শ্রী শ্রী গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ আমাদের কাছে মানব সমাজের বিবর্তনের যে ইতিহাস বলেছিলেন – সেইগুলির কিছু কিছু এখানে পরিবেশন করা হচ্ছিল । একটা কথা বলাই হয়নি, যেটা গুরুমহারাজ বলেছিলেন, সেইটা হোল – আদিম মানব সমাজের মানব যে প্রথম ‘ঘর বাঁধার’ কাজটি শুরু করেছিল অর্থাৎ পাকাপাকিভাবে কোন একটি স্থানে স্থিতু হয়েছিল – তার মূলে ছিল ‘নারী’ ! ‘নারী’-ই প্রথম পুরুষকে বলেছিল – ” আর চলা নয়, এসো – এবার আমরা ঘর বাঁধি ৷” প্রকৃতপক্ষে সেই চলমান বা ভ্রাম্যমান জীবনে, দলের নারীরা গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসব হওয়া এবং শিশু সন্তানগুলির একটু বড় হওয়া পর্যন্ত কোনো না কোনো স্থানে আটকে যেতে বাধ্য হতো দলের সদস্যরা ! এই ব্যাপারটিই পরবর্তীকালে স্থায়িত্ব লাভ করে এবং মানব সভ্যতার সূচনা হয় – সমাজ ব্যবস্থা গড়ে ওঠার মাধ্যমে । সুতরাং এটা বলা যায় যে, মানব সভ্যতার সূচনার মূলেও ছিল ‘নারী’ । সেইজন্যেই গুরুমহারাজ ‘নারীর’ মহিমা বর্ণনা করতে গিয়ে প্রায়ই উল্লেখ করতেন যে মানবের আদি মাতা ছিলেন কৃষ্ণবর্ণের নারী, সমাজ ব্যাবস্থা সূচনার মূলেও ছিল ‘নারী’, আদিম সমাজ থেকে আজ পর্যন্ত পুরুষের কঠোর কঠিন সংগ্রামময় জীবনে কোমলতা, স্নিগ্ধতা, ভালোবাসার স্পর্শ দিয়েছে নারী । এ যেন মরুভূমির তপ্ত দাবদাহে ওয়েসিসের তরুছায়ার ন্যায় ৷ এইভাবেই নর এবং নারী পরস্পর পরস্পরকে গ্রহণ কোরে একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছিল ৷
প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষের দৈহিক শক্তি বেশি, তার দৈহিক গঠনও নারীর তুলনায় আকার আয়তনে বড় । তাছাড়াও প্রাকৃতিক ভাবে নারীর শরীর ও মন পুরুষের তুলনায় কোমল বা কমনীয় । পুরুষের বৈশিষ্ট্য কঠোরতা এবং নারীর বৈশিষ্ট্য কোমলতা । পুরুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি সাহস, শৌর্য্য, কর্মচঞ্চলতা, উদ্যম, উৎসাহ, গতিশীলতা!আর এই গুলিকে একমাত্র কন্ট্রোল করতে পারে নারী__ তার স্নেহ, মায়া, মমতা, কমনীয়তা দিয়ে । এটাই প্রকৃতি মায়ের Balance ! পুরুষের দৈহিক শক্তি, বহিঃশক্তি, গায়ের জোর বেশি – কিন্তু নারীর অন্তঃশক্তি পুরুষ অপেক্ষা অনেক বেশি । গুরু মহারাজ সিটিংয়ে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলতেন – ” তোরা কতটা পুরুষ সেটা তোদের স্ত্রীরা জানে ! আমার কাছে বেশী পৌরুষী ফলাস্ না – এক্ষুনি সব ফাঁস করে দেবো – কারণ আমি তোদের ভালোটাও জানি ,দুর্বলতাটাও জানি ।”
এখানেই পুরুষেরা দুর্বল – আর সেই দুর্বলতা ঢাকতে বহুকাল আগে থাকতেই দৈহিক বল দিয়ে জোর করে নারীদেরকে ঘোমটার আড়ালে, চিকের আড়ালে – অন্তঃপুরচারিনী করে রেখে দেওয়া হয়েছে ৷ জোর করে নারীদের কাছ থেকে সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে ৷ কোন মহাপুরুষ বা অবতার পুরুষেরা কিন্তু এটা কখনোই করেন নি – তাঁরা করবেনই বা কেন , কারণ তাঁরা তো মহাপ্রকৃতির নিয়মেই শরীর ধারন করে থাকেন – তাই প্রকৃতির সব রহস্যই তাঁদের অবগত । সুতরাং তাঁদের কাজের কোন ভূল হোতেই পারে না। কিন্তু হয় কি জানেন__ যে কোন মহাপুরুষ শরীর ছেড়ে দেওয়ার পরই তাদের উত্তরসূরিরা মহাপুরুষদের শিক্ষাকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করে এবং সাধারণ মানুষদের কাছে সেগুলিকে শুনিয়ে– মহাপুরুষদের মূল শিক্ষা থেকে বহু দূরে নিয়ে চলে যায় । কাল ভেদে, স্থানভেদে এই একই কাজ বহুদিন ধরে করে আসছে স্বার্থান্বেষী মানুষদের দল ।
