[আগের দিন আমরা দেখেছিলাম_গুরু মহারাজ একজনের জিজ্ঞাসার উত্তরে কথা বলতে গিয়ে ভগবান বুদ্ধ এবং পটচারার কাহিনীর অবতারণা করেছিলেন। আজ তার পরবর্ত্তী অংশ]……
……………………………………………………….
…..ধনাশ্রেষ্ঠী আর কি-ই বা করে ! মেয়ের জিদ্ বজায় রেখে ফিরে গেল ঘরে৷ ওই মেয়ে তার ঘরে শশীকলার মতো বড় হোতে থাকলো। একে ধনীকন্যা তায় রূপবতী, সুতরাং শ্রেষ্ঠীর কন্যার বিবাহের জন্য পাত্র দেখতে খুব একটা বেগ পেতে হোলো না। বিবাহের খুবই তোড়জোড় শুরু হোলো, কেননা এক মস্ত ধনীর ঘরে মেয়ের বিবাহ ঠিক হয়েছে।
এদিকে পটচারার তো প্রথম যৌবনেই তার পিতার বাগানের এক যুবক কর্মচারী বা মালীর সাথে প্রণয় সংঘটিত হয়ে গেছিল। বিবাহের রাত্রিতে বাড়ির সবাই যখন বরের আগমন ও বরযাত্রীদের অভ্যর্থনা নিয়ে ব্যস্ত ছিল, সেই ফাঁকে ওই শ্রেষ্ঠীকন্যা পটচারা পালিয়ে গেল তার প্রণয়ীর সাথে। বর ও বরপক্ষের লোকেরা যখন এই কথা জানতে পারলো, তখন তারা চরম বিশৃংখলা বা গোলমাল পাকাতে লাগলো এবং ধনাশ্রেষ্ঠীকে সকলে যা-তা বলে অপমান করতে লাগলো।
অপমানে, দুঃখে হটাৎ করে হার্ট-অ্যাটাক হয়ে গেল তার এবং ধনাশ্রেষ্ঠী তৎক্ষনাৎ ওখানেই মারা গেল। গৃহকর্তা হঠাৎ করে মারা যেতেই বর ও বরযাত্রীর দল ভয় পেয়ে এবং গতিক খারাপ দেখে পালালো। এই ঘটনায় পটচারার মা-ও অন্নজল ত্যাগ করে ধীরে ধীরে প্রাণত্যাগ করলো।
এদিকে মেয়েটি কিন্তু তার প্রণয়ীকে নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে গিয়েছিল এবং সেখানে তারা বনের ছায়ায় ঝরণার ধারে কুঠীর তৈরি করে বসবাস করতে শুরু করেছিল। ছেলেটি ধনীকন্যাকে বা মালিকের কন্যাকে বিবাহ করেছে – তাই স্ত্রীর মনোরঞ্জনের জন্য এবং তাকে সুখে রাখার জন্য প্রচণ্ড পরিশ্রম করতো। ফলে সংসারে কোন অভাব ছিল না। ধীরে ধীরে তাদের একটি সন্তান হলো – আরো কয়েক বছর পর পটচারার গর্ভে পুনরায় দ্বিতীয় সন্তানের আগমন ঘটলো। ছেলেটি প্রতিদিন গভীর জঙ্গলে যায়, কাঠ কাটে, তাছাড়াও অন্যান্যভাবে নানারকম চেষ্টা করে যাতে সংসারের সকলে সুখে থাকে!
কিন্তু মানুষের জীবন তো একভাবে যায় না ! পটচারার সেদিন পূর্ণগর্ভ অবস্থা অর্থাৎ সেইদিনই তার প্রসব হবার দিন, আর সেই দিনেই তার স্বামী সাপের কামড়ে মারা গেল। নিদারুণ শোকাকুলা ও অসহায় অবস্থায় পটচারার দ্বিতীয় সন্তান ভূমিষ্ঠ হোলো। সদ্য স্বামীহারা পটচারা ঐরকম সহায়হীন অবস্থায় শুধুমাত্র সন্তানদের বাঁচানোর তাগিদে সদ্যজাত সন্তানসহ অন্যটিকেও সাথে নিয়ে লোকালয়ের দিকে হাঁটতে লাগলো। পথে পড়ল একটি স্রোতস্বিনী ! জল এমন কিছু নাই – কিন্তু তৃষ্ণার্ত পটচারা চোখের সামনে স্বচ্ছ জলধারা দেখে –সদ্যোজাত-কে মাটিতে নামিয়ে রেখে, দৌড়ে গিয়ে আঁজলা আঁজলা জল চোখে মুখে দিয়ে তার ক্লান্তি আর তৃষ্ণা নিবারণ করতে লাগল। সদ্যোজাত শিশু কাপড় জড়ানো পাড়ে শুয়ে রয়েছে – একটি চিল এই সুযোগ ছাড়ে ! সে ছোঁ মেরে ওই শিশুকে তুলে নিয়ে চলে গেল। ব্যাকুলা জননী দৌড়ে পাড়ে উঠে ছুটে চলল চিলের পিছু পিছু ! এদিকে বড় ছেলেটি মায়ের সাথে জলে নেমেছিল – পা হড়কে সে ভেসে গেল স্রোতের টানে ! ….. [ক্রমশঃ]
(শেষাংশ পরের দিন)
……………………………………………………….
