(পুর্ব প্রকাশিতের পর)
[২-য় অংশ]
মন্দিরে মায়ের নাম-গান শুরু হোতেই রবীন পূর্বদিনের মতাে মন্দিরের ডানদিকে আসন গ্রহণ করলো এবং একটু পরেই ধ্যানমগ্ন হয়ে গেলো।
যজ্ঞেশ্বরের উপস্থিতিতে মন্দির ও মাতৃমূর্তি যেন জাগ্রত হয়ে উঠলো। পরবর্তীতে রবীনের (স্বামী পরমানন্দের) মুখেই শুনেছিলাম যে, মন্দির প্রাঙ্গণটি বহু প্রাচীন। এখানে শ্রীরামচন্দ্র, ভগবান বুদ্ধ, শ্রীচৈতন্যদেব প্রভৃতি মহামানবগণ এসেছিলেন। আর এখন ভাগবতী তনুধারী রবীনরূপী পুরাণ পুরুষের হোল শুভ পদার্পণ। এই নবীন মহাত্মার আগমনের সংবাদ প্রচার হওয়ামাত্র সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থানীয় ভক্তরা রবীনকে দর্শন করতে ও তার শ্রীমুখের কথা শুনতে দলে দলে আসতে শুরু করলো। গ্রামের প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক মদন মাজি, পরিমল মুখার্জী এলেন, তাঁরা সাধু দর্শন ও ভগবৎ প্রসঙ্গ আলােচনা করে খুবই প্রীত হোলেন। বাড়ীর লােকজন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধে নানান কথা জিজ্ঞাসা করে বহু অজানা তথ্য ও তত্ত্ব জানতে পেরে আশ্চর্যান্বিত হয়ে গেলো। সর্বজ্ঞ ও সর্বান্তর্যামীর নিকট যেন কোন কিছুই অজানা নেই – জাগতিক ও আধ্যাত্মিক সমস্ত কিছুই তার কয়ায়ত্ত। এইভাবে সারাদিন ধরে এই আনন্দমুখর পরিবেশে শ্রীভগবানের মুখে ভগবৎ প্রসঙ্গ শুনতে পেরে নিজেদের জীবন সার্থক মনে হল। সন্ধ্যার সময় রবীন-ঠাকুরকে নিয়ে মায়ের মন্দিরে নাম-গানের পরে গানের আসর বসলো, সেখানে গ্রামস্থ রঞ্জিত দাস অনেকগুলি ধৰ্মমূলক গান পরিবেশন করলো_ গান শুনে ঠাকুরসহ সকলেই প্রীতিলাভ করলো। ঐ সঙ্গীতময় পরিবেশে ঠাকুরের মুখমণ্ডল পরমানন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো —এরপর রবীন নিজেই উদাত্তস্বরে বাউল গান গাইতে শুরু করলো। বাউলবেশী কিশাের ভগবানের কণ্ঠে বাউল গান শুনে সবাই মাতাে য়ারা হয়ে গেলো। তারপর হঠাৎই ঐ লীলাময় সাঁওতালী ভাষা নিয়েই শুরু করল দীর্ঘ আলােচনা। এ ভাষা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে — এর ব্যাকরণ আছে কিনা ইত্যাদি নানা কথা! তারপর খাওয়া-দাওয়ার জন্য কিছু সময়ের জন্য কথার ছেদ, তারপরই হিন্দুদের দেব-দেবীদের সম্বন্ধে এমন অন্তর্নিহিত ব্যাখ্যা শুরু হোল যে— আমরা যুগপৎ আনন্দ ও বিস্ময়বােধ করলাম। মর্মে মর্মে বােধ হোল বহু বছর ধরে হাজার-হাজার গ্রন্থ পড়ে যার কিছুই ধারণা হয় না, ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষের মুখে তা শ্রবণ করলে মুহূর্তের মধ্যে অন্ধকার ঘরে দীপশিখা জ্বালার ন্যায় জ্ঞানালােকে সমস্ত পরিষ্কার হয়ে যায় ।(ক্রমশঃ)