গুরু মহারাজ ইতালিতে এক আর্চ বিশপ (পোপের পরেই সম্মানের দিক থেকে এনাদের স্থান) বলেছিল যে, ভ্যাটিকান সিটিতে লাইব্রেরীতে বাইবেলের যে সব পান্ডুলিপি রয়েছে – সেগুলি সাধারণের জন্য নয় , শুধুমাত্র ভ্যাটিকান সিটির সিনিয়র বিশপদের জন্য । ইসলামেও রয়েছে ছেষট্টি (৬৬) প্যারা গুরুমুখে আর তেত্রিশ (৩৩)প্যারা সাধারণের জন্য । সনাতন ধর্মীয়রাও এ ব্যাপারে পিছিয়ে নাই – একই বেদান্ত-সূত্রের পাঁচ রকম ভাষ্য, একই গীতার ২৫ রকম ভাষ্য – রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ সবেতেই দেখা যায় পরবর্তীতে অনেক শ্লোক প্রক্ষিপ্ত হয়েছে (পরবর্তী পণ্ডিতরা নিজেদের সুবিধামতো কথা লিখে মূল লেখার সাথে জুড়ে দিয়েছে) এমনকি আচার্য্য শঙ্করের লেখার মধ্যেও পরবর্তী পণ্ডিতেরা নিজেদের শ্লোক ঢুকিয়েছে (স্বামী বিবেকানন্দও এ ব্যাপারে আলোকপাত করেছিলেন) । গোটা পৃথিবীতেই এই একই চিত্র ! রাজনৈতিক ভাবে, অর্থনৈতিক ভাবে ও ধর্মীয় ভাবে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা সবসময়ই চায় তার স্বমতে বাকী মানুষদের আনতে – তাতে ফল যাই হোক না কেন ? কিন্তু বৈচিত্রতাই প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম – এইটি না বুঝে সবাইকে ‘এক’ করতে গিয়ে ওই ক্ষমতাশালীরা ভুল করে বসে ৷ আর তারই মাশুল গুণতে হয় পরবর্তী প্রজন্ম মানুষদের !
কিন্তু সবের-ই শেষ আছে, সমস্ত অশান্তির মধ্যেই লুকিয়ে থাকে শান্তির বীজ ! আজকের পৃথিবীতে যে সমস্যাগুলি সবচাইতে প্রবল বলে প্রতীয়মান হচ্ছে – মনে হচ্ছে পৃথিবী বোধহয় ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে কিন্তু আজ থেকে ৫/৭ হাজার বছর আগে হরপ্পা বা মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ধ্বংসের তো নিশ্চয়ই সেই কারণটা ছিল না ! তবু অবশ্যই তখন অন্য কোন কারণ ছিল – তাই তো অতবড় সভ্যতা, অত বিশাল বিশাল শহর-নগর একেবারে ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল ৷ আর সেগুলি এমনভাবে ধ্বংস হয়েছিল যে, যার প্রকৃত কোন ইতিহাস আজও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গেল না !! হাজার হাজার বছর আগে কারা ঐ সব আধুনিক বিজ্ঞানসন্মত, ইঁট-পাথর নির্মিত বিশাল সুরম্য অট্টালিকার সারি, পয়ঃপ্রণালী, সাধারণের ব্যবহার্য্য শষ্যাগার, স্নানাগার তৈরী করেছিল ? তখন কি রাজতন্ত্র ছিল অথবা গণতন্ত্র, তাদের কি ধর্ম নিয়ে মারামারি হোত অথবা বর্ণ নিয়ে ? – কেউ জানে না এ সবের উত্তর ! আমরা বর্তমানের সভ্য মানুষেরা কিছু রাজনৈতিক ক্ষমতার ego, কিছু ধর্মীয় sentiment – এইসব নিয়েই মারামারি করে মরছি ! আহা – কি সভ্যই না হয়েছি আমরা !!!
