শাস্ত্রে রয়েছে জিজ্ঞাসিত না হোলে অধ্যাত্মতত্ত্ব যেখানে সেখানে আলোচনা করতে নেই। গুরুমহারাজও সেই কথাই বলতেন, কিন্তু এটাও বলতেন যে, “এবার (এই শরীরে) মা জগদম্বার কাছ থেকে permission নেওয়া আছে _আমি আত্মতত্ত্ব, ব্রহ্মতত্ত্ব, ঈশ্বরতত্ত্ব-সম্বন্ধে বলব।স্থান, কাল, পাত্র বিচার করব না। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ বলতেন _’আমি সব কথা বলতে পারি না, মা(জগদম্বা) আমার মুখ চেপে ধরে।’ এবার কিন্তু ‘মা’ আমার মুখ চেপে ধরবে না _শর্ত করা আছে।”
.তবু ব্রহ্মবিদ্যার অধিকারী সকলে হয় না বা হওয়া সম্ভবও নয় _এ কথাও উনি বিভিন্ন সিটিং-এ নানা ভাবে উপস্থাপিত করতেন। যম-নচিকেতার কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন_ _প্রথম তিনদিন যমরাজ নচিকেতা র সাথে দেখা করেননি বা কথা বলেন নি এবং নচিকেতা যে ঐ তিনদিন জলস্পর্শ না করে, বিশ্রাম না নিয়ে একভাবে অপেক্ষমান ছিলেন __এটা ছিল ব্রহ্মবিদ্যার উপযুক্ততার প্রাথমিক পরীক্ষা! এই পরীক্ষায় সসম্মানে বালক নচিকেতা উত্তীর্ণ হয়েছিল বলেই পরবর্তীতে যমরাজ নিজে এসে ওনাকে ব্রহ্মবিদ্যা প্রদান করেন।
যাইহোক,ব্রহ্মবিদ্যার অধিকারী প্রসঙ্গে একদিন গুরুমহারাজ একটি গল্পের অবতারণা করলেন……
কোন এক রাজ্যে এক জ্ঞানী-গুণী নৃপতি বাস করতেন। তাঁর রাজ্যে প্রজারা সকলেই খুব সুখী ছিল। রাজার একমাত্র কন্যা ছিল পরমাসুন্দরী। ধীরে ধীরে রাজকন্যা যখন যৌবনপ্রাপ্তা হল _রাজা ঠিক করলেন যে এইবার তিনি কন্যার বিবাহ দেবেন। তখন রাজামশাই তাঁর রাজসভায় মন্ত্রী ও অমাত্যবর্গের কাছে রাজকন্যার উপযুক্ত পাত্রের অনুসন্ধান করতে হুকুম দিলেন। আরও বলে দিলেন যে _পাত্র উপযুক্ত বিবেচিত হলে তাকে ঐ বিবাহে রাজ্যটাকেও যৌতুক হিসেবে দিয়ে দেওয়া হবে, অর্থাৎ রাজ্যসহ রাজকন্যা দান করা হবে।
মহামন্ত্রী সবচাইতে বিচক্ষন _সে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “রাজন! আমরা সকলে রাজকন্যার জন্য পাত্র নির্বাচন করতে তো বেরোব __কিন্তু উপযুক্ততার মাপকাঠি বা মানদণ্ড কি হবে? (অর্থাৎ কি কি গুন থাকলে _তবে তাকে নির্বাচন করা যাবে)।
