গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের নিজের বলা কথায় ঈশ্বরের মহিমা শক্তির প্রকাশের কথা হচ্ছিলো। যে সময়ের কথা হচ্ছে – তখন গুরুমহারাজ রায়নার কাছে কোনো একটি গ্রামের মাঠে তাঁর team নিয়ে agricultural electrification-এর একটা জরুরি কাজ করাচ্ছিলেন। কাজটি এতই জরুরী ছিল যে, staff-এরা কেউই কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো ছুটি পাচ্ছিলো না ! এদিকে গুরুমহারাজের গর্ভধারিনী মা অর্থনৈতিক কারণে খুবই দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন এবং গুরুমহারাজকে স্মরণ করেছিলেন। মা-কে কিছু টাকা দিয়ে আসা খুবই প্রয়োজন ছিল। তাছাড়াও চক্ষণযাদীর টগর মল্লিকের বাবা সাত্তার সাহেবও তখন মৃত্যুশয্যায় ছিলেন। গুরুমহারাজ তাকেও কথা দিয়েছিলেন যে, তাঁর মৃত্যুর আগে উনি একবার দেখা করবেন ! সেখানেও না গেলেই নয় – কথার খেলাপ হয়ে যাবে। কিন্তু “সাধু কা বাৎ – হাতি কা দাঁত !” কখনও নড়চড় হয় না। এদিকে ওভারশিয়ার/সুপারভাইজার সাহেব কিছুতেই গুরুমহারাজকে ছাড়বেন না –কিছুতেই ওনার ছুটি মঞ্জুর করবেন না – একদিনের জন্যও না !
গুরুমহারাজ (তখন যুবক রবীন) মহাচিন্তায় পড়ে গেলেন – উনি বারবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও উপরওয়ালারা ২৪ ঘন্টার জন্য ওনাকে ছুটি মঞ্জুর করলেন না ! গভীর চিন্তাক্লিষ্ট অবস্থায় গুরুমহারাজ ওনার ছেলেরা যেখানে ইমার্জেন্সি কাজ করছিল সেখান থেকে একটু দূরে একটা গাছের তলায় বসে পড়লেন। উনি সেইসময় দুই হাঁটুর মধ্যে মুখটা গুঁজে – অপরের চাকুরী করার জন্যই যে তাঁর এই অসহায়তা – সেই কথা ভাবছিলেন! উনি এটাও ভাবছিলেন যে, ‘চাকুরী উনি আর করবেন না’– ওনার গর্ভধারিণীর প্রয়োজনের জন্যই ওনার চাকুরীগ্রহণ – সেটা উনি যে কোনোভাবে মিটিয়ে দেবেন’ – এইসব কথাই উনি ওখানে বসে বসে ভাবছিলেন। তারপর যে কি ঘটনা ঘটেছিল উনি আর তার কিছুই জানেন না ! অনেক পরে ওনাকে ঘটনাগুলো জানানো হয়েছিল ! ঘটনাটা সংক্ষেপে বলি।
গুরুমহারাজ যখন ঐ স্থানে একটি গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই সাতগেছিয়া (পূর্ব বর্ধমান, বর্ধমান-কালনা রোডের উপর) বাসস্ট্যান্ডে তৃষাণ মহারাজের সাথে গুরুমহারাজের দেখা ! উনি তৃষাণ মহারাজকে কিছু কথা বলেন বা নির্দেশ দেন ! কিছু টাকাও দিয়েছিলেন – তারপর ওনার সামনেই একটা চলন্ত বাসে উঠে চলে যান। ঠিক ঐ একই সময়ে গুরুমহারাজের আর একটি শরীর প্রকট হয়েছিল কৃষ্ণদেবপুরে তাঁর গর্ভধারিনী জননীর কাছে। ওখানে উনি মায়ের সাথে কথা বলেছেন, মা-কে প্রয়োজনীয় টাকা দিয়েছেন, তারপর মায়ের সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার চলে যান ! গুরুমহারাজের চতুর্থ শরীরটি ঠিক ঐ সময়েই (খুব সম্ভবত সময়টা ছিল সকাল ১১টা ১০মিনিট) বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে টগরদার বাবার শেষশয্যায় উপস্থিত ছিলেন। রাস্তায় উনি টগরের সাথে কথা বলেছেন বা জরুরী কিছু জিনিস কিনে দিয়েছেন ! তারপর টগরের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে উনি সেই স্থান ত্যাগ করে চলে যান। (গুরু মহারাজ সিটিং-এ বলেছিলেন টগরদার বাবার মৃত্যুশয্যায় উনি উপস্থিত হয়ে বাবাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন_কিন্তু টগরদারা কেউ এটি স্থুলতঃ দেখেনি!)
