গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের বলা আমাদের দেশের প্রাচীন শাস্ত্রাদিতে উল্লিখিত বিভিন্ন ঘটনা, কাহিনী এবং চরিত্রের কথা এখানে আলোচনা করা হচ্ছিলো । এর মধ্যে যেগুলির আধুনিক ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন – সেইগুলিই এখানে উল্লেখ করার চেষ্টা করা হচ্ছে ! আমাদের আলোচনা চলছিল শুক্রাচার্য এবং বৃহস্পতি-কে নিয়ে এবং বলা হয়েছিল যে, ভারতীয় মহাপুরুষ বা মনীষীরা তাঁদের নিজেদের জীবন দিয়ে, সমগ্র জীবনের আচরণ দিয়ে সকলকে বুঝিয়ে গেছেন যে, ভোগের পথ নয় – ত্যাগের পথই শ্রেষ্ঠ । “নানংপন্থা বিদ্যতে অয়নায়!”
গুরুমহারাজও ওই একই কথা বলেছিলেন ! বলেছিলেন একটু অন্য আঙ্গিকে ! উনি বলেছিলেন, ” আমরা (ভারতীয়রা) সোনার প্লেটে চানাচুর খেতে চাই না, আমরা শালপাতার ঠোঙায় রসগোল্লা বা রাজভোগ খেতে চাই !” মানেটা খুবই clear ! গুরুমহারাজ এটাই বলতে চাইলেন যে, দৈত্যগুরু শুক্রাচার্য্যের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, পার্থিব ভোগ-ঐশ্বর্য্যের প্রতি মোহমুগ্ধ হয়ে তার পিছনে ছুটে ছুটে বেরিয়ে লাভের লাভ কিছুই হয় না, ওই সোনার প্লেটে চানাচুর খাবার মত অবস্থা হয় । অপরপক্ষে, ত্যাগব্রত অবলম্বন করে, জাগতিক ভোগ-ঐশ্বর্য্যের মোহ থেকে মুক্ত হয়ে, মাটির কুটিরে বাস করে, সদাসর্বদা ঈশ্বরচিন্তা অর্থাৎ উচ্চ-চিন্তায় মগ্ন থাকা ব্যক্তি জীবনের গভীরে ডুব দিয়ে – একটা একটা করে রত্ন আহরণ করেন (এক একটা সিদ্ধি অর্জন করেন) এবং তা জগতের কল্যাণে সকলকে অকাতরে বিলিয়ে দেন । এইটাই মহাত্মা-মহাপুরুষদের একমাত্র কাজ !
গুরুমহারাজ অন্য একটা সিটিং-এ বলেছিলেন – সাধারণ মানুষেরা বহির্জাগতিক ব্যাপারে এত বেশি প্রাধান্য দেয় যে, এর ফলে তাঁর জাগতিক শরীর পুষ্ট হয় বা বহির্জাগতিক চাকচিক্য বাড়ে ঠিকই, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষেরই আধ্যাত্মিক শরীরটা অপুষ্টিতে ভোগে ! সেটা যেন জীর্ণ-শীর্ণ-কঙ্কালসার অবস্থায় থাকে ! একমাত্র মহাপুরুষরাই এটা দেখতে পান – তাই তাঁরা যখন অবতীর্ণ হ’ন, তখন তাঁরা মানুষের সমাজে এসে সাধারণ মানুষের দিকে যখন দৃষ্টিপাত করেন – তখন সাধারণ মানুষের অবস্থা দেখে তাঁদের হৃদয় করুণায় আদ্র হয়ে যায় ! তাঁরা মানুষজনকে দেখেন যেন এক একটা চলমান মমি বা শ্মশান, moving dead body ! তাই তো মানুষজনের প্রতি তাঁদের এতো প্রেম, এতো করুণা, এতো ভালোবাসা !
গুরুমহারাজ একবার অন্তরঙ্গ মুহূর্তে এই ধরণেরই একটা করুণামাখা বাক্য বলে ফেলেছিলেন – ” জানো তো ! মানুষকে এতো নিচু হয়ে দেখতে হয়, এতো নিচে নেমে communication করতে হয় – যেন আমাকে সারাদিনে, চেতনায় কয়েক light-year উঠানামা করতে হয় !”
