গুরু মহারাজ (স্বামী পরমানন্দ গিরি মহারাজ) সেদিন বনগ্রাম আশ্রমে সকালের সিটিংয়ে আলোচনা করছিলেন – জগতে কোন কিছু-ই হারিয়ে যায় না , ফুরিয়ে যায় না ! হয়তো রূপান্তরিত হয় , কিন্তু প্রকৃতিতে সব কিছুরই একটা ‘ছাপ’ বা impression থেকে যায়। উনি উদাহরণ হিসেবে নিজের কথাও বললেন , বলছিলেন – ” এই যে আমি এখানে বসে বসে তোমাদের সামনে কথা বলছি , এটা দীর্ঘদিন ধরে যেহেতু একইভাবে করছি – তাই এখানে আমার শরীরের অবয়বের একটা ‘ছাপ’ এখানকার পরিমণ্ডলে রয়ে যাবে – এটা থাকবে , বহুকাল ধরে থাকবে ৷ আমার স্থূল শরীর চলে যাবার পরও যদি কেউ এই সিটিং-এর সামনে বসে মনঃসংযোগ করে তাহলে এই যে সূক্ষ্ম ‘ছাপ’-এর কথা বললাম – ওটি ধীরে ধীরে তার সামনে প্রকট হয়ে যাবে । অর্থাৎ সেই ব্যক্তি আমাকে একদম স্থূল-এর মতই দেখতে পাবে ৷”
সেদিন গুরু মহারাজের কাছ থেকে ওই কথাগুলো শুনে আমরা কল্পনায় অনেক কিছু দেখতে পেয়েছিলাম (যেমন – পরবর্তীকালের প্রচুর লোকজন গুরু মহারাজের সিটিং-এর সামনে চোখ বন্ধ করে বসে রয়েছে , আর তারা গুরু মহারাজকে প্রত্যক্ষ করছে আর আনন্দ করছে) ! কিন্তু আমাদেরও যে সেই দিনটা আসবে – অর্থাৎ গুরুমহারাজ আমাদের আগেই চলে যাবেন, তা বুঝতে পারিনি ! অবশ্য এটাও ঠিক যে আজ পর্যন্ত ওই স্থানে বসে চোখ বন্ধ করে বসে তাকে প্রত্যক্ষ করার কোনদিন কোন চেষ্টাও করা হয়নি !
যাইহোক , ফিরে আসি সেদিনকার গুরু মহারাজের কথায় । সেদিন উনি এরপর যা বললেন সেটাও ছিল আমাদের কাছে একেবারে নতুন ! উনি বললেন – ” এই যে আমি তোমাদের জিজ্ঞাসার উত্তর দিচ্ছি , বা এমনিই কোন কথা বলছি – এগুলোও হারিয়ে যায় না ! এগুলোও এই বাতাবরণে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তরঙ্গের আকারে বা Code-এর আকারে থেকে যাচ্ছে । যেমন কোন গায়কের গান বা কারও কথা অথবা বক্তৃতা , আবৃত্তি ইত্যাদি যখন Recording করা হয় – তখন কিভাবে হয় বলোতো ?– গান বা কথার প্রতিটি উচ্চারণের Vibration টা নির্দিষ্ট Disc -এ imprint হয়ে যায় ! এই Code গুলি decode করতে পারলেই সেগুলি আবার নতুন করে শোনা যায় ৷ ঠিক তেমনি যে কোন মহাপুরুষের কথা বা বাণীসকলও এই বাতাবরণে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম Vibration -এর আকারে রয়ে গেছে ! প্রতিনিয়ত অসংখ্য নানান শব্দ এই পৃথিবীতে হয়ে চলেছে , সেগুলিরও সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম Vibration একটির উপর একটি স্থাপিত হয়ে_ Vibration গুলির একটা ঝঞ্ঝাট-এর জট পাকিয়ে যায় ৷ কিন্তু প্রতিটি ব্যক্তির কণ্ঠস্বরের Vibration যেহেতু পৃথক, তাই প্রতিটি individual -এর কণ্ঠস্বরেরই Code প্রকৃতির বাতাবরণে রয়েছে ৷ ঠিক মতো উপযুক্ত Technology প্রয়োগ করে , সেগুলিকে পৃথকীকরণ করতে পারলেই সবার বলা কথাই