গুরুমহারাজ (স্বামী পরমানন্দ) সেদিন কথা বলছিলেন মানুষের জীবন নিয়ে। কিভাবে মানুষ সংসারের মোহে ফেঁসে রয়েছে _সেই সব কথা! সেটা বোঝাতে উনি একটি গল্পের অবতারণা করলেন।
জঙ্গলে যখন ব্যাধেরা হনুমান বা বানর ধরে _তখন তারা এক বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে। ওরা করে কি __গভীর জঙ্গলে যেখানে গাছে গাছে প্রচুর হনু রয়েছে, সেখানে গিয়ে মাটিতে কিছু গর্ত করে রাখে, তারপর সেই গর্তে কুঁজোর মতো সরুমুখ বিশিষ্ট পাত্র বা কাঠের যন্ত্র বেশ শক্ত করে মাটিতে পুঁতে এমনভাবে চাপা দিয়ে রাখে যাতে ঐ সরু মুখটি বাইরে বেরিয়ে থাকে। এইবার সেই পোঁতা পাত্রের মধ্যে ভিজে ছোলা রেখে দেয় _আর কিছু ছোলা গর্তগুলির আশেপাশে ছড়িয়ে দেয়। এরপর ব্যাধেরা একটু দূরে কোন নিরাপদ স্থানে গিয়ে নিশ্চিন্তে বিশ্রাম নেয়।
এবার ঘটনাটা কি ঘটে জানো_হনুগুলো তো খুবই চালাক, তারা এতক্ষণ সব লক্ষ্য করছিল। ব্যাধেরা চলে যাবার পর তারা ধীরে ধীরে গাছ থেকে নেমে আসে, বাইরে যে ছোলাগুলি পড়ে ছিল সেইগুলি খেয়ে দ্যাখে সবকিছু ঠিকই আছে! তাহলে আর কি চাই! সরুমুখওয়ালা গর্তগুলির মধ্যে হাত চালান করে দেয়। আরে! কি মজা! ভিতরে মুঠো মুঠো ছোলা রয়েছে _ চাই কি! ধরে ফেলে একমুঠো ছোলা! এইবার যেই হাতটি বের করতে চায় _অমনি ঘটে বিপত্তি!!
পাত্রটির বিশেষত্ব এটাই যে, খালি হাতটা সরু হয়ে ঢুকে যাবে কিন্তু মুঠোভর্তি ছোলা ধরে ফেললে ঐ মুঠো আর বেরোবে না এবার হাতটা আটকে যেতেই হনুমান ভাবে যে গর্তই বুঝি তাকে ধরে রেখেছে।
যাইহোক, মুঠি আটকে যাওয়া মাত্র হনুটি এইবার টানাটানি করতে থাকে_কিন্ত মুঠিটা ছাড়ে না। টানাটানি করেও যখন হাত না খোলে _তখন চ্যাঁচামেচি করতে থাকে, নিজের হাতে নিজেই কামড়ায়! এতে হাতের ছাল-চামড়া ছেড়ে যায়, রক্তারক্তি হয় _তবুও হনুটি মুঠো ছাড়ে না! অনেকক্ষণ লড়ালড়ি করার পর হনুটি ক্লান্ত হয়ে, অবসন্ন হয়ে বসে বসে হাঁফায়।
ব্যাধেরা যতগুলো গর্ত করে রেখেছিল প্রায় সবগুলোতেই হনুরা আটকা পড়ে যায় আর প্রত্যেকেই ঐ একইরকমভাবে নিস্তেজ হয়ে ঝিমোয়, ভ্যাবলা হয়ে বসে থাকে!
