[ এর আগের সংখ্যা গুলিতে ন’কাকার কিছু ভগবৎ শক্তির প্রকাশের কথা এবং স্বয়ং ভগবান স্বামী পরমানন্দের সাথে তাঁর নিত্য যোগাযোগের কথা আলোচনা হয়েছিল।এখন তারপর থেকে…..! ]
গুরু মহারাজের শরীর চলে গেল ১৯৯৯-সালে , আর ন’কাকা পরমানন্দ লোকে চলে গেছেন ২০১৮-সালে। এখন এই দুই মহাশক্তি এক শক্তিতে, একাকারের রূপ পেয়েছে অথবা দুটিতে পৃথক পৃথক অস্তিত্ব বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে পৃথিবীর কল্যাণের জন্য পরবর্তী Plan সমূহ সেরে নিচ্ছেন ! এরপর ওনাদের কোথায় কাকে, কিভাবে শরীর নিতে হবে, পার্ষদদের কোথায় কোথায় কি কি কাজে পাঠাতে হবে – হয়তো এইসব নির্ণয় করছেন কি না, তার খবর-ই বা কে বলতে পারে !
তবে এটা নিশ্চিত যে ওনারা স্থূল শরীরে থাকুন বা নাই থাকুন (স্থূল শরীরে না থাকলেও সাধারণ মানুষেরা সূক্ষ্মশরীরে থেকে যায়, তবে ঈশ্বরের অবতার সমূহের ব্যাপার সবসময়ই আলাদা ! যেটা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোনোভাবেই মেলে না!) – অন্য যে কোনো অবস্থাতে তো রয়েছেন, কিন্তু যে অবস্থাতেই ওনারা থাকুন না কেন_ সেখান থেকেই ওনারা সবসময় মানবজাতি সহ সমস্ত জীব জগতের মঙ্গলের কথাই ভাবছেন – এটা নিশ্চিত । আবার ঐ মহাশক্তিরা স্বয়ং কখন কোথায় শরীর ধারণ করবেন তা নির্ধারিত হয়ে গেলে – সেটার বার্তাও ওনারা সূক্ষাতিসূক্ষ্ম তরঙ্গের আকারে পৃথিবীর বাতাবরণে পাঠিয়ে দেন ৷ তেমন উপযুক্ত আধার অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে উন্নত ব্যক্তি থাকলে – তার অ্যান্টেনায় (অন্তঃশ্চেতনায়) এই বার্তা ধরা পড়ে ৷ তখন তিনি বা তাঁরা যাগ-যজ্ঞাদি, প্রার্থনা, পূজা – ইত্যাদি শুরু করে দেন ! যেমনটা আমরা শাশ্ত্রে পাই _মহাপ্রভুর আগমনের আগে শান্তিপুর নিবাসী অদ্বৈত আচার্যের প্রত্যহ প্রত্যুষে গঙ্গাজলে দাঁড়িয়ে তুলসি অঞ্জলি দিয়ে ঈশ্বরের অবতরণের জন্য কাতর নিবেদনের কথা !
গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা থেকে আমরা জানতে পারি যে – ওনার এই শরীর পৃথিবীতে আগমনের আগে সাতজনঋষি ঊর্ধ্ববাহু হয়ে হিমালয়ের গভীর কোন দুর্গম পর্বতের উচ্চ চূড়ায় ওনার পৃথিবীতে নেমে আসার জন্য আহ্বান করেছিলেন ৷ গুরুমহারাজ বলেছিলেন – তাদের (সাতজন ঋষির) আকুল প্রার্থনার ফলে অখন্ডতত্ত্বের মধ্যে অতিসূক্ষ বেদনার স্পন্দন সৃষ্টি হয় – আর তাতেই অখণ্ড থেকে খণ্ড-সত্ত্বায় রূপ পরিগ্রহ ! ঋষিদের একান্ত-আকুল প্রার্থনার এমন টান যে, সেই টানের ফলেই ঐ অখন্ড তত্ত্ব থেকে সদ্য সৃষ্ট খন্ড তত্ত্ব কাজ করতে শুরু করে – ফলে পৃথিবীর দিকে আকর্ষণ অনুভূত হয়েছিল স্বামী পরমানন্দের শরীর ধারনের তত্ত্বের রূপটি অর্থাৎ খন্ডিত সেই মহাশক্তি !
