[ ন’কাকা বা অন্য যে কোনো মহাপুরুষদের কে জানতে গেলেও সাধন-ভজন করতে হয়__সেই প্রসঙ্গে ই কথা হচ্ছিলো।।]
সুতরাং এটা(সাধন-ভজন করে অধ্যাত্ম পথে এগিয়ে যাওয়া) একটা সুদীর্ঘ Process ! তবে যেহেতু এটি একটা flow বা প্রবাহ তাই চিন্তার কোনো কারন নাই – সকলেরই turn আসবে এবং সকলেই অধ্যাত্মপথে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ পাবে ! তবে এখানে একটা শর্ত রয়েছে – ওই ব্যক্তির মানসিকতায় ,”আমি এগিয়ে যেতে চাই” এই প্রার্থনা বা আকাঙ্ক্ষা থাকা একান্ত জরুরী ! “গুরু-কৃষ্ণ-বৈষ্ণবের যদি দয়া হইল / একের কৃপা বিনে জীব ছারেখারে গেল ৷৷” – বৈষ্ণব শাস্ত্রের এই অমোঘ বাণী সবকালে এবং সর্বক্ষেত্রেই প্রযোজ্য । কোনো মানুষের নিজের যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট ব্যাপারে আগ্রহ না থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য একাধিক শিক্ষক নিয়োগ করা হলেও – দেখা যাবে সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে ! অপরপক্ষে কোনো ব্যক্তির যদি একটি নির্দিষ্ট ব্যাপারে নিজের আগ্রহ থাকে – তাহলে তার জন্য কোনো শিক্ষক নিয়োগ না করলেও দেখা যাবে ওই ব্যক্তি ঠিক একটা গুরু খুঁজে নিয়ে – সেই ব্যাপারটা শিখে নিয়েছে ! আর শুধু শেখাই নয়, হয়তো সে ব্যাপারটাকে আরও উন্নত বা আধুনিক করে তুলতেও সমর্থ হয়েছে !
এসব কথা থাক্, ন’কাকার কথা হোক।। ভক্তজনের সামনে , কোনো আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে ন’কাকা যেভাবে আলোচনা করতেন, তার বিভিন্ন style-এর কথা বলা হচ্ছিলো ! অনেক আগে একবার এখানে ন’কাকার আর একটা আঙ্গিকের কথাও আলোচনা হয়েছিল , সেটা হোলো – কোন ভক্তের ঘুমের মধ্যে ন’কাকার উপস্থিতি এবং তাকে সঙ্গে করে দূরে দূরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা দেওয়া, এমনকি সুদূর অতীতে (হয়তো হাজার হাজার বছর পিছনে) নিয়ে গিয়ে তখনকার বাস্তবকে প্রত্যক্ষ করানো , এবং একটা দৃশ্য বা ঘটনাকে রূপকাকারে দর্শন করিয়ে – পরে তার ব্যাখ্যা করা ! ব্যক্তিগতভাবে আমাকে নিয়েও ন’কাকা এই ধরনের লীলা অনেকবার করেছেন ৷ সুতরাং, আমার মতো আরো অনেকের সাথেই যে ন’কাকার এই ধরনের লীলা সংঘটিত হয়েছিল তা বলাই বাহুল্য !
