[ ন’কাকা বীরভূমের লোকেদেরকে এক কথায় দীক্ষা দিয়ে দিতেন অথচ এখানকার স্থানীয় ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রে ওনার treatment আলাদা ছিল _সেই প্রসঙ্গেই আজকের আলোচনা, আগের দিনের সূত্র ধরেই …..। ]
ন’কাকা শরীর ছেড়েছেন প্রায় এক বছর হতে চললো (এখন _সেপ্টেম্বর 2019 , উনি শরীর ছেড়েছেন অক্টোবর, 2018) – তবু আমার কাছে এখনো এই জিজ্ঞাসার মীমাংসা হয়নি , উনি যে ধাত্রীগ্রামের আনন্দ-র ব্যাপারে আমাকে বলেছিলেন – ” ওঃ – আনন্দ ! ওর তো দীক্ষা হয়েই আছে ! সে একদিন – ওকে বনগ্রামেই ডেকে নেওয়া যাবে !” কিন্তু এবারকার স্থূল শরীরে তো আনন্দকে উনি ডাকলেন না! তাছাড়া ঐ যে বললেন – ” ওর তো দীক্ষা হয়েই আছে !” – তাহলে কি আনন্দ-র পুর্ববর্তী শরীরে দীক্ষা হয়েই ছিল বা পরের শরীরে ওনার কাছে দীক্ষা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করবে অথবা “ওর তো হয়েই আছে” – ধরে নিয়ে ন’কাকাকেই গুরু হিসাবে মেনে সাধন-ভজন করবে ?
কে এর উত্তর দেবে !! আনন্দ-ই যদি ওর অন্তর্জগতে ডুবে – এর উত্তর কোনদিন খুঁজে পায় – তাহলে ওর নিজের এবং আমার , উভয়েরই জিজ্ঞাসার উত্তর মিলবে ! এগুলি একটা সাংঘাতিক ব্যাপার – দীক্ষা , গুরু নির্বাচন এসব ব্যাপার তো হালকা কোনো বিষয় নয় – সারা জীবনের বললেও ভুল হবে , এটি ইহকাল পরকালের ব্যাপার ! তাই এইসব ক্ষেত্রে কোন decision নেওয়া সত্যিই দুরূহ ! একমাত্র আধ্যাত্মিক ব্যক্তি-ই পারেন এর মীমাংসা করতে অথবা ওই ব্যক্তির অন্তর্জগৎ থেকে উঠে আসা কোনো সিদ্ধান্ত-ই পারে ওই ব্যক্তির মনোজগতে শান্তি এনে দিতে ! আমরা গুরু মহারাজ এবং ন’কাকার কাছে প্রার্থনা জানাবো যেন তাঁরা ওই ছেলেটির(আনন্দ) মনের এই আধ্যাত্মিক জ্বালার আশু নিরসন করেন !
অনেক ভারী ভারী কথা হলো – এবার চলুন আমরা আবার ফিরে যাই “বীরভূমে ন’কাকা” প্রসঙ্গে ! প্রথম প্রথম যখন আমরা ন’কাকার সাথে বীরভূমের বোলপুরের নিকটস্থ আদিত্যপুর আশ্রমে যেতাম তখন শুধুমাত্র পুরোনো ভক্তরা অর্থাৎ পরমানন্দ মিশনের দীক্ষিত ভক্তরাই আসতো । সেই সময় নীরোদ বরণ ব্যানার্জি (যিনি গুরুমহারাজের দীক্ষিত এবং বনগ্রাম আশ্রমের ত্রৈমাসিক পত্রিকা চরৈবেতির নিয়মিত লেখক ছিলেন) হরিপদ ভল্লার(বোলপুর আশ্রমের শুরুর দিকের মুখ্য ভূমিকা গ্রহণকারী)সাথে আসতেন । ওনাদের দুজনের মধ্যে খুবই একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ৷ নিরোদ বাবু পন্ডিত লোক , সংস্কৃত সহ দুটো তিনটে বিষয়ে তৎকালের M.A., দীর্ঘদিন মানকড় (প্রতাপগড়, বর্ধমান) হাই স্কুলের Head Teacher হিসাবে কাজ করেছিলেন ।যখনকার কথা হচ্ছে _তখন (২০০৭/০৮ সাল) উনি Retired কোরে বোলপুরে বাড়ি বানিয়েছিলেন । আমার মনে হয় _এই বাড়ি তৈরির ব্যাপারে ভল্লা বাবু ওনাকে খুবই হেল্প করেছিলেন বলেই হয়তো উভয়ের এতটা বন্ধুত্ব হয়েছিল !
