এই গল্পটি গল্প নয়_ সত্যি ঘটনা! ঘটনাটি গুরু মহারাজের নিজের চোখে দেখা ৷ ছোটবেলায় যখন উনি হিমালয়ের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছিলেন তখন দুইজন শৈবসাধু ওনার সঙ্গী হয়েছিলেন । ওনারা নেপালের মৎসপুছ্ এলাকা দিয়ে হিমালয়ের গভীরে ঢুকেছিলেন ৷ ওইদিক দিয়ে যাবার সময় ঐ শৈবসাধুরা ওনাকে এক নাথযোগীর কথা বলেন যার নাকি অপ্সরা-সিদ্ধি রয়েছে!
ওনারা আরো বলেছিলেন যে, তাঁরা এইদিক দিয়ে এলে ঐ সাধুর আশ্রমে যান এবং ঐ সাধুটির সিদ্ধাই-সৃষ্ট অপ্সরার আতিথেয়তা গ্রহণ করেন। অপ্সরা মা অতিথিদের খুবই আপ্যায়ন করে এবং অতিথিরা যা খেতে চায় – তাই খাওয়ায়(সিদ্ধি খাটিয়ে) ! হিমালয়ে পরিব্রাজনরত সাধু-সন্তদের কাছে যা খুবই সুখকর – কারণ তাদের ত্যাগের জীবন , বিলাসবর্জিত জীবন – সেই জীবনে যদি একটু সুখ পাওয়া যায় , যদি একটু মুখটা পাল্টায় তাহলে আর চাই কি ! তাই তাঁরা ইচ্ছে করেই ওখানে গিয়ে পুরি, জিলেবি(জেলাপি) খেয়ে আসেন!!
আর এইজন্যই বেশিরভাগ সাধুরা ঐ পথ দিয়ে যাবার সময় অপ্সরা মায়ের একটু সেবা নিয়ে যেতেন । বালক গুরুমহারাজকে নিয়ে শৈবসাধু দুজন – যাদের মধ্যে আবার একজন ছিলেন নাথযোগী(অর্থাৎ ঐ যোগীর গুরুভ্রাতা) , তারা যখন সেই আশ্রমে পৌঁছালেন তখন গুরু মহারাজ ভালো করে সাধুটিকে নিরীক্ষণ করে দেখলেন যে, সাধুটি বেশ বৃদ্ধ হয়েছে – বয়সের ভারে প্রায় ন্যুব্জ ৷ কিন্তু শুনলেন যে ঐ সিদ্ধাই সৃষ্ট অপ্সরাটি কিন্তু চিরযৌবনা , অর্থাৎ ঐ শৈবসাধু সেই যৌবন বয়সে যখন এই অপ্সরাকে সাধনা করে লাভ করেছিলেন , তখন(হয়তো ৪০/৫০-বছর আগে) ঐ অপ্সরা যে বয়সের ছিল(ষোড়শী/অষ্টাদশী) এত বছর পরেও সেই একই বয়সের রয়ে গেছে – কোন পরিবর্তন হয়নি ! গুরু মহারাজ অপ্সরা-সিদ্ধি রূপী মেয়েটিকে দেখার জন্য খুবই আগ্রহী ছিলেন! কিন্তু কি আশ্চর্য্য – সেদিন ঐ অপ্সরা মা আর আশ্রমের ঘর থেকে বেরোলই না ৷ যে দুজন শৈবসাধু গুরু মহারাজের সাথে ছিল অর্থাৎ যারা গুরু মহারাজকে ঐ অপ্সরার অতিথেয়তা ও নানান খাবার দিয়ে আপ্যায়নের কথা খুব বেশি বেশি করে বলেছিলেন – তাঁরাও সেদিন অপ্সরা মা-র ঘরের বাইরে না বেরোনোর জন্য অবাক হচ্ছিলেন! বিশেষ করে নাথ-যোগী__ কারণ তিনি আগে বেশ কয়েকবার এসেছিলেন! অবাক হচ্ছিলেন অপ্সরা-সিদ্ধ সাধুবাবাটিও !
আসলে হয়েছে কি – প্রথম যৌবনে তীব্র বৈরাগ্য নিয়ে ঐ সাধুটি ঘর ছেড়েছিলেন ৷ হিমালয়ের ঐ অঞ্চলে কোন যোগীগুরুর কাছে দীক্ষা নিয়ে সাধন ভজন করতে করতে নানারকম সিদ্ধাই অর্জন হতে থাকে তাঁর । সিদ্ধাই-এর নেশায় মত্ত হয়ে ঐ যুবক সাধু, _তার গুরুর নির্দেশ বা সাধনজীবনের লক্ষ্য একেবারেই ভুলে গিয়েছিল! তারপর একদিন তার কিছু সিদ্ধি অর্জনের ইচ্ছা হ’ল , নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নানান ক্রিয়া ও সাধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাভ হ’ল অপূর্ব লাবণ্যময়ী চিরযৌবনা অপ্সরা !
