গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ বিভিন্ন সিটিং-এ ভারতবর্ষের প্রাচীন শাস্ত্রাদিতে উল্লিখিত ঘটনা, কাহিনী বা চিত্রায়িত চরিত্রগুলিকে নিয়ে অনেক সময় আলোচনা করতেন এবং সেগুলোর আধুনিক ব্যাখ্যা দিতেন – সেইগুলিই এখানে আলোচনা চলছিল ৷ কিন্তু সেই কথা বলতে গিয়ে “পুরোনো সেই বনগ্রামের কথা”- সম্বন্ধেও কিছু কথা বলা হয়ে গেল ! এখন আবার পুরোনো প্রসঙ্গেই ফিরে যাই !
গুরুমহারাজ মহাভারতে বর্ণিত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকে তৎকালীন যুগের বিশ্বযুদ্ধ বলে উল্লেখ করেছিলেন ৷ এই যুদ্ধে শুধু যে সমগ্র ভারতবর্ষের রাজা-নৃপতিরাই অংশগ্রহণ করেছিলেন – তা নয়, পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে তখন যেখানে যেখানে সভ্যতার উন্মেষ হয়েছিল – তারাও এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগদান করেছিল ৷ এমনকি সুদূর স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চল থেকেও কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কৌরবদের ঘোড়া supply এসেছিল । তখন ওই অঞ্চলের নাম ছিল উত্তরকুরু ! এছাড়াও মহাভারতে উল্লেখিত বিভিন্ন জাতির উল্লেখ পাওয়া যায় যারা তৎকালীন ভারতবর্ষের বাইরের লোক (খস্, বল্কান, শ্লাভ ইত্যাদি আরও অনেকের উল্লেখ রয়েছে) ! তৎকালীন ভারতবর্ষ বলতে পশ্চিমে আফগানিস্তান থেকে শুরু করে পূর্বে ব্রহ্মদেশ, দক্ষিনে বর্তমান শ্রীলঙ্কা, উত্তরে তিব্বত (বাকিটা তো হিমালয়) পর্যন্ত ছিল অখন্ড ভারতবর্ষ ! এই অখণ্ড ভারতবর্ষের ম্যাপ গুরুমহারাজের কাঁধে জন্ম থেকেই *জরুল* -এর মতো অঙ্কিত ছিল !
গুরুমহারাজ বলেছিলেন, উনি যখন ঘুরতে ঘুরতে (ছোট বয়সে ভ্রমণকালীন সময়ে) প্রথমবারের জন্য হরিয়ানায় অবস্থিত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রের স্থানে গিয়েছিলেন (হয়তো এটা হতে পারে ১৯৬৮– ৭০ সাল) তখন উনি দেখেছিলেন বিরাট ফাঁকা প্রান্তর ! সেখানে বহু জায়গায় কোন ঘাস পর্যন্ত জন্মায়নি (ঐ সমস্ত অঞ্চল এমনিতেই রুক্ষ, বন্ধুর অঞ্চল, কিন্তু গুরু মহারাজ বলেছিলেন, যেখানে প্রচুর রক্তপাত হয়_সেখানে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় কোনো গাছপালাই হোতে চায় না।) ! এখন যেখানে শ্রীকৃষ্ণের স্মৃতির উদ্দেশ্যে মন্দির নির্মিত হয়েছে বা ‘গীতা’ বলার স্থান নির্বাচন রয়েছে – সেখানে ওনার কোনো অনুভুতিই হয়নি ৷ উনি ঐ বিস্তীর্ণ প্রান্তর ধরে একা একাই হাঁটছিলেন ! হঠাৎ এক জায়গায় এসে ওনার শরীর ভারী হতে শুরু কোরলো । ফলে উনি আর আগাতেই পারছিলেন না, সেইখানেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন । ‘এটা আবার কি হলো’– উনি এই রকমটা ভাবছেন – এমন সময় ওনার (গুরুমহারাজের) দর্শন হোলো যে, স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রথের উপরে বসে গীতা শোনাচ্ছেন আর অর্জুন জোড়হাতে ভগবানের মুখের দিকে চেয়ে একদৃষ্টে বসে রয়েছেন ! গুরুমহারাজ সাড়ে সাত মিনিট ধরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গীতার বাণী শ্রবণ করেছিলেন । এই কথাগুলো বলে গুরুমহারাজ আমাদেরকে বলেছিলেন – ” জানিস তো ! বর্তমানে যে মন্দিরটি ওখানে রয়েছে – সেই স্থানটিতেও ভগবান মোটেও গীতা বলেন নি – সেই স্থানটি ছিল মন্দির থেকে অনেকটা দূরে এবং সেই স্থানের vibration এখনো সেখানে রয়েছে ! যেকোনো উন্নত soul ওখানে গেলেই এটা টের পাবে !
