শ্রী শ্রী গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ এবং তাঁর ভক্ত, শিষ্য ও পার্ষদদের নিয়ে এখানে কথা হচ্ছিলো ! আমরা ছিলাম ভাগবতানন্দজীর কথায়। আজকেই মহারাজের মালদহে ছোট কাদিরপুরের আশ্রম প্রতিষ্ঠার কথা বলে – ওনার সম্বন্ধে আলোচনা আপাততঃ শেষ করে আমরা আবার বনগ্রামে গুরুমহারাজের কথায় ফিরে যাবো ! তারপর আবার সেই আলোচনার রেশ ধরেই গুরুমহারাজের অন্য কোনো শিষ্য, ভক্ত বা পার্ষদ-কে নিয়ে আলোচনা করা যাবে।
আমরা আগে আগে আলোচনা করেছিলাম – কি সাংঘাতিক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে ভাগবতানন্দজী তাঁর মালদহের আশ্রম প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছিলেন। প্রথমে একটা ছোট্ট জায়গা কিনে আশ্রমের প্রাথমিক কাজ শুরু হোলেও পরে গুরুমহারাজের নির্দিষ্ট করে দেওয়া জায়গাটিও কেনার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল ৷ গুরুমহারাজের কৃপায় এবং সাঁকোবাজারের দীপকের ধার দেওয়া টাকা দিয়ে সেই জায়গাটি কেনাও হয়েছিল।
ওই বড় জায়গাটি (৫৪ শতক) কেনা হবার পরই মহারাজ সেখানে অনেকগুলো আমগাছের চারা (কলম করা) কিনে একটা আমবাগান তৈরি করার কাজটা প্রথমেই শুরু করে দিয়েছিলেন। আমাদের সকলেরই জানা রয়েছে যে, মালদহের মাটি আমচাষের জন্য বিখ্যাত এবং মালদহ জেলার মানুষের কাছে এই চাষটি খুবই অর্থকরী। তাই মহারাজের মাথাতেও এই পরিকল্পনাই এসেছিল যে, অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হোতে গেলে কিছু অর্থকরী সব্জীফসল বা বাগিচা-ফসলের কাজ করতেই হবে। আর আগেই বলা হয়েছিল – মহারাজ খুবই পরিশ্রমী মানুষ, দৈহিক পরিশ্রম করতে উনি মোটেই পিছপা হোতেন না !
সেইজন্যেই উনি ঐ পুরো জায়গাটিতে আমের চারা লাগানোর সাথে সাথেই অড়হর কলাই বুনে দিয়েছিলেন। আর কি আশ্চর্য – সেই বছরেই ওই স্থানে প্রায় ৭/৮ কুইন্টাল অড়হর কলাইয়ের ফলন হয়েছিল। ঐ অধিক পরিমাণ কলাই বিক্রি করেও বেশকিছু টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এটা চৈত্র মাসের কথা, তারপরে জ্যৈষ্ঠ্য মাসে ধান collection করা হয়েছিল – ফলে সেই বছরেই ধারের টাকা অনেকটাই উনি শোধ করে দিতে পেরেছিলেন।
ছোট কাদিরপুর আশ্রমের স্থানটি যেহেতু মহানন্দা নদীর ধারেই – তাই ওটি বন্যাকবলিত এলাকা ! প্রায় ফি বছরেই ঐ অঞ্চলে বন্যা হয়ে থাকে। আশ্রম প্রতিষ্ঠার পরই ১৯৮৮ সালে বেশ বড়সড় বন্যা হয়েছিল (তবে ১৯৯৮ সালে ওখানে প্রবল বন্যা হয়েছিল এবং ওই অঞ্চলের মানুষের চরম ক্ষতি হয়েছিল। আশ্রমেরও খুবই ক্ষতিসাধন হয়েছিল।)। বন্যার হাত থেকে মালপত্র রক্ষা করার জন্য ওখানে উঁচু করে একটা godown তৈরি করা হয়েছিল – আর ছিল মহারাজের কুঠিয়া। এইভাবে আশ্রমের কাজ ধীরগতিতে শুরু হয়েছিল, তবে বলাই বাহুল্য__এর সাথেই নানারকম বাধাও পাশাপাশি এসে গিয়েছিল। আশ্রমের ওই কষ্ট করে কেনা জায়গাটির-ই একপাশে একটি আদিবাসী পরিবার বন্যার পরে গৃহহীন হয়ে পড়ায় মহারাজ ওখানে আপৎকালীন থাকার জন্য জায়গা দিয়েছিলেন। পরে পরিবারটি প্রায় ৪ (চার) শতক জায়গা দখল করে বসে গেছিলো। পরে তারা আর উঠতেই চাইছিল না। ফলে মহারাজ খুবই সমস্যায় পড়ে গেছিলেন। তার উপর সেই সময় (১৯৮৮/৮৯) বঙ্গে তখন বাম-সরকার। স্থানীয় নেতারা ওইটাকে issue করে ঝামেলা করতে লাগলো ! মহারাজ পড়ে গেলেন মহা মুস্কিলে !
