[ন’কাকার সাথে কৌশিক মহারাজের নানা রকম লীলার কাহিনী এর আগে বর্ননা করা হয়েছে, এবার অন্য আর এক জন মহারাজের কিছু কথা বলা হবে। __”ন’কাকা প্রসঙ্গে” লেখাটি খুব শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে। তাই এই মহারাজদের একান্ত ব্যক্তিগত কথা হোলেও সাহস করে আপনাদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।ঐ দুই মহারাজের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে নিচ্ছি!]
কৌশিক মহারাজের কথা বলতে গিয়ে_এই প্রসঙ্গেই আর একজন ব্রহ্মচারী মহারাজের কথা মনে পড়ছে যিনি বর্ধমানে থাকতেন । গুরু মহারাজের কাছে দীক্ষা গ্রহণ করার পর নিজের বাড়িতেই গভীরভাবে নিবিষ্টচিত্তে ধ্যান-জপ করতেন এবং পরবর্তী জীবনে ত্যাগব্রত অবলম্বন করে সন্ন্যাস নেবার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন ৷ গুরু মহারাজ শরীরে থাকাকালীন সময়ে সাধন-ভজন সংক্রান্ত কোনো সমস্যা দেখা দিলে (আসন-প্রাণায়াম-ধ্যান ইত্যাদি করার সময় প্রাথমিকভাবে শারীরিক বা মানসিকভাবে নানান সমস্যার উদয় হয় ৷ তখন সেগুলি গুরুর কাছে বা গুরুস্থানীয় কোনো উন্নত আধ্যাত্মিক ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করে প্রতিবিধান নিতে হয়, সমস্যামুক্ত হতে হয়।)- গুরুমহারাজের যে কোনো ভক্তরা তাঁর নিকটে গিয়ে সমস্যার কথা প্রকাশ করলে – উনি সস্নেহে সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করে দিতেন ৷ কিন্তু গুরুমহারাজ শরীর ছাড়ার পর এই ব্যাপারে senior- রা কে কতটা help করতে পারবে – তাই নিয়ে ভক্তকুল একটু দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল ।
আমাদের বর্তমান আলোচনায় উদ্দিষ্ট ভক্তটিও গুরু মহারাজের নির্দেশমতোই নিষ্ঠাভাবে সাধন-ভজন করে যাচ্ছিলেন, কিন্তু কোনো একদিন কোনো কারণে প্রাণায়ামের সময়ে বা যোগমুদ্রা করার সময় শরীর অভ্যন্তরস্থ পঞ্চবায়ু (প্রাণ, অপান, সমান, উদান, ব্যান)-র ক্রিয়ায় কোনো ব্যত্যয় ঘটে গিয়েছিল । ব্যস্, – আসন ছেড়ে ওঠার পরই শুরু হয়ে গেল মেরুদন্ড বরাবর তীব্র খিঁচ ধরা যন্ত্রণা ! সেই যন্ত্রণায় ,আর ওই খিঁচ ধরার কারণে ভক্তটি শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে কোনভাবেই স্বস্তি পাচ্ছিলেন না, এমনকি ভালোভাবে অর্থাৎ দীর্ঘভাবে নিঃশ্বাস-ও নিতে পারছিলেন না । কোনোক্রমে নাক-মুখ থেকে বুক পর্যন্ত কোনো মতে নিশ্বাস পড়ছিল । সে এক প্রাণান্তকর অবস্থা !
