গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ বলেছিলেন শুধুমাত্র বীর্যধারণ করতে পারলেই একজন ব্যক্তি (পুরুষের ক্ষেত্রে, ___নারীরা জন্ম ব্রহ্মচারিণী) জীবনে যা করতে চাইবে তাতেই successful হবে । মানুষ যে ‘মানুষ রতন’ হয়ে উঠতে পারে – তার অন্যতম শর্ত হল – বীর্যধারণ ।
পাঠককুল বুঝতেই পারছেন, আমরা এবারে আমাদের যে আলোচনা শুরু করেছিলাম – ‘আহার-নিদ্রা-মৈথুনঞ্চ-ভয়ম্’, সেই আলোচনায় ফিরে এসেছি ! আজকে ‘মৈথুন’- প্রসঙ্গ দিয়েই শুরু করা হোক কথা ! আপনারা এখন স্বামী বাউলানন্দজীর আলোচনাও পড়ছেন – উনিও বলছেন – “সৃজন ক্ষমতা” এবং “পুনঃসৃজন ক্ষমতা”র কথা ! ঋষিদের জৈবপ্রবৃত্তির কথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অনেক লৌকিক গুরু এইগুলিকেই জীবের স্বাভাবিক ধর্ম হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, বলেছেন – “বাঁচা বাড়ার মর্ম যা, ধর্ম বলে জানিস তা !” গুরুমহারাজ এইকথাগুলির ব্যাখ্যায় আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, – বাঁচা বা living ঠিক আছে কিন্তু ‘বাড়া’ অর্থে যদি প্রজনন বোঝায় তাহলে তা মনুষ্যেতর প্রাণীর জৈব ধর্ম হলেও – মানুষে এসে সেটা টেঁকে না ! মানুষ প্রকৃতির অনুকূলে রয়েছে ঠিকই – কিন্তু সে প্রকৃতির ‘দাস’ হয়ে থাকবে কেন ? আপন প্রকৃতিকে (অন্তঃপ্রকৃতি) জয় করেই যে বহিঃপ্রকৃতিকেও জয় করা যায় – এই সত্য যখনই ঋষিরা practical করে দেখালেন – তখন থেকেই উন্নত মানবেরা আর প্রকৃতির হাতে নিজেকে সমর্পণ করে দিয়ে জন্ম-মৃত্যুর চক্রে আবর্তিত হতে আর চাইল না ! তারা প্রকৃতিকে জয় করে – মরজগতের পারে অমর্ত্যলোকে, চিন্ময়লোকে প্রবেশের যোগ্যতা অর্জন করলো !
এই যাত্রাপথের প্রথম শর্ত ‘বীর্যধারণ’ । গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ‘গজমোতি’-র কথা, ‘কস্তুরী’-র কথা ! সব হাতিতে গজমোতি হয় না বা সব হরিণে প্রকৃত কস্তুরী হয় না ! যেসব হাতি বা কস্তুরী মৃগ জীবনে কখনও mating করে না, আজীবন কৌমার্য বা ব্রহ্মচর্য রক্ষা করে চলে – একমাত্র তাদের শরীরেই এই ধরনের অমূল্য বস্তুসমূহের দেখা মেলে(গুরু মহারাজ পৌরাণিক কাহিনীতে বা কল্পকাহিনীতে যে সমস্ত মাথায় মনি-ওয়ালা সাপের উল্লেখ রয়েছে__সেটাকেও উনি অস্বীকার করেন নি! বলেছিলেন এক বিশেষ প্রজাতির সাপেরা দীর্ঘদিন বাঁচে এবং ঐ প্রজাতির কোনো পুরুষ সাপ তার দীর্ঘ জীবন কালে যদি mating না করে_তাহলে তাদের মস্তকের বাইরের অংশে ঝুঁটির মতো একটা অঙ্গ বের হয় এবং সেখানে রেডিয়াম বা থোরিয়াম_জাতীয় তেজস্ক্রিয় মৌলের সঞ্চয় হয়। যা থেকে রাত্রিকালে দূর থেকে একপ্রকার জ্যোতি দেখা যায় ! তবে এর প্রভাবে সাপটি অল্পদিনের মধ্যেই মারা যায়।)
গুরুমহারাজ বলেছিলেন – নিম্নতর প্রাণীদের ব্রহ্মচর্য রক্ষায় যদি এই ধরনের রত্ন বা সুগন্ধির সৃষ্টি হয় তাহলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি__ মানুষের বীর্যধারণের ফলে সেই মানুষটি কি অসাধারণ হয়ে উঠবে না! সে তখন নিজেই ‘মানুষ রতন’ হয়ে উঠতে পারে, তার সৌরভে তখন দশদিক আমোদিত হতে পারে !
