[ন’কাকার সাথে প্রেতযোনীদের সম্পর্ক নিয়ে আগে অনেক আলোচনা হয়েছে। এখন হচ্ছে বিভিন্ন মহাপুরুষদের সাথে ন’কাকার যোগাযোগের কথা!]
ক্রিয়াযোগী মহাসাধক , মহাযোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ী বা লাহিড়ী মশাইয়ের নাম শোনেন নি – এমন শিক্ষিত বাঙালি খুবই কম রয়েছে ! অসংখ্য যোগের মধ্যে মাত্র পাঁচটা বিশেষ যোগ-কে সমাজের মানুষের জন্য এনে উনি পৃথিবীর প্রভূত কল্যাণ সাধন করেছেন। যাইহোক, মানুষ এটাও জানে যে – যোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ীর গুরুদেব ছিলেন বাবাজী মহারাজ ! যিনি প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে শরীর ধারণ করে রয়েছেন সাধু-সন্ত-ব্রহ্মচারী-সন্ন্যাসীদের অর্থাৎ আধ্যাত্মিক পথের পথিকদের রক্ষা করে চলেছেন এবং ভারতের সনাতন পরম্পরাকে ধরে রাখতে বা এগিয়ে যেতে সাহায্য করে যাচ্ছেন ! ভারতবর্ষের তথা বিশ্বের কোন মানুষ-ই এঁনার কথা জানতেই পারতেন না যদি না যোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ী মহাশয় এঁনার কথা জগৎবাসীকে জানাতেন ! এই ধরনের মহাপুরুষেরা সব সময় লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে নীরবে সমাজ কল্যাণ , মানব কল্যাণ মূলক কাজ সতত-ই করে যান ! পরবর্তীতে অনেক উন্নত যোগী , মহাত্মারা বাবাজী মহারাজের কথা উল্লেখ করেছেন ।
গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের সাথেও বাবাজী মহারাজের দেখা হয়েছিল হিমালয়ের এক দুর্গম অঞ্চলে ! গুরুমহারাজ ওনাকে দেখেছিলেন এক গুপ্ত গুহার দেওয়ালের গায়ে – ‘অনিমা’ প্রাপ্ত হয়ে সেঁটে থাকা অবস্থায় (অনিমা সিদ্ধি – অষ্টসিদ্ধির একটি) ! গুরু মহারাজকে বেশ কিছুক্ষণ মনঃসংযোগ করতে হয়েছিল – ওনাকে দৃশ্যমান করার জন্য ! ধীরে ধীরে বাবাজী মহারাজের অবয়ব ওনার সামনে ফুটে ওঠে ! তার কিছুক্ষণ পর গুরুমহারাজ ওনার সাথে কিছু কথাবার্তাও বলেছিলেন !
আমরা বনগ্রাম আশ্রমে যাওয়া-আসা শুরু করার পর একসময় শুনেছিলাম যে বাবাজী মহারাজ গুরুমহারাজের ঘরে এসেছিলেন! ঘটনাটা খুলেই বলা যাক্!
একবার 25 শে ডিসেম্বর গুরুমহারাজের জন্মদিন উপলক্ষে আশ্রমে প্রচুর মানুষ জমায়েত হয়েছিল (তখন গুরুমহারাজের জন্মদিন পালন বনগ্রাম আশ্রমেই হোত) – কিন্তু তখনও আশ্রমে বিশেষ কোন ঘরবাড়ি গড়ে ওঠেনি । তাই আশ্রম কতৃপক্ষ মানুষজনকে ওই শীতের মধ্যেই হয় সদ্য গড়ে ওঠা অনাথ বালক ভবনের একতলার ছাদে ত্রিপলের নিচে অথবা তখনকার চরৈবেতি কার্যালয়ের মাটির দাওয়ায় চট টাঙিয়ে কোনরকমে রাত কাটানোর ব্যবস্থা করেছিল ! কিন্তু হঠাৎ করে শুরু হয়েছিল বৃষ্টি ! বৃষ্টি – মানে এমন বৃষ্টি, যা হয়তো বর্ষাকালেও এত কম সময়ে অত পরিমাণে হয় না ! বিকাল থেকে শুরু করে সারারাত ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি – !
একে শীতকাল – তাতে বাইরের ভক্তরা ভিজে কাহিল , কেউ এক পা-ও নড়তে পারছে না , যাবেই বা কোথায় – যাবার তো জায়গাও নাই ! সেই রাত্রেই গুরু মহারাজ ভিজে ভিজে কেটলিতে করে গরম চা করে নিয়ে এসে ভিজে যাওয়া ব্যক্তিদের সকলকে চা পরিবেশন করেছিলেন !
