাম – এগুলি সবই একই চিন্তার ভিন্ন ভিন্ন রূপ। ভারতীয় প্রাচীন শাশ্ত্রাদিতে আছে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রকারের মনুষ্য জাতির কথা। সেখানে পাবে যে, দেহ-কেন্দ্রিক চিন্তা করে যারা তাদের বলা হয়েছে অসুর জাতি, আর আত্মা-কেন্দ্রিক চিন্তা করে যারা তারা সুর। এছাড়াও রয়েছে রাক্ষস জাতি, দৈত্য জাতি ইত্যাদি। অ্যাসিরিয় – নামের সাথে ‘অসুর’ কথাটির মিল রয়েছে। পুরাণাদি শাস্ত্রে এইসব জাতির culture-এর কথাও লেখা রয়েছে। বহুপূর্বে এরা শৈব ছিল। শৈব মতাবলম্বীরা এমনিতেই খুব গোঁড়া হয়। এর আগে একদিন তোমাদেরকে শিবভক্ত ঘন্টাকর্ণের কথা বলেছিলাম – যে শুধু ‘শিব’-নাম জপ করতো, আর ‘শিব’-নাম ছাড়া অন্য কোনো নাম শুনবে না বলে__ সবসময় দুই কানে দুটো ঘন্টা বেঁধে রাখতো। রাস্তা দিয়ে চলার সময় যদি কৃষ্ণনাম বা রামনাম শুনতে হয় – তাই মাথা নাড়াতে নাড়াতে রাস্তা হাঁটতো। ফলে কানের কাছে শুধু ঢং ঢং শব্দই শোনা যেতো, অন্য কোনো শব্দ কানে যেতো না।
একদিন স্বয়ং শিব তাঁর এই গোঁড়া ভক্তের ভুল ভাঙ্গানোর জন্য আরতির সময় অর্ধেক হরি এবং অর্ধেক হর রূপ ধারণ করে ‘হরিহর’ মূর্তিতে ওই ভক্তকে দর্শন দিলেন। ঘন্টাকর্ণ ব্যাপারটা দেখে চোখের ভুল ভেবে বাঁ হাত দিয়ে সেই মূর্তির মুখে হাত চেপে হরির অংশটা বাদ দিয়ে__ শুধু হর-অংশের জন্য আরতি করতে লাগলো। তাহলে বুঝতে পারছো তো___ শৈবরা কেমন ভীষণ গোঁড়া।
ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের বর্ণনা রয়েছে। সেখানে আছে_ ‘পরাজিত কুরুবংশীয়দের অনেকেই গান্ধার প্রদেশ(বর্তমান আফগানিস্তান) এবং ভগদত্ত নগরী(বর্তমান বোগদাদ, যেখানকার রাজারা কৌরবপক্ষে যোগদান করেছিল।)-র ঐদিকে পালিয়ে গিয়েছিল।’ ধারণা করা হয় যে, কোরেশ(কুরু-ঈশ) বা কোরাইশ বংশ ওই কুরুবংশেরই উত্তরসূরী। কুরুরা চন্দ্রবংশীয় ছিল – তাই এরাও চান্দ্রমাস মেনে চলে – সৌরমাস অনুযায়ী ওদের কোনো অনুষ্ঠান হয় না৷ হযরত মহম্মদের পিতা, পিতামহরা ছিলেন কোরেশ বংশের লোক এবং তাঁরা মক্কার মহাকাল মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন। হযরত খুব ছোটবেলায় বাড়ি থেকে চলে যান মেষপালকদের সঙ্গে। বেশ কিছুকাল পরে যখন ফিরে আসেন তখন উনি একেবারে ঝকঝকে সুদর্শন যুবক। এই সময়টায় উনি সাধন-ভজন করে সিদ্ধ হয়েছিলেন এবং ওনার উপর সর্বশক্তিমান আল্লাহ (ঈশ্বর)-র আদেশ হয়েছিল_ঐ অঞ্চলের অসংগঠিত যাযাবর মানবদের সংঘবদ্ধ করার ও তাদের কল্যাণ করার ।
সেই উদ্দেশ্যেই ফিরে এসে উনি ‘ইসলাম’ ধর্মমত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই কাজের জন্য সঙ্গী হিসাবেও পেয়ে গেলেন উনি (সবসময়েই পৃথিবীতে মহাপুরুষদের সহযোগীরাও সঙ্গে আসেন।) __আলী-ওসমান-আবুবকর সহ আরও অনেককে। কিন্তু প্রথমটায় মক্কাবাসী ওনাদের কাজে বাধা দিয়েছিল – ওনার বংশেরই পূর্বসূরীরা মক্কার মক্কেশ্বর(মহাকাল) মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন ! প্রচুর মূর্তি ছিল মহাকাল মন্দিরে আর কেন্দ্রস্থলে ছিল মহাকাল শিবলিঙ্গ। প্রথমে বাধা পেয়ে হযরত মুহাম্মদ মদিনায় চলে গিয়েছিলেন । সেখানে কিছুকাল থেকে, শক্তি সঞ্চয় করে_ উনি দলবলসহ মক্কা আক্রমন করলেন(হিজরি সালের সূচনা) । তখনকার মক্কায় আর কতো লোকই বা বাস করতো – তাছাড়া অপ্রস্তুত অবস্থায় অকস্মাৎ আক্রমণে পরাজিত হল তারা। মুহাম্মদ _ হোলেন তখন ঐ অঞ্চলের নেতা। এর ফলে, হযরতের ধর্মমত মক্কাতে প্রতিষ্ঠা করতে আর বেগ পেতে হয় নি। এবার শুরু হোলো হযরতের নতুন ধর্মমতের প্রচারের কাজ এবং তার রূপায়ণ। ফলস্বরুপ মহাকাল মন্দির এবং এর অভ্যন্তরস্থ মূর্তিগুলি ভাঙা শুরু হোলো ! সমস্ত মূর্তি ভাঙার শেষে শিবলিঙ্গটি ভাঙার সময় হযরতের উপর “নাজেল” হলো – “ঐ মূর্তি ভেঙো না-একে চু্ম্বন করো…!”৷
তাই আজো সেই লিঙ্গ-মূর্তিটি-ই শুধু টিকে আছে, যা কাবাশরীফের পবিত্র পাথর। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা যাকে স্পর্শ করে চুম্বন করেন হজের সময়!
তবে হজের যে নিয়মকানুনগুলি রয়েছে, সেগুলি কিন্তু আজকেও শৈবদের প্রথা মেনেই হয়। যেমন সেলাই ছাড়া দু’খন্ড কাপড় পরা, ন্যাড়া হওয়া (বৌদ্ধ এবং শৈব আচার), মন্দির প্রদক্ষিণ, প্রদক্ষিণের সময় মন্ত্র জপ, ঢিল ছোঁড়া, জল নিয়ে পাথরের মাথায় ঢালা – এসবই শৈব আচার। আজো ওখানে শিব পূজাই হয়ে চলেছে – তবে হয়তো তা ম্লেচ্ছাচারে। আর ভারতবর্ষের মন্দিরগুলিতে যে শিব পূজা হয়, তা হয়তো হয় বেদাচারে অথবা তন্ত্রাচারে।
এইভাবেই গোটা পৃথিবীতে শিব এবং শক্তির পূজাই হয় – ভিন্ন নামে, ভিন্ন আচারে।৷
গুরুমহারাজ :– তুমি এটা কি জিজ্ঞাসা করলে ? শব্দজাল সৃষ্টি করে – ভাবলে বোধহয় খুব একটা ভারী ধরনের জিজ্ঞাসা করেছো !! কিন্তু তোমার শব্দচয়নটাই তো ভুল হয়েছে ! ‘আধ্যাত্মিকতা’ কথাটি এসেছে ‘অধ্যাত্ম’ থেকে, “অধিত আত্ম বিদ্যা”-ই আধ্যাত্মিকতা। ইসলামীয় চিন্তায় আত্মবিদ্যা-র শিক্ষা কোথায় ? সেটা কিছুটা রয়েছে সুফীদের পরম্পরায় ! আউল-বাউল-ফকির ইত্যাদি নামের সাধকেরা আত্মবিদ্যার সাধনার ব্যাপারটা জানে। কিন্তু প্রচলিত যে আল-কোরআন পাওয়া যায়, সেই অনুযায়ী – ইসলামীয়গণের অবশ্য পালনীয় কর্তব্য হলো কলমা-রোজা-নামাজ-জাকাত-হজ।
১)__প্রত্যেক মুসলমানকে প্রত্যহ কলমা পাঠ করতে হবে।
২)__রমজান মাসে ‘রোজা’ রাখা অর্থাৎ সারাদিন উপোস করে সন্ধ্যার নামাজ অন্তে একবার আহার্য্য গ্রহণ করা। এতে কি হয় – না শরীরে সংযম আসে।
৩)__পাঁচ ওয়াক্ত নমাজ অর্থাৎ সারা দিনে পাঁচবার নামাজ পড়তে হবে।
৪)__জাকাত অর্থাৎ ধনী ব্যক্তিরা তাদের আয়ের এক-পঞ্চমাংশ দান করবে (গরীবদের বা ধর্মস্থানে)।
৫)__আর শেষ মাস বা জেলহজ্জ মাসে মক্কার কাবা শরীফ দর্শন করতে হবে _অন্ততঃ জীবনে একবার। এটাই প্রচলিত ইসলামীয় ধর্মাচারণ। ____ তাহলে এখানে আত্মবিদ্যা অর্থাৎ “আত্মানাং বিদ্ধি” বা “know thyself”-এর concept কোথায় ?