যাইহোক, এসব আলোচনা থাক্, আমরা ফিরে যাই আমাদের প্রথমদিকের আলোচনায়, যেখানে বলা হয়েছিল – ভারতবর্ষে নাম ভূমিতে বাইরের দেশ থেকে কোন ধর্মাচারণ প্রবেশ করাটাই এদেশের মানুষের কাছে চরম দূর্ভাগ্যের কারণরূপে দেখা দিয়েছিল ৷ ইউরোপীয়রা যখন এই দেশ দখল করে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল – তখন তারাও খ্রীষ্টান পাদ্রীদেরকে এদেশে পাঠিয়ে ব্যাপক ধর্মান্তকরনের কাজটি করেছিল । স্বামী বিবেকানন্দ প্রাশ্চাত্তে গিয়ে – ওখানে সুধী সমাজকে এটাই বলেছিলেন যে, – ” ভারতবর্ষে ধর্মশিক্ষা দেবার লোক পাঠানোর কোন প্রয়োজন নাই, পারলে ওখানে তোমরা খাদ্য-বস্ত্র পাঠাও, ওখানকার মানুষগুলোকে দুবেলা দুমুঠো খাবারের ব্যাবস্থা করে দাও – তাহলেই দেখবে গোটা দেশটা কেমন জেগে উঠেছে !” স্বামীজী কালদ্রষ্টা পুরুষ ছিলেন – তাই তাঁর কথা সবসময়ই সত্য ! উনি বলেছিলেন ‘আমার মৃত্যুর পঞ্চাশ বছরের মধ্যে ভারতবর্ষ স্বাধীন হবে’ _তাই হয়েছিল ৷
কিন্তু স্বাধীনতা লাভ করার পর যোগ্য এবং উপযুক্ত লোকেদের কৌশলে সরিয়ে কতকগুলো সুবিধাবাদী লোকের হাতে ভারতবর্ষের শাসনভার চলে যাওয়ায় ভারতের যতটা অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল – ততটা হয়নি । কিন্তু যা হয়েছে, সেটাও তো ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই হয়েছে! ফলে তারও সুফল রয়েছে –এতো অন্যায়, অবিচার হোল বলেই তো আমরা এত তাড়াতাড়ি স্বামী পরমানন্দকে পেলাম। তিনিই তো বলে গেলেন – “ভারতবর্ষ হোল পৃথিবীগ্রহের মাথা । এইটা উন্নত(উঁচু) হলে অর্থাৎ উচ্চে অবস্থান করলে তবেই পৃথিবীর সমগ্র শরীর ঠিক position-এ এসে যাবে”।।(ক্রমশঃ)
প্রাকৃতিকভাবেই পুরুষের দৈহিক শক্তি বেশি, তার দৈহিক গঠনও নারীর তুলনায় আকার আয়তনে বড় । তাছাড়াও প্রাকৃতিক ভাবে নারীর শরীর ও মন পুরুষের তুলনায় কোমল বা কমনীয় । পুরুষের বৈশিষ্ট্য কঠোরতা এবং নারীর বৈশিষ্ট্য কোমলতা । পুরুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি সাহস, শৌর্য্য, কর্মচঞ্চলতা, উদ্যম, উৎসাহ, গতিশীলতা!আর এই গুলিকে একমাত্র কন্ট্রোল করতে পারে নারী__ তার স্নেহ, মায়া, মমতা, কমনীয়তা দিয়ে । এটাই প্রকৃতি মায়ের Balance ! পুরুষের দৈহিক শক্তি, বহিঃশক্তি, গায়ের জোর বেশি – কিন্তু নারীর অন্তঃশক্তি পুরুষ অপেক্ষা অনেক বেশি । গুরু মহারাজ সিটিংয়ে ভক্তদের উদ্দেশ্যে বলতেন – ” তোরা কতটা পুরুষ সেটা তোদের স্ত্রীরা জানে ! আমার কাছে বেশী পৌরুষী ফলাস্ না – এক্ষুনি সব ফাঁস করে দেবো – কারণ আমি তোদের ভালোটাও জানি ,দুর্বলতাটাও জানি ।”