তাছাড়া ভল্লা বাবুও পন্ডিত ব্যক্তি , উনিও ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সহকারি ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন । তাছাড়া ওনারও সংস্কৃতের প্রতি যথেষ্ট দুর্বলতা ছিল – তাই বন্ধুত্ব হতে দেরি লাগে নি । যতদূর সম্ভব নিরোদ বাবুর সাথে পরিচয় হবার পরই ভল্লা বাবুর শ্রীমদ্ভাগবত গীতা মুখস্ত করার একটা প্রবণতা আসে এবং উনি বর্তমানে ঝরঝর করে যে কোন অধ্যায়ের যে কোনো শ্লোক ব্যাখ্যাসহ মুখে মুখে বলে দেন ।
যাইহোক , এই নিরোদ বাবুকে আমরা বনগ্রামে গুরুমহারাজের সামনে চুপচাপ ভালোছেলের মতো বসে থাকতে দেখতাম! সেখানে উনি ওনার অগাধ পান্ডিত্যের কিছুটা প্রকাশ ঘটাতে চাইলেও – কিছুক্ষণের মধ্যেই গুরুমহারাজের ন্যায় মহামানবের অনন্ত জ্ঞানসাগরের কুল-কিনারা কিছুই না পেয়ে হাতজোড় করে বসে বসে গুরু মহারাজের কথা শুনতেন ৷ কিন্তু বোলপুরে ন’কাকার আসরে এসে উনি নিজেকে প্রকাশ করতে ছাড়তেন না!
আপনাদের সত্যি কথাই বলছি – ন’কাকা যখন থেকে আদিত্যপুর আশ্রমে প্রথম প্রথম যাওয়া-আসা শুরু করেছিলেন , তারপর থেকে অন্ততঃ এক-দেড় বছরের মধ্যে (বা আরো বেশি সময় ধরে) যতবার ন’কাকা এখানে গেছেন , ততবারই দেখেছি __নিরোদ বাবু ন’কাকার আগমন উপলক্ষে ঐ আশ্রমে আসার আগের ও পরের চিত্র আমূল বদলে যেতো ! উনি আসার আগে পর্যন্ত ন’কাকাকে ঘিরে মানুষের জিজ্ঞাসা , ন’কাকার উত্তর , হাসাহাসি , ছোট ছোট গল্প এইসব চলত এবং একটা আনন্দঘন পরিবেশ সর্বদা বজায় থাকতো ; কিন্তু নিরোদ বাবু আসা মানেই এইসব বন্ধ ! উনি সবার কথা থামিয়ে নিজেই এবার বেদ-বেদান্ত-দর্শন-গীতা-ভাগবত-রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদি নানান প্রসঙ্গ টেনে এনে কথা বলতে শুরু করে দিতেন !