এইভাবেই হয় ! আজকের রাম জন্মভূমি, কৃষ্ণ জন্মভূমি, এমনকি মাত্র ৫৫০ বছর আগে শ্রীচৈতন্যের জন্মের সঠিক ভূমি — সেগুলি এখন আর কেউ জানে না ! জানেন একমাত্র মহাপুরুষেরা, অবতার পুরুষেরা ! তাঁরাও ঐসব নিয়ে কখনোই মানুষের আবেগকে উস্কে দেন না ! যা সাধারন মানুষ মেনে নিয়েছে, যা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে – তেমন কিছুকে কখনোই ওনারা ভাঙেন না । প্রকৃতপক্ষে ওনারা কোনকিছুকেই ভাঙতে আসেন না, আবার নতুন করে কিছু গড়েনও না ! শুধু যা রয়েছে, তার মধ্যে যেটুকু বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে – সেইটাকে আবার শৃঙ্খলায় নিয়ে আসেন বা আনার চেষ্টা করেন ।
মহাপ্রভুর সঠিক জন্মস্থান নিয়ে এখনকার পণ্ডিতদের বা ভক্তদের মধ্যে দ্বন্দ রয়েছে । কেউ বলে গঙ্গার ওপারে, কেউ বলে গঙ্গার এপারে ! ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ নৌকাযোগে নবদ্বীপের গঙ্গার ধার ধরে যেতে যেতে হঠাৎ একস্থানে হয়ে গেলেন, তাঁর এমন অবস্থা হোল যে, তিনি প্রায় নৌকা থেকে পড়েই যাচ্ছিলেন ! পাশেই হৃদয়রাম ছিল, সেই ধরে ফেলেছিল ! পরে উনি ভক্তদের কাছে তাঁর হঠাৎ করে ওখানে ভাবস্থ হবার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন – গঙ্গার ধারে ওই স্থানেই শ্রীচৈতন্যের প্রকৃত জন্মস্থান !
এই ঘটনার একশোরও বেশি বছর পরে গুরুমহারাজ(স্বামী পরমানন্দ) যখন নবদ্বীপে ভক্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়েছিলেন, তখন উনি ওখানকার যুবক ভক্তদেরকে (রবীন মালাকার, প্রলয় মহারাজ, কাজল ডাক্তার মহারাজ, শিবু, গৌড়, দেবাশীষ, হয়তো আরো দুই-একজন) নিয়ে রাত্রিতে গঙ্গায় নৌকাভ্রমণে গিয়েছিলেন । প্রকৃতপক্ষে উনি কয়েকবারই এমনটা করেছিলেন। যাইহোক, এমনই একদিন নৌকায় যেতে যেতে উনি নৌকা থেকে লাফিয়ে একটি চড়ায় নেমে পড়েন এবং এক জায়গায় বসে সবার সাথে সিটিং করতে শুরু করেন । পরে উনি বলেছিলেন – ওই স্থানটিই ছিল মহাপ্রভুর আসল জন্মস্থান !
তার মানেটা কি দাঁড়ালো__!! মানেটা হোলো এই যে, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের সময় যে স্থানে জল ছিল, সেখানে এখন চড়া পড়ে গেছে ! [ক্রমশঃ]
গুরুমহারাজ মহাভারতে বর্ণিত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধকে তৎকালীন যুগের বিশ্বযুদ্ধ বলে উল্লেখ করেছিলেন ৷ এই যুদ্ধে শুধু যে সমগ্র ভারতবর্ষের রাজা-নৃপতিরাই অংশগ্রহণ করেছিলেন – তা নয়, পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে তখন যেখানে যেখানে সভ্যতার উন্মেষ হয়েছিল – তারাও এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগদান করেছিল ৷ এমনকি সুদূর স্ক্যান্ডিনেভিয়া অঞ্চল থেকেও কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে কৌরবদের ঘোড়া supply এসেছিল । তখন ওই অঞ্চলের নাম ছিল উত্তরকুরু ! এছাড়াও মহাভারতে উল্লেখিত বিভিন্ন জাতির উল্লেখ পাওয়া যায় যারা তৎকালীন ভারতবর্ষের বাইরের লোক (খস্, বল্কান, শ্লাভ ইত্যাদি আরও অনেকের উল্লেখ রয়েছে) ! তৎকালীন ভারতবর্ষ বলতে পশ্চিমে আফগানিস্তান থেকে শুরু করে পূর্বে ব্রহ্মদেশ, দক্ষিনে বর্তমান শ্রীলঙ্কা, উত্তরে তিব্বত (বাকিটা তো হিমালয়) পর্যন্ত ছিল অখন্ড ভারতবর্ষ ! এই অখণ্ড ভারতবর্ষের ম্যাপ গুরুমহারাজের কাঁধে জন্ম থেকেই *জরুল* -এর মতো অঙ্কিত ছিল !
