বনগ্রামের মুখার্জি পরিবারে পূর্বে পুরুষানুক্রমে যজমান বৃত্তি ব্যাপারটা ছিল – অর্থাৎ এনারা পূজা-অর্চনা , দীক্ষাদান ইত্যাদি কাজ কোরতেন ! ন’কাকার বাবা পর্যন্ত এই ক্রম বজায় ছিল – কিন্তু ন’কাকাদের generation-এর সবাই পূজো-আচ্চা করলেও, কেউই যজমান বৃত্তি অবলম্বন করেন নি ! কারণ বড় ভাই দেবীপ্রসাদ বাবু তৎকালীন যুগের M.A. পাস করা Brilliant Student ছিলেন । উনি হাইস্কুলের শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে শেষে প্রধান শিক্ষক হয়ে Retired করেন ৷ ওনার ছেলেরা সকলেই কিছু না কিছু করে ৷ দেবী বাবু সাতগেছিয়ায় (পূর্ব বর্ধমান) বাড়ি তৈরি করে ওখানেই পরিবারের সকলকে নিয়ে থাকতেন। ওনার একটি মেয়ে রেবা মা বনগ্রামে আশ্রমের সন্ন্যাসিনী ৷ মেজ ভাই রমাপ্রসাদ বাবু এবং ন’ভাই (ন’কাকা) শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি – এই দুজন বাড়িতে থাকতেন । গ্রামের মাঠে ওনাদের অনেকটাই জমি-জমা ছিল (যেগুলি বর্তমানে পরমানন্দ মিশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে) – সেইগুলি দেখাশোনা করা এবং পারিবারিক দেবী মা করুণাময়ী কালীর নিত্য পূজা করা ছাড়াও গ্রামের কিছু বাড়িতে বিশেষ পূজার কাজও এই দুজন মাঝে মাঝে কোরতেন ! মেজোকাকা (রমাপ্রসাদ বাবু) গ্রামের লোকের বাড়িতে পূজা না করলেও ন’কাকা করতেন – এটা আমরা দেখেছি । ওনাদের সেজোভাই উমাপ্রসাদ বাবু দুর্গাপুরে ফ্যামিলি নিয়ে থাকেন । সেজো কাকা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কর্মচারী ছিলেন । ওনার তিন ছেলে – বড়টি বনগ্রাম আশ্রমের সন্ন্যাসী , সকলের পরিচিত মুখ ‘ক্ষ্যাপাঠাকুর’ – দেবানন্দ মহারাজ ! আর বাকি দুজন বেসরকারি চাকরি করে এবং সবাই ভালো রোজগারও করে I ন’কাকাদের ছোটভাই গোলক প্রসাদ মুখার্জি হরিয়ানায় চাকরি করতেন ৷ উনি হরিয়ানায় থাকাকালীন গুরু মহারাজ ওনার বাড়ি বেশ কয়েকবার গিয়েছিলেন । ছোট কাকার তিন মেয়ে ও একটি ছেলে ছিল ৷ ছেলেটি (বাপি , গুরু মহারাজ বলেছিলেন ‘অমিতাভ’) বনগ্রাম আশ্রমে মাত্র ১২ বছর বয়সে _বলা যায় একপ্রকার গুরুমহারাজের কোলে-ই শরীর ছেড়েছিল। ওর এত অল্প বয়সে শরীর ছাড়ার পিছনে অনেক কারণের কথা অন্য জায়গায় বিবৃত হয়েছে – তাই অত Detail-এ যাচ্ছি না ! বর্তমানে ছোটকাকার তিন মেয়েই উচ্চশিক্ষিত এবং সবার বিয়ে থা হয়ে গেছে , সবাই পারিবারিকভাবে সুস্থতা ও সমৃদ্ধির সাথে স্বামী পরমানন্দের কৃপা মাথায় নিয়ে সুখে শান্তিতে দিন কাটাচ্ছে । বোনেদের মধ্যে একজন ভালো চাকরিও করে !
বর্তমানে (২০১৯) ন’কাকাদের পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে বর্তমান রয়েছেন শুধু সেজো কাকা (যিনি দুর্গাপুরে থাকেন) , তাছাড়া মেজো কাকিমা , ন’কাকিমা এবং ছোট কাকিমা রয়েছেন ৷ মেজো কাকার দুটি ছেলে , দুটি মেয়ে । ছেলে দুটিই পরমানন্দ মিশনের সন্ন্যাসী – হরি মহারাজ (স্বামী সহজানন্দ) এবং দীপ্তি মহারাজ (স্বামী ভূমানন্দ) আর এক মেয়ে তপিমা __সন্ন্যাসিনী, যাঁর সন্ন্যাস নাম পরিব্রাজিকা পবিত্রপ্রাণা !
যাইহোক, আমরা আমাদের আলোচনায় ফিরে আসি! আমরা বলতে চাইছিলাম যে, মুখার্জি বাড়ির বংশানুক্রমিক যজমানবৃত্তির ধারা সবটা না হলেও কিছুটা ধরে রেখেছিলেন ন’কাকা । কিন্তু বংশানুক্রমিক গুরুগিরি-টা উনি করেন নি ! আমি একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলাম – ” ন’কাকা ! আপনি পারিবারিক ধারাটা ছাড়লেন কেন ? আর আপনাদের পিতার দীক্ষীত পরিবারগুলির লোকেরা আপনাদের_ ছাড়লো? তারা তো নিশ্চয়ই পারিবারিক গুরু হিসাবে আপনাদেরকেই চেয়েছিল ?” ন’কাকা বলেছিলেন – ” হ্যাঁ বাবা ! আমার বাবার যারা দীক্ষীত ছিল , তাদের সন্তানাদি এখানে এসেছিল ! কিন্তু আমরা তাদেরকে জবাব দিয়ে দিয়েছি , বলে দিয়েছি আমাদের বাড়ির কেউ আর দীক্ষা দেবে না – তোমরা অন্যত্র কোথাও দীক্ষা নিয়ে নাও ! আর কাছাকাছির লোক যারা ছিল – তাদেরকে বনগ্রাম আশ্রমে বাবা ঠাকুরের (গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ) কাছে দীক্ষা নেবার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম ৷”
গুরু মহারাজকে (স্বামী পরমানন্দ) বেশ কয়েকবার বলতে শুনেছিলাম , ” ন’কাকা , দীক্ষা দাও ! তাহলে তো আমার চাপ কিছুটা কমে ! তুমি যদি দীক্ষার ভার নাও – তাহলে আমি অন্যান্য কাজে সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ করতে পারি !!” কিন্তু ন’কাকা তখন রাজি হন নি !
কিন্তু পরবর্তীতে আমরা দেখলাম সেই ন’কাকা দীক্ষা দিলেন! দীক্ষা দিলেন কিন্তু গুরুমহারাজের শরীর ছাড়ার অনেক পরে ! তাও প্রথম দিকটায় বেছে-কুছে দু-চার জনকে ৷ তারপর একটু বেশি বেশি ! বেশিটা আবার আদিত্যপুর আশ্রম বা বীরভূমকে কেন্দ্র করে !
শেষের দিকটায় অনেকেই আমাকে ধরতো , যাতে তার বা তাদের দীক্ষা ন’কাকার কাছেই হয় (যেহেতু ন’কাকার সাথে সাথে প্রায়শই আমি থাকতাম) । তাদের ব্যকুলতা দেখে, তাদের হয়ে ন’কাকার কাছে আমি সুপারিশও করতাম – অবাক হয়ে দেখতাম যে ,বীরভূমের লোক হলে দীক্ষার ব্যাপারটা প্রায়শই আটকাতো না ! কিন্তু বর্ধমান বা অন্য স্থানের কেউ হলে – হয়তো আটকে যেতো ! যেমন ধাত্রীগ্রামের আনন্দ-র ক্ষেত্রে হয়েছিল ! বারে বার সুযোগ সৃষ্টি হয়েও – ওর বা ওর স্ত্রীর দীক্ষা হলো না ! মহাপুরুষের লীলা – “অতীব বিচিত্রম্” ! দেবতারাও বুঝতে পারে না , মানুষ আর কি বুঝবে ?(ক্রমশঃ)
বর্তমানে (২০১৯) ন’কাকাদের পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে বর্তমান রয়েছেন শুধু সেজো কাকা (যিনি দুর্গাপুরে থাকেন) , তাছাড়া মেজো কাকিমা , ন’কাকিমা এবং ছোট কাকিমা রয়েছেন ৷ মেজো কাকার দুটি ছেলে , দুটি মেয়ে । ছেলে দুটিই পরমানন্দ মিশনের সন্ন্যাসী – হরি মহারাজ (স্বামী সহজানন্দ) এবং দীপ্তি মহারাজ (স্বামী ভূমানন্দ) আর এক মেয়ে তপিমা __সন্ন্যাসিনী, যাঁর সন্ন্যাস নাম পরিব্রাজিকা পবিত্রপ্রাণা !