তাহলে কি করা যায় ! সেই অগতির গতি ভগবান পরমানন্দ ! মহারাজ গেলেন গুরুমহারাজের কাছে – জিজ্ঞাসা করলেন – ” কি করা যায় ?” গুরুমহারাজ উত্তর দিয়েছিলেন – “ওটা তো তোর কেনা জায়গা, legal জায়গা ! তুই ওখানে আশ্রমের জন্য construction শুরু কর্ ! দেখবি পরে সব ঠিক হয়ে যাবে।” আর তাই হয়েছিল। ১৯৯০ সালে আশ্রমের বিল্ডিং তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছিল এবং মহারাজের সানুনয় অনুরোধে আদিবাসী পরিবারটিও উঠে গিয়েছিল। প্রথমে ছোটখাটো দু-একটি বসবাসের ঘর তৈরি হোলেও – মহারাজের মাথায় ছিল গুরুমহারাজের নির্দেশের কথাটি ! কারণ গুরুমহারাজ ওনাকে বলেছিলেন – ” বড় কিছু করার কথা ভাববি !” তাই মহারাজ পরে যে building-এর কাজ শুরু করেছিলেন সেটির ছাদের মাপ ছিল ১৮০০০ (আঠারো হাজার) Sq. ft. !
এই বিশাল কাজটি করতে মহারাজকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে ! ওইসব অঞ্চলে গুরুমহারাজের খুব বেশি ভক্ত নাই – যারাও বা দীক্ষা নিয়েছিল তাদের বেশিরভাগই গ্রামের চাষীবাসী সাধারণ মানুষ। তাই মহারাজ মৌমাছি পালন করে, ফল-সব্জী লাগিয়ে, মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে collection করে__ খুব ধীরে ধীরে কাজটি সম্পূর্ণ করতে পেরেছিলেন। ১৯৯৭ সালে গুরুমহারাজ যখন ওই আশ্রমে এসেছিলেন তখন ওই বিশাল buildingটির splint level পর্যন্ত হয়েছিল। ওই building-এই গুরুমহারাজের sitting হয়েছিল। এছাড়াও ঐ স্থানে আরও দুবার (১৯৯৮, ১৯৯৯) গুরুমহারাজ ওই building-এ বসেই sitting করেছিলেন। এখন building-টি complete হয়েছে। নিচে ৪-টি ঘর, ঠাকুরঘর, গুরুজীর পৃথক কুঠিয়া আর ৭০ ফুট by ১৭ ফুটের বিশাল হলঘর তৈরি হয়েছে।৷
ফলে, এখন পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের পরমানন্দ ভক্তেরা মালদহ আশ্রমে স্বচ্ছন্দে যেতে পারেন, দু-চার দিন কাটিয়েও আসতে পারেন ! আর যদি জৈষ্ঠ্য মাসে যান, তাহলে মালদহের বিবিধ সুস্বাদু আমের দ্বারা আপনার রসনাকে তৃপ্তি দিতেই পারেন ! কারণ,আশ্রমের জায়গাতেই নানা প্রকারের আমের গাছ রয়েছে, আপনি গুরু মহারাজের কৃপার কথা স্মরণ করতে করতে গাছ থেকে ফল পেড়ে গাছপাকা টাটকা আমের স্বাদ গ্রহণ করতে পারেন।।
আমরা আগে আগে আলোচনা করেছিলাম – কি সাংঘাতিক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে ভাগবতানন্দজী তাঁর মালদহের আশ্রম প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছিলেন। প্রথমে একটা ছোট্ট জায়গা কিনে আশ্রমের প্রাথমিক কাজ শুরু হোলেও পরে গুরুমহারাজের নির্দিষ্ট করে দেওয়া জায়গাটিও কেনার তোড়জোড় শুরু হয়েছিল ৷ গুরুমহারাজের কৃপায় এবং সাঁকোবাজারের দীপকের ধার দেওয়া টাকা দিয়ে সেই জায়গাটি কেনাও হয়েছিল।
