[ন’কাকা (বনগ্রামের শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী)-র কথা হচ্ছিল। ওনার সাথে শ্রীরামপুর যাওয়া শুরুর সময়কার কথা! সেই সময় আমি ওনাকে কেন্দ্র করে যা যা ঘটনা ঘটতে দেখেছিলাম _তাই বলার চেষ্টা করছি। সুদর্শন মাষ্টারমশাই কে কেন্দ্র করে কয়েকজন ভক্ত একজায়গায় জড়ো হয়ে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ চর্চা করত। ]
ওদের মধ্যে একজন শংকর দাস , পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একজন কর্মচারী ছিল , ওর অফিসের একজন ঊর্দ্ধতন কর্ত্তা ছিলেন আশ্রমের একনিষ্ঠ ভক্ত রবীন হালদার (চুঁচূড়ায় থাকেন) ৷ রবীন হালদারের কাছে খবর পেয়ে শংকরদা ১৯৯৯ সালের মাঝামাঝি বনগ্রামে প্রথম যান ৷ উনি গিয়ে গুরু মহারাজকে দেখেই ভেবেছিলেন ইনি সাক্ষাৎ “স্বামী বিবেকানন্দ” ! ফিরে এসে উনি সেই কথা ওনাদের আসরের সকলকে(সুদর্শন বাবু,জহরলাল,মানিক দা,সুনীলবাবু-দেরকে) বলেন । শংকরদা একটু আবেগপ্রবণ মানুষ – তাই ওনার কথার গুরুত্ব দিতে ঐ আসরের লোকেদের একটু দেরী হয়েছিল! ইতিমধ্যে রবীনদার উৎসাহে শংকরদা বনগ্রাম আশ্রমে গিয়ে গুরুমহারাজের কাছে দীক্ষা নিয়ে চলে আসেন ৷ এই কথা শুনে সুদর্শনবাবুদের দলের অন্যতম সদস্য জহর ঘোষ শংকরদার সাথে আশ্রমে গিয়ে গুরু মহারাজকে দেখে এসেছিলেন – সেটা সম্ভবত ১৯৯৯ সালের নভেম্বরের ১-ম বা ২-য় সপ্তাহের কথা ! জহরদাও গুরু মহারাজকে প্রথমে দেখেই অভিভূত হ’ন এবং ফিরে এসে খুবই উচ্ছ্বসিত হয়ে গুরু মহারাজের কথা ও গ্রুপের সবাইকে বলেছিলেন! এবার জহরবাবুর মুখে সব কথা শুনে ওনাদের সেই ভাগাড়ে সাধুবাবার কথা স্মরণে এসে যায় এবং ওনার কথার সত্যতা (ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আবার শরীর নিয়েছেন) যাচাই করার জন্যই ওনারা সবাই মিলে বনগ্রামে যাবার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন । কিন্তু হায় !! ঐ দলের বাকি সদস্যদের আর যাওয়া হয়নি , কারণ ওনাদের প্রস্তুতি পর্ব চলতে চলতেই কয়েকদিনের মধ্যে গুরু মহারাজ শরীর ছেড়ে দিয়েছিলেন (১৯৯৯ সালের ২৭শে নভেম্বর) ! ওদের আর গুরু মহারাজকে দেখা হোল না !
