গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের মহিমার কথা কি একমুখে বলে শেষ করা যায় ? কখনোই যায় না ! আমরা ভগবানের অনেক মহিমার কথা এখানে উল্লেখ করতে পারি – করতে চাইছিও, কিন্তু গুরুমহারাজ তাঁর সমগ্র জীবনে অসংখ্য অলৌকিক বা অতিলৌকিক ঘটনাসমূহের মধ্যে মাত্র দুটি ঘটনাকে “ঈশ্বরের মহিমা” বা “ব্রহ্মের মহিমা”- বলে বর্ণনা করেছিলেন। আপনারা যারা পুরোনো ভক্ত তারা প্রায় সকলেই ঐ ঘটনা দুটির কথা জানেন – কিন্তু যারা নতুন নতুন আমাদের সাথে যুক্ত হয়েছেন – তাদের জন্য আর একবার উল্লেখ করাই যায় ! তাছাড়া ঈশ্বরের মহিমার কথা যতবার শোনা হবে – ততোবারই নতুন বলে মনে হবে এবং যেহেতু ভগবানের কথা ‘শ্রবণমঙ্গলম্’, তাই শুনলে বা পাঠ করলেই মঙ্গল হবে।
যে ঘটনাদুটির কথা বলা হচ্ছে – ঐ দুটির কথা উল্লেখ করে স্বয়ং ভগবান পরমানন্দ বলেছিলেন – ” এই ঘটনাদুটি-র সঠিক ব্যাখ্যা আমিও জানিনা !” হিমালয়ের এক উচ্চকোটির মহাত্মাকে এবং পরবর্তীতে স্বামী পরমানন্দের গুরুদেব রামানন্দ অবধূতকে উনি ঐ ঘটনাদুটির উল্লেখ করে – “কেন এইরূপ ঘটলো”- তা জানতে চেয়েছিলেন ! হিমালয়ের মহাত্মা উত্তর দিয়েছিলেন – এটি ছিল “ঈশ্বরের মহিমা” আর পরমব্রহ্মজ্ঞানী সদা-সর্বদা নির্বিকল্প সমাধিতেস্থিত (কারণ রামানন্দ অবধূত গুরুমহারাজকে বলেছিলেন – আলাদা করে আবার নির্বিকল্প কি ? নিত্য নির্বিকল্পম্!) রামানন্দজী তাঁর সুদীর্ঘ জীবনকালের (১৬৭ বছর) একমাত্র সন্ন্যাসী শিষ্য স্বামী পরমানন্দকে বলেছিলেন –” ব্রহ্ম কা অনন্ত মহিমা হোতা হ্যায় বেটা ! ইয়ে ভি ওইস্যা হি এক মহিমা !”
ঘটনা দুটি সংক্ষেপে বলি :– দুটি ঘটনাই, যখন উনি রুরাল ইলেক্ট্রিফিকেশনের কাজ করছিলেন সেই সময়কালীন ঘটেছিল ! প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল রায়নার কাছাকাছি কোনো স্থানে মাঠের মধ্যে_! চাষীদের সুবিধার্থে সেচকার্য্যের জন্য ইলেকট্রিফিকেশনের জরুরী কাজ চলছিল। উপরমহল থেকে সরকারি অফিসারদের চাপ ছিল – মাত্র ৭ দিনের মধ্যে সমস্ত কাজ তুলে দিতে হবে। তাই প্রায় দিন-রাত পরিশ্রম করে কাজ চলছিল ! কর্মীদের কোনোরকম ছুটি নেবার কোনো উপায় ছিল না। এই ব্যাপারে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, ওভারশিয়ার বা সুপারভাইজার ইত্যাদিরা খুবই কড়া হুকুম জারি করে