দুটি জলচর পাখি কোন এক সমুদ্রের তীরে বাসা বানিয়ে থাকতো ৷ সমুদ্রের চড়ায় বালির খাঁজে তারা থাকে , ওখানেই ডিম পাড়ে – বাচ্চা হয় ৷ এইভাবেই ওদের প্রজাতির কলোনি গড়ে ওঠে বা ওই প্রজাতি বাঁচে এবং বাড়ে । কোন এক সময় একটু বড় প্লাবনে সমুদ্রের ঢেউ এসে ওই পক্ষীদম্পতির ডিমগুলি ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেল!
যে সময় এই ঘটনাটি ঘটেছিল, ওই দম্পতির দুজনেই সমুদ্রের জলে খাবারের সন্ধানে উড়ে বেড়াচ্ছিল ৷ দূর থেকে ঘটনাটা দেখে ওরা যখন বাসার কাছে এলো_ ততক্ষনে সমুদ্র যা করার করে দিয়েছে! কলোনির বাকি সদস্যদেরও অনেকের এই একই ঘটনা ঘটেছিল , তারা প্রাকৃতিক এই দুর্ঘটনা কে মেনেও নিল কিন্তু মানল না ওই দম্পতি!
তারা বাসায় ফিরে এসে যখন দেখল সেখানে তাদের ডিম নেই – সমুদ্র ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেছে , তখন পাখি দুটি স্থির করলো যে তারা ঐ সমুদ্রের সব জল ছেঁচে ফেলবে এবং তাদের ডিম উদ্ধার করে নিয়ে আসবে!
যেমন ভাবা তেমন কাজ! দুটি ছোট ছোট পাখি তাদের ছোট ছোট ঠোঁট দিয়ে সমুদ্রের জল তোলে, আর পাড়ে এসে বালিতে ‘পিচ্’ করে ফেলে! আবার উড়ে যায় জলে, ঠোঁটে জল তুলে নেয় _আবার বালিতে ফেলে! এইভাবে সারাদিন ধরে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলল – সমুদ্র ছেঁচে ফেলার মানসে! সন্ধ্যার প্রাক্কালে সমুদ্র দেবতা (বরুণ দেব) তাদের কাছে পক্ষীশরীরেই প্রকট হলেন! তিনি সারাদিন ধরে পাখিদুটির প্রচেষ্টা লক্ষ্য করছিলেন, ওদের এই অসম্ভব জেদ এবং নিষ্ঠা দেখে ওনার মনে খুবই করুনার উদ্রেক হয়েছিল!
যাইহোক, প্রকট হবার পর বরুনদেব তাদের ভাষায় বললেন – ” হে বন্ধুরা ! সারা দিন ধরে দেখছি তোমরা সমুদ্র থেকে কয়েক ফোঁটা করে জল তুলছ_ আর বালিতে ফেলছো , আসলে তোমরা কি করতে চাইছো ?” পক্ষীদ্বয় তাদের কাজ করতে করতেই বলল – “সমুদ্র আমাদের ডিম ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে! আমরা এই সমুদ্র সেঁচে ফেলব, আর আমাদের ডিম উদ্ধার করব ।”
বরুণদেব বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন , ” কিন্তু তা তো অসম্ভব ! তোমরা অতি ক্ষুদ্র পাখি _তোমাদের ঠোঁটে-ই বা কতটুকু জল ধরে ? সমুদ্রের এই বিশাল জলরাশি তোমরা কি সেঁচে ফেলতে পারো ? এ তো বৃথা চেষ্টা – পন্ডশ্রম !”
পাখিরা বরুণদেবের কথা না শুনে চেষ্টা চালিয়েই যেতে লাগলো, অর্থাৎ তারা ঠোঁটে করে যতটা ক্ষমতা, ততটা জল নিয়ে এসে বালিতে পিচ্ করে ফেলতে লাগল৷
তাদের এই নিরলস প্রচেষ্টায় খুশি হলেন বরুণদেব । ফিরিয়ে দিলেন তাদের ডিম । পাখিরা ডিম ফিরে পেয়ে এবার সমুদ্র থেকে খানিকটা দূরে নিরাপদ স্থানে বাসা তৈরি করল ।
গল্পটি এখানে শেষ করার পর গুরু মহারাজ উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে বললেন – মানুষ কি এই মহামায়ার জগৎ অগ্রাহ্য করে যোগমায়া অবলম্বন করে স্ব-স্বরূপে বা পরম স্থিতিতে পৌঁছাতে পারে ? পারে না , কিন্তু যদি তার প্রচেষ্টা থাকে, কর্মে নিষ্ঠা থাকে , সে যদি তার কর্তব্যে অবিচল থাকে – তাহলে গুরুকৃপা হয় , ইষ্টকৃপা হয়! গুরু স্বয়ং সেখানে প্রকট হ’ন – স্বয়ং এসে তার হাত ধরে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেন ।। [ক্রমশঃ]
যে সময় এই ঘটনাটি ঘটেছিল, ওই দম্পতির দুজনেই সমুদ্রের জলে খাবারের সন্ধানে উড়ে বেড়াচ্ছিল ৷ দূর থেকে ঘটনাটা দেখে ওরা যখন বাসার কাছে এলো_ ততক্ষনে সমুদ্র যা করার করে দিয়েছে! কলোনির বাকি সদস্যদেরও অনেকের এই একই ঘটনা ঘটেছিল , তারা প্রাকৃতিক এই দুর্ঘটনা কে মেনেও নিল কিন্তু মানল না ওই দম্পতি!