ব্যাধেরা দুর থেকে ওদের নিস্তেজ অবস্থা দেখে এইবার ধীরে ধীরে ওদের কাছে যায়, ওদেরকে বাঁধে_তারপর ওদের হাতে থাকা ছোট ছোট মুগুর জাতীয় লাঠি দিয়ে হনুটির মাথায় মারে ঘা! আর ঘা খাওয়া মাত্রই হনু মুঠি ছেড়ে দেয় এবং মুঠি ছাড়া মাত্রই হাতটা সুরুৎ করে বেড়িয়ে আসে! হনুগুলো এতটাই নিস্তেজ থাকে যে ওরা ও গুলোকে ধীরে সুস্থে বেঁধে বস্তার মধ্যে পুড়ে গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায়।
এবার গল্পটির ব্যখ্যা প্রসঙ্গে গুরুমহারাজ বললেন _এই সংসার রূপ অরণ্যে মোহগর্ত রয়েছে। ভোগবাসনা রূপ ছোলা রয়েছে তাতে! মানুষ মোহগ্রস্থ হয়ে ভোগ-বাসনা রূপ ছোলা কে ভোগের নিমিত্ত যেই মুঠো করে ধরে ফেলে অমনি ফেঁসে যায়! হনু যেমন ভাবে যে গর্ত তাকে ধরে রেখেছে, তেমনি মানুষ ভাবে যে সংসার তাকে ধরে রেখেছে! উদাহরণ হিসেবে বলা যায়_ দেখবে সাধারণ মানুষকে যখন ধর্ম-কর্ম করতে বলা হয়, তখন সে বলে ওঠে _”কি করব বাবা! সংসারের নানান ঝামেলায় এমনই জড়িয়ে পড়েছি যে একদম বেরোতে পারছি না। আমি না থাকলে সংসারটা অচল হয়ে যাবে।”
কিন্তু তা কি হয়? তা হয় না! কোন একজনের অভাবে কি সংসার অচল হয়? সাধারণ ব্যক্তির কথা ছেড়েই দাও_ধনীলোক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এমনকি ধর্মজগতের লোকেরা চলে গেলেও জগৎসংসার যেমন চলছিল, তেমনই চলে। হয়তো একটু ঝটকা লাগে, ধাক্কা আসে কিন্তু টাল সামলে নিয়ে আবার সোজা হয়ে যায়। সংসার কাউকে ধরে রাখেনা _সময় হলে সকলকেই সংসার থেকে সাময়িক ভাবে বিদায় নিতে হয়, আবার নতুন করে শুরু করার জন্য।
কিন্তু মানুষ ভাবে যে সংসার তাকে ধরে রেখেছে, অথচ সে-ই যে ভোগ-বাসনা রূপ ছোলা-মুঠি ধরে মোহগর্তে আটকে বসে আছে __সেটার হুঁশ থাকে না।
আমি যখন হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরছিলাম তখন একজন মহাত্মা প্রবচন করার সময় বলতেন _”মুঠঠি ছোড়্”, “মুঠঠি ছোড়্”। অহংকার, অভিমান, ভোগ-লালসা, কামনা-বাসনা কত কি ধরে বসে আছি আমরা!ছাড়তে পারছি কি? এইসব ধরে বসে থাকতে গিয়েই তো সংসারে ফেঁসে আছে মানুষ! এগুলি ছাড়তে পারলে তবেই তো মুক্ত হওয়া যায়। তখন দেখবে _আরে! বন্ধন বলে তো আদতে কিছুই নেই! আমি তো নিজেই নিজেকে নানান বন্ধনে জড়িয়ে বসেছিলাম।
ব্যাপারটা সেইরকমই হয়। সাধক যখন চেতনার স্তর অতিক্রম করতে করতে ‘বোধিপ্রাপ্ত’ হয় তখন সে নিজে এইটাই feel করে যে _বন্ধন বলে কিছুই ছিল না, আমার বাসনা বা এষনাই সমস্ত বন্ধনের কারন! ভোগের বাসনায় মোহগর্তে আটকে পড়ে মানুষ কষ্ট পায়, _আর পরিত্রাহি চিৎকার করে!