গুরুমহারাজের সেই বেদনার্ত মুখমন্ডল এবং করুণাভরা কণ্ঠস্বর কখনোই ভোলার নয় ! ওনার নিজস্ব স্থিতি একদম Top-এ – যেখানে জগৎ নাই, সংসার নাই, আশ্রম নাই, ভক্তরা নাই – একদম শূন্য অবস্থা বা পূর্ণ অবস্থা ! কিন্তু যখনই ভক্তরা তাঁর কাছে যেতো – তারা তো তাদের নিজস্ব জীবনযন্ত্রণার কথা, তাদের স্বার্থযুক্ত কোন সমস্যার কথা, দেহের বা মনের সমস্যা, পারিবারিক সমস্যা, মামলা-মোকদ্দমার কথা – এইসব কথাই তো বলতো ! ক’জন আর ত্যাগ-বৈরাগ্যের কথা, অধ্যাত্ম জীবনের বাধার কথা বলতো ?
এবার গুরুমহারাজের যে নিজস্ব স্থিতি – সেখান থেকে এক একজন ভক্তের ব্যক্তিগত সমস্যার কথা শুনতে হোলে বা বুঝতে গেলে – তাঁকে চেতনায় ঐ ভক্তের চেতনায় নেমে আসতে হোতো ! আবার ঐ ভক্ত চলে গেলেই – উনি আবার যে কে সেই ! আবার ওনার চেতনা পূর্ণের সাথে একাত্মতা প্রাপ্তি ৷ কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আর একজন ভক্ত তার নিজস্ব সমস্যা নিয়ে চলে আসতো তাঁর কাছে – ফলে আবার ওনার নিজস্ব চেতনার জগত থেকে হু হু করে নেমে আসতে হোত ! এইভাবেই সারা দিনে গুরুমহারাজকে চেতনার জগতে কয়েক light-year travel কোরতে হোতো ! গুরুমহারাজের বলা বৃহস্পতি এবং শুক্রাচার্যের কথা বলতে গিয়ে গুরুমহারাজের সম্বন্ধে কিছু কথা বলা হয়ে গেল । তবে তা হলে ক্ষতি তো কিছু নয়ই বরং সবটাই লাভ !
গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা যত বেশি বেশি বলা হবে বা শোনা হবে, ততই তো আমাদের মতো সাধারণ মানুষের মঙ্গল ।
‘যুগপুরুষ’ পরমানন্দ যুগ প্রয়োজনে শরীর ধারণ করেছিলেন ! তাই এই যুগে স্বামী পরমানন্দের কথা যত বেশি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে_ ততই মানুষের মঙ্গল হবে, কল্যাণ হবে, আর এটাই তো মহাপুরুষগণের একমাত্র উদ্দেশ্য ।৷ [ক্রমশঃ]
গুরুমহারাজও ওই একই কথা বলেছিলেন ! বলেছিলেন একটু অন্য আঙ্গিকে ! উনি বলেছিলেন, ” আমরা (ভারতীয়রা) সোনার প্লেটে চানাচুর খেতে চাই না, আমরা শালপাতার ঠোঙায় রসগোল্লা বা রাজভোগ খেতে চাই !” মানেটা খুবই clear ! গুরুমহারাজ এটাই বলতে চাইলেন যে, দৈত্যগুরু শুক্রাচার্য্যের শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে, পার্থিব ভোগ-ঐশ্বর্য্যের প্রতি মোহমুগ্ধ হয়ে তার পিছনে ছুটে ছুটে বেরিয়ে লাভের লাভ কিছুই হয় না, ওই সোনার প্লেটে চানাচুর খাবার মত অবস্থা হয় । অপরপক্ষে, ত্যাগব্রত অবলম্বন করে, জাগতিক ভোগ-ঐশ্বর্য্যের মোহ থেকে মুক্ত হয়ে, মাটির কুটিরে বাস করে, সদাসর্বদা ঈশ্বরচিন্তা অর্থাৎ উচ্চ-চিন্তায় মগ্ন থাকা ব্যক্তি জীবনের গভীরে ডুব দিয়ে – একটা একটা করে রত্ন আহরণ করেন (এক একটা সিদ্ধি অর্জন করেন) এবং তা জগতের কল্যাণে সকলকে অকাতরে বিলিয়ে দেন । এইটাই মহাত্মা-মহাপুরুষদের একমাত্র কাজ !