রাজা হেসে মহামন্ত্রী র বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করে বললেন _” মাপকাঠি তো রয়েছেই! কি শর্তে পাত্র উপযুক্ত হবে _সেকথা তো আমি এখনো বলিনি, এবার বলছি শোন। তোমরা নগরে, গ্রামে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ো_আর সবজায়গায় ঘোষনা করে দাও যে রাজকন্যার জন্য নির্বাচিত পাত্রদের প্রত্যেককে ছয়টি (6)-করে ছাগল দেওয়া হবে আর সাত(7)দিন সময় দেওয়া হবে। এরমধ্যে ঐ ছাগলগুলিকে খাইয়ে দাইয়ে এমনভাবে তৃপ্ত করে নিয়ে আসতে হবে_ যেন তাদের আর খাদ্যে কোন আস্পৃহা না থাকে। এই শর্তেই selection _ আর এই কথার অন্যথা হোলে ঐ পাত্রের হবে চরম শাস্তিভোগ।”
মহামন্ত্রী ও অন্যান্য লোকেরা সকলে উপযুক্ত পাত্রের খোঁজে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। বিভিন্ন রাজ্যের রাজকুমাররা এবং রাজন্যবর্গের ছেলেরা প্রাথমিক ভাবে রাজী হলেও শর্তের কথা শুনে অনেকেই পিছিয়ে যাচ্ছিল। যারাও বা লোভে পড়ে এল তারাও অকৃতকার্য হয়ে কারাগারে বন্দি হয়ে শাস্তি ভোগ করতে লাগলো। তারা ছাগলগুলিকে যথেষ্ট ভালোমন্দ খাবার পেটপুরে খাইয়ে নিয়ে আসছিল _কিন্তু রাজার লোক যেই কচি কাঁঠালপাতা ছাগলের মুখের সামনে ধরছিল অমনি ছাগলছানা সেগুলি খেতে শুরু করে দিচ্ছিল। ফলে তারা সবাই পরীক্ষায় ‘ফেল’ হয়ে যাচ্ছিল এবং শাশ্তি পাচ্ছিল।
সকলের শাশ্তি পাওয়া দেখে যারা ‘আসব’-‘আসব’ মনে করছিল _তাদের আসাও বন্ধ হয়ে গেল!
মন্ত্রীপরিষদেরা তো পড়ল মহা সমস্যায়! এখন কি করা উচিত বুঝতে না পেরে রাজাকে গিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরল। রাজা সব শুনে বললেন _”শুধু রাজন্যবর্গের ছেলেদের কে দেখছ কেন __সাধারণ মানুষের ঘর থেকে সেই বুদ্ধিমান,সৎ, বিচক্ষন ছেলেটিকে খুঁজে বের করো, যে আমার একমাত্র কন্যা এবং এই রাজ্যের ভার নিতে সক্ষম হবে। মন্ত্রীরা নগরে নগরে এই নতুন বার্তা পৌঁছে দিল। কিন্তু তাতেও মুস্কিল আসান হল না! সাধারণ মানুষের মনে একটু লোভের সঞ্চার হলেও _শাশ্তির ভয়ে কেউ ওমুখো হতে রাজি হচ্ছিল না।
যারা রাজকন্যার জন্য পাত্র খুঁজতে গিয়েছিল, তারা সবাই একে একে বিফল মনোরথ হয়ে রাজ্যে ফিরে গেল_ফিরলনা শুধু মহামন্ত্রী! সে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরতে ঘুরতে এক জায়গায় একটা ব্রাহ্মণ সন্তানের দেখা পেল! ছেলেটি শুধু বুদ্ধিমান ই নয়__সুপুরুষ, সৎচরিত্র, দৃঢ়চেতা, নিষ্ঠাবান ও ছিল! মহামন্ত্রী যখন ঐ ছেলেটির পৌরুষে ঘা মেরে কথা বলল যে_’কোই মাই কা লাল’ নাই, যে রাজার শর্ত পূরণ করতে পারে।”