গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ বনগ্রাম পরমানন্দ মিশনে সিটিং-য়ে বসে সাধারণত ভক্তদের জিজ্ঞাসার উত্তর দিতেন । কিন্তু কোন কোনদিন নিজে থেকেই কোন না কোন প্রসঙ্গ ধরে দীর্ঘ আলোচনা শুরু করে দিতেন । সেই আলোচনাগুলি যেন সবচাইতে হৃদয়গ্রাহী হতো – সেইগুলি স্মৃতির মণিকোঠায় বহুদিন অম্লান থেকে যেতো। সেরকমই কোনো কোন আলোচনায় উঠে আসতো ভবিষ্যৎ পৃথিবীর কথা – কেমনটা হবে আমাদের ভবিষ্যৎ পৃথিবী ?
উনি বলেছিলেন – যতদিন যাবে, পৃথিবী গ্রহ আরো ভালোর দিকে যাবে । তবে যে কোনো সৃষ্টি_ধ্বংসের মধ্যে দিয়েই রূপ পায়, যে কোন নতুন – পুরাতনকে অতিক্রম করেই আসে ! যাইহোক, আমাদের আগের একটা আলোচনায় এসেছিল দুটি কথা – ‘স্নেহ’ আর ‘মোহ’ ! গুরুমহারাজ এই শব্দদুটির অর্থ ভেঙে ভেঙে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন । সেদিন কথায় কথায় উঠে এসেছিল Mother Nature -এর কথা – যিনি প্রকৃত অর্থেই স্নেহময়ী জননী ! সামাজিক বা লৌকিক ক্ষেত্রে যেমন স্নেহময়ী কোন জননী সন্তানদের অন্যায় কর্মের জন্য তাদেরকে যথাপোযুক্ত শাস্তির বিধান দিয়ে তাকে পুনরায় সুপথে ফিরিয়ে নিয়ে আসে, কুশিক্ষার আবহ থেকে তাকে সুশিক্ষায় নিয়ে আসে – তেমনি মহাপ্রকৃতি মা-ও তার সন্তানরূপ মনুষ্যজাতিকে মাঝেমাঝেই শাস্তি দিয়ে সুশিক্ষা দেবার চেষ্টা করে থাকেন । সেই শিক্ষা গ্রহণ করে আমরা যদি সুপথে ফিরে আসতে পারি তো ভালো কথা – না হলে পরবর্তী আরো বেশি বেশি শাস্তির জন্য প্রস্তুত থাকতেই হবে – এটা তো সহজ কথা ! এই কথাটা বোঝার জন্য খুব বেশি বুদ্ধি প্রয়োগের প্রয়োজন নাই তো !
আগের আগের যে আলোচনা থেকে এই কথাগুলো এসেছিল, তা হলো – পৃথিবীতে শক্তিশালীরা সব সময় চেয়েছে যে বাকিরা তার ‘মত’ গ্রহণ করুক, তাহলেই পৃথিবীতে শান্তি আসবে – সুখ আসবে – সমৃদ্ধি আসবে ! কিন্তু এখনও পর্যন্ত অর্থাৎ মনুষ্য সৃষ্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত এই কয়েক লক্ষ বছরের বিবর্তনে এমনটা কখনও হয়েছে কি ? তাহলে কিসের আশায় এই আগ্রাসী মনোভাব ? মহাত্মা-মহাজন-মহাপুরুষগণ এটাকেই বলেছেন অজ্ঞতা-মূর্খতা-আহাম্মকি ! তাঁরা বলেছেন – মানুষের এই প্রবৃত্তিটাই প্রমাণ করে যে সে এখনো চেতনায় অনেকটাই নিচের দিকে রয়েছে !
গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের গুরুদেব স্বামী বাউলানন্দ এই ব্যাপারে এত সুন্দর এবং বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে – এর আগে কোন ধর্মশাস্ত্রে তা পাওয়া যায় না । উনি বলেছেন যে – প্রতিনিয়তই পশুজগৎ থেকে বিবর্তনে জীব মনুষ্যশরীর লাভ করছে – কিন্তু তাদের(junior) মধ্যে পশুচেতনার-ই আধিক্য থেকে যাচ্ছে ! ফলে হিংসা, মারামারি, নিজের অধিকার কায়েম করার প্রচেষ্টা, নিজের ইচ্ছা বলবৎ করার জন্য অপরকে অত্যাচার করা বা হত্যা করা এবং এসব করে পৈশাচিক উল্লাস প্রকাশ করা – এসবই এই নতুন নতুন মনুষ্যশরীর পাওয়া মানুষদের পরিচায়ক ৷
অপরপক্ষে, জন্ম-জন্মান্তরের মাধ্যমে দীর্ঘকাল ধরে যারা মনুষ্যশরীর ধারণ করে যাচ্ছে(senior) – তারা বুদ্ধিতে, শিক্ষায়, চেতনার দিক থেকে অনেকটা উন্নত ঠিকই – কিন্তু একটা জায়গায় আসার পর তারা আর উন্নতির চেষ্টা করছে না । তারা ওই নিম্নচেতনার নতুন নতুন মনুষ্যশরীরে আসা লোকেদের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করতে বেশি পছন্দ করছে !
এই ভাবে তৈরি হচ্ছে এক একটা দল-উপদল-সম্প্রদায়! জন্ম-জন্মান্তরের অভিজ্ঞতা-পুষ্ট senior-এরা দেহের শক্তিতে,বুদ্ধির শক্তিতে, সাধন-শক্তিতে যত বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে_ তত বেশি বেশি সংখ্যক লোককে সে তার দলভুক্ত করতে পারবে।
কিন্তু গুরু মহারাজ বলেই দিয়েছেন_”দল বেঁধে চুরি-ডাকাতি হোতে পারে _এমনকি সেবা কার্যও হোতে পারে কিন্তু দলবেঁধে একসাথে আধ্যাত্মিক উন্নতি করা যাবে না ! ওটা করতে গেলে একা হয়ে যেতে হয় __নির্জন স্থানে গিয়ে একাকী সাধন-ভজন করতে হয়! ঐ অভিজ্ঞতা-পুষ্ট শক্তিশালীদের (মহাত্মা-মহাপুরুষ)মধ্যে সত্যিই যদি তেমন কেউ থাকেন_তাহলে তিনি তাঁর followers- দের ঐ শিক্ষাই দেন! তাঁর followers-রা দল বেঁধে সেবামূলক কার্যও করে আবার সময়-সুযোগ পেলেই ভিড়ের মধ্যেও একা হয়ে যায় এবং কুলকুন্ডলিনী মা-কে জাগিয়ে মূলাধার থেকে সহস্রারের দিকে অগ্রসর হবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে! … [ক্রমশঃ]
উনি বলেছিলেন – যতদিন যাবে, পৃথিবী গ্রহ আরো ভালোর দিকে যাবে । তবে যে কোনো সৃষ্টি_ধ্বংসের মধ্যে দিয়েই রূপ পায়, যে কোন নতুন – পুরাতনকে অতিক্রম করেই আসে ! যাইহোক, আমাদের আগের একটা আলোচনায় এসেছিল দুটি কথা – ‘স্নেহ’ আর ‘মোহ’ ! গুরুমহারাজ এই শব্দদুটির অর্থ ভেঙে ভেঙে আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন । সেদিন কথায় কথায় উঠে এসেছিল Mother Nature -এর কথা – যিনি প্রকৃত অর্থেই স্নেহময়ী জননী ! সামাজিক বা লৌকিক ক্ষেত্রে যেমন স্নেহময়ী কোন জননী সন্তানদের অন্যায় কর্মের জন্য তাদেরকে যথাপোযুক্ত শাস্তির বিধান দিয়ে তাকে পুনরায় সুপথে ফিরিয়ে নিয়ে আসে, কুশিক্ষার আবহ থেকে তাকে সুশিক্ষায় নিয়ে আসে – তেমনি মহাপ্রকৃতি মা-ও তার সন্তানরূপ মনুষ্যজাতিকে মাঝেমাঝেই শাস্তি দিয়ে সুশিক্ষা দেবার চেষ্টা করে থাকেন । সেই শিক্ষা গ্রহণ করে আমরা যদি সুপথে ফিরে আসতে পারি তো ভালো কথা – না হলে পরবর্তী আরো বেশি বেশি শাস্তির জন্য প্রস্তুত থাকতেই হবে – এটা তো সহজ কথা ! এই কথাটা বোঝার জন্য খুব বেশি বুদ্ধি প্রয়োগের প্রয়োজন নাই তো !