এই চিৎকারে কাতর হয়ে আসেন সদগুরু! ব্যাধ যেমন বিধ্বস্ত হনুমানের মাথায় আঘাত করে _তেমনি সদগুরু ও শিষ্যের মস্তকে হাত রেখে চেতনার জগতে মৃদু আঘাত করে বলেন_”মুঠঠি ছোড়্ “।বাসনা যত আলগা হোতে থাকে _সাধক তত মুক্তির স্বাদ পায়। মস্তকে আঘাত ব্যাপারটা বলছি। গুরু কৃপা করে তাকে যে মন্ত্র দেন_তার মস্তিষ্কের সুপ্ত কোষের জাগরন হোতে সাহায্য করে _চেতনার উত্তরন হয়, বিবেকের জাগরন হয়। এর ফলে সাধক ধীরে ধীরে জগৎরহস্য, জীবনরহস্য বুঝতে পারে। তখন তার কাছে আধ্যাত্মিক জগতের সমস্ত রহস্যের উন্মোচন হয়।
বাউলগানে রয়েছে __”ইঁদুর মারা কল রয়েছে জগৎ মাঝারে।
ও তাতে _কেউ কাকে ফেলে না ধরে,
দাদাগো! আপন ইচ্ছায় সব পড়ে।
ইঁদুর মারা কল রয়েছে জগৎ মাঝারে।।”
মহামায়ার জগতে কামনা-বাসনা বা সেগুলির ভোগেচ্ছাই ‘ইঁদুর মারা কল’–বা হনুমান ধরা ফাঁদ। ইন্দ্রিয়-সুখ ভোগের জন্য মানুষ লালায়িত হয়, আর পাকে পাকে বাঁধা পড়ে। বাসনা-রূপ ছোলা-মুঠি ধরতে যায় আর মোহগর্তে আটকা পড়ে যায় মানুষ। এই ভাবে মায়া এবং মোহে আটকে পড়ে, ক্লিষ্ট হয়ে যখন আকুল প্রার্থনা করে সে_তখন তার জীবনে আসেন সদগুরু! তিনিই ভক্তকে মোহগর্ত থেকে উদ্ধার করেন, মহামায়ার জগৎ থেকে মুক্ত করেন। [ক্রমশঃ]
জঙ্গলে যখন ব্যাধেরা হনুমান বা বানর ধরে _তখন তারা এক বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করে। ওরা করে কি __গভীর জঙ্গলে যেখানে গাছে গাছে প্রচুর হনু রয়েছে, সেখানে গিয়ে মাটিতে কিছু গর্ত করে রাখে, তারপর সেই গর্তে কুঁজোর মতো সরুমুখ বিশিষ্ট পাত্র বা কাঠের যন্ত্র বেশ শক্ত করে মাটিতে পুঁতে এমনভাবে চাপা দিয়ে রাখে যাতে ঐ সরু মুখটি বাইরে বেরিয়ে থাকে। এইবার সেই পোঁতা পাত্রের মধ্যে ভিজে ছোলা রেখে দেয় _আর কিছু ছোলা গর্তগুলির আশেপাশে ছড়িয়ে দেয়। এরপর ব্যাধেরা একটু দূরে কোন নিরাপদ স্থানে গিয়ে নিশ্চিন্তে বিশ্রাম নেয়।
এবার ঘটনাটা কি ঘটে জানো_হনুগুলো তো খুবই চালাক, তারা এতক্ষণ সব লক্ষ্য করছিল। ব্যাধেরা চলে যাবার পর তারা ধীরে ধীরে গাছ থেকে নেমে আসে, বাইরে যে ছোলাগুলি পড়ে ছিল সেইগুলি খেয়ে দ্যাখে সবকিছু ঠিকই আছে! তাহলে আর কি চাই! সরুমুখওয়ালা গর্তগুলির মধ্যে হাত চালান করে দেয়। আরে! কি মজা! ভিতরে মুঠো মুঠো ছোলা রয়েছে _ চাই কি! ধরে ফেলে একমুঠো ছোলা! এইবার যেই হাতটি বের করতে চায় _অমনি ঘটে বিপত্তি!!