একদিন বা দুদিন কোনক্রমে বাড়িতে কাটিয়ে ঐ ভক্তবর বাধ্য হলেন বনগ্রামে আসতে, কারণ কোনমতেই তার শরীরের ঐ অসম্ভব অস্বস্তির উপশম হচ্ছিল না ! কিন্তু গুরুমহারাজ তো শরীরে নেই – তাতে কি ! গুরুমহারাজের ঘরটা তো রয়েছে, – তাই বনগ্রাম আশ্রমে ঢুকে তিনি একেবারে সোজা গুরুমহারাজের কুঠিয়ায় চলে গেলেন । ঘরটা তখন একেবারে ফাঁকা ছিল, তাই সেই ভক্ত চোখের জলে বুক ভিজিয়ে গুরু মহারাজের কাছে কাতর প্রার্থনা জানাতে লাগলেন – যাতে তার শরীরের এই প্রচন্ড যন্ত্রণা ও অস্বস্তির উপশম হয় ! প্রকৃতপক্ষে দু-তিন দিন ধরে চলতে থাকা ক্রমাগত এই যন্ত্রণা আর তার সহ্যও হচ্ছিল না ৷ গুরু মহারাজের কাছে প্রানের সমস্ত আকুতি নিবেদন করে তিনি গুরুমহারাজের ঘর থেকে বেরিয়ে ডান দিকে বেঁকে পাকা রাস্তায় উঠতে যাবেন – এমন সময় তিনি দেখলেন আশ্রমের অফিস ঘর (মুরারী মহারাজ যে ঘরে থাকেন) থেকে দ্রুতপায়ে ন’কাকা ওর দিকেই আসছেন এবং কাছাকাছি হতেই ন’কাকা ভক্তটিকে স্নেহপূর্ণ স্বরে জিজ্ঞাসা করলেন – ” তোর সমস্যাটা কি হয়েছে– আমাকে সব খুলে বলতো !!”
ভক্ত ছেলেটি (পরবর্তীতে ব্রহ্মচারী) তো ন’কাকার মুখে ওই কথাগুলি শুনে একেবারে হতবাক !! সে গুরু মহারাজের ঘরে তার প্রাণের কথা চোখের জলে নিবেদন করল, আর এখানে একেবারে Hot line -এ যোগাযোগ !!
যাইহোক, ভক্তটি ন’কাকাকে প্রণাম করে – তার সমস্যার কথা সবই বিস্তারিতভাবে বলেছিলেন৷ তখন ন’কাকা ওকে আশ্রমের ঈশান কোণের ঠাকুর ঘরের বারান্দায় (এখন যেখানে গুরুজীর সমাধিমন্দির হয়েছে, তখন ওখানে গুরু মহারাজের কুঠিয়ার মতোই মাটির তৈরি একটি ঠাকুর ঘর ছিল – যার দুদিকে বারান্দা ছিল।) নিয়ে গিয়ে – ওর মেরুদন্ড বরাবর হাত দিয়ে টেনে টেনে অনেকক্ষণ ধরে নানান ক্রিয়া করে দিয়েছিলেন । তারপরেই ভক্ত ছেলেটি একদম সুস্থ ! আর কখনোই তাকে ওই ধরনের সমস্যায় ভুগতে হয় নি।
যাঁর কথা এতক্ষণ বলা হোল, সেই ভক্তটি বর্তমানে সন্ন্যাস গ্রহণ করে – আত্মদর্শনের সাধনায় মগ্ন ৷ কিন্তু তার সাধন জীবনের উত্থান-পতনের ইতিহাসে শ্রী শ্রী গুরু মহারাজ ছাড়া, ন’কাকার ভূমিকাও যে অপরিসীম – সে কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে ওই সন্ন্যাসীর কোনদিন-ই কোন অসুবিধা হয় না !
ন’কাকাকে নিয়ে ,আমার সাথে ওই সন্ন্যাসী সাধকের প্রায়ই কথা হয়_তাতে আমি জানতে পেরেছিলাম যে _ঐ ঘটনার পর থেকে ,ওনার (আধ্যাত্মিক জগতের)যে কোন সমস্যাই ন’কাকা সমাধান করে দিতেন। একদিন যখন কথা হচ্ছিল তখন আমি ওনাকে একটা জিজ্ঞাসা রেখেছিলাম যে – ” আচ্ছা মহারাজ ! এইযে ন’কাকা তোমার কাছে তাঁর স্বরূপের অনেকটা উন্মোচিত করেছিলেন, এখন তোমার কাছে যদি গুরু মহারাজের কোন ভক্ত (সন্ন্যাসী বা গৃহী) ন’কাকা সম্বন্ধে কোনরূপ শংসয়মূলক বক্তব্য পেশ করে – তোমার মনে কি সেগুলি কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে ?
