জিজ্ঞাসু :– মহাপুরুষগণ সহ ভগবানকেও যতবার এই পৃথিবীতে শরীর ধারণ করতে হয়, ততবারই তাদের অনেক কষ্ট সহ্য করতে হয় ! এটা কেন হয়_গুরু মহারাজ? এইটা ভেবে আমার খুবই কষ্ট হয় ?
গুরুমহারাজ :– তুমি নরম মনের মানুষ, ভক্তিযোগের লোক__ তাই এই রকমভাবে ভাবতে পারছো – এটা ভালো ! ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন – ” মানুষ মাগ-ছেলে, বিষয়-সম্পত্তির জন্য ঘটি ঘটি কাঁদে (অর্থাৎ কেঁদে এতো চোখের জল ফেলে যে, হয়তো তা ধরে রাখলে এক ঘটি বা তারও বেশি হয়ে যাবে) কিন্তু ঈশ্বরের জন্য ক’জন কাঁদতে পারে ?” তা – তোমার মনে যখন সেই সব মহান মানুষদের কষ্টের কথা ভেবে কষ্ট হোচ্ছে – এটা খুবই ভালো লক্ষণ! ওটাকেই অন্তরে সযত্নে লালন করো – তোমার মঙ্গল হবে।
দেখলে তো, তোমার জিজ্ঞাসার মধ্যেই তোমার উত্তর রয়েছে! এই যে বললে – তুমি তাঁদের কথা ভেবে কষ্ট পাও – কেন পাও ? তার মানে তুমি ভিতরে ভিতরে তাঁদেরকে ভালোবেসে ফেলেছো। যে যাকে যত বেশি ভালোবাসে, সে তার আনন্দের কথা ভেবে সুখ পায়, অথবা তার দুঃখ কষ্টের কথা ভেবে কষ্ট পেয়ে থাকে। দ্যাখো, কাউকে ভালোবাসলে তবেই তো যাকে ভালোবাসছো__ তার দুঃখ-কষ্টের ভাগ নিতে হয় – তাই নয় কি ? মহাপুরুষগণ, বিশেষতঃ অবতারপুরুষগণ যখন পৃথিবীতে শরীর ধারণ করেন – তাঁরা তো জীবজগতের কষ্টের কথা ভেবেই শরীর নেন। তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য হোচ্ছে সমাজকে কলুষমুক্ত করা, মানুষের মনে প্রেম-ভক্তি-ভালোবাসা জাগ্রত করে তাদেরকে চেতনাকে উন্নত করা, তাদের বিবেকের জাগরণ ঘটানো। এইবার তোমরা হয়তো ভাবছো – ” কই, তাহলে আমাদের হোচ্ছে কই ? এত মহাপুরুষ জন্মালো – জগতে হিংসা-হানাহানি বন্ধ হোলো কই, বা অধর্মের অবসান হোলো কই ?”
কিন্তু এটা কি একবারও ভেবে দেখেছো – বারেবারে মহাপুরুষগণের আগমনের ফলে বা তাঁদের আমৃত্যু প্রচেষ্টার ফলেও সমাজের এই অবস্থা – তাঁরা যদি না আসতেন, যুগোপযোগী ধর্মের শিক্ষা যদি তাঁরা বারেবারে না দিয়ে যেতেন – তাহলে মানব সমাজের কি অবস্থা হোতো ! ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, ” পানা পুকুরে ঢিল পরলে কি হয় – সাময়িকভাবে পানাগুলো একটু সরে যায়, জল দেখা যায় – কিন্তু পরক্ষণেই যে কে সেই !”
পৃথিবীর মানুষের মানসিকতাও এখন এইস্তরে রয়েছে। মহাপুরুষগণ বারবার শরীর নিয়ে চেষ্টা করছেন পুকুরের পানা সরিয়ে স্বচ্ছ জলকে সূর্যের সামনে নিয়ে আসার, যাতে সেখানে সূর্যের প্রতিফলন হয় – কিন্তু তাঁরা যতক্ষণ ধরে থাকছেন – ঠিক ততক্ষন ! আবার মানুষের মানসিকতা পূর্বের জায়গায় ফিরে যাচ্ছে !