এইভাবে গুরুমহারাজের মোট চারটি শরীর একই সময়ে এই পৃথিবীরই বিভিন্ন স্থানে প্রকটিত ছিল !!
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছিল টগর মল্লিকদের বাড়ি চক্ষণযাদী গ্রামের কিছুটা দূরে শম্ভুপুর গ্রামে। ওখানেও তখন রুরাল এলেক্ট্রিফিকেশনের কাজ চলছিল এবং ওখানেও গুরুমহারাজের দলটিই সেই কাজ করছিল। গ্রামের রাস্তায় ‘তার’ টাঙানোর জন্য প্রায়শঃই রাস্তার ধারে থাকা গাছের ডালপালা কাটতে হয় – সেদিনও ওনার লেবারেরা শম্ভুপুর গ্রামের রাস্তার ধারে থাকা গাছের ডাল কেটেছিল। কিন্তু ওরা জানতো না যে, সেই গাছটি ছিল দেবতার নামে প্রতিষ্ঠা করা গাছ ! আর যায় কোথায় ? গ্রামবাসীর sentiment-এ ঘা লেগে গেল ! লেবারদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হোতে সময় লাগলো না – অনেক লোকজন লাঠি-সোটা-টাঙ্গি ইত্যাদি নিয়ে ‘মার’-‘মার’ করতে করতে তারা ঐ লেবারদের উপর চড়াও হয়ে গেল ! প্রাণভয়ে লেবারেরা জোড়হাত করে তাদেরকে বলে দিল যে, তাদের কোনো দোষ নাই – যত দোষ তাদের head-man ‘রবীন’দার ! গ্রামবাসীদের অনেকেই রবীন-দাকে চিনতো এবং রবীনদা-ই যে ওদের head তা জানতো ! ফলে ওদের সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ল রবীনের উপর !
কিছুক্ষণের মধ্যেই যখন অন্য field থেকে কাজ সেরে ‘রবীন’ (গুরুমহারাজ) ঐ গ্রামের ঘটনাস্থলে ঢুকেছিল, তখন ‘হই-হই’ করে ৪০/৫০ জন মানুষ লাঠি-টাঙ্গি নিয়ে রবীনের উপর অতর্কিতে আঘাত হানতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোথায় রবীন ! গ্রামবাসীরা অবাক হয়ে দেখেছিল যে জলজ্যান্ত একটা মানুষ অতগুলো লোকের চোখের সামনে একেবারে vanish ! কেউ আর রবীনকে খুঁজেই পেলো না – কিন্তু রবীন তখন কোথায় ?
উনি বলেছিলেন এই ব্যাপারে উনিও কিছুই জানতেন না ! উনি দেখলেন বহু মানুষ ওনাকে মারতে উদ্যত হয়েছে –সেই সময় চোখ বন্ধ করে জোড়হাতে উনি শুধু বলতে পরেছিলেন_”জয় মা!” হঠাৎ দেখলেন উনি ঐ স্থান থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে ‘জামদো’ এবং চক্ষনযাদীর মাঝামাঝি দামোদরের তীরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন !! (ক্রমশঃ)
গুরুমহারাজ (তখন যুবক রবীন) মহাচিন্তায় পড়ে গেলেন – উনি বারবার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও উপরওয়ালারা ২৪ ঘন্টার জন্য ওনাকে ছুটি মঞ্জুর করলেন না ! গভীর চিন্তাক্লিষ্ট অবস্থায় গুরুমহারাজ ওনার ছেলেরা যেখানে ইমার্জেন্সি কাজ করছিল সেখান থেকে একটু দূরে একটা গাছের তলায় বসে পড়লেন। উনি সেইসময় দুই হাঁটুর মধ্যে মুখটা গুঁজে – অপরের চাকুরী করার জন্যই যে তাঁর এই অসহায়তা – সেই কথা ভাবছিলেন! উনি এটাও ভাবছিলেন যে, ‘চাকুরী উনি আর করবেন না’– ওনার গর্ভধারিণীর প্রয়োজনের জন্যই ওনার চাকুরীগ্রহণ – সেটা উনি যে কোনোভাবে মিটিয়ে দেবেন’ – এইসব কথাই উনি ওখানে বসে বসে ভাবছিলেন। তারপর যে কি ঘটনা ঘটেছিল উনি আর তার কিছুই জানেন না ! অনেক পরে ওনাকে ঘটনাগুলো জানানো হয়েছিল ! ঘটনাটা সংক্ষেপে বলি।