ইসলামীয় রীতি এসেছে semitic বা সুমেরীয়দের চিন্তা থেকে। প্রাচীন সুমেরীয়, অ্যাসিরিয়, আক্কাদীয়, ইহুদি, খ্রিস্টান, ইসলাম – এগুলি সবই একই চিন্তার ভিন্ন ভিন্ন রূপ। ভারতীয় প্রাচীন শাশ্ত্রাদিতে আছে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন প্রকারের মনুষ্য জাতির কথা। সেখানে পাবে যে, দেহ-কেন্দ্রিক চিন্তা করে যারা তাদের বলা হয়েছে অসুর জাতি, আর আত্মা-কেন্দ্রিক চিন্তা করে যারা তারা সুর। এছাড়াও রয়েছে রাক্ষস জাতি, দৈত্য জাতি ইত্যাদি। অ্যাসিরিয় – নামের সাথে ‘অসুর’ কথাটির মিল রয়েছে। পুরাণাদি শাস্ত্রে এইসব জাতির culture-এর কথাও লেখা রয়েছে। বহুপূর্বে এরা শৈব ছিল। শৈব মতাবলম্বীরা এমনিতেই খুব গোঁড়া হয়। এর আগে একদিন তোমাদেরকে শিবভক্ত ঘন্টাকর্ণের কথা বলেছিলাম – যে শুধু ‘শিব’-নাম জপ করতো, আর ‘শিব’-নাম ছাড়া অন্য কোনো নাম শুনবে না বলে__ সবসময় দুই কানে দুটো ঘন্টা বেঁধে রাখতো। রাস্তা দিয়ে চলার সময় যদি কৃষ্ণনাম বা রামনাম শুনতে হয় – তাই মাথা নাড়াতে নাড়াতে রাস্তা হাঁটতো। ফলে কানের কাছে শুধু ঢং ঢং শব্দই শোনা যেতো, অন্য কোনো শব্দ কানে যেতো না।
একদিন স্বয়ং শিব তাঁর এই গোঁড়া ভক্তের ভুল ভাঙ্গানোর জন্য আরতির সময় অর্ধেক হরি এবং অর্ধেক হর রূপ ধারণ করে ‘হরিহর’ মূর্তিতে ওই ভক্তকে দর্শন দিলেন। ঘন্টাকর্ণ ব্যাপারটা দেখে চোখের ভুল ভেবে বাঁ হাত দিয়ে সেই মূর্তির মুখে হাত চেপে হরির অংশটা বাদ দিয়ে__ শুধু হর-অংশের জন্য আরতি করতে লাগলো। তাহলে বুঝতে পারছো তো___ শৈবরা কেমন ভীষণ গোঁড়া।
ভারতীয় মহাকাব্য মহাভারতে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের বর্ণনা রয়েছে। সেখানে আছে_ ‘পরাজিত কুরুবংশীয়দের অনেকেই গান্ধার প্রদেশ(বর্তমান আফগানিস্তান) এবং ভগদত্ত নগরী(বর্তমান বোগদাদ, যেখানকার রাজারা কৌরবপক্ষে যোগদান করেছিল।)-র ঐদিকে পালিয়ে গিয়েছিল।’ ধারণা করা হয় যে, কোরেশ(কুরু-ঈশ) বা কোরাইশ বংশ ওই কুরুবংশেরই উত্তরসূরী। কুরুরা চন্দ্রবংশীয় ছিল – তাই এরাও চান্দ্রমাস মেনে চলে – সৌরমাস অনুযায়ী ওদের কোনো অনুষ্ঠান হয় না৷ হযরত মহম্মদের পিতা, পিতামহরা ছিলেন কোরেশ বংশের লোক এবং তাঁরা মক্কার মহাকাল মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন। হযরত খুব ছোটবেলায় বাড়ি থেকে চলে যান মেষপালকদের সঙ্গে। বেশ কিছুকাল পরে যখন ফিরে আসেন তখন উনি একেবারে ঝকঝকে সুদর্শন যুবক। এই সময়টায় উনি সাধন-ভজন করে সিদ্ধ হয়েছিলেন এবং ওনার উপর সর্বশক্তিমান আল্লাহ (ঈশ্বর)-র আদেশ হয়েছিল_ঐ অঞ্চলের অসংগঠিত যাযাবর মানবদের সংঘবদ্ধ করার ও তাদের কল্যাণ করার ।