এরপর অনেকদিন কেটে গেছে, তারপর যখন ঐ দলটি শুনল যে বনগ্রাম আশ্রম থেকে অন্য একজন মহাত্মা(ন’কাকা) শ্রীরামপুরে আসা-যাওয়া করছেন – তখন ওনারা নিজেরাই গৌতম ভড়ের বাড়িতে এসে ন’কাকার সাথে দেখা করেছিলেন এবং সুদর্শন বাবু তার বাড়ীতে (অর্থাৎ ওনাদের আসরে) ন’কাকাকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ সেই শুরু ! এরপর আমরা ঐ সময় থেকে কতবার যে শ্রীরামপুরে মাষ্টারমশায়ের বাড়ী গেছি আর ভক্তজনেদের সাথে কত যে আনন্দ হয়েছে – তা বলে শেষ করা যাবে না ! “আমরা” বললাম এইজন্য যে – ন’কাকা যতবার শ্রীরামপুরে গেছেন , ততবারই আমাকে সঙ্গে নিতেন, তাছাড়া থাকতো গৌতম ভড়,শংকরদা, রমেন চক্রবর্তী, বোলপুর আশ্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহারাজ স্বামী ভূবনেশ্বরানন্দ প্রমুখ আরো অনেকে। সুতরাং প্রতিবারের ঘটা ঘটনাগুলি আমাদের সামনেই ঘটেছে __ আর সেগুলি আমি যতটা সম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করবো ।
তবে তার আগে একটু পুরোনো কথা বলে নিই! গুরু মহারাজ-ই বিভিন্নভাবে মানুষের কাছে ন’কাকার মহত্ত্বকে তুলে ধরতেন – নাহলে সাধারণ মানুষ তাঁর সম্বন্ধে কতটুকু-ই বা জানতো ? প্রথমবার গুরু মহারাজ শরীরে থাকাকালীন আমি যে ঘটনাটা দেখেছিলাম – তা হ’ল আশ্রমের ফাল্গুন সংক্রান্তির উৎসবের সময় আকাশভাঙা সজল মেঘকে নিয়ন্ত্রণ করার ঘটনা ! গুরু মহারাজের কাছে যখন ভক্তকুল ঐ প্রচুর জলধর মেঘ সড়ানোর আর্জি নিয়ে গিয়েছিল – গুরু মহারাজ বলে দিয়েছিলেন – ” এটা ন’কাকার ব্যাপার ! ওনাকে ধরো ৷ উনি ইচ্ছা করলেই মেঘকূলকে সড়িয়ে দিতে পারেন ৷” সবাই তখন ন’কাকা-কেই খুব করে ধরেছিল ৷ ন’কাকা আশ্রমের মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনবার হাততালি দিয়েছিলেন । এরপর কি হোল – বনগ্রাম ছাড়া তার চতুপার্শ্বস্থ সমস্ত স্থানে প্রবল বৃষ্টি হয়েছিল ! বনগ্রাম আশ্রমে শুধু দু-চার ফোঁটা বৃষ্টি ঝরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল !
আর দ্বিতীয় ঘটনা যেটা আমার সামনে ঐ সময় (প্রথম দিকে) ঘটেছিল তা হ’ল – শ্রীরামপুরে (হুগলী) আমার শ্যালক(অসীম)-এর বিয়েতে বৌভাতের দিন ন’কাকাও উপস্থিত ছিলেন ৷ আমরা Professonal Photographer ভাড়া করে সমগ্র অনুষ্ঠানের ছবি তোলার ব্যবস্থা করেছিলাম । কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হ’ল এই যে , সমস্ত ছবিগুলির মধ্যে যে ২/৩ জায়গায় ন’কাকার ছবি ছিল , সেগুলি সম্পূর্ণ কালো হয়ে গেছিল! বাকি সমস্ত ছবিই ঝকঝকে – সুন্দর , শুধু ঐগুলিই কালো ! আমরা একটু একটু বুঝতে পারলেও কিছু বলতে পারিনি! অনেক পরে (অন্তত ৩/৪ বছর পরে) , গুরু মহারাজ যেদিন ঐ বাড়িতে(শ্রীরামপুরে) প্রথমবার এসেছিলেন — সেদিন ন’কাকাও ওখানে present ছিলেন ৷ সেইদিনও গুরু মহারাজের photo তোলার জন্য photographer আনা হয়েছিল এবং গুরুমহারাজের ছবি তোলার আগে, ন’কাকার সেই