যাইহোক, আমরা আমাদের আলোচনায় ফিরে আসি! আমরা বলতে চাইছিলাম যে, মুখার্জি বাড়ির বংশানুক্রমিক যজমানবৃত্তির ধারা সবটা না হলেও কিছুটা ধরে রেখেছিলেন ন’কাকা । কিন্তু বংশানুক্রমিক গুরুগিরি-টা উনি করেন নি ! আমি একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলাম – ” ন’কাকা ! আপনি পারিবারিক ধারাটা ছাড়লেন কেন ? আর আপনাদের পিতার দীক্ষীত পরিবারগুলির লোকেরা আপনাদের_ ছাড়লো? তারা তো নিশ্চয়ই পারিবারিক গুরু হিসাবে আপনাদেরকেই চেয়েছিল ?” ন’কাকা বলেছিলেন – ” হ্যাঁ বাবা ! আমার বাবার যারা দীক্ষীত ছিল , তাদের সন্তানাদি এখানে এসেছিল ! কিন্তু আমরা তাদেরকে জবাব দিয়ে দিয়েছি , বলে দিয়েছি আমাদের বাড়ির কেউ আর দীক্ষা দেবে না – তোমরা অন্যত্র কোথাও দীক্ষা নিয়ে নাও ! আর কাছাকাছির লোক যারা ছিল – তাদেরকে বনগ্রাম আশ্রমে বাবা ঠাকুরের (গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ) কাছে দীক্ষা নেবার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলাম ৷”
গুরু মহারাজকে (স্বামী পরমানন্দ) বেশ কয়েকবার বলতে শুনেছিলাম , ” ন’কাকা , দীক্ষা দাও ! তাহলে তো আমার চাপ কিছুটা কমে ! তুমি যদি দীক্ষার ভার নাও – তাহলে আমি অন্যান্য কাজে সম্পূর্ণভাবে মনোনিবেশ করতে পারি !!” কিন্তু ন’কাকা তখন রাজি হন নি !
কিন্তু পরবর্তীতে আমরা দেখলাম সেই ন’কাকা দীক্ষা দিলেন! দীক্ষা দিলেন কিন্তু গুরুমহারাজের শরীর ছাড়ার অনেক পরে ! তাও প্রথম দিকটায় বেছে-কুছে দু-চার জনকে ৷ তারপর একটু বেশি বেশি ! বেশিটা আবার আদিত্যপুর আশ্রম বা বীরভূমকে কেন্দ্র করে !
শেষের দিকটায় অনেকেই আমাকে ধরতো , যাতে তার বা তাদের দীক্ষা ন’কাকার কাছেই হয় (যেহেতু ন’কাকার সাথে সাথে প্রায়শই আমি থাকতাম) । তাদের ব্যকুলতা দেখে, তাদের হয়ে ন’কাকার কাছে আমি সুপারিশও করতাম – অবাক হয়ে দেখতাম যে ,বীরভূমের লোক হলে দীক্ষার ব্যাপারটা প্রায়শই আটকাতো না ! কিন্তু বর্ধমান বা অন্য স্থানের কেউ হলে – হয়তো আটকে যেতো ! যেমন ধাত্রীগ্রামের আনন্দ-র ক্ষেত্রে হয়েছিল ! বারে বার সুযোগ সৃষ্টি হয়েও – ওর বা ওর স্ত্রীর দীক্ষা হলো না ! মহাপুরুষের লীলা – “অতীব বিচিত্রম্” ! দেবতারাও বুঝতে পারে না , মানুষ আর কি বুঝবে ?(ক্রমশঃ)