আগের আগের যে আলোচনা থেকে এই কথাগুলো এসেছিল, তা হলো – পৃথিবীতে শক্তিশালীরা সব সময় চেয়েছে যে বাকিরা তার ‘মত’ গ্রহণ করুক, তাহলেই পৃথিবীতে শান্তি আসবে – সুখ আসবে – সমৃদ্ধি আসবে ! কিন্তু এখনও পর্যন্ত অর্থাৎ মনুষ্য সৃষ্টির পর থেকে আজ পর্যন্ত এই কয়েক লক্ষ বছরের বিবর্তনে এমনটা কখনও হয়েছে কি ? তাহলে কিসের আশায় এই আগ্রাসী মনোভাব ? মহাত্মা-মহাজন-মহাপুরুষগণ এটাকেই বলেছেন অজ্ঞতা-মূর্খতা-আহাম্মকি ! তাঁরা বলেছেন – মানুষের এই প্রবৃত্তিটাই প্রমাণ করে যে সে এখনো চেতনায় অনেকটাই নিচের দিকে রয়েছে !
গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের গুরুদেব স্বামী বাউলানন্দ এই ব্যাপারে এত সুন্দর এবং বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে – এর আগে কোন ধর্মশাস্ত্রে তা পাওয়া যায় না । উনি বলেছেন যে – প্রতিনিয়তই পশুজগৎ থেকে বিবর্তনে জীব মনুষ্যশরীর লাভ করছে – কিন্তু তাদের(junior) মধ্যে পশুচেতনার-ই আধিক্য থেকে যাচ্ছে ! ফলে হিংসা, মারামারি, নিজের অধিকার কায়েম করার প্রচেষ্টা, নিজের ইচ্ছা বলবৎ করার জন্য অপরকে অত্যাচার করা বা হত্যা করা এবং এসব করে পৈশাচিক উল্লাস প্রকাশ করা – এসবই এই নতুন নতুন মনুষ্যশরীর পাওয়া মানুষদের পরিচায়ক ৷
অপরপক্ষে, জন্ম-জন্মান্তরের মাধ্যমে দীর্ঘকাল ধরে যারা মনুষ্যশরীর ধারণ করে যাচ্ছে(senior) – তারা বুদ্ধিতে, শিক্ষায়, চেতনার দিক থেকে অনেকটা উন্নত ঠিকই – কিন্তু একটা জায়গায় আসার পর তারা আর উন্নতির চেষ্টা করছে না । তারা ওই নিম্নচেতনার নতুন নতুন মনুষ্যশরীরে আসা লোকেদের উপর প্রভুত্ব বিস্তার করতে বেশি পছন্দ করছে !
এই ভাবে তৈরি হচ্ছে এক একটা দল-উপদল-সম্প্রদায়! জন্ম-জন্মান্তরের অভিজ্ঞতা-পুষ্ট senior-এরা দেহের শক্তিতে,বুদ্ধির শক্তিতে, সাধন-শক্তিতে যত বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে_ তত বেশি বেশি সংখ্যক লোককে সে তার দলভুক্ত করতে পারবে।
কিন্তু গুরু মহারাজ বলেই দিয়েছেন_”দল বেঁধে চুরি-ডাকাতি হোতে পারে _এমনকি সেবা কার্যও হোতে পারে কিন্তু দলবেঁধে একসাথে আধ্যাত্মিক উন্নতি করা যাবে না ! ওটা করতে গেলে একা হয়ে যেতে হয় __নির্জন স্থানে গিয়ে একাকী সাধন-ভজন করতে হয়! ঐ অভিজ্ঞতা-পুষ্ট শক্তিশালীদের (মহাত্মা-মহাপুরুষ)মধ্যে সত্যিই যদি তেমন কেউ থাকেন_তাহলে তিনি তাঁর followers- দের ঐ শিক্ষাই দেন! তাঁর followers-রা দল বেঁধে সেবামূলক কার্যও করে আবার সময়-সুযোগ পেলেই ভিড়ের মধ্যেও একা হয়ে যায় এবং কুলকুন্ডলিনী মা-কে জাগিয়ে মূলাধার থেকে সহস্রারের দিকে অগ্রসর হবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে! … [ক্রমশঃ]