পন্ডিত ব্যক্তিদের এই এক অভ্যাস – তিনি যা জানেন তা লোককে শোনাবেনই – তাতে তাদের শুনতে ভালো লাগলো বা না লাগলো – এগুলো কোন Matter করে না ! আদিত্যপুর মিশনেও এটাই হোত – ন’কাকার কাছে আসা মানুষজন , ন’কাকার মুখ থেকে দুটো কথা শুনতে চায় – তোমার কাছে তো নয় হে বাপু ? তা যদি তারা চাইতো – তাহলে তো তোমার কাছেই যেতো ! – কিন্তু এই সহজ সত্যটা পন্ডিত মানুষেরা বুঝতেই চায় না – বা হয়ত তাদের পাণ্ডিত্যাভিমান এই ব্যাপারটাকে পাত্তাই দিতে চায় না ! এক্ষেত্রেও এটাই ঘটতো। (ক্রমশঃ)
ন’কাকা শরীর ছেড়েছেন প্রায় এক বছর হতে চললো (এখন _সেপ্টেম্বর 2019 , উনি শরীর ছেড়েছেন অক্টোবর, 2018) – তবু আমার কাছে এখনো এই জিজ্ঞাসার মীমাংসা হয়নি , উনি যে ধাত্রীগ্রামের আনন্দ-র ব্যাপারে আমাকে বলেছিলেন – ” ওঃ – আনন্দ ! ওর তো দীক্ষা হয়েই আছে ! সে একদিন – ওকে বনগ্রামেই ডেকে নেওয়া যাবে !” কিন্তু এবারকার স্থূল শরীরে তো আনন্দকে উনি ডাকলেন না! তাছাড়া ঐ যে বললেন – ” ওর তো দীক্ষা হয়েই আছে !” – তাহলে কি আনন্দ-র পুর্ববর্তী শরীরে দীক্ষা হয়েই ছিল বা পরের শরীরে ওনার কাছে দীক্ষা গ্রহণের জন্য অপেক্ষা করবে অথবা “ওর তো হয়েই আছে” – ধরে নিয়ে ন’কাকাকেই গুরু হিসাবে মেনে সাধন-ভজন করবে ?
কে এর উত্তর দেবে !! আনন্দ-ই যদি ওর অন্তর্জগতে ডুবে – এর উত্তর কোনদিন খুঁজে পায় – তাহলে ওর নিজের এবং আমার , উভয়েরই জিজ্ঞাসার উত্তর মিলবে ! এগুলি একটা সাংঘাতিক ব্যাপার – দীক্ষা , গুরু নির্বাচন এসব ব্যাপার তো হালকা কোনো বিষয় নয় – সারা জীবনের বললেও ভুল হবে , এটি ইহকাল পরকালের ব্যাপার ! তাই এইসব ক্ষেত্রে কোন decision নেওয়া সত্যিই দুরূহ ! একমাত্র আধ্যাত্মিক ব্যক্তি-ই পারেন এর মীমাংসা করতে অথবা ওই ব্যক্তির অন্তর্জগৎ থেকে উঠে আসা কোনো সিদ্ধান্ত-ই পারে ওই ব্যক্তির মনোজগতে শান্তি এনে দিতে ! আমরা গুরু মহারাজ এবং ন’কাকার কাছে প্রার্থনা জানাবো যেন তাঁরা ওই ছেলেটির(আনন্দ) মনের এই আধ্যাত্মিক জ্বালার আশু নিরসন করেন !
অনেক ভারী ভারী কথা হলো – এবার চলুন আমরা আবার ফিরে যাই “বীরভূমে ন’কাকা” প্রসঙ্গে ! প্রথম প্রথম যখন আমরা ন’কাকার সাথে বীরভূমের বোলপুরের নিকটস্থ আদিত্যপুর আশ্রমে যেতাম তখন শুধুমাত্র পুরোনো ভক্তরা অর্থাৎ পরমানন্দ মিশনের দীক্ষিত ভক্তরাই আসতো । সেই সময় নীরোদ বরণ ব্যানার্জি (যিনি গুরুমহারাজের দীক্ষিত এবং বনগ্রাম আশ্রমের ত্রৈমাসিক পত্রিকা চরৈবেতির নিয়মিত লেখক ছিলেন) হরিপদ ভল্লার(বোলপুর আশ্রমের শুরুর দিকের মুখ্য ভূমিকা গ্রহণকারী)সাথে আসতেন । ওনাদের দুজনের মধ্যে খুবই একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল ৷ নিরোদ বাবু পন্ডিত লোক , সংস্কৃত সহ দুটো তিনটে বিষয়ে তৎকালের M.A., দীর্ঘদিন মানকড় (প্রতাপগড়, বর্ধমান) হাই স্কুলের Head Teacher হিসাবে কাজ করেছিলেন ।যখনকার কথা হচ্ছে _তখন (২০০৭/০৮ সাল) উনি Retired কোরে বোলপুরে বাড়ি বানিয়েছিলেন । আমার মনে হয় _এই বাড়ি তৈরির ব্যাপারে ভল্লা বাবু ওনাকে খুবই হেল্প করেছিলেন বলেই হয়তো উভয়ের এতটা বন্ধুত্ব হয়েছিল !