এই অপ্সরার অসাধারণ ক্ষমতা ! সে সাধুটিকে একেবারে ঘরে আবদ্ধ করে দিল! সাধুটিকে আর কুটিয়ার বাইরে যেতে দিল না! সাধুটি যখন যা ইচ্ছা করেছে অপ্সরা সাথে সাথে তা পূরণ করে দিয়েছে! যে কোন বস্তু তা ব্যাবহারেরই হোক বা আহার্য্য-ই হোক সাধুটি যা ইচ্ছা কোরতো অপ্সরা মা তাই এনে হাজির করে দিত! এইভাবে প্রায় ৪০/৫০ বছর কেটে গেছে । কালের নিয়মে সাধুটি বৃদ্ধ হয়েছে – কিন্তু অপ্সরাটি নবযৌবনা লাবণ্যময়ী রূপে-ই থেকে গিয়েছে! সাধুটি কিছুদিন পর থেকেই অর্থাৎ যৌবনের নেশা কেটে যাবার পর থেকেই আত্মগ্লানিতে ভুগতে শুরু করেছিল ! প্রতি মুহূর্ত্তেই তার মনে হোত – ” হায় হায় ! এ অামি কি করলাম ! গুরু নির্দেশিত পথ থেকে বিচ্যূত হয়ে এ আমি কোন অন্ধকারের গহ্বরে ঢুকে পড়লাম ! এ জীবনের সাধন-ভজন সব জলাঞ্জলি হয়ে গেল – পরজন্মই বা কেমন হবে – তাই বা কে জানে ?
নিরন্তর তার আরাধ্য শিবজী-র কাছে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করতেন ঐ সাধুবাবা ! কয়েকবার অপ্সরার হাত থেকে নিস্কৃতি পাবার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি – কিন্তু সেই সিদ্ধি এমনই যে , একবার আয়ত্ত হলে ঐ অপ্সরা নিজে ছেড়ে না গেলে সাধক আর তাকে ছাড়তে পারবে না! তাই সাধুবাবা শিবজীর কাছে প্রার্থনা করেই ক্ষান্ত থাকেননি , যে সমস্ত সাধুরা অপ্সরাকে চাক্ষুস করার জন্য বা তার হাত থেকে চাহিদা মতো বস্তুলাভ বা আহার্য্য লাভের জন্য ওখানে যেতো – তাদের কাছেও প্রার্থনা করতেন যাতে এই বিশেষ সিদ্ধির হাত থেকে সে রেহাই পায়! কিন্তু বয়স গড়িয়ে গেলেও তার নিস্তার মিলছিল না । অবশেষে তার চোখের জল শিবজী-কে টলাতে সক্ষম হ’ল , আর বালকবেশী স্বামী পরমানন্দের দুজন শৈবসাধুর সাথে ওখানে প্রবেশ ঘটল । …. [ক্রমশঃ]
ওনারা আরো বলেছিলেন যে, তাঁরা এইদিক দিয়ে এলে ঐ সাধুর আশ্রমে যান এবং ঐ সাধুটির সিদ্ধাই-সৃষ্ট অপ্সরার আতিথেয়তা গ্রহণ করেন। অপ্সরা মা অতিথিদের খুবই আপ্যায়ন করে এবং অতিথিরা যা খেতে চায় – তাই খাওয়ায়(সিদ্ধি খাটিয়ে) ! হিমালয়ে পরিব্রাজনরত সাধু-সন্তদের কাছে যা খুবই সুখকর – কারণ তাদের ত্যাগের জীবন , বিলাসবর্জিত জীবন – সেই জীবনে যদি একটু সুখ পাওয়া যায় , যদি একটু মুখটা পাল্টায় তাহলে আর চাই কি ! তাই তাঁরা ইচ্ছে করেই ওখানে গিয়ে পুরি, জিলেবি(জেলাপি) খেয়ে আসেন!!
