[আমরা আগের দিন যে বাউল মতের সাধনার কথা আলোচনা করেছিলাম_তার পরিসমাপ্তি “মৈথুন” প্রসঙ্গে আলোচনার একেবারে শেষ দিনে __পুরো প্রক্রিয়া এবং ঐ অবস্থায় নর বা নারীর উল্লাস অবস্থার কথা বর্ণনা করা হবে।
এখন এই প্রসঙ্গে গুরু মহারাজ আরো কি কি বলেছিলেন__সেইগুলো বরং আলোচনা করা যাক্।]
গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ বলেছিলেন – ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্থূলভাবে কাম-কলা সিদ্ধির প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন । বৈষ্ণবশাস্ত্রাদিতে লেখা রয়েছে যে, শ্রীকৃষ্ণ ষোড়শ (মতান্তরে ষোল’শ) গোপিনীর সঙ্গে একসাথে একই সময়ে রাসলীলা করেছিলেন ! গুরুমহারাজ বলেছিলেন – ওই ঘটনা আধ্যাত্মিক দিক থেকেও সত্য এবং স্থূলভাবেও সত্য ! যে কোন কাম-কলা সিদ্ধ সাধক একসাথে একাধিক রমণীর সাথে সঙ্গ করে তাকে চরম আনন্দ দান করতে পারেন । আধুনিক কালের উদাহরণ হিসাবে উনি মহারাষ্ট্রের (পুনা) রজনীশের উল্লেখ করেছিলেন ৷ উনি একসাথে যৌগিক ক্রিয়া প্রয়োগ করে একসাথে তিনজন/চারজন বা আরো অধিক রমনীর সাথে রতিক্রিয়া করতে পারতেন এবং ঐ রমনীরা এই ক্রিয়ায় বিশেষ আনন্দ লাভ করতো_যা তারা আগে কখনো কোনো পুরুষের কাছে পায় নি।রজনীশ ভক্তদের কাছে ‘ওশো’- নামেও পরিচিত ছিল ! শুধুমাত্র ওই একটা সিদ্ধি-কে কাজে লাগিয়ে – ঐ সাধক একসময় পাশ্চাত্য দেশগুলিতে বিশেষতঃ আমেরিকায় দারুণ প্রভাব বিস্তার করেছিলেন ।
মানুষের ক্ষেত্রে যৌবনকাল-ই হচ্ছে জীবনের সোনালী সময় ৷ যৌবনের উদ্দামতা, উশৃংখলতা, উন্মাদনায় ভেসে যেতে ভালোবাসে মানুষ । গুরুমহারাজ বলেছিলেন – যৌবনকালে যতদিন না কোন পুরুষের জীবনে নারী আসে – ততদিন ছেলেয়-ছেলেয় বন্ধুত্ব প্রবল থাকে, কখনো কখনো সেটা এত প্রবল হয় যে, একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারে না – দুজনে একই রঙের – একই ডিজাইনের জামা পড়ে – জুতো পড়ে, একে অপরের জন্য যেন জীবনটাকেও বাজী রাখতে পারে ! মেয়েদের ক্ষেত্রেও এই একই চিত্র দেখা যায় । কিন্তু যেইমাত্র কোন পুরুষের যৌবনকালে কোন তরুণী বা যুবতী নারীর প্রবেশ ঘটলো(নারীর ক্ষেত্রে পুরুষের আগমন) – অমনি মানুষের জীবনের সমীকরণ পাল্টে যায় ! ধীরে ধীরে পুরুষের পুরুষ বন্ধুরা বা নারীর নারী বন্ধুরা দূরে সরে যেতে থাকে, আত্মীয়-স্বজন এমনকি বাবা-মাও তাদের নিজ নিজ জীবন থেকে অনেকটাই সরে যায় – কোন কোন ক্ষেত্রে একেবারেই সরে যায় ৷ তখন নারীদের জীবনে পুরুষ সঙ্গী এবং পুরুষের জীবনে কোনো না কোনো নারী সঙ্গীর সান্নিধ্য লিপ্সা প্রবল হয়ে দেখা দেয়।
যৌবনের ধর্মই হলো – health, strength and beauty ! তাই প্রতিটি যুবক বা প্রতিটি যুবতী সুন্দরকে ভালোবাসে এবং সবার মনোজগতে একটি আদর্শ সুন্দরের model থাকে ৷ নারীর মনোজগতে থাকে একজন আদর্শ পুরুষের model, পুরুষের মনোজগতে থাকে একজন আদর্শ নারীর model ! এবার যখন একটা নারী ও একজন পুরুষ বিবাহ-বন্ধনের ফলে বা অন্যভাবে একত্রিত হয় – তখন নারী তার বাস্তবের পুরুষটির সাথে তার মনোজগতের আদর্শ পুরুষটির মিল খুঁজতে চায়, আবার উল্টোদিকে পুরুষটি তার স্ত্রীর মধ্যে তার মনোজগতে লুকিয়ে থাকা আদর্শ নারীকে খুঁজে পেতে চায় ! কিন্তু বাস্তবে কখনোই তা হবার নয় — হয়ও না, সেইজন্যেই প্রতিটি সংসারে তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয় নিয়ে লেগে যায় “তেরে কেটে তাক্”! এই হোল জাগতিকভাবে সংসারে অশান্তির সার কথা।
যাইহোক, যা বলা হচ্ছিল – যৌবনের ধর্মের কথা ! যৌবনের আর একটি প্রধান ধর্ম হলো — বংশবিস্তার । প্রতিটি জীব তা সে যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন বা অতি দুর্বলতর-ই হোক — প্রতিটি জীব নিজে বাঁচতে চায় এবং বংশবৃদ্ধি করতে চায় ৷ সবাই চায় সে নিজে বা তার বৈশিষ্ট্য ঐ অপত্যের মধ্যে বেঁচে থাকুক – এইভাবে সবাই চায় অমর হতে ৷ এই প্রবণতাকেই জীববিজ্ঞান ‘জনন’ প্রক্রিয়া নামে অভিহিত করেছে । উদ্ভিদজগৎ-প্রাণীজগৎ সকলেই শুধুমাত্র নিজেদের অস্তিত্ব বা বৈশিষ্ট্য বাঁচিয়ে রাখার জন্য – টিকিয়ে রাখার জন্যই জনন ক্রিয়া সংঘটিত করে এবং তাদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট season রয়েছে! বেশীরভাগ পশুপাখি-ও নির্দিষ্ট season-ছাড়া mating করে না। কিন্তু সবার মধ্যে ব্যতিক্রমী হল মানুষ !