পুনরায় খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে । বিশেষতঃ ভগবান রামচন্দ্র , শ্রীকৃষ্ণ অথবা যীশু , হযরত মুহাম্মদ প্রমুখ Greatman -দের বলা কথা আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের কথার মত নয় ! সাধারণ মানুষ কথা বলে ‘বৈখরী’-তে (বাক্-কে চারটি ভাগে ভাগ করা হয় ~বৈখরী , মধ্যমা , পশ্যন্তি , পরা) , কিন্তু মহাপুরুষগণ কথা বলেন ‘পরা’ থেকে , সময়ে সময়ে ‘মধ্যমা’ বা ‘পশ্যন্তি’ থেকে ! সুতরাং তাঁদের বলা কথা গুলির Vibration আরও তীব্র আরও শক্তিশালী ! তাই হাজার Vibration-এর ভিড়ে মহাপুরুষদের কথাগুলি detect করা অপেক্ষাকৃত সহজ-ই হবে !”
গুরু মহারাজ সেদিন বলেছিলেন যে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলিতে এই ব্যাপারটি নিয়ে তুমুল গবেষণা চলছে । যদি বৈজ্ঞানিকরা Successful হন তাহলে , মহাভারতের সময়ে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কী কী উপদেশ দিয়েছিলেন বা তার জিজ্ঞাসার ঠিক কী কী উত্তর দিয়েছিলেন (শ্রী শ্রী ভগবদ্গীতা) – তা পুনরায় শোনা যেতে পারে !
এইভাবে রামচন্দ্রের কন্ঠস্বর, যীশুর শিক্ষা, হজরত মুহাম্মদের উপদেশাবলী পুনরায় collection করা সম্ভব হবে। আর এমনটা যদি কখনও হয় _তাহলে বর্তমানের ধর্মগ্রন্থগুলিতে কোন কথা বা বক্তব্য পরবর্ত্তীতে প্রক্ষিপ্ত(পরে সুবিধামতো ভাবে লিখিত) হয়েছে কি না, সর্বোপরি সেই সমস্ত মহান মানুষগুলির কন্ঠস্বর ঠিক কেমন ছিল _তা সব কিছুই জানা যাবে।
তবে এ ব্যাপারে উনি আরও বলেছিলেন যে, এই যে রবীন্দ্রনাথের কন্ঠস্বর এখনও record রয়েছে এবং তাতে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথের গলা মেয়েদের মতো মিহি! গুরুমহারাজ বলেছিলেন যে রবীন্দ্রনাথের কন্ঠস্বর একটু মেয়েলী গোছের ছিল ঠিকই _কিন্তু এখন যেমনটা শোনা যায়, ঠিক তেমনটি ছিল না। আসলে তখনকার দিনে recording ব্যবস্থা খুবই অনুন্নত ছিল, তাই যে কোন রেকর্ডিং-এ voice quality যথাযথ হোত না । এরপর ঐ recording টি থেকে অনুন্নত technology-র সাহায্যে যখনই বারবার re-recording করা হোতে থাকল _তখনই ব্যক্তির original কন্ঠস্বর হারিয়ে গিয়ে নতুন অন্য কিছুতে রূপ নিল! রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রেও এটাই হয়েছে!!
এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উনি বললেন _প্রকৃতির বাতাবরনে এই যে কন্ঠস্বরের Vibration-এর জট পাকিয়ে রয়েছে, এখান থেকে কোন স্পেশাল voice যদি পাওয়াও যায় _তা original voice থেকে সম্পূর্ণ আলাদা কোন voice-এও পরিনত হয়ে যেতে পারে! আর সেক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির original voice কেমন ছিল, তা না জানা থাকায়, যেটি পাওয়া যাচ্ছে সেটাকেই চূড়ান্ত ধরে নিতে হবে! এইসব সমস্যা হোতে পারে!