তাহলে বোঝা গেল মহাশক্তির অবতরনের একটা বার্তা আগেই পৃথিবীতে চলে আসে এবং সেই বার্তাকে গ্রহণ করেই সত্যদ্রষ্টা বা কালদ্রষ্টা ঋষিকুলের একাংশ ঈশ্বরের অবতরণ-কে স্বাগত জানান ।
ভারতীয় সমাজে সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই ধরনের একটা রীতির প্রচলন রয়েছে ! যদি কেউ গৃহস্থ বাড়িতে আসার খবর থাকে – তাহলে ওই বাড়ীর গৃহকর্তা বা তার প্রতিনিধি অতিথিকে আপ্যায়ন করে নিয়ে আসার জন্য বাড়ি থেকে একটু বেশিদূর পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে অভ্যর্থনা করে নিয়ে আসে ৷ আবার ওই অতিথি বিদায় নেবার সময় গৃহস্বামী অতিথির সঙ্গে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়ে তাঁকে বিদায় জানান (প্রত্যুদগমন) ! ন’কাকার ক্ষেত্রে ভারতীয় এই রীতিটির পালন ও প্রকাশ আমরা সবসময়েই প্রত্যক্ষ করতাম ।
অবশ্য ন’কাকার মধ্যে আদর্শ বাঙালি গৃহস্থের সমস্তরকম লক্ষণই ছিল । উনি আদর্শ বাঙালির পোশাক ধুতি-পাঞ্জাবি পড়তেন (আমরা কখনই ন’কাকাকে ধুতি-কাপড় ছাড়া অন্য কোন বস্ত্র পরতে দেখিনি), বাঙালি গৃহস্থ বাড়িতে যে যে নিয়ম পালন করতে হয় অর্থাৎ বারো মাসে তেরো পার্বণের সমস্ত অনুষ্ঠান উনি পালন করতেন । বাঙালি গৃহস্থবাড়িতে গোয়ালে গরু রাখার চল্ রয়েছে – উনি সে ব্যাপারে খুবই সচেতন ছিলেন ৷ অনেকের শত মানা সত্বেও উনি গো-সেবা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন নি ! বাঙালি ব্রাহ্মণ শরীর ছিল ওনার আর ব্রাহ্মণের সাধারণ কাজই হল যজন-যাজন-অধ্যাপনা, সাধারণভাবে ন’কাকা সারাজীবন এই কাজগুলিতেই নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন ৷
মুখার্জী পরিবারে দেখেছি ন’কাকা বয়োজ্যেষ্ঠদের যথোচিত সম্মান করতেন, বাড়ির ছোটদের প্রতি ছিলেন প্রচণ্ড Caring ! পাড়া-পড়শিদের প্রতিও উনি ছিলেন খুবই সহৃদয়, ফলে প্রতিবেশীরাও ওনাকে যথেষ্ট সম্মান বা শ্রদ্ধা করতেন । সারাজীবন প্রচণ্ড নির্বিরোধী মানুষ ছিলেন ন’কাকা– কোন তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণে কখনোই কারো সাথে উনি অশান্তি করতেন না –সেরকম কোনো ঘটনার সম্মুখীন হলে খুব সুকৌশলে ব্যাপারটিকে এড়িয়ে চলতেন । … [ক্রমশঃ]
গুরু মহারাজের শরীর চলে গেল ১৯৯৯-সালে , আর ন’কাকা পরমানন্দ লোকে চলে গেছেন ২০১৮-সালে। এখন এই দুই মহাশক্তি এক শক্তিতে, একাকারের রূপ পেয়েছে অথবা দুটিতে পৃথক পৃথক অস্তিত্ব বজায় রেখে পাশাপাশি অবস্থান করে পৃথিবীর কল্যাণের জন্য পরবর্তী Plan সমূহ সেরে নিচ্ছেন ! এরপর ওনাদের কোথায় কাকে, কিভাবে শরীর নিতে হবে, পার্ষদদের কোথায় কোথায় কি কি কাজে পাঠাতে হবে – হয়তো এইসব নির্ণয় করছেন কি না, তার খবর-ই বা কে বলতে পারে !
তবে এটা নিশ্চিত যে ওনারা স্থূল শরীরে থাকুন বা নাই থাকুন (স্থূল শরীরে না থাকলেও সাধারণ মানুষেরা সূক্ষ্মশরীরে থেকে যায়, তবে ঈশ্বরের অবতার সমূহের ব্যাপার সবসময়ই আলাদা ! যেটা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কোনোভাবেই মেলে না!) – অন্য যে কোনো অবস্থাতে তো রয়েছেন, কিন্তু যে অবস্থাতেই ওনারা থাকুন না কেন_ সেখান থেকেই ওনারা সবসময় মানবজাতি সহ সমস্ত জীব জগতের মঙ্গলের কথাই ভাবছেন – এটা নিশ্চিত । আবার ঐ মহাশক্তিরা স্বয়ং কখন কোথায় শরীর ধারণ করবেন তা নির্ধারিত হয়ে গেলে – সেটার বার্তাও ওনারা সূক্ষাতিসূক্ষ্ম তরঙ্গের আকারে পৃথিবীর বাতাবরণে পাঠিয়ে দেন ৷ তেমন উপযুক্ত আধার অর্থাৎ আধ্যাত্মিক ভাবে উন্নত ব্যক্তি থাকলে – তার অ্যান্টেনায় (অন্তঃশ্চেতনায়) এই বার্তা ধরা পড়ে ৷ তখন তিনি বা তাঁরা যাগ-যজ্ঞাদি, প্রার্থনা, পূজা – ইত্যাদি শুরু করে দেন ! যেমনটা আমরা শাশ্ত্রে পাই _মহাপ্রভুর আগমনের আগে শান্তিপুর নিবাসী অদ্বৈত আচার্যের প্রত্যহ প্রত্যুষে গঙ্গাজলে দাঁড়িয়ে তুলসি অঞ্জলি দিয়ে ঈশ্বরের অবতরণের জন্য কাতর নিবেদনের কথা !
গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা থেকে আমরা জানতে পারি যে – ওনার এই শরীর পৃথিবীতে আগমনের আগে সাতজনঋষি ঊর্ধ্ববাহু হয়ে হিমালয়ের গভীর কোন দুর্গম পর্বতের উচ্চ চূড়ায় ওনার পৃথিবীতে নেমে আসার জন্য আহ্বান করেছিলেন ৷ গুরুমহারাজ বলেছিলেন – তাদের (সাতজন ঋষির) আকুল প্রার্থনার ফলে অখন্ডতত্ত্বের মধ্যে অতিসূক্ষ বেদনার স্পন্দন সৃষ্টি হয় – আর তাতেই অখণ্ড থেকে খণ্ড-সত্ত্বায় রূপ পরিগ্রহ ! ঋষিদের একান্ত-আকুল প্রার্থনার এমন টান যে, সেই টানের ফলেই ঐ অখন্ড তত্ত্ব থেকে সদ্য সৃষ্ট খন্ড তত্ত্ব কাজ করতে শুরু করে – ফলে পৃথিবীর দিকে আকর্ষণ অনুভূত হয়েছিল স্বামী পরমানন্দের শরীর ধারনের তত্ত্বের রূপটি অর্থাৎ খন্ডিত সেই মহাশক্তি !
তাহলে বোঝা গেল মহাশক্তির অবতরনের একটা বার্তা আগেই পৃথিবীতে চলে আসে এবং সেই বার্তাকে গ্রহণ করেই সত্যদ্রষ্টা বা কালদ্রষ্টা ঋষিকুলের একাংশ ঈশ্বরের অবতরণ-কে স্বাগত জানান ।
ভারতীয় সমাজে সাধারণ মানুষের মধ্যেও এই ধরনের একটা রীতির প্রচলন রয়েছে ! যদি কেউ গৃহস্থ বাড়িতে আসার খবর থাকে – তাহলে ওই বাড়ীর গৃহকর্তা বা তার প্রতিনিধি অতিথিকে আপ্যায়ন করে নিয়ে আসার জন্য বাড়ি থেকে একটু বেশিদূর পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে অভ্যর্থনা করে নিয়ে আসে ৷ আবার ওই অতিথি বিদায় নেবার সময় গৃহস্বামী অতিথির সঙ্গে বেশ খানিকটা এগিয়ে গিয়ে তাঁকে বিদায় জানান (প্রত্যুদগমন) ! ন’কাকার ক্ষেত্রে ভারতীয় এই রীতিটির পালন ও প্রকাশ আমরা সবসময়েই প্রত্যক্ষ করতাম ।
অবশ্য ন’কাকার মধ্যে আদর্শ বাঙালি গৃহস্থের সমস্তরকম লক্ষণই ছিল । উনি আদর্শ বাঙালির পোশাক ধুতি-পাঞ্জাবি পড়তেন (আমরা কখনই ন’কাকাকে ধুতি-কাপড় ছাড়া অন্য কোন বস্ত্র পরতে দেখিনি), বাঙালি গৃহস্থ বাড়িতে যে যে নিয়ম পালন করতে হয় অর্থাৎ বারো মাসে তেরো পার্বণের সমস্ত অনুষ্ঠান উনি পালন করতেন । বাঙালি গৃহস্থবাড়িতে গোয়ালে গরু রাখার চল্ রয়েছে – উনি সে ব্যাপারে খুবই সচেতন ছিলেন ৷ অনেকের শত মানা সত্বেও উনি গো-সেবা থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন নি ! বাঙালি ব্রাহ্মণ শরীর ছিল ওনার আর ব্রাহ্মণের সাধারণ কাজই হল যজন-যাজন-অধ্যাপনা, সাধারণভাবে ন’কাকা সারাজীবন এই কাজগুলিতেই নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন ৷
মুখার্জী পরিবারে দেখেছি ন’কাকা বয়োজ্যেষ্ঠদের যথোচিত সম্মান করতেন, বাড়ির ছোটদের প্রতি ছিলেন প্রচণ্ড Caring ! পাড়া-পড়শিদের প্রতিও উনি ছিলেন খুবই সহৃদয়, ফলে প্রতিবেশীরাও ওনাকে যথেষ্ট সম্মান বা শ্রদ্ধা করতেন । সারাজীবন প্রচণ্ড নির্বিরোধী মানুষ ছিলেন ন’কাকা– কোন তুচ্ছাতিতুচ্ছ কারণে কখনোই কারো সাথে উনি অশান্তি করতেন না –সেরকম কোনো ঘটনার সম্মুখীন হলে খুব সুকৌশলে ব্যাপারটিকে এড়িয়ে চলতেন । … [ক্রমশঃ]