গুরুমহারাজ যখন ঐ স্থানে একটি গাছের তলায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন, ঠিক সেই মুহূর্তেই সাতগেছিয়া (পূর্ব বর্ধমান, বর্ধমান-কালনা রোডের উপর) বাসস্ট্যান্ডে তৃষাণ মহারাজের সাথে গুরুমহারাজের দেখা ! উনি তৃষাণ মহারাজকে কিছু কথা বলেন বা নির্দেশ দেন ! কিছু টাকাও দিয়েছিলেন – তারপর ওনার সামনেই একটা চলন্ত বাসে উঠে চলে যান। ঠিক ঐ একই সময়ে গুরুমহারাজের আর একটি শরীর প্রকট হয়েছিল কৃষ্ণদেবপুরে তাঁর গর্ভধারিনী জননীর কাছে। ওখানে উনি মায়ের সাথে কথা বলেছেন, মা-কে প্রয়োজনীয় টাকা দিয়েছেন, তারপর মায়ের সাথে কিছুটা সময় কাটিয়ে আবার চলে যান ! গুরুমহারাজের চতুর্থ শরীরটি ঠিক ঐ সময়েই (খুব সম্ভবত সময়টা ছিল সকাল ১১টা ১০মিনিট) বর্ধমানের একটি নার্সিংহোমে টগরদার বাবার শেষশয্যায় উপস্থিত ছিলেন। রাস্তায় উনি টগরের সাথে কথা বলেছেন বা জরুরী কিছু জিনিস কিনে দিয়েছেন ! তারপর টগরের সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে উনি সেই স্থান ত্যাগ করে চলে যান। (গুরু মহারাজ সিটিং-এ বলেছিলেন টগরদার বাবার মৃত্যুশয্যায় উনি উপস্থিত হয়ে বাবাকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন_কিন্তু টগরদারা কেউ এটি স্থুলতঃ দেখেনি!)
এইভাবে গুরুমহারাজের মোট চারটি শরীর একই সময়ে এই পৃথিবীরই বিভিন্ন স্থানে প্রকটিত ছিল !!
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছিল টগর মল্লিকদের বাড়ি চক্ষণযাদী গ্রামের কিছুটা দূরে শম্ভুপুর গ্রামে। ওখানেও তখন রুরাল এলেক্ট্রিফিকেশনের কাজ চলছিল এবং ওখানেও গুরুমহারাজের দলটিই সেই কাজ করছিল। গ্রামের রাস্তায় ‘তার’ টাঙানোর জন্য প্রায়শঃই রাস্তার ধারে থাকা গাছের ডালপালা কাটতে হয় – সেদিনও ওনার লেবারেরা শম্ভুপুর গ্রামের রাস্তার ধারে থাকা গাছের ডাল কেটেছিল। কিন্তু ওরা জানতো না যে, সেই গাছটি ছিল দেবতার নামে প্রতিষ্ঠা করা গাছ ! আর যায় কোথায় ? গ্রামবাসীর sentiment-এ ঘা লেগে গেল ! লেবারদের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি হোতে সময় লাগলো না – অনেক লোকজন লাঠি-সোটা-টাঙ্গি ইত্যাদি নিয়ে ‘মার’-‘মার’ করতে করতে তারা ঐ লেবারদের উপর চড়াও হয়ে গেল ! প্রাণভয়ে লেবারেরা জোড়হাত করে তাদেরকে বলে দিল যে, তাদের কোনো দোষ নাই – যত দোষ তাদের head-man ‘রবীন’দার ! গ্রামবাসীদের অনেকেই রবীন-দাকে চিনতো এবং রবীনদা-ই যে ওদের head তা জানতো ! ফলে ওদের সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ল রবীনের উপর !
কিছুক্ষণের মধ্যেই যখন অন্য field থেকে কাজ সেরে ‘রবীন’ (গুরুমহারাজ) ঐ গ্রামের ঘটনাস্থলে ঢুকেছিল, তখন ‘হই-হই’ করে ৪০/৫০ জন মানুষ লাঠি-টাঙ্গি নিয়ে রবীনের উপর অতর্কিতে আঘাত হানতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোথায় রবীন ! গ্রামবাসীরা অবাক হয়ে দেখেছিল যে জলজ্যান্ত একটা মানুষ অতগুলো লোকের চোখের সামনে একেবারে vanish ! কেউ আর রবীনকে খুঁজেই পেলো না – কিন্তু রবীন তখন কোথায় ?
উনি বলেছিলেন এই ব্যাপারে উনিও কিছুই জানতেন না ! উনি দেখলেন বহু মানুষ ওনাকে মারতে উদ্যত হয়েছে –সেই সময় চোখ বন্ধ করে জোড়হাতে উনি শুধু বলতে পরেছিলেন_”জয় মা!” হঠাৎ দেখলেন উনি ঐ স্থান থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে ‘জামদো’ এবং চক্ষনযাদীর মাঝামাঝি দামোদরের তীরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন !! (ক্রমশঃ)