দিয়েছিল। কিন্তু গুরুমহারাজ (তখনকার যুবক রবীন)-এর তখন মায়ের(গর্ভধারণী জননী) কাছে কৃষ্ণদেবপুরে যাওয়া খুবই জরুরী হয়ে পড়েছিল। গুরুমহারাজ বলেছিলেন, ওনার শরীরের বা অন্তঃশ্চেতনার চারিদিকে নানারকম আবরণ বা ঘেরাটোপ (protection) থাকতো ! জাগতিক যেকোনো বিষয় সরাসরি তাঁকে(তাঁর অন্তঃকরণে) স্পর্শ করতে পারতো না – কিন্তু তিনটি জিনিস মা যোগমায়াও আটকাতে পারতো না ! প্রথমটা হোল কোনো ভক্তের আকুল প্রার্থনা! যে ভক্তরা তার তন-মন-প্রাণ এক করে জাগতিক সমস্ত বিষয় ভুলে শুধুমাত্র ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই প্রার্থনা জানাতে পারে – সেই প্রার্থনা বিনা বাধায় সরাসরি গুরুমহারাজের কাছে পৌঁছে যেতো ! দ্বিতীয়টা হোল – গুরুমহারাজের প্রতি (ঈশ্বরের প্রতি) চরম বিদ্বেষ, মন-প্রাণ এক করে চরম বিদ্বেষ, বিরোধ, কটুক্তি – ইত্যাদিও সরাসরি তাঁর কাছে পৌঁছে যেতো বিনা বাধায় ! আর তৃতীয়টা ছিল গুরুমহারাজের গর্ভধারিণী জননী মা নিভারাণীর যে কোনো ‘মানসিক দুশ্চিন্তা’ ! এর কারণ হোল_ মা নিভারানী কোনোরকম সমস্যায় পড়লে তাঁর প্রিয় পুত্র স্বয়ং ভগবান রবীন-কেই স্মরণ করতেন। আর তা তো করবেনই ! মা যে জানতেন,__ তাঁর পুত্রই সকলের আশ্রয়, অগতির গতি, সমস্ত মুশ্কিলের আসান, সমস্ত সমস্যার সমাধান, সমস্ত চাওয়ার পাওয়া, সমস্ত রকম সাধনার সিদ্ধি !!
সেই সময়টা ছিল আশ্বিন মাস –দুর্গাপূজার ঠিক প্রাক্কাল। মা নিভারাণী আগে রাত্রে নাতি-নাতনীদের সাথে রাত্রে শুয়ে শুয়ে ভেবেছিলেন – ‘ পুজো আসছে, ছেলে-মেয়েদের নতুন নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতে হবে, মাসকাবারি জিনিসপত্র কিনতে হবে ! তাছাড়াও অন্যান্য খরচপত্র রয়েছে ! এদিকে রবিও (মা বলতেন রবি) অনেকদিন আসতে পারছে না – তাহলে কি করে তিনি সব ঝামেলা মেটাবেন ‘– এইসব কথাই তিনি ভাবছিলেন ! আর মায়ের মনোজগতে ওঠা দুশ্চিন্তা সরাসরি গুরুমহারাজ (রবীন)-কে স্পর্শ করেছিল ! তাই সকালবেলায় যেখানে কাজ চলছিল সেখানে পৌঁছে উনি ওভারশিয়ার/ সুপারভাইজারবাবুর কাছে একদিনের জন্য ছুটি চেয়েছিলেন – যাতে উনি কৃষ্ণদেবপুরে মায়ের (জননী নিভারানী) কাছে গিয়ে তাঁর হাতে কিছু টাকা দিয়ে আসতে পারেন এবং তাঁকে দুশ্চিন্তামুক্ত করতে পারেন ! কিন্তু যেহেতু গুরুমহারাজ (রবীন) ছিলেন লেবার-সর্দার