তাছাড়া ভল্লা বাবুও পন্ডিত ব্যক্তি , উনিও ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সহকারি ম্যানেজার পদে চাকরি করতেন । তাছাড়া ওনারও সংস্কৃতের প্রতি যথেষ্ট দুর্বলতা ছিল – তাই বন্ধুত্ব হতে দেরি লাগে নি । যতদূর সম্ভব নিরোদ বাবুর সাথে পরিচয় হবার পরই ভল্লা বাবুর শ্রীমদ্ভাগবত গীতা মুখস্ত করার একটা প্রবণতা আসে এবং উনি বর্তমানে ঝরঝর করে যে কোন অধ্যায়ের যে কোনো শ্লোক ব্যাখ্যাসহ মুখে মুখে বলে দেন ।
যাইহোক , এই নিরোদ বাবুকে আমরা বনগ্রামে গুরুমহারাজের সামনে চুপচাপ ভালোছেলের মতো বসে থাকতে দেখতাম! সেখানে উনি ওনার অগাধ পান্ডিত্যের কিছুটা প্রকাশ ঘটাতে চাইলেও – কিছুক্ষণের মধ্যেই গুরুমহারাজের ন্যায় মহামানবের অনন্ত জ্ঞানসাগরের কুল-কিনারা কিছুই না পেয়ে হাতজোড় করে বসে বসে গুরু মহারাজের কথা শুনতেন ৷ কিন্তু বোলপুরে ন’কাকার আসরে এসে উনি নিজেকে প্রকাশ করতে ছাড়তেন না!
আপনাদের সত্যি কথাই বলছি – ন’কাকা যখন থেকে আদিত্যপুর আশ্রমে প্রথম প্রথম যাওয়া-আসা শুরু করেছিলেন , তারপর থেকে অন্ততঃ এক-দেড় বছরের মধ্যে (বা আরো বেশি সময় ধরে) যতবার ন’কাকা এখানে গেছেন , ততবারই দেখেছি __নিরোদ বাবু ন’কাকার আগমন উপলক্ষে ঐ আশ্রমে আসার আগের ও পরের চিত্র আমূল বদলে যেতো ! উনি আসার আগে পর্যন্ত ন’কাকাকে ঘিরে মানুষের জিজ্ঞাসা , ন’কাকার উত্তর , হাসাহাসি , ছোট ছোট গল্প এইসব চলত এবং একটা আনন্দঘন পরিবেশ সর্বদা বজায় থাকতো ; কিন্তু নিরোদ বাবু আসা মানেই এইসব বন্ধ ! উনি সবার কথা থামিয়ে নিজেই এবার বেদ-বেদান্ত-দর্শন-গীতা-ভাগবত-রবীন্দ্রনাথ ইত্যাদি নানান প্রসঙ্গ টেনে এনে কথা বলতে শুরু করে দিতেন !
পন্ডিত ব্যক্তিদের এই এক অভ্যাস – তিনি যা জানেন তা লোককে শোনাবেনই – তাতে তাদের শুনতে ভালো লাগলো বা না লাগলো – এগুলো কোন Matter করে না ! আদিত্যপুর মিশনেও এটাই হোত – ন’কাকার কাছে আসা মানুষজন , ন’কাকার মুখ থেকে দুটো কথা শুনতে চায় – তোমার কাছে তো নয় হে বাপু ? তা যদি তারা চাইতো – তাহলে তো তোমার কাছেই যেতো ! – কিন্তু এই সহজ সত্যটা পন্ডিত মানুষেরা বুঝতেই চায় না – বা হয়ত তাদের পাণ্ডিত্যাভিমান এই ব্যাপারটাকে পাত্তাই দিতে চায় না ! এক্ষেত্রেও এটাই ঘটতো। (ক্রমশঃ)