ওই বড় জায়গাটি (৫৪ শতক) কেনা হবার পরই মহারাজ সেখানে অনেকগুলো আমগাছের চারা (কলম করা) কিনে একটা আমবাগান তৈরি করার কাজটা প্রথমেই শুরু করে দিয়েছিলেন। আমাদের সকলেরই জানা রয়েছে যে, মালদহের মাটি আমচাষের জন্য বিখ্যাত এবং মালদহ জেলার মানুষের কাছে এই চাষটি খুবই অর্থকরী। তাই মহারাজের মাথাতেও এই পরিকল্পনাই এসেছিল যে, অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হোতে গেলে কিছু অর্থকরী সব্জীফসল বা বাগিচা-ফসলের কাজ করতেই হবে। আর আগেই বলা হয়েছিল – মহারাজ খুবই পরিশ্রমী মানুষ, দৈহিক পরিশ্রম করতে উনি মোটেই পিছপা হোতেন না !
সেইজন্যেই উনি ঐ পুরো জায়গাটিতে আমের চারা লাগানোর সাথে সাথেই অড়হর কলাই বুনে দিয়েছিলেন। আর কি আশ্চর্য – সেই বছরেই ওই স্থানে প্রায় ৭/৮ কুইন্টাল অড়হর কলাইয়ের ফলন হয়েছিল। ঐ অধিক পরিমাণ কলাই বিক্রি করেও বেশকিছু টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এটা চৈত্র মাসের কথা, তারপরে জ্যৈষ্ঠ্য মাসে ধান collection করা হয়েছিল – ফলে সেই বছরেই ধারের টাকা অনেকটাই উনি শোধ করে দিতে পেরেছিলেন।
ছোট কাদিরপুর আশ্রমের স্থানটি যেহেতু মহানন্দা নদীর ধারেই – তাই ওটি বন্যাকবলিত এলাকা ! প্রায় ফি বছরেই ঐ অঞ্চলে বন্যা হয়ে থাকে। আশ্রম প্রতিষ্ঠার পরই ১৯৮৮ সালে বেশ বড়সড় বন্যা হয়েছিল (তবে ১৯৯৮ সালে ওখানে প্রবল বন্যা হয়েছিল এবং ওই অঞ্চলের মানুষের চরম ক্ষতি হয়েছিল। আশ্রমেরও খুবই ক্ষতিসাধন হয়েছিল।)। বন্যার হাত থেকে মালপত্র রক্ষা করার জন্য ওখানে উঁচু করে একটা godown তৈরি করা হয়েছিল – আর ছিল মহারাজের কুঠিয়া। এইভাবে আশ্রমের কাজ ধীরগতিতে শুরু হয়েছিল, তবে বলাই বাহুল্য__এর সাথেই নানারকম বাধাও পাশাপাশি এসে গিয়েছিল। আশ্রমের ওই কষ্ট করে কেনা জায়গাটির-ই একপাশে একটি আদিবাসী পরিবার বন্যার পরে গৃহহীন হয়ে পড়ায় মহারাজ ওখানে আপৎকালীন থাকার জন্য জায়গা দিয়েছিলেন। পরে পরিবারটি প্রায় ৪ (চার) শতক জায়গা দখল করে বসে গেছিলো। পরে তারা আর উঠতেই চাইছিল না। ফলে মহারাজ খুবই সমস্যায় পড়ে গেছিলেন। তার উপর সেই সময় (১৯৮৮/৮৯) বঙ্গে তখন বাম-সরকার। স্থানীয় নেতারা ওইটাকে issue করে ঝামেলা করতে লাগলো ! মহারাজ পড়ে গেলেন মহা মুস্কিলে !