ন’কাকাও কি গুরমহারাজের (স্বামী পরমানন্দ) মতোই সূক্ষ্মশরীরে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গিয়ে – সেখানে আবার স্থূল শরীরে প্রকট হোতে পারতেন ? দু-একটা এমন এমন বিশেষ ঘটনার কথা আমরা বিভিন্ন ভক্তদের কাছে শুনেছি যে, আমাদের এই বিশ্বাস যথেষ্ট দৃঢ় হয়েছে । পাটুলির (পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া-ব্যান্ডেল রেললাইনের একটি স্টেশন)-র একটি ব্রহ্মচারী (সন্ন্যাসী !) ছেলে রয়েছে কৌশিক, ছেলেটি গুরু মহারাজের-ই দীক্ষিত বলে আমার জানা – কিন্তু সে বরাবরই ন’কাকারও খুবই ভক্ত ছিল । আমি বনগ্রামে থাকাকালীন প্রায়ই দেখতাম দুপুরের দিকে (খাওয়া-দাওয়ার পর থেকে বিকাল পর্যন্ত) কৌশিক এবং পাটুলির-ই আর একটি যুবক বাপ্পা ন’কাকার পদপ্রান্তে বসে বসে ঘনিষ্ঠ হয়ে নিবিষ্টচিত্তে ন’কাকার কথা শুনছে, আর মাঝে মাঝে কিছু কিছু কথা জিজ্ঞাসাও করছে । ন’কাকা এমনিতে খুবই ধীরে ধীরে কথা বলতেন – ফলে ওনার গলার আওয়াজ একটু দূর থেকে শুনে,_ উনি কি বলছেন, সেটা প্রায় বোঝাই যেতো না ! তাই আমি ওনাদের আলোচনার বিষয়বস্তু কোনদিন-ই ঠিকমতো বুঝতে পারতাম না। অবশ্য এটাও ঠিক যে আমি তেমনভাবে বোঝার চেষ্টাও কোনোদিন করিনি ! কারণ আমি তখন ভাবতাম – আমরা তো ন’কাকাকে খুব কাছ থেকে ঘনিষ্ঠভাবে পেয়েছি-ই – এখন ‘ওরা’ (কৌশিক ব্রহ্মচারীর মতো যারা ন’কাকাকে ‘আপন’ ভেবে বা তার সাধন জীবনের পথিকৃৎ ভেবে আসতো) এসেছে – ওরা ওদের মনের খোরাক মিটিয়ে নিক্ ! তাই সেই মুহূর্তগুলিতে হয় আমি ন’কাকিমার সাথে গল্প করতাম অথবা একটু ঘুরে ফিরে আসার চেষ্টা করতাম ।
যাইহোক, কৌশিকদেরকে বেশ কয়েকবার ন’কাকার সাথে ঐরকম ঘনিষ্ঠ ভাবে বসে মৃদুকণ্ঠের কোন গুরুগম্ভীর আলোচনা করতে দেখে – আমি একবার ন’কাকাকে কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম – “আচ্ছা ন’কাকা ! ওই ব্রহ্মচারী (সন্ন্যাসী!) ছেলেটি আপনাকে এত কি জিজ্ঞাসা করে ? দেখছি – ও তো প্রায়ই আপনার কাছে এসে বসে থাকে – ওর ব্যাপারটা কি ?” ন’কাকার দু-এক কথার উত্তর – ” কার কথা বলছো ? ওঃ – কৌশিক ! ও – তো পাটুলীতে গঙ্গার ধারে একটা আশ্রম করে থাকে – ভালো ছেলে ! শ্রদ্ধাবান – গুরুতে নিষ্ঠা রয়েছে ! ওর একটু তন্ত্রের দিকে ঝোঁক রয়েছে – তাই ও তন্ত্র-সাধন বিষয়ে নানা কথা জিজ্ঞাসা করে !” ন’কাকার এইটুকু কথাতেই আমার কৌতুহল নিবৃত্ত হয়েছিল ।