আর এইজন্যই বেশিরভাগ সাধুরা ঐ পথ দিয়ে যাবার সময় অপ্সরা মায়ের একটু সেবা নিয়ে যেতেন । বালক গুরুমহারাজকে নিয়ে শৈবসাধু দুজন – যাদের মধ্যে আবার একজন ছিলেন নাথযোগী(অর্থাৎ ঐ যোগীর গুরুভ্রাতা) , তারা যখন সেই আশ্রমে পৌঁছালেন তখন গুরু মহারাজ ভালো করে সাধুটিকে নিরীক্ষণ করে দেখলেন যে, সাধুটি বেশ বৃদ্ধ হয়েছে – বয়সের ভারে প্রায় ন্যুব্জ ৷ কিন্তু শুনলেন যে ঐ সিদ্ধাই সৃষ্ট অপ্সরাটি কিন্তু চিরযৌবনা , অর্থাৎ ঐ শৈবসাধু সেই যৌবন বয়সে যখন এই অপ্সরাকে সাধনা করে লাভ করেছিলেন , তখন(হয়তো ৪০/৫০-বছর আগে) ঐ অপ্সরা যে বয়সের ছিল(ষোড়শী/অষ্টাদশী) এত বছর পরেও সেই একই বয়সের রয়ে গেছে – কোন পরিবর্তন হয়নি ! গুরু মহারাজ অপ্সরা-সিদ্ধি রূপী মেয়েটিকে দেখার জন্য খুবই আগ্রহী ছিলেন! কিন্তু কি আশ্চর্য্য – সেদিন ঐ অপ্সরা মা আর আশ্রমের ঘর থেকে বেরোলই না ৷ যে দুজন শৈবসাধু গুরু মহারাজের সাথে ছিল অর্থাৎ যারা গুরু মহারাজকে ঐ অপ্সরার অতিথেয়তা ও নানান খাবার দিয়ে আপ্যায়নের কথা খুব বেশি বেশি করে বলেছিলেন – তাঁরাও সেদিন অপ্সরা মা-র ঘরের বাইরে না বেরোনোর জন্য অবাক হচ্ছিলেন! বিশেষ করে নাথ-যোগী__ কারণ তিনি আগে বেশ কয়েকবার এসেছিলেন! অবাক হচ্ছিলেন অপ্সরা-সিদ্ধ সাধুবাবাটিও !
আসলে হয়েছে কি – প্রথম যৌবনে তীব্র বৈরাগ্য নিয়ে ঐ সাধুটি ঘর ছেড়েছিলেন ৷ হিমালয়ের ঐ অঞ্চলে কোন যোগীগুরুর কাছে দীক্ষা নিয়ে সাধন ভজন করতে করতে নানারকম সিদ্ধাই অর্জন হতে থাকে তাঁর । সিদ্ধাই-এর নেশায় মত্ত হয়ে ঐ যুবক সাধু, _তার গুরুর নির্দেশ বা সাধনজীবনের লক্ষ্য একেবারেই ভুলে গিয়েছিল! তারপর একদিন তার কিছু সিদ্ধি অর্জনের ইচ্ছা হ’ল , নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নানান ক্রিয়া ও সাধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লাভ হ’ল অপূর্ব লাবণ্যময়ী চিরযৌবনা অপ্সরা !
এই অপ্সরার অসাধারণ ক্ষমতা ! সে সাধুটিকে একেবারে ঘরে আবদ্ধ করে দিল! সাধুটিকে আর কুটিয়ার বাইরে যেতে দিল না! সাধুটি যখন যা ইচ্ছা করেছে অপ্সরা সাথে সাথে তা পূরণ করে দিয়েছে! যে কোন বস্তু তা ব্যাবহারেরই হোক বা আহার্য্য-ই হোক সাধুটি যা ইচ্ছা কোরতো অপ্সরা মা তাই এনে হাজির করে দিত! এইভাবে প্রায় ৪০/৫০ বছর কেটে গেছে । কালের নিয়মে সাধুটি বৃদ্ধ হয়েছে – কিন্তু অপ্সরাটি নবযৌবনা লাবণ্যময়ী রূপে-ই থেকে গিয়েছে! সাধুটি কিছুদিন পর থেকেই অর্থাৎ যৌবনের নেশা কেটে যাবার পর থেকেই আত্মগ্লানিতে ভুগতে শুরু করেছিল ! প্রতি মুহূর্ত্তেই তার মনে হোত – ” হায় হায় ! এ অামি কি করলাম ! গুরু নির্দেশিত পথ থেকে বিচ্যূত হয়ে এ আমি কোন অন্ধকারের গহ্বরে ঢুকে পড়লাম ! এ জীবনের সাধন-ভজন সব জলাঞ্জলি হয়ে গেল – পরজন্মই বা কেমন হবে – তাই বা কে জানে ?
নিরন্তর তার আরাধ্য শিবজী-র কাছে কেঁদে কেঁদে প্রার্থনা করতেন ঐ সাধুবাবা ! কয়েকবার অপ্সরার হাত থেকে নিস্কৃতি পাবার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি – কিন্তু সেই সিদ্ধি এমনই যে , একবার আয়ত্ত হলে ঐ অপ্সরা নিজে ছেড়ে না গেলে সাধক আর তাকে ছাড়তে পারবে না! তাই সাধুবাবা শিবজীর কাছে প্রার্থনা করেই ক্ষান্ত থাকেননি , যে সমস্ত সাধুরা অপ্সরাকে চাক্ষুস করার জন্য বা তার হাত থেকে চাহিদা মতো বস্তুলাভ বা আহার্য্য লাভের জন্য ওখানে যেতো – তাদের কাছেও প্রার্থনা করতেন যাতে এই বিশেষ সিদ্ধির হাত থেকে সে রেহাই পায়! কিন্তু বয়স গড়িয়ে গেলেও তার নিস্তার মিলছিল না । অবশেষে তার চোখের জল শিবজী-কে টলাতে সক্ষম হ’ল , আর বালকবেশী স্বামী পরমানন্দের দুজন শৈবসাধুর সাথে ওখানে প্রবেশ ঘটল । …. [ক্রমশঃ]