‘ঊর্ধ্বরেতা’- বলে একটা শব্দ অধ্যাত্মজগতে খুবই চালু রয়েছে ! গুরুমহারাজের কাছে একবার কেউ একজন বৈষ্ণবধর্মের কিছু আচার-নিয়ম বর্ণনা করে – কিভাবে ‘ঊর্ধ্বরেতা’ হওয়া যায় – সেইসব কথা বলছিলো । গুরুমহারাজ তার কথা কিছুক্ষণ শোনার পর – তাকে ধমকে দিলেন ! বললেন – “দ্যাখো, মুখে কোনো শব্দ উচ্চারণ করা খুবই সহজ – কিন্তু জীবনে অনুশীলন করে বা আচরণ করে তা হয়ে ওঠা অতটা সহজ কাজ নয় ! সদ্গুরুর সন্নিধানে থেকে – তাঁর নির্দেশমতো নিষ্ঠা সহকারে ‘সাধন ক্রিয়ায় অভ্যাসাদি’ পালন করে যেতে হয় – তবেই হয়, অন্যথায় বাঁধ দিয়ে বন্যার জল আটকাতে গিয়ে – কতো ডাঙা জায়গা প্লাবিত হোতে পারে – সেকথা ভেবেছো কি ? আর ওই বাঁধ যদি একবার ভাঙে – তাহলে তো সবকিছু একেবারে ভাসিয়ে নিয়ে কোথায় ফেলবে তার টিকি-টি খুঁজে পাওয়া যাবে না ৷ তাই বাবা ! মুখে বড় বড় ফুটানি করো না – গুরুর নির্দেশমতো ধীরে ধীরে সাধন পথে এগিয়ে চলো – slow but steady ! তোমার গুরু যদি তোমার উপযুক্ততা বোঝেন – তাহলে যখন গতি বাড়ানোর প্রয়োজন হবে তিনিই বাড়িয়ে নেবেন ।” … [ক্রমশঃ]
পাঠককুল বুঝতেই পারছেন, আমরা এবারে আমাদের যে আলোচনা শুরু করেছিলাম – ‘আহার-নিদ্রা-মৈথুনঞ্চ-ভয়ম্’, সেই আলোচনায় ফিরে এসেছি ! আজকে ‘মৈথুন’- প্রসঙ্গ দিয়েই শুরু করা হোক কথা ! আপনারা এখন স্বামী বাউলানন্দজীর আলোচনাও পড়ছেন – উনিও বলছেন – “সৃজন ক্ষমতা” এবং “পুনঃসৃজন ক্ষমতা”র কথা ! ঋষিদের জৈবপ্রবৃত্তির কথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অনেক লৌকিক গুরু এইগুলিকেই জীবের স্বাভাবিক ধর্ম হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, বলেছেন – “বাঁচা বাড়ার মর্ম যা, ধর্ম বলে জানিস তা !” গুরুমহারাজ এইকথাগুলির ব্যাখ্যায় আমাদেরকে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, – বাঁচা বা living ঠিক আছে কিন্তু ‘বাড়া’ অর্থে যদি প্রজনন বোঝায় তাহলে তা মনুষ্যেতর প্রাণীর জৈব ধর্ম হলেও – মানুষে এসে সেটা টেঁকে না ! মানুষ প্রকৃতির অনুকূলে রয়েছে ঠিকই – কিন্তু সে প্রকৃতির ‘দাস’ হয়ে থাকবে কেন ? আপন প্রকৃতিকে (অন্তঃপ্রকৃতি) জয় করেই যে বহিঃপ্রকৃতিকেও জয় করা যায় – এই সত্য যখনই ঋষিরা practical করে দেখালেন – তখন থেকেই উন্নত মানবেরা আর প্রকৃতির হাতে নিজেকে সমর্পণ করে দিয়ে জন্ম-মৃত্যুর চক্রে আবর্তিত হতে আর চাইল না ! তারা প্রকৃতিকে জয় করে – মরজগতের পারে অমর্ত্যলোকে, চিন্ময়লোকে প্রবেশের যোগ্যতা অর্জন করলো !
