( ন’কাকাকে নিয়ে কথা হচ্ছিল)……..
আবার প্রথম দিকের কথায় ফিরে আসি। আমার শ্যালক অসীমদার বিবাহ হবার পর অসীমদার সাথে সাথে ন’কাকা আমাকেও একটু বেশী বেশী খাতির দেখাতেন তখন ! এই ব্যাপারটা আমার মন্দ লাগতো না! এইরকমটা তো হয় — ধরুন আপনি যাকে মান্য করেন , ভয় বা ভক্তি করেন , সেই ব্যক্তি যদি আপনাকে বিশেষ সম্মান দেখায় তখন “কি হনু রে !” – এমন একটা ভাব আসে না ?? আমারও তেমনটাই হয়েছিল ! তখন তো জানতাম না যে এটাই মহাপুরুষদের সহজতা ! ভগবান শ্রীচৈতন্যদেব বলেছিলেন – “অমানীনা মানদেন কীর্ত্তনীয়ঃ সদা হরি” । পরমবৈষ্ণব , ঈশ্বরে সমর্পিত মহাপুরুষগণ “অমানী”কে অনায়াসে মান দিতে পারেন ! এটাই তো তাঁদের মহত্ত্ব!
কিন্তু পরবর্ত্তীকালে দেখেছিলাম এই যে , কুটুম্বিতার সম্পর্ক – এটা বিশেষ তেমন কোন মূল্যই পায়নি ! এর বাইরের যে সম্পর্ক অর্থাৎ হৃদয়ের সম্পর্ক বা অন্তরের সম্পর্ক _সেইটাই স্থায়ী হয়ে ছিল ৷ আশ্রমের খ্যাপাঠাকুর কেশব(দেবানন্দ) যা হোক করে জানতে পারে যে ন’কাকার সাথে আমার কোন একটা কুটুম্বিতা সম্পর্ক রয়েছে – এবার যেহেতু কেশব মহারাজ(দেবানন্দ) ন’কাকার নিজের ভাইপো – তাই খ্যাপাঠাকুর একদিন আমাকে বলল _”ও আচ্ছা! তা–ই- বু—ঝি! তাহলে তো তুমি আমাদের relative হচ্ছো”! সেই থেকে কেশব মহারাজ আমাকে ‘Relative’ বলে ডাকতে শুরু কোরলো ৷ আশ্রমের ঐ প্রান্ত থেকে ওর দরাজ গলায় চিৎকার করে ”R-E-L-A-T-l-V-E” – হাঁকে আমারই পিলে চমকে যেতো ! পরে শুনেছিলাম তৃষান মহারাজ , মুরারী মহারাজরাও কেশব মহারাজের__আমাকে ‘Relative’ বলা নিয়ে আশ্রমে হাসাহাসি করতেন !
প্রথম ন’কাকার সাথে আমার বাইরে যাওয়া-আসা শুরু হয় শ্রীরামপুর যাওয়াকে কেন্দ্র করে ৷ শ্রীরামপুরে অসীমদার বাড়ী অর্থাৎ ন’কাকার শ্যালিকার বাড়ী , আর তাছাড়া আশ্রমের ভক্ত গৌতম ভড়ও শ্রীরামপুরে থাকতো । গুরু মহারাজের শরীর ছাড়ার পর সমস্ত ভক্তরাই দিশাহারা __গুরু মহারাজের মধুর কণ্ঠের সেই অমৃতময় কথামালা আর শোনা যাচ্ছে না ! তাই ভক্তদের প্রাণটা সেই সময় ফেটে যাচ্ছিল ৷ এই অবস্থায় গৌতম ভড় ন’কাকাকে রাজী করিয়ে ওর শ্রীরামপুরের বাড়ীতে একটা আলোচনা সভার(সিটিং-এর) আয়োজন করেছিল ৷ শংকর দা (শঙ্কর দাস)-ও শ্রীরামপুরের লোক, শংকরদার একটা friend circle ছিল যারা প্রত্যেকেই ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের একনিষ্ঠ ভক্ত ৷ ওই circle-এর প্রায় সকলেই ছিল শ্রীরামপুরের লোক, circle-এর ব্যক্তিদের নামগুলি হ’ল – মানিক রায় , জহর ঘোষ , পিন্টু (ব্যানার্জী ?) , সুনীলবাবু এবং ওই দলটির team leader মাষ্টারমশাই সুদর্শন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ ৷ ওখানে আমাদের পরমানন্দ মিশনের আরও ভক্তরাও ছিল , যেমন – ছট্টু (অরুণ মুখার্জী , পরে ইনি বনগ্রাম আশ্রমের ব্রহ্মচারী হয়েছিলেন) , আশা মা এবং ওনার স্বামী (হাইস্কুল টিচার এবং বিশিষ্ট ভদ্রলোক) । তবে ঐ যে বললাম _এই দলটির দলপতি ছিলেন বহুদর্শী , জ্ঞানী , সাধক সুদর্শন মাষ্টারমশাই বা সুধণ বাবু! আর সুদর্শন বাবুর ছাত্র সালকিয়ার দেবকুমার,ভূতনাথ এবং ওদের বন্ধুরা অর্থাৎ ভদ্রেশ্বরের বাবুল , হাওড়ার স্বরূপ প্রমুখেরাও এই গ্রুপের সদস্য ছিল। সুদর্শন বাবুর নেতৃত্বে এই দলটি দীর্ঘদিন ধরে শ্রীরামকৃষ্ণ চর্চার আসর চালাতো । সেই আসরে বহু সময়ে বহু পরম্পরার সন্ন্যাসী , মহাত্মারা যোগদান করে ঐ আসরকে এবং ঐ আসরে আসা ভক্তকুলকে ধন্য করেছেন ৷ অনেক মহাত্মা ঐ বাড়িতে পা রেখেছিলেন _সেই সব গল্প আমরা বারবার সুধনবাবুর মুখে শুনেছি(যখনই ন’কাকার সাথে ওনার বাড়ি যেতাম)।
যেসব মহাত্মাদের কথা বারবার শুনতাম_তাঁদের মধ্যে একজনের কথা একটু বলি! সুদর্শন বাবুর বাড়ীর ঐ আসরে আসা-যাওয়া করতেন ব্যারাকপুরের একজন মহাত্মা যাঁকে সবাই “ভাগাড়ে সাধু” বলে ডাকতো । ঐ সাধুবাবার অনেক অলৌকিক ক্ষমতা ছিল ! সেইসব কথা সুদর্শন মাষ্টারমশাই খুবই বলতেন । ঐ সাধুবাবাই বহুবছর আগে (১৯৮০/৮২ সালে) মাষ্টারমশাইদের বলেছিলেন যে , “বর্ধমানের কোন স্থানে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের আবার নতুন শরীর হয়েছে ! বাউলবেশী – নবীন যুবক” ! ঐ সাধুবাবাকে যেহেতু এই দলের সদস্যরা খুবই বিশ্বাস করতো (অবশ্যই সাধুবাবার অলৌকিক ক্ষমতা ওরা বারবার প্রত্যক্ষ করেছিল বলেই) – তাই সুদর্শন বাবু , সুনীল বাবু , মানিক বাবু , জহর বাবুরা ছুটি-ছাটা পেলেই বর্ধমান স্টেশন , মেমারী স্টেশন – ইত্যাদি স্থানে ট্রেনে করে গিয়ে সারাদিন __এ আশ্রম, ও আশ্রম গিয়ে গিয়ে খোঁজখবর নিতো_ ‘কোথায় ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ শরীর নিয়েছেন’ !
