[ ন’কাকার কথা হচ্ছিল |আগের দিনের আলোচনার পর……. ]
তবে একটা বিরাট শান্তি কি জানেন – ন’কাকার কথা যখনই ভাবি, তখনই মনটা কেমন শান্ত হয়ে যায়, প্রশান্ত হয়ে যায় ! কারণটা হচ্ছে – ওই যে, সব কিছুতেই ওনার একটা সাংঘাতিক নির্লিপ্ত ভাব. ওই যে- ওনার একটা সর্বংসহা রূপ, ওনার অলৌকিক সারল্যমাখা হাসি এ সবের মধ্যে একটা সুদৃঢ় আশ্বাস রয়েছে ! উনি যাকে ছুঁয়েছেন (অর্থাৎ ভালোবেসেছেন) তাকে সাথে করে না নিয়ে উনি যাবেন না ! সেমিটিক ধারণায় যেমন রয়েছে যে ‘রোজ কেয়ামতে’-র দিন (বা শেষ নামাজের দিন) নবীজির প্রিয়পাত্রদেরকে আলোর সরু পথ ধরে পৌঁছে দেওয়া হয় আল্লাহর কাছে, পথের কোনো বাধা-বিপত্তি তাদেরকে কোনভাবেই স্পর্শ করতে পারে না ! ন’কাকাকে দেখলে আমার অমনটাই মনে হোতো – মনে হোতো ইনি যে কাউকে ভব পারাবার হেলায় পার করে দিতে পারেন । ভগবান পরমানন্দ যদি ভবপারের কান্ডারী হ’ন – তাহলে সেই কাজের সহযোগী হিসাবে ন’কাকার নামও করা যেতেই পারে । আমার তখন খুবই মনে হোতো যে, ন’কাকার মধ্যে যে আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে, তাতে তিনি যে কাউকে (তা সে স্থূলভাবে বা মানসিকভাবে যে স্থিতিতেই থাকুক না কেন) চুলের মুঠি ধরে মুক্তির পথ দেখাতে পারেন !
এবার হয়তো সুধী পাঠকদের মধ্যে অনেকেই বলতে পারেন – ” ‘মুক্তি’ আবার কি এমন ? ওটা তেমন কিছু বিষয়-ই নয় !” কিন্তু সত্যিই কি তাই ? গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ বলেছিলেন – ” মুক্তি কথার অর্থ হচ্ছে, যে মানুষ – যে চেতনায় রয়েছে, সেই অবস্থা থেকে তার উত্তরণ ঘটানো !” এটাই কি কিছু কম কথা ! জন্ম-জন্মান্তর ধরে আমাদের মতো সাধারন মানুষের চেতনার বিশেষ কোনো উত্তরণ-ই ঘটে না – যে অবস্থায় সে রয়েছে, সেই অবস্থাতেই সে থাকতে চায় ! এই যে Stagnancy – এটার জন্যই তো বিবর্তনের ধারায় জ্যাম-জট ! আর এই জ্যাম-জট কাটানোর জন্যই তো মহাপুরুষদের আগমন ! আত্মিক অগ্রগতির flow যদি অবিরত থাকতো – তাহলে ঈশ্বরের অবতরণের বা decending-এর কোনো প্রয়োজনই হোত না – এই কথা গুরুমহারাজ নিজের মুখে বারবার বলতেন । উনি বলেছিলেন – তাঁর এই শরীরটা (স্বামী পরমানন্দ রূপী শরীর) ৬o,৪১৮ (!) -তম শরীর । তাঁর ৬৪০০০-বার শরীর গ্রহণ করার পর এই পৃথিবী গ্রহ Mature হবে ৷ তখন আর ঈশ্বরের অবতরণের প্রয়োজন হবে না – তখন পৃথিবী গ্রহে অধিক সংখ্যায় উন্নত মানুষেরা বিরাজ করবে ৷ তাই তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে ভার দিয়ে দিলে __তারাই পৃথিবীর ভালো-মন্দের দিকটা দেখে নিতে পারবে ।৷
