শ্রী শ্রী গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা (লিখিত ও বক্তব্য) নিয়েই এখানে আলোচনা করা হচ্ছিলো। সেইসব আলোচনায় বিভিন্ন প্রসঙ্গ এসে যাচ্ছে – আসবেও আরো অনেক প্রসঙ্গ, কিন্তু আমরা এখন রয়েছি আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জীবনধারা কেমন হওয়া উচিত – আমাদের কি করা উচিত – কেমন ভাবে আমাদের চিন্তাকে, আমাদের বুদ্ধিকে চালনা করা উচিত – এইসব আলোচনায়। যুগপুরুষদের তো এটাই কাজ ! তাঁরা যখন যখনই পৃথিবীতে অবতীর্ণ হ’ন – তাঁরা আমাদের জন্যই আসেন, আমাদের মতো সাধারন মানুষদের জন্যই আসেন। আমরা নানান কুসংস্কারে, কুশিক্ষায়, অজ্ঞানতার মধ্যে আবদ্ধ থাকি, আমাদের বিবেক ঐসবে আচ্ছন্ন হয়ে থাকে – ফলে, আমাদের ‘বুদ্ধি’ও আমাদেরকে সুপথে বা ঠিক পথে চালিত করতে পারেনা। সাধারণ মানুষের যখন এইরূপ কঠিন পরিস্থিতি হয় – তখনই মহামানবেরা ‘যুগপুরুষ’ রূপে আমাদের কাছে নেমে আসেন – আমাদেরকে সঠিক পথে চালিত করার জন্য। আর আমাদেরও উচিত সেই যুগপুরুষের(বর্তমানের যুগপুরুষ স্বামী পরমানন্দ) শিক্ষা গ্রহণ করে জীবন পথে এগিয়ে চলা।
এখানে একটা জিজ্ঞাসা এসে যেতেই পারে যে, আমরা স্বামী পরমানন্দের শিক্ষাকেই বা জীবনে গ্রহণ করতে যাব কেন ? এর আগে আগে তো অনেক মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছিলেন – তাঁরাও তো মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতি করার জন্য কতই শিক্ষা দিয়ে গেছেন – সেগুলিকে মেনে চললেই তো হয় ! নতুনকে গ্রহণ করার প্রয়োজনই বা কি ? এখানে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের একটা কথা উল্লেখ করা যায়, উনি বলেছিলেন – ” বাদশাহী আমলের মুদ্রা নবাবী আমলে বা কোম্পানী আমলে চলে না !” সেইরূপ যুগধর্ম – সেই যুগের জন্য নির্দিষ্ট মানুষের কাছেই শিখতে হবে। না হলে পুরাতনকে আঁকড়ে ধরে থাকতে গিয়ে একটা stagnancy-র সৃষ্টি হবে। ওই stagnancy বা স্থিরতা__ জড়ের ধর্ম – জীবনের ধর্ম নয়। জীবনের ধর্মই হোলো ‘গতি’ – এগিয়ে চলা, সামনের দিকে এগিয়ে চলা– ক্রমোন্নতির দিকে এগিয়ে চলা ! এগুলি তো জীবন-বিজ্ঞান ! কেউ যদি বলে, ‘এসব আমি মানি না’, – তাহলে জানতে হবে সে মূর্খ-আহাম্মক ! সে সত্যের দিক হোতে মুখ ফিরিয়ে রয়েছে, আলোর দিক হোতে মুখ ফিরিয়ে রয়েছে – আর ভাবছে ‘সে তো ঠিকই রয়েছে’ __ এইটাই আহাম্মকি !!
ভারতীয় শাশ্বত সনাতন গ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবতগীতায় রয়েছে – “সম্ভবামি যুগে যুগে !”, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কথারই অনুসরণে লিখেছিলেন – ” তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ – বারেবারে !” কবি তৎকালীন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে (প্রায় ১৫০ বছর আগে), তৎকালীন সমাজ-শিক্ষার প্রভাব থেকে এইকথা বলেছিলেন। তিনি হয়তো যীশুখ্রীষ্ট, হযরত মুহাম্মদ প্রমুখদের সামনে রেখে এই কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শ্রীমদ্ভগবতগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যেভাবে বলেছিলেন যে, ” আমিই যুগে যুগে অবতীর্ণ হই !” বিশ্বকবি সেই স্থানটি স্পর্শ করেন নি ! উনি ঈশ্বরের অবতরণের কথা না বলে – “ঈশ্বর যুগে যুগে দূত পাঠান”– এইটা বলেছেন !