পাত্রটির বিশেষত্ব এটাই যে, খালি হাতটা সরু হয়ে ঢুকে যাবে কিন্তু মুঠোভর্তি ছোলা ধরে ফেললে ঐ মুঠো আর বেরোবে না এবার হাতটা আটকে যেতেই হনুমান ভাবে যে গর্তই বুঝি তাকে ধরে রেখেছে।
যাইহোক, মুঠি আটকে যাওয়া মাত্র হনুটি এইবার টানাটানি করতে থাকে_কিন্ত মুঠিটা ছাড়ে না। টানাটানি করেও যখন হাত না খোলে _তখন চ্যাঁচামেচি করতে থাকে, নিজের হাতে নিজেই কামড়ায়! এতে হাতের ছাল-চামড়া ছেড়ে যায়, রক্তারক্তি হয় _তবুও হনুটি মুঠো ছাড়ে না! অনেকক্ষণ লড়ালড়ি করার পর হনুটি ক্লান্ত হয়ে, অবসন্ন হয়ে বসে বসে হাঁফায়।
ব্যাধেরা যতগুলো গর্ত করে রেখেছিল প্রায় সবগুলোতেই হনুরা আটকা পড়ে যায় আর প্রত্যেকেই ঐ একইরকমভাবে নিস্তেজ হয়ে ঝিমোয়, ভ্যাবলা হয়ে বসে থাকে!
ব্যাধেরা দুর থেকে ওদের নিস্তেজ অবস্থা দেখে এইবার ধীরে ধীরে ওদের কাছে যায়, ওদেরকে বাঁধে_তারপর ওদের হাতে থাকা ছোট ছোট মুগুর জাতীয় লাঠি দিয়ে হনুটির মাথায় মারে ঘা! আর ঘা খাওয়া মাত্রই হনু মুঠি ছেড়ে দেয় এবং মুঠি ছাড়া মাত্রই হাতটা সুরুৎ করে বেড়িয়ে আসে! হনুগুলো এতটাই নিস্তেজ থাকে যে ওরা ও গুলোকে ধীরে সুস্থে বেঁধে বস্তার মধ্যে পুড়ে গাড়িতে করে নিয়ে চলে যায়।
এবার গল্পটির ব্যখ্যা প্রসঙ্গে গুরুমহারাজ বললেন _এই সংসার রূপ অরণ্যে মোহগর্ত রয়েছে। ভোগবাসনা রূপ ছোলা রয়েছে তাতে! মানুষ মোহগ্রস্থ হয়ে ভোগ-বাসনা রূপ ছোলা কে ভোগের নিমিত্ত যেই মুঠো করে ধরে ফেলে অমনি ফেঁসে যায়! হনু যেমন ভাবে যে গর্ত তাকে ধরে রেখেছে, তেমনি মানুষ ভাবে যে সংসার তাকে ধরে রেখেছে! উদাহরণ হিসেবে বলা যায়_ দেখবে সাধারণ মানুষকে যখন ধর্ম-কর্ম করতে বলা হয়, তখন সে বলে ওঠে _”কি করব বাবা! সংসারের নানান ঝামেলায় এমনই জড়িয়ে পড়েছি যে একদম বেরোতে পারছি না। আমি না থাকলে সংসারটা অচল হয়ে যাবে।”
কিন্তু তা কি হয়? তা হয় না! কোন একজনের অভাবে কি সংসার অচল হয়? সাধারণ ব্যক্তির কথা ছেড়েই দাও_ধনীলোক, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এমনকি ধর্মজগতের লোকেরা চলে গেলেও জগৎসংসার যেমন চলছিল, তেমনই চলে। হয়তো একটু ঝটকা লাগে, ধাক্কা আসে কিন্তু টাল সামলে নিয়ে আবার সোজা হয়ে যায়। সংসার কাউকে ধরে রাখেনা _সময় হলে সকলকেই সংসার থেকে সাময়িক ভাবে বিদায় নিতে হয়, আবার নতুন করে শুরু করার জন্য।