সেই উদ্দেশ্যেই ফিরে এসে উনি ‘ইসলাম’ ধর্মমত প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই কাজের জন্য সঙ্গী হিসাবেও পেয়ে গেলেন উনি (সবসময়েই পৃথিবীতে মহাপুরুষদের সহযোগীরাও সঙ্গে আসেন।) __আলী-ওসমান-আবুবকর সহ আরও অনেককে। কিন্তু প্রথমটায় মক্কাবাসী ওনাদের কাজে বাধা দিয়েছিল – ওনার বংশেরই পূর্বসূরীরা মক্কার মক্কেশ্বর(মহাকাল) মন্দিরের পুরোহিত ছিলেন ! প্রচুর মূর্তি ছিল মহাকাল মন্দিরে আর কেন্দ্রস্থলে ছিল মহাকাল শিবলিঙ্গ। প্রথমে বাধা পেয়ে হযরত মুহাম্মদ মদিনায় চলে গিয়েছিলেন । সেখানে কিছুকাল থেকে, শক্তি সঞ্চয় করে_ উনি দলবলসহ মক্কা আক্রমন করলেন(হিজরি সালের সূচনা) । তখনকার মক্কায় আর কতো লোকই বা বাস করতো – তাছাড়া অপ্রস্তুত অবস্থায় অকস্মাৎ আক্রমণে পরাজিত হল তারা। মুহাম্মদ _ হোলেন তখন ঐ অঞ্চলের নেতা। এর ফলে, হযরতের ধর্মমত মক্কাতে প্রতিষ্ঠা করতে আর বেগ পেতে হয় নি। এবার শুরু হোলো হযরতের নতুন ধর্মমতের প্রচারের কাজ এবং তার রূপায়ণ। ফলস্বরুপ মহাকাল মন্দির এবং এর অভ্যন্তরস্থ মূর্তিগুলি ভাঙা শুরু হোলো ! সমস্ত মূর্তি ভাঙার শেষে শিবলিঙ্গটি ভাঙার সময় হযরতের উপর “নাজেল” হলো – “ঐ মূর্তি ভেঙো না-একে চু্ম্বন করো…!”৷
তাই আজো সেই লিঙ্গ-মূর্তিটি-ই শুধু টিকে আছে, যা কাবাশরীফের পবিত্র পাথর। ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা যাকে স্পর্শ করে চুম্বন করেন হজের সময়!
তবে হজের যে নিয়মকানুনগুলি রয়েছে, সেগুলি কিন্তু আজকেও শৈবদের প্রথা মেনেই হয়। যেমন সেলাই ছাড়া দু’খন্ড কাপড় পরা, ন্যাড়া হওয়া (বৌদ্ধ এবং শৈব আচার), মন্দির প্রদক্ষিণ, প্রদক্ষিণের সময় মন্ত্র জপ, ঢিল ছোঁড়া, জল নিয়ে পাথরের মাথায় ঢালা – এসবই শৈব আচার। আজো ওখানে শিব পূজাই হয়ে চলেছে – তবে হয়তো তা ম্লেচ্ছাচারে। আর ভারতবর্ষের মন্দিরগুলিতে যে শিব পূজা হয়, তা হয়তো হয় বেদাচারে অথবা তন্ত্রাচারে।
এইভাবেই গোটা পৃথিবীতে শিব এবং শক্তির পূজাই হয় – ভিন্ন নামে, ভিন্ন আচারে।৷