কিন্তু ওনাদের সাথে যে কোন কারণেই হোক না কেন গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের সাক্ষাৎ হয় নি! ওরা সেই সময় রামকৃষ্ণের নতুন শরীর খুঁজতে নানা স্থানে গিয়েছিল_কিন্ত বনগ্রামের সন্ধান পায়নি। বহু মানুষের কাছে ‘নতুন কোনো মহাপুরুষ এই অঞ্চলে লীলা করছেন কিনা’ এই নিয়ে খোঁজ করেছিলেন_কিন্ত কোনো পরমানন্দ ভক্তের সঙ্গে সেই সময় ওদের দেখা হয় নি। এই নিয়ে ওনারা খুবই আফশোষ করতেন যে, _বর্ধমান এবং মেমারী স্টেশনে নেমেও ওনারা অনেক মানুষজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন কিন্তু সেইসময় কোনভাবেই ওরা স্বামী পরমানন্দ বা বনগ্রাম পরমানন্দ মিশনের কোন খোঁজই পাননি ! ….. [ক্রমশঃ]
আবার প্রথম দিকের কথায় ফিরে আসি। আমার শ্যালক অসীমদার বিবাহ হবার পর অসীমদার সাথে সাথে ন’কাকা আমাকেও একটু বেশী বেশী খাতির দেখাতেন তখন ! এই ব্যাপারটা আমার মন্দ লাগতো না! এইরকমটা তো হয় — ধরুন আপনি যাকে মান্য করেন , ভয় বা ভক্তি করেন , সেই ব্যক্তি যদি আপনাকে বিশেষ সম্মান দেখায় তখন “কি হনু রে !” – এমন একটা ভাব আসে না ?? আমারও তেমনটাই হয়েছিল ! তখন তো জানতাম না যে এটাই মহাপুরুষদের সহজতা ! ভগবান শ্রীচৈতন্যদেব বলেছিলেন – “অমানীনা মানদেন কীর্ত্তনীয়ঃ সদা হরি” । পরমবৈষ্ণব , ঈশ্বরে সমর্পিত মহাপুরুষগণ “অমানী”কে অনায়াসে মান দিতে পারেন ! এটাই তো তাঁদের মহত্ত্ব!
কিন্তু পরবর্ত্তীকালে দেখেছিলাম এই যে , কুটুম্বিতার সম্পর্ক – এটা বিশেষ তেমন কোন মূল্যই পায়নি ! এর বাইরের যে সম্পর্ক অর্থাৎ হৃদয়ের সম্পর্ক বা অন্তরের সম্পর্ক _সেইটাই স্থায়ী হয়ে ছিল ৷ আশ্রমের খ্যাপাঠাকুর কেশব(দেবানন্দ) যা হোক করে জানতে পারে যে ন’কাকার সাথে আমার কোন একটা কুটুম্বিতা সম্পর্ক রয়েছে – এবার যেহেতু কেশব মহারাজ(দেবানন্দ) ন’কাকার নিজের ভাইপো – তাই খ্যাপাঠাকুর একদিন আমাকে বলল _”ও আচ্ছা! তা–ই- বু—ঝি! তাহলে তো তুমি আমাদের relative হচ্ছো”! সেই থেকে কেশব মহারাজ আমাকে ‘Relative’ বলে ডাকতে শুরু কোরলো ৷ আশ্রমের ঐ প্রান্ত থেকে ওর দরাজ গলায় চিৎকার করে ”R-E-L-A-T-l-V-E” – হাঁকে আমারই পিলে চমকে যেতো ! পরে শুনেছিলাম তৃষান মহারাজ , মুরারী মহারাজরাও কেশব মহারাজের__আমাকে ‘Relative’ বলা নিয়ে আশ্রমে হাসাহাসি করতেন !
প্রথম ন’কাকার সাথে আমার বাইরে যাওয়া-আসা শুরু হয় শ্রীরামপুর যাওয়াকে কেন্দ্র করে ৷ শ্রীরামপুরে অসীমদার বাড়ী অর্থাৎ ন’কাকার শ্যালিকার বাড়ী , আর তাছাড়া আশ্রমের ভক্ত গৌতম ভড়ও শ্রীরামপুরে থাকতো । গুরু মহারাজের শরীর ছাড়ার পর সমস্ত ভক্তরাই দিশাহারা __গুরু মহারাজের মধুর কণ্ঠের সেই অমৃতময় কথামালা আর শোনা যাচ্ছে না ! তাই ভক্তদের প্রাণটা সেই সময় ফেটে যাচ্ছিল ৷ এই অবস্থায় গৌতম ভড় ন’কাকাকে রাজী করিয়ে ওর শ্রীরামপুরের বাড়ীতে একটা আলোচনা সভার(সিটিং-এর) আয়োজন করেছিল ৷ শংকর দা (শঙ্কর দাস)-ও শ্রীরামপুরের লোক, শংকরদার একটা friend circle ছিল যারা প্রত্যেকেই ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের একনিষ্ঠ ভক্ত ৷ ওই circle-এর প্রায় সকলেই ছিল শ্রীরামপুরের লোক, circle-এর ব্যক্তিদের নামগুলি হ’ল – মানিক রায় , জহর ঘোষ , পিন্টু (ব্যানার্জী ?) , সুনীলবাবু এবং ওই দলটির team leader মাষ্টারমশাই সুদর্শন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ ৷ ওখানে আমাদের পরমানন্দ মিশনের আরও ভক্তরাও ছিল , যেমন – ছট্টু (অরুণ মুখার্জী , পরে ইনি বনগ্রাম আশ্রমের ব্রহ্মচারী হয়েছিলেন) , আশা মা এবং ওনার স্বামী (হাইস্কুল টিচার এবং বিশিষ্ট ভদ্রলোক) । তবে ঐ যে বললাম _এই দলটির দলপতি ছিলেন বহুদর্শী , জ্ঞানী , সাধক সুদর্শন মাষ্টারমশাই বা সুধণ বাবু! আর সুদর্শন বাবুর ছাত্র সালকিয়ার দেবকুমার,ভূতনাথ এবং ওদের বন্ধুরা অর্থাৎ ভদ্রেশ্বরের বাবুল , হাওড়ার স্বরূপ প্রমুখেরাও এই গ্রুপের সদস্য ছিল। সুদর্শন বাবুর নেতৃত্বে এই দলটি দীর্ঘদিন ধরে শ্রীরামকৃষ্ণ চর্চার আসর চালাতো । সেই আসরে বহু সময়ে বহু পরম্পরার সন্ন্যাসী , মহাত্মারা যোগদান করে ঐ আসরকে এবং ঐ আসরে আসা ভক্তকুলকে ধন্য করেছেন ৷ অনেক মহাত্মা ঐ বাড়িতে পা রেখেছিলেন _সেই সব গল্প আমরা বারবার সুধনবাবুর মুখে শুনেছি(যখনই ন’কাকার সাথে ওনার বাড়ি যেতাম)।
যেসব মহাত্মাদের কথা বারবার শুনতাম_তাঁদের মধ্যে একজনের কথা একটু বলি! সুদর্শন বাবুর বাড়ীর ঐ আসরে আসা-যাওয়া করতেন ব্যারাকপুরের একজন মহাত্মা যাঁকে সবাই “ভাগাড়ে সাধু” বলে ডাকতো । ঐ সাধুবাবার অনেক অলৌকিক ক্ষমতা ছিল ! সেইসব কথা সুদর্শন মাষ্টারমশাই খুবই বলতেন । ঐ সাধুবাবাই বহুবছর আগে (১৯৮০/৮২ সালে) মাষ্টারমশাইদের বলেছিলেন যে , “বর্ধমানের কোন স্থানে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের আবার নতুন শরীর হয়েছে ! বাউলবেশী – নবীন যুবক” ! ঐ সাধুবাবাকে যেহেতু এই দলের সদস্যরা খুবই বিশ্বাস করতো (অবশ্যই সাধুবাবার অলৌকিক ক্ষমতা ওরা বারবার প্রত্যক্ষ করেছিল বলেই) – তাই সুদর্শন বাবু , সুনীল বাবু , মানিক বাবু , জহর বাবুরা ছুটি-ছাটা পেলেই বর্ধমান স্টেশন , মেমারী স্টেশন – ইত্যাদি স্থানে ট্রেনে করে গিয়ে সারাদিন __এ আশ্রম, ও আশ্রম গিয়ে গিয়ে খোঁজখবর নিতো_ ‘কোথায় ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ শরীর নিয়েছেন’ !
কিন্তু ওনাদের সাথে যে কোন কারণেই হোক না কেন গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের সাক্ষাৎ হয় নি! ওরা সেই সময় রামকৃষ্ণের নতুন শরীর খুঁজতে নানা স্থানে গিয়েছিল_কিন্ত বনগ্রামের সন্ধান পায়নি। বহু মানুষের কাছে ‘নতুন কোনো মহাপুরুষ এই অঞ্চলে লীলা করছেন কিনা’ এই নিয়ে খোঁজ করেছিলেন_কিন্ত কোনো পরমানন্দ ভক্তের সঙ্গে সেই সময় ওদের দেখা হয় নি। এই নিয়ে ওনারা খুবই আফশোষ করতেন যে, _বর্ধমান এবং মেমারী স্টেশনে নেমেও ওনারা অনেক মানুষজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেন কিন্তু সেইসময় কোনভাবেই ওরা স্বামী পরমানন্দ বা বনগ্রাম পরমানন্দ মিশনের কোন খোঁজই পাননি ! ….. [ক্রমশঃ]