শ্রী শ্রী গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা (লিখিত এবং কথিত) এখানে আলোচনা করা হচ্ছিলো। গুরুমহারাজ তাঁর রচিত গ্রন্থ “সহজতা ও প্রেম”, যে গ্রন্থটি পরবর্তীতে ‘এ যুগের গীতা’ হবে (গুরুমহারাজ নিজেই এই কথা বলেছিলেন) – সেই গ্রন্থ থেকে ‘প্রেম’-বিষয়ক কথাগুলি এখানে তুলে ধরা হচ্ছিলো। এখন আমরা দেখবো – আগের দিনের আলোচনার পর গুরুমহারাজ এই বিষয়ে কি কি বলেছেন। উনি বলেছেন – ” ভালোবাসা সমস্ত অভাবকে দূরীভূত করে থাকে। ভালোবাসা স্বাধীন। যেখানে শুদ্ধ ভালোবাসা, সেখানে কিছুর অভাব-বোধ নাই। ভালোবাসা ‘স্বভাব’ হোলে, মানব নিজ হোতে সকলকেই ভালোবাসবে। ‘মানব মানবকেই ভালবাসবে’ – এ তো স্বাভাবিক ! ভালোবাসায় মানুষ সুন্দর হয়, কেবলমাত্র মানব কেন – তখন সর্বজীবেই ভালোবাসার আবির্ভাব হয়। অকৃত্রিম ভালবাসায় সবই সম্ভব। ভালোবাসার মাধুর্যে প্রাণ শীতল হয়। *তোমরা সৎ হও – সুন্দর হও – প্রেমিক হও।*”
প্রিয় পাঠক ! শুনলেন তো গুরুমহারাজের প্রেমপূর্ণ কথাগুলি ! ঐ যে উনি আগে বলেছিলেন – ” মানুষকে অ-ভাব থেকে স্ব-ভাবে (স্বভাব) উর্ত্তীর্ণ হোতে হবে, কারণ এই অবস্থা থেকেই সর্বোচ্চ স্থিতি অর্থাৎ ‘মহাভাবে’ পৌঁছানো যায়_ আর এটাই হোলো মানবজীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য ! এ সব ছাড়া আমরা এটাও বুঝলাম যে, প্রেম-ই মানুষের সমস্ত অভাববোধ কাটিয়ে মানুষকে স্বভাবে পৌঁছে দেয়। স্বভাব ভালোবাসায় উন্নীত হোলে মানবের তখন আর কেউই পর থাকে না, সকলকেই আপন মনে হয়, সকলকেই ভালোবাসে সে ! গুরুমহারাজ আরো বলেছেন যে, ‘ভালোবাসা’ স্বভাবে এসে গেলে সেই ব্যক্তি যে শুধু সকল মানুষকেই ভালবাসবে তা নয়, তার ভালোবাসা তখন সর্বজীবেই প্রকটিত হয়। এরপর উনি ‘এমন অবস্থা কেন হয়?’ – তার উত্তরে বললেন – ” ভালোবাসায় সবই সম্ভব ! ভালোবাসার মাধুর্যে প্রান শীতল হয়।”
গুরুমহারাজ সিটিং-এ বহুবার বলেছিলেন – সাধকের প্রাণ স্থির হোলেই মন একাগ্র হয় এবং ধ্যান-ধারণা-সমাধি এই ক্রমে সাধকের পূর্ণতা আসে। মহাপ্রেমিক, প্রেমময় গুরুমহারাজ সকল মানুষকে উদ্দেশ্য করে এইসব কথা বলেছেন। দেখছেন তো আপনারা__ তাঁর কথায় প্রেম কেমন ঝরে ঝরে পড়ছে ! আর তিনি নিজে সৎ-সুন্দর এবং সাক্ষাৎ প্রেমস্বরূপ বলেই তো__সকলকে সৎ, সুন্দর এবং প্রেমিক হিসাবে দেখতে চেয়েছেন !!