গুরুমহারাজ অন্য একটা সিটিং-এ বলেছিলেন – সাধারণ মানুষেরা বহির্জাগতিক ব্যাপারে এত বেশি প্রাধান্য দেয় যে, এর ফলে তাঁর জাগতিক শরীর পুষ্ট হয় বা বহির্জাগতিক চাকচিক্য বাড়ে ঠিকই, কিন্তু বেশিরভাগ মানুষেরই আধ্যাত্মিক শরীরটা অপুষ্টিতে ভোগে ! সেটা যেন জীর্ণ-শীর্ণ-কঙ্কালসার অবস্থায় থাকে ! একমাত্র মহাপুরুষরাই এটা দেখতে পান – তাই তাঁরা যখন অবতীর্ণ হ’ন, তখন তাঁরা মানুষের সমাজে এসে সাধারণ মানুষের দিকে যখন দৃষ্টিপাত করেন – তখন সাধারণ মানুষের অবস্থা দেখে তাঁদের হৃদয় করুণায় আদ্র হয়ে যায় ! তাঁরা মানুষজনকে দেখেন যেন এক একটা চলমান মমি বা শ্মশান, moving dead body ! তাই তো মানুষজনের প্রতি তাঁদের এতো প্রেম, এতো করুণা, এতো ভালোবাসা !
গুরুমহারাজ একবার অন্তরঙ্গ মুহূর্তে এই ধরণেরই একটা করুণামাখা বাক্য বলে ফেলেছিলেন – ” জানো তো ! মানুষকে এতো নিচু হয়ে দেখতে হয়, এতো নিচে নেমে communication করতে হয় – যেন আমাকে সারাদিনে, চেতনায় কয়েক light-year উঠানামা করতে হয় !”
গুরুমহারাজের সেই বেদনার্ত মুখমন্ডল এবং করুণাভরা কণ্ঠস্বর কখনোই ভোলার নয় ! ওনার নিজস্ব স্থিতি একদম Top-এ – যেখানে জগৎ নাই, সংসার নাই, আশ্রম নাই, ভক্তরা নাই – একদম শূন্য অবস্থা বা পূর্ণ অবস্থা ! কিন্তু যখনই ভক্তরা তাঁর কাছে যেতো – তারা তো তাদের নিজস্ব জীবনযন্ত্রণার কথা, তাদের স্বার্থযুক্ত কোন সমস্যার কথা, দেহের বা মনের সমস্যা, পারিবারিক সমস্যা, মামলা-মোকদ্দমার কথা – এইসব কথাই তো বলতো ! ক’জন আর ত্যাগ-বৈরাগ্যের কথা, অধ্যাত্ম জীবনের বাধার কথা বলতো ?
এবার গুরুমহারাজের যে নিজস্ব স্থিতি – সেখান থেকে এক একজন ভক্তের ব্যক্তিগত সমস্যার কথা শুনতে হোলে বা বুঝতে গেলে – তাঁকে চেতনায় ঐ ভক্তের চেতনায় নেমে আসতে হোতো ! আবার ঐ ভক্ত চলে গেলেই – উনি আবার যে কে সেই ! আবার ওনার চেতনা পূর্ণের সাথে একাত্মতা প্রাপ্তি ৷ কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে আর একজন ভক্ত তার নিজস্ব সমস্যা নিয়ে চলে আসতো তাঁর কাছে – ফলে আবার ওনার নিজস্ব চেতনার জগত থেকে হু হু করে নেমে আসতে হোত ! এইভাবেই সারা দিনে গুরুমহারাজকে চেতনার জগতে কয়েক light-year travel কোরতে হোতো ! গুরুমহারাজের বলা বৃহস্পতি এবং শুক্রাচার্যের কথা বলতে গিয়ে গুরুমহারাজের সম্বন্ধে কিছু কথা বলা হয়ে গেল । তবে তা হলে ক্ষতি তো কিছু নয়ই বরং সবটাই লাভ !
গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা যত বেশি বেশি বলা হবে বা শোনা হবে, ততই তো আমাদের মতো সাধারণ মানুষের মঙ্গল ।
‘যুগপুরুষ’ পরমানন্দ যুগ প্রয়োজনে শরীর ধারণ করেছিলেন ! তাই এই যুগে স্বামী পরমানন্দের কথা যত বেশি বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে_ ততই মানুষের মঙ্গল হবে, কল্যাণ হবে, আর এটাই তো মহাপুরুষগণের একমাত্র উদ্দেশ্য ।৷ [ক্রমশঃ]