উত্তরটা ছিল – ” অবশ্যই না !” … [ক্রমশঃ]
কৌশিক মহারাজের কথা বলতে গিয়ে_এই প্রসঙ্গেই আর একজন ব্রহ্মচারী মহারাজের কথা মনে পড়ছে যিনি বর্ধমানে থাকতেন । গুরু মহারাজের কাছে দীক্ষা গ্রহণ করার পর নিজের বাড়িতেই গভীরভাবে নিবিষ্টচিত্তে ধ্যান-জপ করতেন এবং পরবর্তী জীবনে ত্যাগব্রত অবলম্বন করে সন্ন্যাস নেবার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছিলেন ৷ গুরু মহারাজ শরীরে থাকাকালীন সময়ে সাধন-ভজন সংক্রান্ত কোনো সমস্যা দেখা দিলে (আসন-প্রাণায়াম-ধ্যান ইত্যাদি করার সময় প্রাথমিকভাবে শারীরিক বা মানসিকভাবে নানান সমস্যার উদয় হয় ৷ তখন সেগুলি গুরুর কাছে বা গুরুস্থানীয় কোনো উন্নত আধ্যাত্মিক ব্যক্তির কাছে প্রকাশ করে প্রতিবিধান নিতে হয়, সমস্যামুক্ত হতে হয়।)- গুরুমহারাজের যে কোনো ভক্তরা তাঁর নিকটে গিয়ে সমস্যার কথা প্রকাশ করলে – উনি সস্নেহে সেই সমস্ত সমস্যার সমাধান করে দিতেন ৷ কিন্তু গুরুমহারাজ শরীর ছাড়ার পর এই ব্যাপারে senior- রা কে কতটা help করতে পারবে – তাই নিয়ে ভক্তকুল একটু দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল ।
আমাদের বর্তমান আলোচনায় উদ্দিষ্ট ভক্তটিও গুরু মহারাজের নির্দেশমতোই নিষ্ঠাভাবে সাধন-ভজন করে যাচ্ছিলেন, কিন্তু কোনো একদিন কোনো কারণে প্রাণায়ামের সময়ে বা যোগমুদ্রা করার সময় শরীর অভ্যন্তরস্থ পঞ্চবায়ু (প্রাণ, অপান, সমান, উদান, ব্যান)-র ক্রিয়ায় কোনো ব্যত্যয় ঘটে গিয়েছিল । ব্যস্, – আসন ছেড়ে ওঠার পরই শুরু হয়ে গেল মেরুদন্ড বরাবর তীব্র খিঁচ ধরা যন্ত্রণা ! সেই যন্ত্রণায় ,আর ওই খিঁচ ধরার কারণে ভক্তটি শুয়ে-বসে-দাঁড়িয়ে কোনভাবেই স্বস্তি পাচ্ছিলেন না, এমনকি ভালোভাবে অর্থাৎ দীর্ঘভাবে নিঃশ্বাস-ও নিতে পারছিলেন না । কোনোক্রমে নাক-মুখ থেকে বুক পর্যন্ত কোনো মতে নিশ্বাস পড়ছিল । সে এক প্রাণান্তকর অবস্থা !