এখানেই পুরুষেরা দুর্বল – আর সেই দুর্বলতা ঢাকতে বহুকাল আগে থাকতেই দৈহিক বল দিয়ে জোর করে নারীদেরকে ঘোমটার আড়ালে, চিকের আড়ালে – অন্তঃপুরচারিনী করে রেখে দেওয়া হয়েছে ৷ জোর করে নারীদের কাছ থেকে সমস্ত অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে ৷ কোন মহাপুরুষ বা অবতার পুরুষেরা কিন্তু এটা কখনোই করেন নি – তাঁরা করবেনই বা কেন , কারণ তাঁরা তো মহাপ্রকৃতির নিয়মেই শরীর ধারন করে থাকেন – তাই প্রকৃতির সব রহস্যই তাঁদের অবগত । সুতরাং তাঁদের কাজের কোন ভূল হোতেই পারে না। কিন্তু হয় কি জানেন__ যে কোন মহাপুরুষ শরীর ছেড়ে দেওয়ার পরই তাদের উত্তরসূরিরা মহাপুরুষদের শিক্ষাকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করে এবং সাধারণ মানুষদের কাছে সেগুলিকে শুনিয়ে– মহাপুরুষদের মূল শিক্ষা থেকে বহু দূরে নিয়ে চলে যায় । কাল ভেদে, স্থানভেদে এই একই কাজ বহুদিন ধরে করে আসছে স্বার্থান্বেষী মানুষদের দল ।
গুরু মহারাজ ইতালিতে এক আর্চ বিশপ (পোপের পরেই সম্মানের দিক থেকে এনাদের স্থান) বলেছিল যে, ভ্যাটিকান সিটিতে লাইব্রেরীতে বাইবেলের যে সব পান্ডুলিপি রয়েছে – সেগুলি সাধারণের জন্য নয় , শুধুমাত্র ভ্যাটিকান সিটির সিনিয়র বিশপদের জন্য । ইসলামেও রয়েছে ছেষট্টি (৬৬) প্যারা গুরুমুখে আর তেত্রিশ (৩৩)প্যারা সাধারণের জন্য । সনাতন ধর্মীয়রাও এ ব্যাপারে পিছিয়ে নাই – একই বেদান্ত-সূত্রের পাঁচ রকম ভাষ্য, একই গীতার ২৫ রকম ভাষ্য – রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ সবেতেই দেখা যায় পরবর্তীতে অনেক শ্লোক প্রক্ষিপ্ত হয়েছে (পরবর্তী পণ্ডিতরা নিজেদের সুবিধামতো কথা লিখে মূল লেখার সাথে জুড়ে দিয়েছে) এমনকি আচার্য্য শঙ্করের লেখার মধ্যেও পরবর্তী পণ্ডিতেরা নিজেদের শ্লোক ঢুকিয়েছে (স্বামী বিবেকানন্দও এ ব্যাপারে আলোকপাত করেছিলেন) । গোটা পৃথিবীতেই এই একই চিত্র ! রাজনৈতিক ভাবে, অর্থনৈতিক ভাবে ও ধর্মীয় ভাবে ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা সবসময়ই চায় তার স্বমতে বাকী মানুষদের আনতে – তাতে ফল যাই হোক না কেন ? কিন্তু বৈচিত্রতাই প্রকৃতির অমোঘ নিয়ম – এইটি না বুঝে সবাইকে ‘এক’ করতে গিয়ে ওই ক্ষমতাশালীরা ভুল করে বসে ৷ আর তারই মাশুল গুণতে হয় পরবর্তী প্রজন্ম মানুষদের !