একথা শুনে ঐ ছেলে গর্জন করে উঠল_ “কি? কেউ পারবে না! দু-চার জন ব্যর্থ হয়েছে বলে সবাই কি একদলে পড়বে? আমি রাজধানীতে যাব এবং রাজার শর্তপূরন করব।” এই কথা শুনে মন্ত্রী তো মহাখুশী! ছেলেটিকে গুনে গুনে ছয় (6)-টি ছাগল দিয়ে দিল, আর বলল_সাতদিন পর রাজপ্রাসাদে গিয়ে হাজির হবে। সেখানে মহারাজ স্বয়ং তোমার পরীক্ষা নেবেন। কৃতকার্য হলেই রাজ্য সহ রাজকন্যা!!!!! [ক্রমশঃ]
.তবু ব্রহ্মবিদ্যার অধিকারী সকলে হয় না বা হওয়া সম্ভবও নয় _এ কথাও উনি বিভিন্ন সিটিং-এ নানা ভাবে উপস্থাপিত করতেন। যম-নচিকেতার কথা বলতে গিয়ে বলেছিলেন_ _প্রথম তিনদিন যমরাজ নচিকেতা র সাথে দেখা করেননি বা কথা বলেন নি এবং নচিকেতা যে ঐ তিনদিন জলস্পর্শ না করে, বিশ্রাম না নিয়ে একভাবে অপেক্ষমান ছিলেন __এটা ছিল ব্রহ্মবিদ্যার উপযুক্ততার প্রাথমিক পরীক্ষা! এই পরীক্ষায় সসম্মানে বালক নচিকেতা উত্তীর্ণ হয়েছিল বলেই পরবর্তীতে যমরাজ নিজে এসে ওনাকে ব্রহ্মবিদ্যা প্রদান করেন।
যাইহোক,ব্রহ্মবিদ্যার অধিকারী প্রসঙ্গে একদিন গুরুমহারাজ একটি গল্পের অবতারণা করলেন……
কোন এক রাজ্যে এক জ্ঞানী-গুণী নৃপতি বাস করতেন। তাঁর রাজ্যে প্রজারা সকলেই খুব সুখী ছিল। রাজার একমাত্র কন্যা ছিল পরমাসুন্দরী। ধীরে ধীরে রাজকন্যা যখন যৌবনপ্রাপ্তা হল _রাজা ঠিক করলেন যে এইবার তিনি কন্যার বিবাহ দেবেন। তখন রাজামশাই তাঁর রাজসভায় মন্ত্রী ও অমাত্যবর্গের কাছে রাজকন্যার উপযুক্ত পাত্রের অনুসন্ধান করতে হুকুম দিলেন। আরও বলে দিলেন যে _পাত্র উপযুক্ত বিবেচিত হলে তাকে ঐ বিবাহে রাজ্যটাকেও যৌতুক হিসেবে দিয়ে দেওয়া হবে, অর্থাৎ রাজ্যসহ রাজকন্যা দান করা হবে।
মহামন্ত্রী সবচাইতে বিচক্ষন _সে উঠে দাঁড়িয়ে বলল, “রাজন! আমরা সকলে রাজকন্যার জন্য পাত্র নির্বাচন করতে তো বেরোব __কিন্তু উপযুক্ততার মাপকাঠি বা মানদণ্ড কি হবে? (অর্থাৎ কি কি গুন থাকলে _তবে তাকে নির্বাচন করা যাবে)।
রাজা হেসে মহামন্ত্রী র বুদ্ধিমত্তার প্রশংসা করে বললেন _” মাপকাঠি তো রয়েছেই! কি শর্তে পাত্র উপযুক্ত হবে _সেকথা তো আমি এখনো বলিনি, এবার বলছি শোন। তোমরা নগরে, গ্রামে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ো_আর সবজায়গায় ঘোষনা করে দাও যে রাজকন্যার জন্য নির্বাচিত পাত্রদের প্রত্যেককে ছয়টি (6)-করে ছাগল দেওয়া হবে আর সাত(7)দিন সময় দেওয়া হবে। এরমধ্যে ঐ ছাগলগুলিকে খাইয়ে দাইয়ে এমনভাবে তৃপ্ত করে নিয়ে আসতে হবে_ যেন তাদের আর খাদ্যে কোন আস্পৃহা না থাকে। এই শর্তেই selection _ আর এই কথার অন্যথা হোলে ঐ পাত্রের হবে চরম শাস্তিভোগ।”