সময় ঠিক-ই কেটে যায় ! দুঃসময়ও কাটে – তবে মানুষের জীবনে যখন দুঃসময় আসে ,তখন তা Lengthy বলে মনে হয় ! সেই রাতটিও ঐরকমই দুঃসময় , দুঃস্বপ্নের রাত্রি ছিল ।
সকালে অনেকেই (প্রায় সবাই) গুরুমহারাজকে প্রণাম করে বিদায় নেবার সময় গত রাত্রির কষ্টের কথা বলেছিল , বিশেষতঃ আশ্রমের সেক্রেটারি মুরারী মহারাজ খুব করে গুরু মহারাজকে দু-কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন (মানুষের কষ্ট ভোগ দেখে) ! এর ফলে সেদিন বিকাল থেকেই গুরু মহারাজের মন খুবই ভারাক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল ! উনি সেদিন বিকাল থেকে আর বাইরেই বের হন নি ! আর সেদিনই গভীর রাত্রে ওনার ঘরে পাঁচজন মহাপুরুষ-মহাত্মারা সূক্ষ্ম শরীরে এসে প্রকট হয়েছিলেন এবং বিভিন্ন কথা বলে ওনার মনের ভার লাঘব করে দিয়েছিলেন ! এই পাঁচজনের মধ্যে একজন ছিলেন বাবাজী মহারাজ !
যাইহোক, এই হেন বাবাজী মহারাজ সম্বন্ধে যখন আমি ন’কাকার কাছে জানতে চেয়েছিলাম – উনি খানিকটা যেন Casual-ভাবে আমাকে বলেছিলেন – ” বাবাজী মহারাজ ! হ্যাঁ – আমার সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ হয়েছে! প্রকৃতপক্ষে রাত্রি দুটো – আড়াইটেয় একটু মনোসংযোগ করলেই ওনার সাথে যোগাযোগ করা যায়! এইতো কদিন আগে গভীর রাতে আশ্রম ঢোকার আগে যে অশত্থ গাছটি রয়েছে – ওইটাকে দেখলাম আলো ঝলমল করছে ! ব্যাপারটা কি হোলো – দেখার জন্য এগিয়ে যেতেই দেখলাম ওই গাছের নিচে একজন মহাপুরুষ রয়েছেন – উনিই বাবাজী মহারাজ ! হয়তো ঠাকুরের (গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ) সাথে দেখা করতে এসেছিল !
ন’কাকা যখন এইসব কথা অসম্ভব রকমের অনায়াস ভঙ্গিতে বলে দিতেন – তখন (এত কিছু জানা সত্ত্বেও) প্রায়ই আমার সংশয় জাগতো, মনে হোতো – ইনি ঠিকঠাক বলছেন তো ? আর এমনটা যদি ওনার পক্ষে সম্ভবই হয় – তাহলে উনি কোন্ স্থিতিতে রয়েছেন ? কে ইনি ? – এই যে ইনি আমার সামনে খালি গায়ে বসে বসে সদাহাস্য মুখে অবলীলাক্রমে এইসব কথা বলে যাচ্ছেন – একি যে সে কথা ! বড় বড় মুনি-মনীষীরা যে বাবাজী মহারাজের দর্শন পায়নি , শুধু নামটুকুই শুনেছে – সেই বাবাজী মহারাজকে ইনি ইচ্ছা করলেই রাত্রি দুটো আড়াইটায় মনঃসংযোগ করেন_ আর সংযোগ স্থাপন করেন !!