কিন্তু সবের-ই শেষ আছে, সমস্ত অশান্তির মধ্যেই লুকিয়ে থাকে শান্তির বীজ ! আজকের পৃথিবীতে যে সমস্যাগুলি সবচাইতে প্রবল বলে প্রতীয়মান হচ্ছে – মনে হচ্ছে পৃথিবী বোধহয় ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে কিন্তু আজ থেকে ৫/৭ হাজার বছর আগে হরপ্পা বা মহেঞ্জোদারো সভ্যতা ধ্বংসের তো নিশ্চয়ই সেই কারণটা ছিল না ! তবু অবশ্যই তখন অন্য কোন কারণ ছিল – তাই তো অতবড় সভ্যতা, অত বিশাল বিশাল শহর-নগর একেবারে ধূলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল ৷ আর সেগুলি এমনভাবে ধ্বংস হয়েছিল যে, যার প্রকৃত কোন ইতিহাস আজও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া গেল না !! হাজার হাজার বছর আগে কারা ঐ সব আধুনিক বিজ্ঞানসন্মত, ইঁট-পাথর নির্মিত বিশাল সুরম্য অট্টালিকার সারি, পয়ঃপ্রণালী, সাধারণের ব্যবহার্য্য শষ্যাগার, স্নানাগার তৈরী করেছিল ? তখন কি রাজতন্ত্র ছিল অথবা গণতন্ত্র, তাদের কি ধর্ম নিয়ে মারামারি হোত অথবা বর্ণ নিয়ে ? – কেউ জানে না এ সবের উত্তর ! আমরা বর্তমানের সভ্য মানুষেরা কিছু রাজনৈতিক ক্ষমতার ego, কিছু ধর্মীয় sentiment – এইসব নিয়েই মারামারি করে মরছি ! আহা – কি সভ্যই না হয়েছি আমরা !!!
যাইহোক, এসব আলোচনা থাক্, আমরা ফিরে যাই আমাদের প্রথমদিকের আলোচনায়, যেখানে বলা হয়েছিল – ভারতবর্ষে নাম ভূমিতে বাইরের দেশ থেকে কোন ধর্মাচারণ প্রবেশ করাটাই এদেশের মানুষের কাছে চরম দূর্ভাগ্যের কারণরূপে দেখা দিয়েছিল ৷ ইউরোপীয়রা যখন এই দেশ দখল করে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল – তখন তারাও খ্রীষ্টান পাদ্রীদেরকে এদেশে পাঠিয়ে ব্যাপক ধর্মান্তকরনের কাজটি করেছিল । স্বামী বিবেকানন্দ প্রাশ্চাত্তে গিয়ে – ওখানে সুধী সমাজকে এটাই বলেছিলেন যে, – ” ভারতবর্ষে ধর্মশিক্ষা দেবার লোক পাঠানোর কোন প্রয়োজন নাই, পারলে ওখানে তোমরা খাদ্য-বস্ত্র পাঠাও, ওখানকার মানুষগুলোকে দুবেলা দুমুঠো খাবারের ব্যাবস্থা করে দাও – তাহলেই দেখবে গোটা দেশটা কেমন জেগে উঠেছে !” স্বামীজী কালদ্রষ্টা পুরুষ ছিলেন – তাই তাঁর কথা সবসময়ই সত্য ! উনি বলেছিলেন ‘আমার মৃত্যুর পঞ্চাশ বছরের মধ্যে ভারতবর্ষ স্বাধীন হবে’ _তাই হয়েছিল ৷
কিন্তু স্বাধীনতা লাভ করার পর যোগ্য এবং উপযুক্ত লোকেদের কৌশলে সরিয়ে কতকগুলো সুবিধাবাদী লোকের হাতে ভারতবর্ষের শাসনভার চলে যাওয়ায় ভারতের যতটা অগ্রগতি হওয়ার কথা ছিল – ততটা হয়নি । কিন্তু যা হয়েছে, সেটাও তো ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই হয়েছে! ফলে তারও সুফল রয়েছে –এতো অন্যায়, অবিচার হোল বলেই তো আমরা এত তাড়াতাড়ি স্বামী পরমানন্দকে পেলাম। তিনিই তো বলে গেলেন – “ভারতবর্ষ হোল পৃথিবীগ্রহের মাথা । এইটা উন্নত(উঁচু) হলে অর্থাৎ উচ্চে অবস্থান করলে তবেই পৃথিবীর সমগ্র শরীর ঠিক position-এ এসে যাবে”।।(ক্রমশঃ)