মহামন্ত্রী ও অন্যান্য লোকেরা সকলে উপযুক্ত পাত্রের খোঁজে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল। বিভিন্ন রাজ্যের রাজকুমাররা এবং রাজন্যবর্গের ছেলেরা প্রাথমিক ভাবে রাজী হলেও শর্তের কথা শুনে অনেকেই পিছিয়ে যাচ্ছিল। যারাও বা লোভে পড়ে এল তারাও অকৃতকার্য হয়ে কারাগারে বন্দি হয়ে শাস্তি ভোগ করতে লাগলো। তারা ছাগলগুলিকে যথেষ্ট ভালোমন্দ খাবার পেটপুরে খাইয়ে নিয়ে আসছিল _কিন্তু রাজার লোক যেই কচি কাঁঠালপাতা ছাগলের মুখের সামনে ধরছিল অমনি ছাগলছানা সেগুলি খেতে শুরু করে দিচ্ছিল। ফলে তারা সবাই পরীক্ষায় ‘ফেল’ হয়ে যাচ্ছিল এবং শাশ্তি পাচ্ছিল।
সকলের শাশ্তি পাওয়া দেখে যারা ‘আসব’-‘আসব’ মনে করছিল _তাদের আসাও বন্ধ হয়ে গেল!
মন্ত্রীপরিষদেরা তো পড়ল মহা সমস্যায়! এখন কি করা উচিত বুঝতে না পেরে রাজাকে গিয়ে সমস্যার কথা তুলে ধরল। রাজা সব শুনে বললেন _”শুধু রাজন্যবর্গের ছেলেদের কে দেখছ কেন __সাধারণ মানুষের ঘর থেকে সেই বুদ্ধিমান,সৎ, বিচক্ষন ছেলেটিকে খুঁজে বের করো, যে আমার একমাত্র কন্যা এবং এই রাজ্যের ভার নিতে সক্ষম হবে। মন্ত্রীরা নগরে নগরে এই নতুন বার্তা পৌঁছে দিল। কিন্তু তাতেও মুস্কিল আসান হল না! সাধারণ মানুষের মনে একটু লোভের সঞ্চার হলেও _শাশ্তির ভয়ে কেউ ওমুখো হতে রাজি হচ্ছিল না।
যারা রাজকন্যার জন্য পাত্র খুঁজতে গিয়েছিল, তারা সবাই একে একে বিফল মনোরথ হয়ে রাজ্যে ফিরে গেল_ফিরলনা শুধু মহামন্ত্রী! সে গ্রামে-গঞ্জে ঘুরতে ঘুরতে এক জায়গায় একটা ব্রাহ্মণ সন্তানের দেখা পেল! ছেলেটি শুধু বুদ্ধিমান ই নয়__সুপুরুষ, সৎচরিত্র, দৃঢ়চেতা, নিষ্ঠাবান ও ছিল! মহামন্ত্রী যখন ঐ ছেলেটির পৌরুষে ঘা মেরে কথা বলল যে_’কোই মাই কা লাল’ নাই, যে রাজার শর্ত পূরণ করতে পারে।”একথা শুনে ঐ ছেলে গর্জন করে উঠল_ “কি? কেউ পারবে না! দু-চার জন ব্যর্থ হয়েছে বলে সবাই কি একদলে পড়বে? আমি রাজধানীতে যাব এবং রাজার শর্তপূরন করব।” এই কথা শুনে মন্ত্রী তো মহাখুশী! ছেলেটিকে গুনে গুনে ছয় (6)-টি ছাগল দিয়ে দিল, আর বলল_সাতদিন পর রাজপ্রাসাদে গিয়ে হাজির হবে। সেখানে মহারাজ স্বয়ং তোমার পরীক্ষা নেবেন। কৃতকার্য হলেই রাজ্য সহ রাজকন্যা!!!!! [ক্রমশঃ]