অসীমদার বিয়ের সময়কার ছবি তোলার ব্যাপারটা_ তখন গুরু মহারাজকে বলা হয়েছিল । সব কথা শোনার পর গুরু মহারাজই আমাদের কাছে ঘটনাটা পরিষ্কার করে দিলেন ! উনি বললেন – ” এ্যাঁ ! ন’কাকা এইসব করেছে নাকি ? আজ ফটো তোল্ তো ! আজ দেখবি ন’কাকার ফটো উঠবে !” সেদিন ন’কাকার ফটো উঠেছিল । পরে আমি শুনেছিলাম গুরু মহারাজও এই ঘটনা (ছবি কালো হয়ে যাওয়া) অনেকের বাড়িতে বহুবার ঘটিয়েছিলেন ! গুরু মহারাজের অনিচ্ছায় অনেকে ছবি তুলতে গিয়ে দেখা গিয়েছিল যে সব ফটোই ঠিক আছে – শুধু গুরু মহারাজের ছবিটাই ওঠেনি ৷ …… [ক্রমশঃ]
ওদের মধ্যে একজন শংকর দাস , পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একজন কর্মচারী ছিল , ওর অফিসের একজন ঊর্দ্ধতন কর্ত্তা ছিলেন আশ্রমের একনিষ্ঠ ভক্ত রবীন হালদার (চুঁচূড়ায় থাকেন) ৷ রবীন হালদারের কাছে খবর পেয়ে শংকরদা ১৯৯৯ সালের মাঝামাঝি বনগ্রামে প্রথম যান ৷ উনি গিয়ে গুরু মহারাজকে দেখেই ভেবেছিলেন ইনি সাক্ষাৎ “স্বামী বিবেকানন্দ” ! ফিরে এসে উনি সেই কথা ওনাদের আসরের সকলকে(সুদর্শন বাবু,জহরলাল,মানিক দা,সুনীলবাবু-দেরকে) বলেন । শংকরদা একটু আবেগপ্রবণ মানুষ – তাই ওনার কথার গুরুত্ব দিতে ঐ আসরের লোকেদের একটু দেরী হয়েছিল! ইতিমধ্যে রবীনদার উৎসাহে শংকরদা বনগ্রাম আশ্রমে গিয়ে গুরুমহারাজের কাছে দীক্ষা নিয়ে চলে আসেন ৷ এই কথা শুনে সুদর্শনবাবুদের দলের অন্যতম সদস্য জহর ঘোষ শংকরদার সাথে আশ্রমে গিয়ে গুরু মহারাজকে দেখে এসেছিলেন – সেটা সম্ভবত ১৯৯৯ সালের নভেম্বরের ১-ম বা ২-য় সপ্তাহের কথা ! জহরদাও গুরু মহারাজকে প্রথমে দেখেই অভিভূত হ’ন এবং ফিরে এসে খুবই উচ্ছ্বসিত হয়ে গুরু মহারাজের কথা ও গ্রুপের সবাইকে বলেছিলেন! এবার জহরবাবুর মুখে সব কথা শুনে ওনাদের সেই ভাগাড়ে সাধুবাবার কথা স্মরণে এসে যায় এবং ওনার কথার সত্যতা (ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আবার শরীর নিয়েছেন) যাচাই করার জন্যই ওনারা সবাই মিলে বনগ্রামে যাবার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন । কিন্তু হায় !! ঐ দলের বাকি সদস্যদের আর যাওয়া হয়নি , কারণ ওনাদের প্রস্তুতি পর্ব চলতে চলতেই কয়েকদিনের মধ্যে গুরু মহারাজ শরীর ছেড়ে দিয়েছিলেন (১৯৯৯ সালের ২৭শে নভেম্বর) ! ওদের আর গুরু মহারাজকে দেখা হোল না !
এরপর অনেকদিন কেটে গেছে, তারপর যখন ঐ দলটি শুনল যে বনগ্রাম আশ্রম থেকে অন্য একজন মহাত্মা(ন’কাকা) শ্রীরামপুরে আসা-যাওয়া করছেন – তখন ওনারা নিজেরাই গৌতম ভড়ের বাড়িতে এসে ন’কাকার সাথে দেখা করেছিলেন এবং সুদর্শন বাবু তার বাড়ীতে (অর্থাৎ ওনাদের আসরে) ন’কাকাকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ সেই শুরু ! এরপর আমরা ঐ সময় থেকে কতবার যে শ্রীরামপুরে মাষ্টারমশায়ের বাড়ী গেছি আর ভক্তজনেদের সাথে কত যে আনন্দ হয়েছে – তা বলে শেষ করা যাবে না ! “আমরা” বললাম এইজন্য যে – ন’কাকা যতবার শ্রীরামপুরে গেছেন , ততবারই আমাকে সঙ্গে নিতেন, তাছাড়া থাকতো গৌতম ভড়,শংকরদা, রমেন চক্রবর্তী, বোলপুর আশ্রমের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহারাজ স্বামী ভূবনেশ্বরানন্দ প্রমুখ আরো অনেকে। সুতরাং প্রতিবারের ঘটা ঘটনাগুলি আমাদের সামনেই ঘটেছে __ আর সেগুলি আমি যতটা সম্ভব তুলে ধরার চেষ্টা করবো ।