তাহলে কি করা যায় ! সেই অগতির গতি ভগবান পরমানন্দ ! মহারাজ গেলেন গুরুমহারাজের কাছে – জিজ্ঞাসা করলেন – ” কি করা যায় ?” গুরুমহারাজ উত্তর দিয়েছিলেন – “ওটা তো তোর কেনা জায়গা, legal জায়গা ! তুই ওখানে আশ্রমের জন্য construction শুরু কর্ ! দেখবি পরে সব ঠিক হয়ে যাবে।” আর তাই হয়েছিল। ১৯৯০ সালে আশ্রমের বিল্ডিং তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছিল এবং মহারাজের সানুনয় অনুরোধে আদিবাসী পরিবারটিও উঠে গিয়েছিল। প্রথমে ছোটখাটো দু-একটি বসবাসের ঘর তৈরি হোলেও – মহারাজের মাথায় ছিল গুরুমহারাজের নির্দেশের কথাটি ! কারণ গুরুমহারাজ ওনাকে বলেছিলেন – ” বড় কিছু করার কথা ভাববি !” তাই মহারাজ পরে যে building-এর কাজ শুরু করেছিলেন সেটির ছাদের মাপ ছিল ১৮০০০ (আঠারো হাজার) Sq. ft. !
এই বিশাল কাজটি করতে মহারাজকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে ! ওইসব অঞ্চলে গুরুমহারাজের খুব বেশি ভক্ত নাই – যারাও বা দীক্ষা নিয়েছিল তাদের বেশিরভাগই গ্রামের চাষীবাসী সাধারণ মানুষ। তাই মহারাজ মৌমাছি পালন করে, ফল-সব্জী লাগিয়ে, মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে collection করে__ খুব ধীরে ধীরে কাজটি সম্পূর্ণ করতে পেরেছিলেন। ১৯৯৭ সালে গুরুমহারাজ যখন ওই আশ্রমে এসেছিলেন তখন ওই বিশাল buildingটির splint level পর্যন্ত হয়েছিল। ওই building-এই গুরুমহারাজের sitting হয়েছিল। এছাড়াও ঐ স্থানে আরও দুবার (১৯৯৮, ১৯৯৯) গুরুমহারাজ ওই building-এ বসেই sitting করেছিলেন। এখন building-টি complete হয়েছে। নিচে ৪-টি ঘর, ঠাকুরঘর, গুরুজীর পৃথক কুঠিয়া আর ৭০ ফুট by ১৭ ফুটের বিশাল হলঘর তৈরি হয়েছে।৷
ফলে, এখন পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের পরমানন্দ ভক্তেরা মালদহ আশ্রমে স্বচ্ছন্দে যেতে পারেন, দু-চার দিন কাটিয়েও আসতে পারেন ! আর যদি জৈষ্ঠ্য মাসে যান, তাহলে মালদহের বিবিধ সুস্বাদু আমের দ্বারা আপনার রসনাকে তৃপ্তি দিতেই পারেন ! কারণ,আশ্রমের জায়গাতেই নানা প্রকারের আমের গাছ রয়েছে, আপনি গুরু মহারাজের কৃপার কথা স্মরণ করতে করতে গাছ থেকে ফল পেড়ে গাছপাকা টাটকা আমের স্বাদ গ্রহণ করতে পারেন।।