ন’কাকা একবার আমাকে সঙ্গে করে পাটুলিও নিয়ে গিয়েছিলেন । ওখানে এক ভক্তের বাড়িতে প্রথমে ওঠা হয়েছিল,সেখান থেকে গঙ্গার ধারে অবস্থিত কৌশিকের ছোট্ট কুঠিয়াটিতে যাওয়া হয়েছিল ৷ তখন দেখেছিলাম কৌশিকের কুঠিয়াটি একেবারে গঙ্গার ধারে ! ‘গঙ্গার ধারে’– মানে একেবারেই ধারে! এমন অবস্থা যে একটা চাঙড় খসে পড়লেই ওর কুঠিয়া গঙ্গাগর্ভে চলে যাবে – আর গঙ্গার ভাঙ্গনের কথা তো সর্বজনবিদিত ! কৌশিক একবার ন’কাকাকে জিজ্ঞাসা করল – ” ন’কাকা ! আমার আস্তানার এই তো অবস্থা ! আবার স্থান পরিবর্তন করতে হবে না কি ?” … [ক্রমশঃ]
সুতরাং এটা(সাধন-ভজন করে অধ্যাত্ম পথে এগিয়ে যাওয়া) একটা সুদীর্ঘ Process ! তবে যেহেতু এটি একটা flow বা প্রবাহ তাই চিন্তার কোনো কারন নাই – সকলেরই turn আসবে এবং সকলেই অধ্যাত্মপথে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ পাবে ! তবে এখানে একটা শর্ত রয়েছে – ওই ব্যক্তির মানসিকতায় ,”আমি এগিয়ে যেতে চাই” এই প্রার্থনা বা আকাঙ্ক্ষা থাকা একান্ত জরুরী ! “গুরু-কৃষ্ণ-বৈষ্ণবের যদি দয়া হইল / একের কৃপা বিনে জীব ছারেখারে গেল ৷৷” – বৈষ্ণব শাস্ত্রের এই অমোঘ বাণী সবকালে এবং সর্বক্ষেত্রেই প্রযোজ্য । কোনো মানুষের নিজের যদি কোনো একটি নির্দিষ্ট ব্যাপারে আগ্রহ না থাকে, তাহলে ওই ব্যক্তির জন্য একাধিক শিক্ষক নিয়োগ করা হলেও – দেখা যাবে সব প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে ! অপরপক্ষে কোনো ব্যক্তির যদি একটি নির্দিষ্ট ব্যাপারে নিজের আগ্রহ থাকে – তাহলে তার জন্য কোনো শিক্ষক নিয়োগ না করলেও দেখা যাবে ওই ব্যক্তি ঠিক একটা গুরু খুঁজে নিয়ে – সেই ব্যাপারটা শিখে নিয়েছে ! আর শুধু শেখাই নয়, হয়তো সে ব্যাপারটাকে আরও উন্নত বা আধুনিক করে তুলতেও সমর্থ হয়েছে !
এসব কথা থাক্, ন’কাকার কথা হোক।। ভক্তজনের সামনে , কোনো আধ্যাত্মিক বিষয় নিয়ে ন’কাকা যেভাবে আলোচনা করতেন, তার বিভিন্ন style-এর কথা বলা হচ্ছিলো ! অনেক আগে একবার এখানে ন’কাকার আর একটা আঙ্গিকের কথাও আলোচনা হয়েছিল , সেটা হোলো – কোন ভক্তের ঘুমের মধ্যে ন’কাকার উপস্থিতি এবং তাকে সঙ্গে করে দূরে দূরে নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা দেওয়া, এমনকি সুদূর অতীতে (হয়তো হাজার হাজার বছর পিছনে) নিয়ে গিয়ে তখনকার বাস্তবকে প্রত্যক্ষ করানো , এবং একটা দৃশ্য বা ঘটনাকে রূপকাকারে দর্শন করিয়ে – পরে তার ব্যাখ্যা করা ! ব্যক্তিগতভাবে আমাকে নিয়েও ন’কাকা এই ধরনের লীলা অনেকবার করেছেন ৷ সুতরাং, আমার মতো আরো অনেকের সাথেই যে ন’কাকার এই ধরনের লীলা সংঘটিত হয়েছিল তা বলাই বাহুল্য !