তবু সত্যি সত্যিই যদি এমনটা হয় (মহাপুরুষদের কন্ঠস্বর পাওয়া যায়) _তাহলে পৃথিবীর মানুষের প্রভূত কল্যাণ সাধন হোতে পারে! মানুষ সরাসরি মহাপুরুষগনের শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করতে পারবে। (ক্রমশঃ)
সেদিন গুরু মহারাজের কাছ থেকে ওই কথাগুলো শুনে আমরা কল্পনায় অনেক কিছু দেখতে পেয়েছিলাম (যেমন – পরবর্তীকালের প্রচুর লোকজন গুরু মহারাজের সিটিং-এর সামনে চোখ বন্ধ করে বসে রয়েছে , আর তারা গুরু মহারাজকে প্রত্যক্ষ করছে আর আনন্দ করছে) ! কিন্তু আমাদেরও যে সেই দিনটা আসবে – অর্থাৎ গুরুমহারাজ আমাদের আগেই চলে যাবেন, তা বুঝতে পারিনি ! অবশ্য এটাও ঠিক যে আজ পর্যন্ত ওই স্থানে বসে চোখ বন্ধ করে বসে তাকে প্রত্যক্ষ করার কোনদিন কোন চেষ্টাও করা হয়নি !
যাইহোক , ফিরে আসি সেদিনকার গুরু মহারাজের কথায় । সেদিন উনি এরপর যা বললেন সেটাও ছিল আমাদের কাছে একেবারে নতুন ! উনি বললেন – ” এই যে আমি তোমাদের জিজ্ঞাসার উত্তর দিচ্ছি , বা এমনিই কোন কথা বলছি – এগুলোও হারিয়ে যায় না ! এগুলোও এই বাতাবরণে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম তরঙ্গের আকারে বা Code-এর আকারে থেকে যাচ্ছে । যেমন কোন গায়কের গান বা কারও কথা অথবা বক্তৃতা , আবৃত্তি ইত্যাদি যখন Recording করা হয় – তখন কিভাবে হয় বলোতো ?– গান বা কথার প্রতিটি উচ্চারণের Vibration টা নির্দিষ্ট Disc -এ imprint হয়ে যায় ! এই Code গুলি decode করতে পারলেই সেগুলি আবার নতুন করে শোনা যায় ৷ ঠিক তেমনি যে কোন মহাপুরুষের কথা বা বাণীসকলও এই বাতাবরণে সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম Vibration -এর আকারে রয়ে গেছে ! প্রতিনিয়ত অসংখ্য নানান শব্দ এই পৃথিবীতে হয়ে চলেছে , সেগুলিরও সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম Vibration একটির উপর একটি স্থাপিত হয়ে_ Vibration গুলির একটা ঝঞ্ঝাট-এর জট পাকিয়ে যায় ৷ কিন্তু প্রতিটি ব্যক্তির কণ্ঠস্বরের Vibration যেহেতু পৃথক, তাই প্রতিটি individual -এর কণ্ঠস্বরেরই Code প্রকৃতির বাতাবরণে রয়েছে ৷ ঠিক মতো উপযুক্ত Technology প্রয়োগ করে , সেগুলিকে পৃথকীকরণ করতে পারলেই সবার বলা কথাই পুনরায় খুঁজে পাওয়া সম্ভব হবে । বিশেষতঃ ভগবান রামচন্দ্র , শ্রীকৃষ্ণ অথবা যীশু , হযরত মুহাম্মদ প্রমুখ Greatman -দের বলা কথা আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের কথার মত নয় ! সাধারণ মানুষ কথা বলে ‘বৈখরী’-তে (বাক্-কে চারটি ভাগে ভাগ করা হয় ~বৈখরী , মধ্যমা , পশ্যন্তি , পরা) , কিন্তু মহাপুরুষগণ কথা বলেন ‘পরা’ থেকে , সময়ে সময়ে ‘মধ্যমা’ বা ‘পশ্যন্তি’ থেকে ! সুতরাং তাঁদের বলা কথা গুলির Vibration আরও তীব্র আরও শক্তিশালী ! তাই হাজার Vibration-এর ভিড়ে মহাপুরুষদের কথাগুলি detect করা অপেক্ষাকৃত সহজ-ই হবে !”