মানুষ যেহেতু মন-প্রধান, তার বুদ্ধি রয়েছে, তাই সে এর মধ্যে থেকে আনন্দের উৎস খুঁজে নিল ! যদিও সে আনন্দ ক্ষণিক – কিন্তু নানান experiment করে তাকে কি করে দীর্ঘায়িত করা যায়, তার আবিষ্কার হতে শুরু করলো । শুক্রাচার্যের বংশধরেরা (পাশ্চাত্য) স্থূলভাবে এটার উপর research শুরু করলো, আর ভারতীয় উন্নত চেতনার মানুষেরা অর্থাৎ বৃহস্পতির শিষ্যরা এটা(যৌনতা)-কে নিয়ে সূক্ষ্ম বা সূক্ষাতিসূক্ষভাবে বিচার-বিশ্লেষণ-experiment করতে লাগলো । ফলস্বরূপ তারা যৌনতামুক্ত এক আনন্দময় জীবনের আস্বাদ লাভ করতে সমর্থ হোল। বৈষ্ণবশাস্ত্র এই দুটির নাম দিল যথাক্রমে ‘কাম’ এবং ‘প্রেম’। … [ক্রমশঃ]
এখন এই প্রসঙ্গে গুরু মহারাজ আরো কি কি বলেছিলেন__সেইগুলো বরং আলোচনা করা যাক্।]
গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ বলেছিলেন – ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্থূলভাবে কাম-কলা সিদ্ধির প্রয়োগ ঘটিয়েছিলেন । বৈষ্ণবশাস্ত্রাদিতে লেখা রয়েছে যে, শ্রীকৃষ্ণ ষোড়শ (মতান্তরে ষোল’শ) গোপিনীর সঙ্গে একসাথে একই সময়ে রাসলীলা করেছিলেন ! গুরুমহারাজ বলেছিলেন – ওই ঘটনা আধ্যাত্মিক দিক থেকেও সত্য এবং স্থূলভাবেও সত্য ! যে কোন কাম-কলা সিদ্ধ সাধক একসাথে একাধিক রমণীর সাথে সঙ্গ করে তাকে চরম আনন্দ দান করতে পারেন । আধুনিক কালের উদাহরণ হিসাবে উনি মহারাষ্ট্রের (পুনা) রজনীশের উল্লেখ করেছিলেন ৷ উনি একসাথে যৌগিক ক্রিয়া প্রয়োগ করে একসাথে তিনজন/চারজন বা আরো অধিক রমনীর সাথে রতিক্রিয়া করতে পারতেন এবং ঐ রমনীরা এই ক্রিয়ায় বিশেষ আনন্দ লাভ করতো_যা তারা আগে কখনো কোনো পুরুষের কাছে পায় নি।রজনীশ ভক্তদের কাছে ‘ওশো’- নামেও পরিচিত ছিল ! শুধুমাত্র ওই একটা সিদ্ধি-কে কাজে লাগিয়ে – ঐ সাধক একসময় পাশ্চাত্য দেশগুলিতে বিশেষতঃ আমেরিকায় দারুণ প্রভাব বিস্তার করেছিলেন ।
মানুষের ক্ষেত্রে যৌবনকাল-ই হচ্ছে জীবনের সোনালী সময় ৷ যৌবনের উদ্দামতা, উশৃংখলতা, উন্মাদনায় ভেসে যেতে ভালোবাসে মানুষ । গুরুমহারাজ বলেছিলেন – যৌবনকালে যতদিন না কোন পুরুষের জীবনে নারী আসে – ততদিন ছেলেয়-ছেলেয় বন্ধুত্ব প্রবল থাকে, কখনো কখনো সেটা এত প্রবল হয় যে, একে অপরকে ছাড়া থাকতে পারে না – দুজনে একই রঙের – একই ডিজাইনের জামা পড়ে – জুতো পড়ে, একে অপরের জন্য যেন জীবনটাকেও বাজী রাখতে পারে ! মেয়েদের ক্ষেত্রেও এই একই চিত্র দেখা যায় । কিন্তু যেইমাত্র কোন পুরুষের যৌবনকালে কোন তরুণী বা যুবতী নারীর প্রবেশ ঘটলো(নারীর ক্ষেত্রে পুরুষের আগমন) – অমনি মানুষের জীবনের সমীকরণ পাল্টে যায় ! ধীরে ধীরে পুরুষের পুরুষ বন্ধুরা বা নারীর নারী বন্ধুরা দূরে সরে যেতে থাকে, আত্মীয়-স্বজন এমনকি বাবা-মাও তাদের নিজ নিজ জীবন থেকে অনেকটাই সরে যায় – কোন কোন ক্ষেত্রে একেবারেই সরে যায় ৷ তখন নারীদের জীবনে পুরুষ সঙ্গী এবং পুরুষের জীবনে কোনো না কোনো নারী সঙ্গীর সান্নিধ্য লিপ্সা প্রবল হয়ে দেখা দেয়।