একদিন বা দুদিন কোনক্রমে বাড়িতে কাটিয়ে ঐ ভক্তবর বাধ্য হলেন বনগ্রামে আসতে, কারণ কোনমতেই তার শরীরের ঐ অসম্ভব অস্বস্তির উপশম হচ্ছিল না ! কিন্তু গুরুমহারাজ তো শরীরে নেই – তাতে কি ! গুরুমহারাজের ঘরটা তো রয়েছে, – তাই বনগ্রাম আশ্রমে ঢুকে তিনি একেবারে সোজা গুরুমহারাজের কুঠিয়ায় চলে গেলেন । ঘরটা তখন একেবারে ফাঁকা ছিল, তাই সেই ভক্ত চোখের জলে বুক ভিজিয়ে গুরু মহারাজের কাছে কাতর প্রার্থনা জানাতে লাগলেন – যাতে তার শরীরের এই প্রচন্ড যন্ত্রণা ও অস্বস্তির উপশম হয় ! প্রকৃতপক্ষে দু-তিন দিন ধরে চলতে থাকা ক্রমাগত এই যন্ত্রণা আর তার সহ্যও হচ্ছিল না ৷ গুরু মহারাজের কাছে প্রানের সমস্ত আকুতি নিবেদন করে তিনি গুরুমহারাজের ঘর থেকে বেরিয়ে ডান দিকে বেঁকে পাকা রাস্তায় উঠতে যাবেন – এমন সময় তিনি দেখলেন আশ্রমের অফিস ঘর (মুরারী মহারাজ যে ঘরে থাকেন) থেকে দ্রুতপায়ে ন’কাকা ওর দিকেই আসছেন এবং কাছাকাছি হতেই ন’কাকা ভক্তটিকে স্নেহপূর্ণ স্বরে জিজ্ঞাসা করলেন – ” তোর সমস্যাটা কি হয়েছে– আমাকে সব খুলে বলতো !!”
ভক্ত ছেলেটি (পরবর্তীতে ব্রহ্মচারী) তো ন’কাকার মুখে ওই কথাগুলি শুনে একেবারে হতবাক !! সে গুরু মহারাজের ঘরে তার প্রাণের কথা চোখের জলে নিবেদন করল, আর এখানে একেবারে Hot line -এ যোগাযোগ !!
যাইহোক, ভক্তটি ন’কাকাকে প্রণাম করে – তার সমস্যার কথা সবই বিস্তারিতভাবে বলেছিলেন৷ তখন ন’কাকা ওকে আশ্রমের ঈশান কোণের ঠাকুর ঘরের বারান্দায় (এখন যেখানে গুরুজীর সমাধিমন্দির হয়েছে, তখন ওখানে গুরু মহারাজের কুঠিয়ার মতোই মাটির তৈরি একটি ঠাকুর ঘর ছিল – যার দুদিকে বারান্দা ছিল।) নিয়ে গিয়ে – ওর মেরুদন্ড বরাবর হাত দিয়ে টেনে টেনে অনেকক্ষণ ধরে নানান ক্রিয়া করে দিয়েছিলেন । তারপরেই ভক্ত ছেলেটি একদম সুস্থ ! আর কখনোই তাকে ওই ধরনের সমস্যায় ভুগতে হয় নি।
যাঁর কথা এতক্ষণ বলা হোল, সেই ভক্তটি বর্তমানে সন্ন্যাস গ্রহণ করে – আত্মদর্শনের সাধনায় মগ্ন ৷ কিন্তু তার সাধন জীবনের উত্থান-পতনের ইতিহাসে শ্রী শ্রী গুরু মহারাজ ছাড়া, ন’কাকার ভূমিকাও যে অপরিসীম – সে কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করতে ওই সন্ন্যাসীর কোনদিন-ই কোন অসুবিধা হয় না !
ন’কাকাকে নিয়ে ,আমার সাথে ওই সন্ন্যাসী সাধকের প্রায়ই কথা হয়_তাতে আমি জানতে পেরেছিলাম যে _ঐ ঘটনার পর থেকে ,ওনার (আধ্যাত্মিক জগতের)যে কোন সমস্যাই ন’কাকা সমাধান করে দিতেন। একদিন যখন কথা হচ্ছিল তখন আমি ওনাকে একটা জিজ্ঞাসা রেখেছিলাম যে – ” আচ্ছা মহারাজ ! এইযে ন’কাকা তোমার কাছে তাঁর স্বরূপের অনেকটা উন্মোচিত করেছিলেন, এখন তোমার কাছে যদি গুরু মহারাজের কোন ভক্ত (সন্ন্যাসী বা গৃহী) ন’কাকা সম্বন্ধে কোনরূপ শংসয়মূলক বক্তব্য পেশ করে – তোমার মনে কি সেগুলি কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে ?
উত্তরটা ছিল – ” অবশ্যই না !” … [ক্রমশঃ]