এই অবতার বা decending মহাপুরুষদের আবার দুটো রূপের কথা বলেছিলেন গুরুমহারাজ । এক হলো ‘হরির অবতার’, এবং অন্যটি হলো ‘শিবের অবতার’ ৷ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আদি-রা হলেন ‘হরির অবতার’ ৷ আর ত্রৈলঙ্গস্বামী, গোরক্ষনাথ প্রমুখরা এবং নিত্যানন্দ-স্বামী বিবেকানন্দ-আদি এনাদেরকেও ‘শিবাবতার’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন মহাজনেরা ! কিন্তু তারাপীঠের বামদেবকে বলা হয়েছে ‘মহাভৈরব’ ! ন’কাকাকেও গুরু মহারাজ বললেন – ‘মহাভৈরব’ ! ‘মহাভৈরব’_এর সংজ্ঞায় গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” শিবের যে রূপ তন্ত্রের আরাধ্য – তাঁকেই ‘মহাভৈরব’ বলা হয় ৷” তাহলে সেই অর্থে বামদেব বা ন’কাকাও ছিলেন ‘শিবাবতার’ ।
আমাদের মত যারা গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ-কে এবং ন’কাকা বা শ্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-কে খুবই কাছ থেকে দেখলাম, তাঁর কথা শুনলাম, তাঁর সাথে কথা বললাম, কিঞ্চিৎ স্নেহ বা ভালোবাসাও পেলাম – তাদের (আমাদের) এখন কি যন্ত্রণা বলুন তো ! “চোখের সামনে চিন্তামণি – চিনতে পারলি না” – এই ধরনের যেসব গান রয়েছে – তার সাক্ষাত প্রমান আমরা ! আমাদের মধ্যে নিশ্চয়ই এমন অনেকেই রয়েছেন যারা – তাঁদের কৃপা লাভ করার পর, তাদের নির্দেশিত সাধনপথ অবলম্বন করে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু সবাই তো নয় ! আমার মনে হয় আমরা বেশিরভাগরা তো ওই দ্বিতীয় দলেই পড়ে যাবো ! …… [ক্রমশঃ]
তবে একটা বিরাট শান্তি কি জানেন – ন’কাকার কথা যখনই ভাবি, তখনই মনটা কেমন শান্ত হয়ে যায়, প্রশান্ত হয়ে যায় ! কারণটা হচ্ছে – ওই যে, সব কিছুতেই ওনার একটা সাংঘাতিক নির্লিপ্ত ভাব. ওই যে- ওনার একটা সর্বংসহা রূপ, ওনার অলৌকিক সারল্যমাখা হাসি এ সবের মধ্যে একটা সুদৃঢ় আশ্বাস রয়েছে ! উনি যাকে ছুঁয়েছেন (অর্থাৎ ভালোবেসেছেন) তাকে সাথে করে না নিয়ে উনি যাবেন না ! সেমিটিক ধারণায় যেমন রয়েছে যে ‘রোজ কেয়ামতে’-র দিন (বা শেষ নামাজের দিন) নবীজির প্রিয়পাত্রদেরকে আলোর সরু পথ ধরে পৌঁছে দেওয়া হয় আল্লাহর কাছে, পথের কোনো বাধা-বিপত্তি তাদেরকে কোনভাবেই স্পর্শ করতে পারে না ! ন’কাকাকে দেখলে আমার অমনটাই মনে হোতো – মনে হোতো ইনি যে কাউকে ভব পারাবার হেলায় পার করে দিতে পারেন । ভগবান পরমানন্দ যদি ভবপারের কান্ডারী হ’ন – তাহলে সেই কাজের সহযোগী হিসাবে ন’কাকার নামও করা যেতেই পারে । আমার তখন খুবই মনে হোতো যে, ন’কাকার মধ্যে যে আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে, তাতে তিনি যে কাউকে (তা সে স্থূলভাবে বা মানসিকভাবে যে স্থিতিতেই থাকুক না কেন) চুলের মুঠি ধরে মুক্তির পথ দেখাতে পারেন !