তবে আশা হারিও না। এইভাবে পানা পরিস্কারের চেষ্টা করতে করতেই – মানুষের চেতনার উন্নতি হবে । আর সাধারণতঃ চেতনার স্তর একটা নির্দিষ্ট স্থানে(উচ্চতায়) পৌঁছালে আর নিচে নামে না। গত ১৫০- বছরে পৃথিবী গ্রহের মানুষের চেতনার অনেক উন্নতি হয়েছে এবং যত দিন যাবে, মানবের আত্মিক উত্তরণ-চেতনার উত্তরণ আরও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে।৷
গুরুমহারাজ :– তুমি নরম মনের মানুষ, ভক্তিযোগের লোক__ তাই এই রকমভাবে ভাবতে পারছো – এটা ভালো ! ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন – ” মানুষ মাগ-ছেলে, বিষয়-সম্পত্তির জন্য ঘটি ঘটি কাঁদে (অর্থাৎ কেঁদে এতো চোখের জল ফেলে যে, হয়তো তা ধরে রাখলে এক ঘটি বা তারও বেশি হয়ে যাবে) কিন্তু ঈশ্বরের জন্য ক’জন কাঁদতে পারে ?” তা – তোমার মনে যখন সেই সব মহান মানুষদের কষ্টের কথা ভেবে কষ্ট হোচ্ছে – এটা খুবই ভালো লক্ষণ! ওটাকেই অন্তরে সযত্নে লালন করো – তোমার মঙ্গল হবে।
দেখলে তো, তোমার জিজ্ঞাসার মধ্যেই তোমার উত্তর রয়েছে! এই যে বললে – তুমি তাঁদের কথা ভেবে কষ্ট পাও – কেন পাও ? তার মানে তুমি ভিতরে ভিতরে তাঁদেরকে ভালোবেসে ফেলেছো। যে যাকে যত বেশি ভালোবাসে, সে তার আনন্দের কথা ভেবে সুখ পায়, অথবা তার দুঃখ কষ্টের কথা ভেবে কষ্ট পেয়ে থাকে। দ্যাখো, কাউকে ভালোবাসলে তবেই তো যাকে ভালোবাসছো__ তার দুঃখ-কষ্টের ভাগ নিতে হয় – তাই নয় কি ? মহাপুরুষগণ, বিশেষতঃ অবতারপুরুষগণ যখন পৃথিবীতে শরীর ধারণ করেন – তাঁরা তো জীবজগতের কষ্টের কথা ভেবেই শরীর নেন। তাঁদের একমাত্র উদ্দেশ্য হোচ্ছে সমাজকে কলুষমুক্ত করা, মানুষের মনে প্রেম-ভক্তি-ভালোবাসা জাগ্রত করে তাদেরকে চেতনাকে উন্নত করা, তাদের বিবেকের জাগরণ ঘটানো। এইবার তোমরা হয়তো ভাবছো – ” কই, তাহলে আমাদের হোচ্ছে কই ? এত মহাপুরুষ জন্মালো – জগতে হিংসা-হানাহানি বন্ধ হোলো কই, বা অধর্মের অবসান হোলো কই ?”
কিন্তু এটা কি একবারও ভেবে দেখেছো – বারেবারে মহাপুরুষগণের আগমনের ফলে বা তাঁদের আমৃত্যু প্রচেষ্টার ফলেও সমাজের এই অবস্থা – তাঁরা যদি না আসতেন, যুগোপযোগী ধর্মের শিক্ষা যদি তাঁরা বারেবারে না দিয়ে যেতেন – তাহলে মানব সমাজের কি অবস্থা হোতো ! ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন, ” পানা পুকুরে ঢিল পরলে কি হয় – সাময়িকভাবে পানাগুলো একটু সরে যায়, জল দেখা যায় – কিন্তু পরক্ষণেই যে কে সেই !”
পৃথিবীর মানুষের মানসিকতাও এখন এইস্তরে রয়েছে। মহাপুরুষগণ বারবার শরীর নিয়ে চেষ্টা করছেন পুকুরের পানা সরিয়ে স্বচ্ছ জলকে সূর্যের সামনে নিয়ে আসার, যাতে সেখানে সূর্যের প্রতিফলন হয় – কিন্তু তাঁরা যতক্ষণ ধরে থাকছেন – ঠিক ততক্ষন ! আবার মানুষের মানসিকতা পূর্বের জায়গায় ফিরে যাচ্ছে !
তবে আশা হারিও না। এইভাবে পানা পরিস্কারের চেষ্টা করতে করতেই – মানুষের চেতনার উন্নতি হবে । আর সাধারণতঃ চেতনার স্তর একটা নির্দিষ্ট স্থানে(উচ্চতায়) পৌঁছালে আর নিচে নামে না। গত ১৫০- বছরে পৃথিবী গ্রহের মানুষের চেতনার অনেক উন্নতি হয়েছে এবং যত দিন যাবে, মানবের আত্মিক উত্তরণ-চেতনার উত্তরণ আরও বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হবে।৷