কিন্তু মানুষ ভাবে যে সংসার তাকে ধরে রেখেছে, অথচ সে-ই যে ভোগ-বাসনা রূপ ছোলা-মুঠি ধরে মোহগর্তে আটকে বসে আছে __সেটার হুঁশ থাকে না।
আমি যখন হিমালয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরছিলাম তখন একজন মহাত্মা প্রবচন করার সময় বলতেন _”মুঠঠি ছোড়্”, “মুঠঠি ছোড়্”। অহংকার, অভিমান, ভোগ-লালসা, কামনা-বাসনা কত কি ধরে বসে আছি আমরা!ছাড়তে পারছি কি? এইসব ধরে বসে থাকতে গিয়েই তো সংসারে ফেঁসে আছে মানুষ! এগুলি ছাড়তে পারলে তবেই তো মুক্ত হওয়া যায়। তখন দেখবে _আরে! বন্ধন বলে তো আদতে কিছুই নেই! আমি তো নিজেই নিজেকে নানান বন্ধনে জড়িয়ে বসেছিলাম।
ব্যাপারটা সেইরকমই হয়। সাধক যখন চেতনার স্তর অতিক্রম করতে করতে ‘বোধিপ্রাপ্ত’ হয় তখন সে নিজে এইটাই feel করে যে _বন্ধন বলে কিছুই ছিল না, আমার বাসনা বা এষনাই সমস্ত বন্ধনের কারন! ভোগের বাসনায় মোহগর্তে আটকে পড়ে মানুষ কষ্ট পায়, _আর পরিত্রাহি চিৎকার করে!
এই চিৎকারে কাতর হয়ে আসেন সদগুরু! ব্যাধ যেমন বিধ্বস্ত হনুমানের মাথায় আঘাত করে _তেমনি সদগুরু ও শিষ্যের মস্তকে হাত রেখে চেতনার জগতে মৃদু আঘাত করে বলেন_”মুঠঠি ছোড়্ “।বাসনা যত আলগা হোতে থাকে _সাধক তত মুক্তির স্বাদ পায়। মস্তকে আঘাত ব্যাপারটা বলছি। গুরু কৃপা করে তাকে যে মন্ত্র দেন_তার মস্তিষ্কের সুপ্ত কোষের জাগরন হোতে সাহায্য করে _চেতনার উত্তরন হয়, বিবেকের জাগরন হয়। এর ফলে সাধক ধীরে ধীরে জগৎরহস্য, জীবনরহস্য বুঝতে পারে। তখন তার কাছে আধ্যাত্মিক জগতের সমস্ত রহস্যের উন্মোচন হয়।
বাউলগানে রয়েছে __”ইঁদুর মারা কল রয়েছে জগৎ মাঝারে।
ও তাতে _কেউ কাকে ফেলে না ধরে,
দাদাগো! আপন ইচ্ছায় সব পড়ে।
ইঁদুর মারা কল রয়েছে জগৎ মাঝারে।।”
মহামায়ার জগতে কামনা-বাসনা বা সেগুলির ভোগেচ্ছাই ‘ইঁদুর মারা কল’–বা হনুমান ধরা ফাঁদ। ইন্দ্রিয়-সুখ ভোগের জন্য মানুষ লালায়িত হয়, আর পাকে পাকে বাঁধা পড়ে। বাসনা-রূপ ছোলা-মুঠি ধরতে যায় আর মোহগর্তে আটকা পড়ে যায় মানুষ। এই ভাবে মায়া এবং মোহে আটকে পড়ে, ক্লিষ্ট হয়ে যখন আকুল প্রার্থনা করে সে_তখন তার জীবনে আসেন সদগুরু! তিনিই ভক্তকে মোহগর্ত থেকে উদ্ধার করেন, মহামায়ার জগৎ থেকে মুক্ত করেন। [ক্রমশঃ]