সে যাইহোক, আমরা যেটা বলতে চাইছি তাতে দেখা যায় – ঈশ্বর নিজেই যুগপ্রয়োজনে অবতীর্ণ হন এবং তিনিই যুগে যুগে দূতদেরকে পাঠান ! তবে এইটা জেনে রাখা ভালো যে, সবক্ষেত্রেই যুগধর্ম স্থাপনের জন্যই যুগপুরুষদের আগমন হয়ে থাকে। আর সমকালীন মানুষের উচিত সেই যুগের – সেই যুগপুরুষকে আদর্শ করে তাদের নিজ নিজ জীবনকে গঠন করা! গুরুমহারাজ বলেছিলেন – উনি ছোটবেলায় ভারতবর্ষের পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেরিয়ে বহু নামধারী সাধু-মহাত্মা-যোগী-সমাজপতি-ধর্মগুরু ইত্যাদিদের দেখেছিলেন, যাঁরা পদাধিকারে-নাম-যশ-খ্যাতিতে অনেক উচ্চে অবস্থান করছেন কিন্তু তাদের কাজে ও কথায় কোনো সামঞ্জস্য ছিল না ! তাদের সকলেরই অসহজ অবস্থা – অবশ্য কয়েকজন সহজ মানুষের সাথেও তাঁর দেখা হয়েছিল – যাঁরা কিন্তু তথাকথিত কোনো পদাধিকারী ছিলেন না, সাধারন অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন।
ঐ ছোট বয়সেই গুরুমহারাজ দেখে নিয়েছিলেন যে, অসহজ মানবেরাই সমাজের অধিকাংশ উচ্চ উচ্চ স্থানগুলি দখল করে রেখেছে, কিন্তু সে তুলনায় উচ্চ স্থান অধিকার করে থাকা সহজ মানুষের সংখ্যা কম ! এটাও ঠিক যে, আর ‘সহজ মানুষ’ হওয়াটাও কঠিন ! মানুষের ‘মনুষ্যত্ব’-লাভই সহজ ধর্ম। ধর্ম করতে গিয়ে আর ধার্মিক সাজতে গিয়ে মানুষ তার মনুষ্যত্বটাই হারিয়ে ফেলেছে। গুরুমহারাজ বলেছিলেন – ” মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্বলাভ আর মনুষ্যত্বের মধ্য হোতে মহামানবের আবির্ভাব হোক ! আর সমগ্র মানবজাতির সাধনা হোক – মহামানবের আবির্ভাব ঘটানো।”
এখানে একটা জিজ্ঞাসা এসে যেতেই পারে যে, আমরা স্বামী পরমানন্দের শিক্ষাকেই বা জীবনে গ্রহণ করতে যাব কেন ? এর আগে আগে তো অনেক মহাপুরুষ জন্মগ্রহণ করেছিলেন – তাঁরাও তো মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতি করার জন্য কতই শিক্ষা দিয়ে গেছেন – সেগুলিকে মেনে চললেই তো হয় ! নতুনকে গ্রহণ করার প্রয়োজনই বা কি ? এখানে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের একটা কথা উল্লেখ করা যায়, উনি বলেছিলেন – ” বাদশাহী আমলের মুদ্রা নবাবী আমলে বা কোম্পানী আমলে চলে না !” সেইরূপ যুগধর্ম – সেই যুগের জন্য নির্দিষ্ট মানুষের কাছেই শিখতে হবে। না হলে পুরাতনকে আঁকড়ে ধরে থাকতে গিয়ে একটা stagnancy-র সৃষ্টি হবে। ওই stagnancy বা স্থিরতা__ জড়ের ধর্ম – জীবনের ধর্ম নয়। জীবনের ধর্মই হোলো ‘গতি’ – এগিয়ে চলা, সামনের দিকে এগিয়ে চলা– ক্রমোন্নতির দিকে এগিয়ে চলা ! এগুলি তো জীবন-বিজ্ঞান ! কেউ যদি বলে, ‘এসব আমি মানি না’, – তাহলে জানতে হবে সে মূর্খ-আহাম্মক ! সে সত্যের দিক হোতে মুখ ফিরিয়ে রয়েছে, আলোর দিক হোতে মুখ ফিরিয়ে রয়েছে – আর ভাবছে ‘সে তো ঠিকই রয়েছে’ __ এইটাই আহাম্মকি !!