গুরু মহারাজ সেদিন বলেছিলেন যে পাশ্চাত্যের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলিতে এই ব্যাপারটি নিয়ে তুমুল গবেষণা চলছে । যদি বৈজ্ঞানিকরা Successful হন তাহলে , মহাভারতের সময়ে কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে কী কী উপদেশ দিয়েছিলেন বা তার জিজ্ঞাসার ঠিক কী কী উত্তর দিয়েছিলেন (শ্রী শ্রী ভগবদ্গীতা) – তা পুনরায় শোনা যেতে পারে !
এইভাবে রামচন্দ্রের কন্ঠস্বর, যীশুর শিক্ষা, হজরত মুহাম্মদের উপদেশাবলী পুনরায় collection করা সম্ভব হবে। আর এমনটা যদি কখনও হয় _তাহলে বর্তমানের ধর্মগ্রন্থগুলিতে কোন কথা বা বক্তব্য পরবর্ত্তীতে প্রক্ষিপ্ত(পরে সুবিধামতো ভাবে লিখিত) হয়েছে কি না, সর্বোপরি সেই সমস্ত মহান মানুষগুলির কন্ঠস্বর ঠিক কেমন ছিল _তা সব কিছুই জানা যাবে।
তবে এ ব্যাপারে উনি আরও বলেছিলেন যে, এই যে রবীন্দ্রনাথের কন্ঠস্বর এখনও record রয়েছে এবং তাতে দেখা যায় রবীন্দ্রনাথের গলা মেয়েদের মতো মিহি! গুরুমহারাজ বলেছিলেন যে রবীন্দ্রনাথের কন্ঠস্বর একটু মেয়েলী গোছের ছিল ঠিকই _কিন্তু এখন যেমনটা শোনা যায়, ঠিক তেমনটি ছিল না। আসলে তখনকার দিনে recording ব্যবস্থা খুবই অনুন্নত ছিল, তাই যে কোন রেকর্ডিং-এ voice quality যথাযথ হোত না । এরপর ঐ recording টি থেকে অনুন্নত technology-র সাহায্যে যখনই বারবার re-recording করা হোতে থাকল _তখনই ব্যক্তির original কন্ঠস্বর হারিয়ে গিয়ে নতুন অন্য কিছুতে রূপ নিল! রবীন্দ্রনাথের ক্ষেত্রেও এটাই হয়েছে!!
এই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উনি বললেন _প্রকৃতির বাতাবরনে এই যে কন্ঠস্বরের Vibration-এর জট পাকিয়ে রয়েছে, এখান থেকে কোন স্পেশাল voice যদি পাওয়াও যায় _তা original voice থেকে সম্পূর্ণ আলাদা কোন voice-এও পরিনত হয়ে যেতে পারে! আর সেক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির original voice কেমন ছিল, তা না জানা থাকায়, যেটি পাওয়া যাচ্ছে সেটাকেই চূড়ান্ত ধরে নিতে হবে! এইসব সমস্যা হোতে পারে!
তবু সত্যি সত্যিই যদি এমনটা হয় (মহাপুরুষদের কন্ঠস্বর পাওয়া যায়) _তাহলে পৃথিবীর মানুষের প্রভূত কল্যাণ সাধন হোতে পারে! মানুষ সরাসরি মহাপুরুষগনের শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করতে পারবে। (ক্রমশঃ)