[২-য় অংশ]
মন্দিরে মায়ের নাম-গান শুরু হোতেই রবীন পূর্বদিনের মতাে মন্দিরের ডানদিকে আসন গ্রহণ করলো এবং একটু পরেই ধ্যানমগ্ন হয়ে গেলো।
যজ্ঞেশ্বরের উপস্থিতিতে মন্দির ও মাতৃমূর্তি যেন জাগ্রত হয়ে উঠলো। পরবর্তীতে রবীনের (স্বামী পরমানন্দের) মুখেই শুনেছিলাম যে, মন্দির প্রাঙ্গণটি বহু প্রাচীন। এখানে শ্রীরামচন্দ্র, ভগবান বুদ্ধ, শ্রীচৈতন্যদেব প্রভৃতি মহামানবগণ এসেছিলেন। আর এখন ভাগবতী তনুধারী রবীনরূপী পুরাণ পুরুষের হোল শুভ পদার্পণ। এই নবীন মহাত্মার আগমনের সংবাদ প্রচার হওয়ামাত্র সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থানীয় ভক্তরা রবীনকে দর্শন করতে ও তার শ্রীমুখের কথা শুনতে দলে দলে আসতে শুরু করলো। গ্রামের প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক মদন মাজি, পরিমল মুখার্জী এলেন, তাঁরা সাধু দর্শন ও ভগবৎ প্রসঙ্গ আলােচনা করে খুবই প্রীত হোলেন। বাড়ীর লােকজন ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ সম্বন্ধে নানান কথা জিজ্ঞাসা করে বহু অজানা তথ্য ও তত্ত্ব জানতে পেরে আশ্চর্যান্বিত হয়ে গেলো। সর্বজ্ঞ ও সর্বান্তর্যামীর নিকট যেন কোন কিছুই অজানা নেই – জাগতিক ও আধ্যাত্মিক সমস্ত কিছুই তার কয়ায়ত্ত। এইভাবে সারাদিন ধরে এই আনন্দমুখর পরিবেশে শ্রীভগবানের মুখে ভগবৎ প্রসঙ্গ শুনতে পেরে নিজেদের জীবন সার্থক মনে হল। সন্ধ্যার সময় রবীন-ঠাকুরকে নিয়ে মায়ের মন্দিরে নাম-গানের পরে গানের আসর বসলো, সেখানে গ্রামস্থ রঞ্জিত দাস অনেকগুলি ধৰ্মমূলক গান পরিবেশন করলো_ গান শুনে ঠাকুরসহ সকলেই প্রীতিলাভ করলো। ঐ সঙ্গীতময় পরিবেশে ঠাকুরের মুখমণ্ডল পরমানন্দে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো —এরপর রবীন নিজেই উদাত্তস্বরে বাউল গান গাইতে শুরু করলো। বাউলবেশী কিশাের ভগবানের কণ্ঠে বাউল গান শুনে সবাই মাতাে য়ারা হয়ে গেলো। তারপর হঠাৎই ঐ লীলাময় সাঁওতালী ভাষা নিয়েই শুরু করল দীর্ঘ আলােচনা। এ ভাষা কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে — এর ব্যাকরণ আছে কিনা ইত্যাদি নানা কথা! তারপর খাওয়া-দাওয়ার জন্য কিছু সময়ের জন্য কথার ছেদ, তারপরই হিন্দুদের দেব-দেবীদের সম্বন্ধে এমন অন্তর্নিহিত ব্যাখ্যা শুরু হোল যে— আমরা যুগপৎ আনন্দ ও বিস্ময়বােধ করলাম। মর্মে মর্মে বােধ হোল বহু বছর ধরে হাজার-হাজার গ্রন্থ পড়ে যার কিছুই ধারণা হয় না, ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষের মুখে তা শ্রবণ করলে মুহূর্তের মধ্যে অন্ধকার ঘরে দীপশিখা জ্বালার ন্যায় জ্ঞানালােকে সমস্ত পরিষ্কার হয়ে যায় ।(ক্রমশঃ)