তাছাড়া সেদিন (যেদিন আশ্রমে ঢোকার আগে অশ্বত্থ গাছ তলায় ওনার সাথে যোগাযোগ হয়েছিল) কি শুধু দেখা-ই হয়েছে , কোনো কথা হয়নি ? কথা যখন হয়েছে-ই তখন সেসব কথা__ কি কথা ? কথাগুলি জেনে ওঠা হয় নি! আমরা ন’কাকার সাথে যেসব কথা বলতাম – নিশ্চয়ই সেই সব সংসারের কথা , ছেলের কথা , মেয়ের কথা , রোগব্যাধির কথা___ওনাদের মধ্যে হয় নি ! তাহলে সেসব কথা কি কোনোদিন মানুষ জানতে পারবে না ? উনি যদি কোনদিন ফিরে এসে বলেন – তবেই জানতে পারবে , না হলে ঐসব গুহ্য কথা গুপ্ত, অপ্রকাশিত-ই থেকে যাবে!! ৷৷(ক্রমশঃ)
ক্রিয়াযোগী মহাসাধক , মহাযোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ী বা লাহিড়ী মশাইয়ের নাম শোনেন নি – এমন শিক্ষিত বাঙালি খুবই কম রয়েছে ! অসংখ্য যোগের মধ্যে মাত্র পাঁচটা বিশেষ যোগ-কে সমাজের মানুষের জন্য এনে উনি পৃথিবীর প্রভূত কল্যাণ সাধন করেছেন। যাইহোক, মানুষ এটাও জানে যে – যোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ীর গুরুদেব ছিলেন বাবাজী মহারাজ ! যিনি প্রায় পাঁচ হাজার বছর ধরে শরীর ধারণ করে রয়েছেন সাধু-সন্ত-ব্রহ্মচারী-সন্ন্যাসীদের অর্থাৎ আধ্যাত্মিক পথের পথিকদের রক্ষা করে চলেছেন এবং ভারতের সনাতন পরম্পরাকে ধরে রাখতে বা এগিয়ে যেতে সাহায্য করে যাচ্ছেন ! ভারতবর্ষের তথা বিশ্বের কোন মানুষ-ই এঁনার কথা জানতেই পারতেন না যদি না যোগী শ্যামাচরণ লাহিড়ী মহাশয় এঁনার কথা জগৎবাসীকে জানাতেন ! এই ধরনের মহাপুরুষেরা সব সময় লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে নীরবে সমাজ কল্যাণ , মানব কল্যাণ মূলক কাজ সতত-ই করে যান ! পরবর্তীতে অনেক উন্নত যোগী , মহাত্মারা বাবাজী মহারাজের কথা উল্লেখ করেছেন ।
গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের সাথেও বাবাজী মহারাজের দেখা হয়েছিল হিমালয়ের এক দুর্গম অঞ্চলে ! গুরুমহারাজ ওনাকে দেখেছিলেন এক গুপ্ত গুহার দেওয়ালের গায়ে – ‘অনিমা’ প্রাপ্ত হয়ে সেঁটে থাকা অবস্থায় (অনিমা সিদ্ধি – অষ্টসিদ্ধির একটি) ! গুরু মহারাজকে বেশ কিছুক্ষণ মনঃসংযোগ করতে হয়েছিল – ওনাকে দৃশ্যমান করার জন্য ! ধীরে ধীরে বাবাজী মহারাজের অবয়ব ওনার সামনে ফুটে ওঠে ! তার কিছুক্ষণ পর গুরুমহারাজ ওনার সাথে কিছু কথাবার্তাও বলেছিলেন !
আমরা বনগ্রাম আশ্রমে যাওয়া-আসা শুরু করার পর একসময় শুনেছিলাম যে বাবাজী মহারাজ গুরুমহারাজের ঘরে এসেছিলেন! ঘটনাটা খুলেই বলা যাক্!
একবার 25 শে ডিসেম্বর গুরুমহারাজের জন্মদিন উপলক্ষে আশ্রমে প্রচুর মানুষ জমায়েত হয়েছিল (তখন গুরুমহারাজের জন্মদিন পালন বনগ্রাম আশ্রমেই হোত) – কিন্তু তখনও আশ্রমে বিশেষ কোন ঘরবাড়ি গড়ে ওঠেনি । তাই আশ্রম কতৃপক্ষ মানুষজনকে ওই শীতের মধ্যেই হয় সদ্য গড়ে ওঠা অনাথ বালক ভবনের একতলার ছাদে ত্রিপলের নিচে অথবা তখনকার চরৈবেতি কার্যালয়ের মাটির দাওয়ায় চট টাঙিয়ে কোনরকমে রাত কাটানোর ব্যবস্থা করেছিল ! কিন্তু হঠাৎ করে শুরু হয়েছিল বৃষ্টি ! বৃষ্টি – মানে এমন বৃষ্টি, যা হয়তো বর্ষাকালেও এত কম সময়ে অত পরিমাণে হয় না ! বিকাল থেকে শুরু করে সারারাত ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি – !
একে শীতকাল – তাতে বাইরের ভক্তরা ভিজে কাহিল , কেউ এক পা-ও নড়তে পারছে না , যাবেই বা কোথায় – যাবার তো জায়গাও নাই ! সেই রাত্রেই গুরু মহারাজ ভিজে ভিজে কেটলিতে করে গরম চা করে নিয়ে এসে ভিজে যাওয়া ব্যক্তিদের সকলকে চা পরিবেশন করেছিলেন !