…..ধনাশ্রেষ্ঠী আর কি-ই বা করে ! মেয়ের জিদ্ বজায় রেখে ফিরে গেল ঘরে৷ ওই মেয়ে তার ঘরে শশীকলার মতো বড় হোতে থাকলো। একে ধনীকন্যা তায় রূপবতী, সুতরাং শ্রেষ্ঠীর কন্যার বিবাহের জন্য পাত্র দেখতে খুব একটা বেগ পেতে হোলো না। বিবাহের খুবই তোড়জোড় শুরু হোলো, কেননা এক মস্ত ধনীর ঘরে মেয়ের বিবাহ ঠিক হয়েছে।
এদিকে পটচারার তো প্রথম যৌবনেই তার পিতার বাগানের এক যুবক কর্মচারী বা মালীর সাথে প্রণয় সংঘটিত হয়ে গেছিল। বিবাহের রাত্রিতে বাড়ির সবাই যখন বরের আগমন ও বরযাত্রীদের অভ্যর্থনা নিয়ে ব্যস্ত ছিল, সেই ফাঁকে ওই শ্রেষ্ঠীকন্যা পটচারা পালিয়ে গেল তার প্রণয়ীর সাথে। বর ও বরপক্ষের লোকেরা যখন এই কথা জানতে পারলো, তখন তারা চরম বিশৃংখলা বা গোলমাল পাকাতে লাগলো এবং ধনাশ্রেষ্ঠীকে সকলে যা-তা বলে অপমান করতে লাগলো।
অপমানে, দুঃখে হটাৎ করে হার্ট-অ্যাটাক হয়ে গেল তার এবং ধনাশ্রেষ্ঠী তৎক্ষনাৎ ওখানেই মারা গেল। গৃহকর্তা হঠাৎ করে মারা যেতেই বর ও বরযাত্রীর দল ভয় পেয়ে এবং গতিক খারাপ দেখে পালালো। এই ঘটনায় পটচারার মা-ও অন্নজল ত্যাগ করে ধীরে ধীরে প্রাণত্যাগ করলো।
এদিকে মেয়েটি কিন্তু তার প্রণয়ীকে নিয়ে গভীর জঙ্গলে চলে গিয়েছিল এবং সেখানে তারা বনের ছায়ায় ঝরণার ধারে কুঠীর তৈরি করে বসবাস করতে শুরু করেছিল। ছেলেটি ধনীকন্যাকে বা মালিকের কন্যাকে বিবাহ করেছে – তাই স্ত্রীর মনোরঞ্জনের জন্য এবং তাকে সুখে রাখার জন্য প্রচণ্ড পরিশ্রম করতো। ফলে সংসারে কোন অভাব ছিল না। ধীরে ধীরে তাদের একটি সন্তান হলো – আরো কয়েক বছর পর পটচারার গর্ভে পুনরায় দ্বিতীয় সন্তানের আগমন ঘটলো। ছেলেটি প্রতিদিন গভীর জঙ্গলে যায়, কাঠ কাটে, তাছাড়াও অন্যান্যভাবে নানারকম চেষ্টা করে যাতে সংসারের সকলে সুখে থাকে!
কিন্তু মানুষের জীবন তো একভাবে যায় না ! পটচারার সেদিন পূর্ণগর্ভ অবস্থা অর্থাৎ সেইদিনই তার প্রসব হবার দিন, আর সেই দিনেই তার স্বামী সাপের কামড়ে মারা গেল। নিদারুণ শোকাকুলা ও অসহায় অবস্থায় পটচারার দ্বিতীয় সন্তান ভূমিষ্ঠ হোলো। সদ্য স্বামীহারা পটচারা ঐরকম সহায়হীন অবস্থায় শুধুমাত্র সন্তানদের বাঁচানোর তাগিদে সদ্যজাত সন্তানসহ অন্যটিকেও সাথে নিয়ে লোকালয়ের দিকে হাঁটতে লাগলো। পথে পড়ল একটি স্রোতস্বিনী ! জল এমন কিছু নাই – কিন্তু তৃষ্ণার্ত পটচারা চোখের সামনে স্বচ্ছ জলধারা দেখে –সদ্যোজাত-কে মাটিতে নামিয়ে রেখে, দৌড়ে গিয়ে আঁজলা আঁজলা জল চোখে মুখে দিয়ে তার ক্লান্তি আর তৃষ্ণা নিবারণ করতে লাগল। সদ্যোজাত শিশু কাপড় জড়ানো পাড়ে শুয়ে রয়েছে – একটি চিল এই সুযোগ ছাড়ে ! সে ছোঁ মেরে ওই শিশুকে তুলে নিয়ে চলে গেল। ব্যাকুলা জননী দৌড়ে পাড়ে উঠে ছুটে চলল চিলের পিছু পিছু ! এদিকে বড় ছেলেটি মায়ের সাথে জলে নেমেছিল – পা হড়কে সে ভেসে গেল স্রোতের টানে ! ….. [ক্রমশঃ]
(শেষাংশ পরের দিন)