তবে তার আগে একটু পুরোনো কথা বলে নিই! গুরু মহারাজ-ই বিভিন্নভাবে মানুষের কাছে ন’কাকার মহত্ত্বকে তুলে ধরতেন – নাহলে সাধারণ মানুষ তাঁর সম্বন্ধে কতটুকু-ই বা জানতো ? প্রথমবার গুরু মহারাজ শরীরে থাকাকালীন আমি যে ঘটনাটা দেখেছিলাম – তা হ’ল আশ্রমের ফাল্গুন সংক্রান্তির উৎসবের সময় আকাশভাঙা সজল মেঘকে নিয়ন্ত্রণ করার ঘটনা ! গুরু মহারাজের কাছে যখন ভক্তকুল ঐ প্রচুর জলধর মেঘ সড়ানোর আর্জি নিয়ে গিয়েছিল – গুরু মহারাজ বলে দিয়েছিলেন – ” এটা ন’কাকার ব্যাপার ! ওনাকে ধরো ৷ উনি ইচ্ছা করলেই মেঘকূলকে সড়িয়ে দিতে পারেন ৷” সবাই তখন ন’কাকা-কেই খুব করে ধরেছিল ৷ ন’কাকা আশ্রমের মাঠের মাঝে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে তিনবার হাততালি দিয়েছিলেন । এরপর কি হোল – বনগ্রাম ছাড়া তার চতুপার্শ্বস্থ সমস্ত স্থানে প্রবল বৃষ্টি হয়েছিল ! বনগ্রাম আশ্রমে শুধু দু-চার ফোঁটা বৃষ্টি ঝরেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল !
আর দ্বিতীয় ঘটনা যেটা আমার সামনে ঐ সময় (প্রথম দিকে) ঘটেছিল তা হ’ল – শ্রীরামপুরে (হুগলী) আমার শ্যালক(অসীম)-এর বিয়েতে বৌভাতের দিন ন’কাকাও উপস্থিত ছিলেন ৷ আমরা Professonal Photographer ভাড়া করে সমগ্র অনুষ্ঠানের ছবি তোলার ব্যবস্থা করেছিলাম । কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হ’ল এই যে , সমস্ত ছবিগুলির মধ্যে যে ২/৩ জায়গায় ন’কাকার ছবি ছিল , সেগুলি সম্পূর্ণ কালো হয়ে গেছিল! বাকি সমস্ত ছবিই ঝকঝকে – সুন্দর , শুধু ঐগুলিই কালো ! আমরা একটু একটু বুঝতে পারলেও কিছু বলতে পারিনি! অনেক পরে (অন্তত ৩/৪ বছর পরে) , গুরু মহারাজ যেদিন ঐ বাড়িতে(শ্রীরামপুরে) প্রথমবার এসেছিলেন — সেদিন ন’কাকাও ওখানে present ছিলেন ৷ সেইদিনও গুরু মহারাজের photo তোলার জন্য photographer আনা হয়েছিল এবং গুরুমহারাজের ছবি তোলার আগে, ন’কাকার সেই অসীমদার বিয়ের সময়কার ছবি তোলার ব্যাপারটা_ তখন গুরু মহারাজকে বলা হয়েছিল । সব কথা শোনার পর গুরু মহারাজই আমাদের কাছে ঘটনাটা পরিষ্কার করে দিলেন ! উনি বললেন – ” এ্যাঁ ! ন’কাকা এইসব করেছে নাকি ? আজ ফটো তোল্ তো ! আজ দেখবি ন’কাকার ফটো উঠবে !” সেদিন ন’কাকার ফটো উঠেছিল । পরে আমি শুনেছিলাম গুরু মহারাজও এই ঘটনা (ছবি কালো হয়ে যাওয়া) অনেকের বাড়িতে বহুবার ঘটিয়েছিলেন ! গুরু মহারাজের অনিচ্ছায় অনেকে ছবি তুলতে গিয়ে দেখা গিয়েছিল যে সব ফটোই ঠিক আছে – শুধু গুরু মহারাজের ছবিটাই ওঠেনি ৷ …… [ক্রমশঃ]