ভারতীয় শাশ্বত সনাতন গ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবতগীতায় রয়েছে – “সম্ভবামি যুগে যুগে !”, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই কথারই অনুসরণে লিখেছিলেন – ” তুমি যুগে যুগে দূত পাঠায়েছ – বারেবারে !” কবি তৎকালীন পরিবেশ ও পরিস্থিতিতে (প্রায় ১৫০ বছর আগে), তৎকালীন সমাজ-শিক্ষার প্রভাব থেকে এইকথা বলেছিলেন। তিনি হয়তো যীশুখ্রীষ্ট, হযরত মুহাম্মদ প্রমুখদের সামনে রেখে এই কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শ্রীমদ্ভগবতগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যেভাবে বলেছিলেন যে, ” আমিই যুগে যুগে অবতীর্ণ হই !” বিশ্বকবি সেই স্থানটি স্পর্শ করেন নি ! উনি ঈশ্বরের অবতরণের কথা না বলে – “ঈশ্বর যুগে যুগে দূত পাঠান”– এইটা বলেছেন !
সে যাইহোক, আমরা যেটা বলতে চাইছি তাতে দেখা যায় – ঈশ্বর নিজেই যুগপ্রয়োজনে অবতীর্ণ হন এবং তিনিই যুগে যুগে দূতদেরকে পাঠান ! তবে এইটা জেনে রাখা ভালো যে, সবক্ষেত্রেই যুগধর্ম স্থাপনের জন্যই যুগপুরুষদের আগমন হয়ে থাকে। আর সমকালীন মানুষের উচিত সেই যুগের – সেই যুগপুরুষকে আদর্শ করে তাদের নিজ নিজ জীবনকে গঠন করা! গুরুমহারাজ বলেছিলেন – উনি ছোটবেলায় ভারতবর্ষের পথে-প্রান্তরে ঘুরে বেরিয়ে বহু নামধারী সাধু-মহাত্মা-যোগী-সমাজপতি-ধর্মগুরু ইত্যাদিদের দেখেছিলেন, যাঁরা পদাধিকারে-নাম-যশ-খ্যাতিতে অনেক উচ্চে অবস্থান করছেন কিন্তু তাদের কাজে ও কথায় কোনো সামঞ্জস্য ছিল না ! তাদের সকলেরই অসহজ অবস্থা – অবশ্য কয়েকজন সহজ মানুষের সাথেও তাঁর দেখা হয়েছিল – যাঁরা কিন্তু তথাকথিত কোনো পদাধিকারী ছিলেন না, সাধারন অনাড়ম্বর জীবনযাপন করতেন।
ঐ ছোট বয়সেই গুরুমহারাজ দেখে নিয়েছিলেন যে, অসহজ মানবেরাই সমাজের অধিকাংশ উচ্চ উচ্চ স্থানগুলি দখল করে রেখেছে, কিন্তু সে তুলনায় উচ্চ স্থান অধিকার করে থাকা সহজ মানুষের সংখ্যা কম ! এটাও ঠিক যে, আর ‘সহজ মানুষ’ হওয়াটাও কঠিন ! মানুষের ‘মনুষ্যত্ব’-লাভই সহজ ধর্ম। ধর্ম করতে গিয়ে আর ধার্মিক সাজতে গিয়ে মানুষ তার মনুষ্যত্বটাই হারিয়ে ফেলেছে। গুরুমহারাজ বলেছিলেন – ” মানবের সাধনা হোক মনুষ্যত্বলাভ আর মনুষ্যত্বের মধ্য হোতে মহামানবের আবির্ভাব হোক ! আর সমগ্র মানবজাতির সাধনা হোক – মহামানবের আবির্ভাব ঘটানো।”