এই যাত্রাপথের প্রথম শর্ত ‘বীর্যধারণ’ । গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ‘গজমোতি’-র কথা, ‘কস্তুরী’-র কথা ! সব হাতিতে গজমোতি হয় না বা সব হরিণে প্রকৃত কস্তুরী হয় না ! যেসব হাতি বা কস্তুরী মৃগ জীবনে কখনও mating করে না, আজীবন কৌমার্য বা ব্রহ্মচর্য রক্ষা করে চলে – একমাত্র তাদের শরীরেই এই ধরনের অমূল্য বস্তুসমূহের দেখা মেলে(গুরু মহারাজ পৌরাণিক কাহিনীতে বা কল্পকাহিনীতে যে সমস্ত মাথায় মনি-ওয়ালা সাপের উল্লেখ রয়েছে__সেটাকেও উনি অস্বীকার করেন নি! বলেছিলেন এক বিশেষ প্রজাতির সাপেরা দীর্ঘদিন বাঁচে এবং ঐ প্রজাতির কোনো পুরুষ সাপ তার দীর্ঘ জীবন কালে যদি mating না করে_তাহলে তাদের মস্তকের বাইরের অংশে ঝুঁটির মতো একটা অঙ্গ বের হয় এবং সেখানে রেডিয়াম বা থোরিয়াম_জাতীয় তেজস্ক্রিয় মৌলের সঞ্চয় হয়। যা থেকে রাত্রিকালে দূর থেকে একপ্রকার জ্যোতি দেখা যায় ! তবে এর প্রভাবে সাপটি অল্পদিনের মধ্যেই মারা যায়।)
গুরুমহারাজ বলেছিলেন – নিম্নতর প্রাণীদের ব্রহ্মচর্য রক্ষায় যদি এই ধরনের রত্ন বা সুগন্ধির সৃষ্টি হয় তাহলে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি__ মানুষের বীর্যধারণের ফলে সেই মানুষটি কি অসাধারণ হয়ে উঠবে না! সে তখন নিজেই ‘মানুষ রতন’ হয়ে উঠতে পারে, তার সৌরভে তখন দশদিক আমোদিত হতে পারে !
‘ঊর্ধ্বরেতা’- বলে একটা শব্দ অধ্যাত্মজগতে খুবই চালু রয়েছে ! গুরুমহারাজের কাছে একবার কেউ একজন বৈষ্ণবধর্মের কিছু আচার-নিয়ম বর্ণনা করে – কিভাবে ‘ঊর্ধ্বরেতা’ হওয়া যায় – সেইসব কথা বলছিলো । গুরুমহারাজ তার কথা কিছুক্ষণ শোনার পর – তাকে ধমকে দিলেন ! বললেন – “দ্যাখো, মুখে কোনো শব্দ উচ্চারণ করা খুবই সহজ – কিন্তু জীবনে অনুশীলন করে বা আচরণ করে তা হয়ে ওঠা অতটা সহজ কাজ নয় ! সদ্গুরুর সন্নিধানে থেকে – তাঁর নির্দেশমতো নিষ্ঠা সহকারে ‘সাধন ক্রিয়ায় অভ্যাসাদি’ পালন করে যেতে হয় – তবেই হয়, অন্যথায় বাঁধ দিয়ে বন্যার জল আটকাতে গিয়ে – কতো ডাঙা জায়গা প্লাবিত হোতে পারে – সেকথা ভেবেছো কি ? আর ওই বাঁধ যদি একবার ভাঙে – তাহলে তো সবকিছু একেবারে ভাসিয়ে নিয়ে কোথায় ফেলবে তার টিকি-টি খুঁজে পাওয়া যাবে না ৷ তাই বাবা ! মুখে বড় বড় ফুটানি করো না – গুরুর নির্দেশমতো ধীরে ধীরে সাধন পথে এগিয়ে চলো – slow but steady ! তোমার গুরু যদি তোমার উপযুক্ততা বোঝেন – তাহলে যখন গতি বাড়ানোর প্রয়োজন হবে তিনিই বাড়িয়ে নেবেন ।” … [ক্রমশঃ]