তারা বাসায় ফিরে এসে যখন দেখল সেখানে তাদের ডিম নেই – সমুদ্র ভাসিয়ে নিয়ে চলে গেছে , তখন পাখি দুটি স্থির করলো যে তারা ঐ সমুদ্রের সব জল ছেঁচে ফেলবে এবং তাদের ডিম উদ্ধার করে নিয়ে আসবে!
যেমন ভাবা তেমন কাজ! দুটি ছোট ছোট পাখি তাদের ছোট ছোট ঠোঁট দিয়ে সমুদ্রের জল তোলে, আর পাড়ে এসে বালিতে ‘পিচ্’ করে ফেলে! আবার উড়ে যায় জলে, ঠোঁটে জল তুলে নেয় _আবার বালিতে ফেলে! এইভাবে সারাদিন ধরে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলল – সমুদ্র ছেঁচে ফেলার মানসে! সন্ধ্যার প্রাক্কালে সমুদ্র দেবতা (বরুণ দেব) তাদের কাছে পক্ষীশরীরেই প্রকট হলেন! তিনি সারাদিন ধরে পাখিদুটির প্রচেষ্টা লক্ষ্য করছিলেন, ওদের এই অসম্ভব জেদ এবং নিষ্ঠা দেখে ওনার মনে খুবই করুনার উদ্রেক হয়েছিল!
যাইহোক, প্রকট হবার পর বরুনদেব তাদের ভাষায় বললেন – ” হে বন্ধুরা ! সারা দিন ধরে দেখছি তোমরা সমুদ্র থেকে কয়েক ফোঁটা করে জল তুলছ_ আর বালিতে ফেলছো , আসলে তোমরা কি করতে চাইছো ?” পক্ষীদ্বয় তাদের কাজ করতে করতেই বলল – “সমুদ্র আমাদের ডিম ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে! আমরা এই সমুদ্র সেঁচে ফেলব, আর আমাদের ডিম উদ্ধার করব ।”
বরুণদেব বিস্ময় প্রকাশ করে বললেন , ” কিন্তু তা তো অসম্ভব ! তোমরা অতি ক্ষুদ্র পাখি _তোমাদের ঠোঁটে-ই বা কতটুকু জল ধরে ? সমুদ্রের এই বিশাল জলরাশি তোমরা কি সেঁচে ফেলতে পারো ? এ তো বৃথা চেষ্টা – পন্ডশ্রম !”
পাখিরা বরুণদেবের কথা না শুনে চেষ্টা চালিয়েই যেতে লাগলো, অর্থাৎ তারা ঠোঁটে করে যতটা ক্ষমতা, ততটা জল নিয়ে এসে বালিতে পিচ্ করে ফেলতে লাগল৷
তাদের এই নিরলস প্রচেষ্টায় খুশি হলেন বরুণদেব । ফিরিয়ে দিলেন তাদের ডিম । পাখিরা ডিম ফিরে পেয়ে এবার সমুদ্র থেকে খানিকটা দূরে নিরাপদ স্থানে বাসা তৈরি করল ।
গল্পটি এখানে শেষ করার পর গুরু মহারাজ উপস্থিত সকলকে উদ্দেশ্য করে বললেন – মানুষ কি এই মহামায়ার জগৎ অগ্রাহ্য করে যোগমায়া অবলম্বন করে স্ব-স্বরূপে বা পরম স্থিতিতে পৌঁছাতে পারে ? পারে না , কিন্তু যদি তার প্রচেষ্টা থাকে, কর্মে নিষ্ঠা থাকে , সে যদি তার কর্তব্যে অবিচল থাকে – তাহলে গুরুকৃপা হয় , ইষ্টকৃপা হয়! গুরু স্বয়ং সেখানে প্রকট হ’ন – স্বয়ং এসে তার হাত ধরে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দেন ।। [ক্রমশঃ]