সময় ঠিক-ই কেটে যায় ! দুঃসময়ও কাটে – তবে মানুষের জীবনে যখন দুঃসময় আসে ,তখন তা Lengthy বলে মনে হয় ! সেই রাতটিও ঐরকমই দুঃসময় , দুঃস্বপ্নের রাত্রি ছিল ।
সকালে অনেকেই (প্রায় সবাই) গুরুমহারাজকে প্রণাম করে বিদায় নেবার সময় গত রাত্রির কষ্টের কথা বলেছিল , বিশেষতঃ আশ্রমের সেক্রেটারি মুরারী মহারাজ খুব করে গুরু মহারাজকে দু-কথা শুনিয়ে দিয়েছিলেন (মানুষের কষ্ট ভোগ দেখে) ! এর ফলে সেদিন বিকাল থেকেই গুরু মহারাজের মন খুবই ভারাক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল ! উনি সেদিন বিকাল থেকে আর বাইরেই বের হন নি ! আর সেদিনই গভীর রাত্রে ওনার ঘরে পাঁচজন মহাপুরুষ-মহাত্মারা সূক্ষ্ম শরীরে এসে প্রকট হয়েছিলেন এবং বিভিন্ন কথা বলে ওনার মনের ভার লাঘব করে দিয়েছিলেন ! এই পাঁচজনের মধ্যে একজন ছিলেন বাবাজী মহারাজ !
যাইহোক, এই হেন বাবাজী মহারাজ সম্বন্ধে যখন আমি ন’কাকার কাছে জানতে চেয়েছিলাম – উনি খানিকটা যেন Casual-ভাবে আমাকে বলেছিলেন – ” বাবাজী মহারাজ ! হ্যাঁ – আমার সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ হয়েছে! প্রকৃতপক্ষে রাত্রি দুটো – আড়াইটেয় একটু মনোসংযোগ করলেই ওনার সাথে যোগাযোগ করা যায়! এইতো কদিন আগে গভীর রাতে আশ্রম ঢোকার আগে যে অশত্থ গাছটি রয়েছে – ওইটাকে দেখলাম আলো ঝলমল করছে ! ব্যাপারটা কি হোলো – দেখার জন্য এগিয়ে যেতেই দেখলাম ওই গাছের নিচে একজন মহাপুরুষ রয়েছেন – উনিই বাবাজী মহারাজ ! হয়তো ঠাকুরের (গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ) সাথে দেখা করতে এসেছিল !
ন’কাকা যখন এইসব কথা অসম্ভব রকমের অনায়াস ভঙ্গিতে বলে দিতেন – তখন (এত কিছু জানা সত্ত্বেও) প্রায়ই আমার সংশয় জাগতো, মনে হোতো – ইনি ঠিকঠাক বলছেন তো ? আর এমনটা যদি ওনার পক্ষে সম্ভবই হয় – তাহলে উনি কোন্ স্থিতিতে রয়েছেন ? কে ইনি ? – এই যে ইনি আমার সামনে খালি গায়ে বসে বসে সদাহাস্য মুখে অবলীলাক্রমে এইসব কথা বলে যাচ্ছেন – একি যে সে কথা ! বড় বড় মুনি-মনীষীরা যে বাবাজী মহারাজের দর্শন পায়নি , শুধু নামটুকুই শুনেছে – সেই বাবাজী মহারাজকে ইনি ইচ্ছা করলেই রাত্রি দুটো আড়াইটায় মনঃসংযোগ করেন_ আর সংযোগ স্থাপন করেন !!
তাছাড়া সেদিন (যেদিন আশ্রমে ঢোকার আগে অশ্বত্থ গাছ তলায় ওনার সাথে যোগাযোগ হয়েছিল) কি শুধু দেখা-ই হয়েছে , কোনো কথা হয়নি ? কথা যখন হয়েছে-ই তখন সেসব কথা__ কি কথা ? কথাগুলি জেনে ওঠা হয় নি! আমরা ন’কাকার সাথে যেসব কথা বলতাম – নিশ্চয়ই সেই সব সংসারের কথা , ছেলের কথা , মেয়ের কথা , রোগব্যাধির কথা___ওনাদের মধ্যে হয় নি ! তাহলে সেসব কথা কি কোনোদিন মানুষ জানতে পারবে না ? উনি যদি কোনদিন ফিরে এসে বলেন – তবেই জানতে পারবে , না হলে ঐসব গুহ্য কথা গুপ্ত, অপ্রকাশিত-ই থেকে যাবে!! ৷৷(ক্রমশঃ)