ন’কাকাও কি গুরমহারাজের (স্বামী পরমানন্দ) মতোই সূক্ষ্মশরীরে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গিয়ে – সেখানে আবার স্থূল শরীরে প্রকট হোতে পারতেন ? দু-একটা এমন এমন বিশেষ ঘটনার কথা আমরা বিভিন্ন ভক্তদের কাছে শুনেছি যে, আমাদের এই বিশ্বাস যথেষ্ট দৃঢ় হয়েছে । পাটুলির (পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া-ব্যান্ডেল রেললাইনের একটি স্টেশন)-র একটি ব্রহ্মচারী (সন্ন্যাসী !) ছেলে রয়েছে কৌশিক, ছেলেটি গুরু মহারাজের-ই দীক্ষিত বলে আমার জানা – কিন্তু সে বরাবরই ন’কাকারও খুবই ভক্ত ছিল । আমি বনগ্রামে থাকাকালীন প্রায়ই দেখতাম দুপুরের দিকে (খাওয়া-দাওয়ার পর থেকে বিকাল পর্যন্ত) কৌশিক এবং পাটুলির-ই আর একটি যুবক বাপ্পা ন’কাকার পদপ্রান্তে বসে বসে ঘনিষ্ঠ হয়ে নিবিষ্টচিত্তে ন’কাকার কথা শুনছে, আর মাঝে মাঝে কিছু কিছু কথা জিজ্ঞাসাও করছে । ন’কাকা এমনিতে খুবই ধীরে ধীরে কথা বলতেন – ফলে ওনার গলার আওয়াজ একটু দূর থেকে শুনে,_ উনি কি বলছেন, সেটা প্রায় বোঝাই যেতো না ! তাই আমি ওনাদের আলোচনার বিষয়বস্তু কোনদিন-ই ঠিকমতো বুঝতে পারতাম না। অবশ্য এটাও ঠিক যে আমি তেমনভাবে বোঝার চেষ্টাও কোনোদিন করিনি ! কারণ আমি তখন ভাবতাম – আমরা তো ন’কাকাকে খুব কাছ থেকে ঘনিষ্ঠভাবে পেয়েছি-ই – এখন ‘ওরা’ (কৌশিক ব্রহ্মচারীর মতো যারা ন’কাকাকে ‘আপন’ ভেবে বা তার সাধন জীবনের পথিকৃৎ ভেবে আসতো) এসেছে – ওরা ওদের মনের খোরাক মিটিয়ে নিক্ ! তাই সেই মুহূর্তগুলিতে হয় আমি ন’কাকিমার সাথে গল্প করতাম অথবা একটু ঘুরে ফিরে আসার চেষ্টা করতাম ।
যাইহোক, কৌশিকদেরকে বেশ কয়েকবার ন’কাকার সাথে ঐরকম ঘনিষ্ঠ ভাবে বসে মৃদুকণ্ঠের কোন গুরুগম্ভীর আলোচনা করতে দেখে – আমি একবার ন’কাকাকে কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম – “আচ্ছা ন’কাকা ! ওই ব্রহ্মচারী (সন্ন্যাসী!) ছেলেটি আপনাকে এত কি জিজ্ঞাসা করে ? দেখছি – ও তো প্রায়ই আপনার কাছে এসে বসে থাকে – ওর ব্যাপারটা কি ?” ন’কাকার দু-এক কথার উত্তর – ” কার কথা বলছো ? ওঃ – কৌশিক ! ও – তো পাটুলীতে গঙ্গার ধারে একটা আশ্রম করে থাকে – ভালো ছেলে ! শ্রদ্ধাবান – গুরুতে নিষ্ঠা রয়েছে ! ওর একটু তন্ত্রের দিকে ঝোঁক রয়েছে – তাই ও তন্ত্র-সাধন বিষয়ে নানা কথা জিজ্ঞাসা করে !” ন’কাকার এইটুকু কথাতেই আমার কৌতুহল নিবৃত্ত হয়েছিল ।
ন’কাকা একবার আমাকে সঙ্গে করে পাটুলিও নিয়ে গিয়েছিলেন । ওখানে এক ভক্তের বাড়িতে প্রথমে ওঠা হয়েছিল,সেখান থেকে গঙ্গার ধারে অবস্থিত কৌশিকের ছোট্ট কুঠিয়াটিতে যাওয়া হয়েছিল ৷ তখন দেখেছিলাম কৌশিকের কুঠিয়াটি একেবারে গঙ্গার ধারে ! ‘গঙ্গার ধারে’– মানে একেবারেই ধারে! এমন অবস্থা যে একটা চাঙড় খসে পড়লেই ওর কুঠিয়া গঙ্গাগর্ভে চলে যাবে – আর গঙ্গার ভাঙ্গনের কথা তো সর্বজনবিদিত ! কৌশিক একবার ন’কাকাকে জিজ্ঞাসা করল – ” ন’কাকা ! আমার আস্তানার এই তো অবস্থা ! আবার স্থান পরিবর্তন করতে হবে না কি ?” … [ক্রমশঃ]