যৌবনের ধর্মই হলো – health, strength and beauty ! তাই প্রতিটি যুবক বা প্রতিটি যুবতী সুন্দরকে ভালোবাসে এবং সবার মনোজগতে একটি আদর্শ সুন্দরের model থাকে ৷ নারীর মনোজগতে থাকে একজন আদর্শ পুরুষের model, পুরুষের মনোজগতে থাকে একজন আদর্শ নারীর model ! এবার যখন একটা নারী ও একজন পুরুষ বিবাহ-বন্ধনের ফলে বা অন্যভাবে একত্রিত হয় – তখন নারী তার বাস্তবের পুরুষটির সাথে তার মনোজগতের আদর্শ পুরুষটির মিল খুঁজতে চায়, আবার উল্টোদিকে পুরুষটি তার স্ত্রীর মধ্যে তার মনোজগতে লুকিয়ে থাকা আদর্শ নারীকে খুঁজে পেতে চায় ! কিন্তু বাস্তবে কখনোই তা হবার নয় — হয়ও না, সেইজন্যেই প্রতিটি সংসারে তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয় নিয়ে লেগে যায় “তেরে কেটে তাক্”! এই হোল জাগতিকভাবে সংসারে অশান্তির সার কথা।
যাইহোক, যা বলা হচ্ছিল – যৌবনের ধর্মের কথা ! যৌবনের আর একটি প্রধান ধর্ম হলো — বংশবিস্তার । প্রতিটি জীব তা সে যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন বা অতি দুর্বলতর-ই হোক — প্রতিটি জীব নিজে বাঁচতে চায় এবং বংশবৃদ্ধি করতে চায় ৷ সবাই চায় সে নিজে বা তার বৈশিষ্ট্য ঐ অপত্যের মধ্যে বেঁচে থাকুক – এইভাবে সবাই চায় অমর হতে ৷ এই প্রবণতাকেই জীববিজ্ঞান ‘জনন’ প্রক্রিয়া নামে অভিহিত করেছে । উদ্ভিদজগৎ-প্রাণীজগৎ সকলেই শুধুমাত্র নিজেদের অস্তিত্ব বা বৈশিষ্ট্য বাঁচিয়ে রাখার জন্য – টিকিয়ে রাখার জন্যই জনন ক্রিয়া সংঘটিত করে এবং তাদের প্রত্যেকের নির্দিষ্ট season রয়েছে! বেশীরভাগ পশুপাখি-ও নির্দিষ্ট season-ছাড়া mating করে না। কিন্তু সবার মধ্যে ব্যতিক্রমী হল মানুষ !
মানুষ যেহেতু মন-প্রধান, তার বুদ্ধি রয়েছে, তাই সে এর মধ্যে থেকে আনন্দের উৎস খুঁজে নিল ! যদিও সে আনন্দ ক্ষণিক – কিন্তু নানান experiment করে তাকে কি করে দীর্ঘায়িত করা যায়, তার আবিষ্কার হতে শুরু করলো । শুক্রাচার্যের বংশধরেরা (পাশ্চাত্য) স্থূলভাবে এটার উপর research শুরু করলো, আর ভারতীয় উন্নত চেতনার মানুষেরা অর্থাৎ বৃহস্পতির শিষ্যরা এটা(যৌনতা)-কে নিয়ে সূক্ষ্ম বা সূক্ষাতিসূক্ষভাবে বিচার-বিশ্লেষণ-experiment করতে লাগলো । ফলস্বরূপ তারা যৌনতামুক্ত এক আনন্দময় জীবনের আস্বাদ লাভ করতে সমর্থ হোল। বৈষ্ণবশাস্ত্র এই দুটির নাম দিল যথাক্রমে ‘কাম’ এবং ‘প্রেম’। … [ক্রমশঃ]