গুরুমহারাজ বলেছিলেন, উনি যখন ঘুরতে ঘুরতে (ছোট বয়সে ভ্রমণকালীন সময়ে) প্রথমবারের জন্য হরিয়ানায় অবস্থিত কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধক্ষেত্রের স্থানে গিয়েছিলেন (হয়তো এটা হতে পারে ১৯৬৮– ৭০ সাল) তখন উনি দেখেছিলেন বিরাট ফাঁকা প্রান্তর ! সেখানে বহু জায়গায় কোন ঘাস পর্যন্ত জন্মায়নি (ঐ সমস্ত অঞ্চল এমনিতেই রুক্ষ, বন্ধুর অঞ্চল, কিন্তু গুরু মহারাজ বলেছিলেন, যেখানে প্রচুর রক্তপাত হয়_সেখানে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় কোনো গাছপালাই হোতে চায় না।) ! এখন যেখানে শ্রীকৃষ্ণের স্মৃতির উদ্দেশ্যে মন্দির নির্মিত হয়েছে বা ‘গীতা’ বলার স্থান নির্বাচন রয়েছে – সেখানে ওনার কোনো অনুভুতিই হয়নি ৷ উনি ঐ বিস্তীর্ণ প্রান্তর ধরে একা একাই হাঁটছিলেন ! হঠাৎ এক জায়গায় এসে ওনার শরীর ভারী হতে শুরু কোরলো । ফলে উনি আর আগাতেই পারছিলেন না, সেইখানেই স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে পড়লেন । ‘এটা আবার কি হলো’– উনি এই রকমটা ভাবছেন – এমন সময় ওনার (গুরুমহারাজের) দর্শন হোলো যে, স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রথের উপরে বসে গীতা শোনাচ্ছেন আর অর্জুন জোড়হাতে ভগবানের মুখের দিকে চেয়ে একদৃষ্টে বসে রয়েছেন ! গুরুমহারাজ সাড়ে সাত মিনিট ধরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গীতার বাণী শ্রবণ করেছিলেন । এই কথাগুলো বলে গুরুমহারাজ আমাদেরকে বলেছিলেন – ” জানিস তো ! বর্তমানে যে মন্দিরটি ওখানে রয়েছে – সেই স্থানটিতেও ভগবান মোটেও গীতা বলেন নি – সেই স্থানটি ছিল মন্দির থেকে অনেকটা দূরে এবং সেই স্থানের vibration এখনো সেখানে রয়েছে ! যেকোনো উন্নত soul ওখানে গেলেই এটা টের পাবে !
এইভাবেই হয় ! আজকের রাম জন্মভূমি, কৃষ্ণ জন্মভূমি, এমনকি মাত্র ৫৫০ বছর আগে শ্রীচৈতন্যের জন্মের সঠিক ভূমি — সেগুলি এখন আর কেউ জানে না ! জানেন একমাত্র মহাপুরুষেরা, অবতার পুরুষেরা ! তাঁরাও ঐসব নিয়ে কখনোই মানুষের আবেগকে উস্কে দেন না ! যা সাধারন মানুষ মেনে নিয়েছে, যা দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে – তেমন কিছুকে কখনোই ওনারা ভাঙেন না । প্রকৃতপক্ষে ওনারা কোনকিছুকেই ভাঙতে আসেন না, আবার নতুন করে কিছু গড়েনও না ! শুধু যা রয়েছে, তার মধ্যে যেটুকু বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে – সেইটাকে আবার শৃঙ্খলায় নিয়ে আসেন বা আনার চেষ্টা করেন ।
মহাপ্রভুর সঠিক জন্মস্থান নিয়ে এখনকার পণ্ডিতদের বা ভক্তদের মধ্যে দ্বন্দ রয়েছে । কেউ বলে গঙ্গার ওপারে, কেউ বলে গঙ্গার এপারে ! ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ নৌকাযোগে নবদ্বীপের গঙ্গার ধার ধরে যেতে যেতে হঠাৎ একস্থানে হয়ে গেলেন, তাঁর এমন অবস্থা হোল যে, তিনি প্রায় নৌকা থেকে পড়েই যাচ্ছিলেন ! পাশেই হৃদয়রাম ছিল, সেই ধরে ফেলেছিল ! পরে উনি ভক্তদের কাছে তাঁর হঠাৎ করে ওখানে ভাবস্থ হবার কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন – গঙ্গার ধারে ওই স্থানেই শ্রীচৈতন্যের প্রকৃত জন্মস্থান !
এই ঘটনার একশোরও বেশি বছর পরে গুরুমহারাজ(স্বামী পরমানন্দ) যখন নবদ্বীপে ভক্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়েছিলেন, তখন উনি ওখানকার যুবক ভক্তদেরকে (রবীন মালাকার, প্রলয় মহারাজ, কাজল ডাক্তার মহারাজ, শিবু, গৌড়, দেবাশীষ, হয়তো আরো দুই-একজন) নিয়ে রাত্রিতে গঙ্গায় নৌকাভ্রমণে গিয়েছিলেন । প্রকৃতপক্ষে উনি কয়েকবারই এমনটা করেছিলেন। যাইহোক, এমনই একদিন নৌকায় যেতে যেতে উনি নৌকা থেকে লাফিয়ে একটি চড়ায় নেমে পড়েন এবং এক জায়গায় বসে সবার সাথে সিটিং করতে শুরু করেন । পরে উনি বলেছিলেন – ওই স্থানটিই ছিল মহাপ্রভুর আসল জন্মস্থান !
তার মানেটা কি দাঁড়ালো__!! মানেটা হোলো এই যে, ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের সময় যে স্থানে জল ছিল, সেখানে এখন চড়া পড়ে গেছে ! [ক্রমশঃ]