এবার হয়তো সুধী পাঠকদের মধ্যে অনেকেই বলতে পারেন – ” ‘মুক্তি’ আবার কি এমন ? ওটা তেমন কিছু বিষয়-ই নয় !” কিন্তু সত্যিই কি তাই ? গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ বলেছিলেন – ” মুক্তি কথার অর্থ হচ্ছে, যে মানুষ – যে চেতনায় রয়েছে, সেই অবস্থা থেকে তার উত্তরণ ঘটানো !” এটাই কি কিছু কম কথা ! জন্ম-জন্মান্তর ধরে আমাদের মতো সাধারন মানুষের চেতনার বিশেষ কোনো উত্তরণ-ই ঘটে না – যে অবস্থায় সে রয়েছে, সেই অবস্থাতেই সে থাকতে চায় ! এই যে Stagnancy – এটার জন্যই তো বিবর্তনের ধারায় জ্যাম-জট ! আর এই জ্যাম-জট কাটানোর জন্যই তো মহাপুরুষদের আগমন ! আত্মিক অগ্রগতির flow যদি অবিরত থাকতো – তাহলে ঈশ্বরের অবতরণের বা decending-এর কোনো প্রয়োজনই হোত না – এই কথা গুরুমহারাজ নিজের মুখে বারবার বলতেন । উনি বলেছিলেন – তাঁর এই শরীরটা (স্বামী পরমানন্দ রূপী শরীর) ৬o,৪১৮ (!) -তম শরীর । তাঁর ৬৪০০০-বার শরীর গ্রহণ করার পর এই পৃথিবী গ্রহ Mature হবে ৷ তখন আর ঈশ্বরের অবতরণের প্রয়োজন হবে না – তখন পৃথিবী গ্রহে অধিক সংখ্যায় উন্নত মানুষেরা বিরাজ করবে ৷ তাই তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে ভার দিয়ে দিলে __তারাই পৃথিবীর ভালো-মন্দের দিকটা দেখে নিতে পারবে ।৷
এই অবতার বা decending মহাপুরুষদের আবার দুটো রূপের কথা বলেছিলেন গুরুমহারাজ । এক হলো ‘হরির অবতার’, এবং অন্যটি হলো ‘শিবের অবতার’ ৷ শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ আদি-রা হলেন ‘হরির অবতার’ ৷ আর ত্রৈলঙ্গস্বামী, গোরক্ষনাথ প্রমুখরা এবং নিত্যানন্দ-স্বামী বিবেকানন্দ-আদি এনাদেরকেও ‘শিবাবতার’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন মহাজনেরা ! কিন্তু তারাপীঠের বামদেবকে বলা হয়েছে ‘মহাভৈরব’ ! ন’কাকাকেও গুরু মহারাজ বললেন – ‘মহাভৈরব’ ! ‘মহাভৈরব’_এর সংজ্ঞায় গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” শিবের যে রূপ তন্ত্রের আরাধ্য – তাঁকেই ‘মহাভৈরব’ বলা হয় ৷” তাহলে সেই অর্থে বামদেব বা ন’কাকাও ছিলেন ‘শিবাবতার’ ।
আমাদের মত যারা গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ-কে এবং ন’কাকা বা শ্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-কে খুবই কাছ থেকে দেখলাম, তাঁর কথা শুনলাম, তাঁর সাথে কথা বললাম, কিঞ্চিৎ স্নেহ বা ভালোবাসাও পেলাম – তাদের (আমাদের) এখন কি যন্ত্রণা বলুন তো ! “চোখের সামনে চিন্তামণি – চিনতে পারলি না” – এই ধরনের যেসব গান রয়েছে – তার সাক্ষাত প্রমান আমরা ! আমাদের মধ্যে নিশ্চয়ই এমন অনেকেই রয়েছেন যারা – তাঁদের কৃপা লাভ করার পর, তাদের নির্দেশিত সাধনপথ অবলম্বন করে তরতর করে এগিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু সবাই তো নয় ! আমার মনে হয় আমরা বেশিরভাগরা তো ওই দ্বিতীয় দলেই পড়ে যাবো ! …… [ক্রমশঃ]