এবং হেডমিস্ত্রি, তাছাড়া সমস্ত শ্রমিকেরা গুরুমহারাজের (রবীনের) একেবারে দারুণভাবে আজ্ঞাবহ ছিল, তাই সুপারভাইজারের ভয় ছিল যে, রবীন না থাকলে লেবাররা বা মিস্ত্রিরা ভালোভাবে কাজ করবে না – এদিকে ওপরওয়ালার চাপ ছিল কাজটি ৭ দিনের মধ্যে শেষ করতেই হবে, তাই উনি গুরুজীকে ছুটি মঞ্জুর করেন নি ! আর তাতেই ঘটে গিয়েছিল সেই অলৌকিক বা অতিলৌকিক ঘটনাটি !! (ক্রমশঃ)
যে ঘটনাদুটির কথা বলা হচ্ছে – ঐ দুটির কথা উল্লেখ করে স্বয়ং ভগবান পরমানন্দ বলেছিলেন – ” এই ঘটনাদুটি-র সঠিক ব্যাখ্যা আমিও জানিনা !” হিমালয়ের এক উচ্চকোটির মহাত্মাকে এবং পরবর্তীতে স্বামী পরমানন্দের গুরুদেব রামানন্দ অবধূতকে উনি ঐ ঘটনাদুটির উল্লেখ করে – “কেন এইরূপ ঘটলো”- তা জানতে চেয়েছিলেন ! হিমালয়ের মহাত্মা উত্তর দিয়েছিলেন – এটি ছিল “ঈশ্বরের মহিমা” আর পরমব্রহ্মজ্ঞানী সদা-সর্বদা নির্বিকল্প সমাধিতেস্থিত (কারণ রামানন্দ অবধূত গুরুমহারাজকে বলেছিলেন – আলাদা করে আবার নির্বিকল্প কি ? নিত্য নির্বিকল্পম্!) রামানন্দজী তাঁর সুদীর্ঘ জীবনকালের (১৬৭ বছর) একমাত্র সন্ন্যাসী শিষ্য স্বামী পরমানন্দকে বলেছিলেন –” ব্রহ্ম কা অনন্ত মহিমা হোতা হ্যায় বেটা ! ইয়ে ভি ওইস্যা হি এক মহিমা !”
ঘটনা দুটি সংক্ষেপে বলি :– দুটি ঘটনাই, যখন উনি রুরাল ইলেক্ট্রিফিকেশনের কাজ করছিলেন সেই সময়কালীন ঘটেছিল ! প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল রায়নার কাছাকাছি কোনো স্থানে মাঠের মধ্যে_! চাষীদের সুবিধার্থে সেচকার্য্যের জন্য ইলেকট্রিফিকেশনের জরুরী কাজ চলছিল। উপরমহল থেকে সরকারি অফিসারদের চাপ ছিল – মাত্র ৭ দিনের মধ্যে সমস্ত কাজ তুলে দিতে হবে। তাই প্রায় দিন-রাত পরিশ্রম করে কাজ চলছিল ! কর্মীদের কোনোরকম ছুটি নেবার কোনো উপায় ছিল না। এই ব্যাপারে অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, ওভারশিয়ার বা সুপারভাইজার ইত্যাদিরা খুবই কড়া হুকুম জারি করে দিয়েছিল। কিন্তু গুরুমহারাজ (তখনকার যুবক রবীন)-এর তখন মায়ের(গর্ভধারণী জননী) কাছে কৃষ্ণদেবপুরে যাওয়া খুবই জরুরী হয়ে পড়েছিল। গুরুমহারাজ বলেছিলেন, ওনার শরীরের বা অন্তঃশ্চেতনার চারিদিকে নানারকম আবরণ বা ঘেরাটোপ (protection) থাকতো ! জাগতিক যেকোনো বিষয় সরাসরি তাঁকে(তাঁর অন্তঃকরণে) স্পর্শ করতে পারতো না – কিন্তু তিনটি জিনিস মা যোগমায়াও আটকাতে পারতো না ! প্রথমটা হোল কোনো ভক্তের আকুল প্রার্থনা! যে ভক্তরা তার তন-মন-প্রাণ এক করে জাগতিক সমস্ত বিষয় ভুলে শুধুমাত্র ঈশ্বরের উদ্দেশ্যেই প্রার্থনা জানাতে পারে – সেই প্রার্থনা বিনা বাধায় সরাসরি গুরুমহারাজের কাছে পৌঁছে যেতো ! দ্বিতীয়টা হোল – গুরুমহারাজের প্রতি (ঈশ্বরের প্রতি) চরম বিদ্বেষ, মন-প্রাণ এক করে চরম বিদ্বেষ, বিরোধ, কটুক্তি – ইত্যাদিও সরাসরি তাঁর কাছে পৌঁছে যেতো বিনা বাধায় ! আর তৃতীয়টা ছিল গুরুমহারাজের গর্ভধারিণী জননী মা নিভারাণীর যে কোনো ‘মানসিক দুশ্চিন্তা’ ! এর কারণ হোল_ মা নিভারানী কোনোরকম সমস্যায় পড়লে তাঁর প্রিয় পুত্র স্বয়ং ভগবান রবীন-কেই স্মরণ করতেন। আর তা তো করবেনই ! মা যে জানতেন,__ তাঁর পুত্রই সকলের আশ্রয়, অগতির গতি, সমস্ত মুশ্কিলের আসান, সমস্ত সমস্যার সমাধান, সমস্ত চাওয়ার পাওয়া, সমস্ত রকম সাধনার সিদ্ধি !!
সেই সময়টা ছিল আশ্বিন মাস –দুর্গাপূজার ঠিক প্রাক্কাল। মা নিভারাণী আগে রাত্রে নাতি-নাতনীদের সাথে রাত্রে শুয়ে শুয়ে ভেবেছিলেন – ‘ পুজো আসছে, ছেলে-মেয়েদের নতুন নতুন জামা-কাপড় কিনে দিতে হবে, মাসকাবারি জিনিসপত্র কিনতে হবে ! তাছাড়াও অন্যান্য খরচপত্র রয়েছে ! এদিকে রবিও (মা বলতেন রবি) অনেকদিন আসতে পারছে না – তাহলে কি করে তিনি সব ঝামেলা মেটাবেন ‘– এইসব কথাই তিনি ভাবছিলেন ! আর মায়ের মনোজগতে ওঠা দুশ্চিন্তা সরাসরি গুরুমহারাজ (রবীন)-কে স্পর্শ করেছিল ! তাই সকালবেলায় যেখানে কাজ চলছিল সেখানে পৌঁছে উনি ওভারশিয়ার/ সুপারভাইজারবাবুর কাছে একদিনের জন্য ছুটি চেয়েছিলেন – যাতে উনি কৃষ্ণদেবপুরে মায়ের (জননী নিভারানী) কাছে গিয়ে তাঁর হাতে কিছু টাকা দিয়ে আসতে পারেন এবং তাঁকে দুশ্চিন্তামুক্ত করতে পারেন ! কিন্তু যেহেতু গুরুমহারাজ (রবীন) ছিলেন লেবার-সর্দার এবং হেডমিস্ত্রি, তাছাড়া সমস্ত শ্রমিকেরা গুরুমহারাজের (রবীনের) একেবারে দারুণভাবে আজ্ঞাবহ ছিল, তাই সুপারভাইজারের ভয় ছিল যে, রবীন না থাকলে লেবাররা বা মিস্ত্রিরা ভালোভাবে কাজ করবে না – এদিকে ওপরওয়ালার চাপ ছিল কাজটি ৭ দিনের মধ্যে শেষ করতেই হবে, তাই উনি গুরুজীকে ছুটি মঞ্জুর করেন নি ! আর তাতেই ঘটে গিয়েছিল সেই অলৌকিক বা অতিলৌকিক ঘটনাটি !! (ক্রমশঃ)