যাইহোক, আমরা গুরুমহারাজের লেখনীর সাথে সাথে আরও একটু এগিয়ে যাই। উনি এরপর বললেন – ” প্রিয় আত্মন্ – সংসারে আমরা দেখতে পাই ধর্মের নানা ধরনের ক্রিয়া-কলাপ। যেমন হিন্দুগণ ঈশ্বরকে তাদের প্রতিনিধি করে, ম্লেচ্ছ নিধনের জন্য কল্কি অবতারকে আহ্বান করছে। কোনো কোনো হিন্দু আবার শ্রীকৃষ্ণ কুরুকুলকে এবং শ্রীরামচন্দ্র যিনি রক্ষকুলকে ধ্বংস করেছিলেন, নারী অপহরণকারী রাবণ এবং পরদ্রব্য আত্মসাৎকারী দুর্যোধন ইত্যাদিকে যেমন নিধন করেছিলেন – সেইরূপ শ্রীকৃষ্ণ ও রামচন্দ্রের আবির্ভাব কামনা করে থাকে।
অপরদিকে মুসলমানেরা আল্লা, মহম্মদ ও কোরাণকে অবলম্বন করে অ-মুসলমান বা কাফেরদের হত্যা করতে অগ্রসর হয়। আবার খ্রিস্টানরা যীশুখ্রীষ্ট ও বাইবেলকে অবলম্বন করে ভাবছে – অ-খ্রীষ্টানগণ (অর্থাৎ পাপীরা) জগৎ হোতে বিলুপ্ত হোক ! যে কোনো উপায়ে, ছলে-বলে-কৌশলে অ-খ্রিস্টানদের খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করাতে হবে – নতুবা তাদের মুক্তি নাই।
এরূপ এক সম্প্রদায় অপর এক সম্প্রদায়ের বিলুপ্তি বা বিনাশ চাইছে অহরহ।”
এইসব কথাগুলির দ্বারা গুরুমহারাজ আমাদেরকে বলতে চাইলেন হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মমতের মানুষজনেরা চেতনার level-এ চরম অজ্ঞান অবস্থায় রয়েছে এবং সেইজন্যেই সাম্প্রদায়িক বুদ্ধিবশতঃ তারা নিজ নিজ ধর্মমতকে শ্রেষ্ঠ ভাবছে, নিজেদের উপাস্য বা আরাধ্যকেই সর্বশ্রেষ্ঠ বা একমাত্র শ্রেষ্ঠ ভাবছে ! আর শুধু এটাতেই তারা থেমে থাকছে না – তারা আপন সম্প্রদায়ভুক্ত ছাড়া অপর সম্প্রদায়ের লোকদের বিনাশ চাইছে ! এটাই বর্তমান পৃথিবীর সবচাইতে বড় সমস্যা !
এইজন্যেই গুরুমহারাজ বললেন – ” প্রত্যেকে আপন আপন সাম্প্রদায়িক ঈশ্বরকে (আল্লা, হরি, গড ইত্যাদি বিভিন্ন নামে) নেতা করে সাম্প্রদায়িক যুদ্ধে লিপ্ত হোচ্ছে। এইভাবে সম্প্রদায়ে-সম্প্রদায়ে,, গোষ্ঠীতে-গোষ্ঠীতে, শ্রেণীতে-শ্রেণীতে – এমনকি ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে বিবাদ ও সংঘর্ষ বাধিয়ে তুলছে। আর প্রত্যেকে আপনার প্রতিনিধি বা নেতারূপে__ “ঈশ্বর”-এর দোহাই দিচ্ছে। প্রতিনিয়তই একে অন্যের ধ্বংস কামনা করছে – ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করছে অপরের বিনাশ !”
প্রিয় পাঠকবৃন্দ – গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ হলেন হরির অবতার – ঈশ্বরের অবতার ! তাই তিনি যেন জগতের মানুষের এই চরম মূর্খতায় নিজেই চরম লজ্জায় পড়ে গেছেন ! তাঁর ব্যাথা কেউ বুঝছে না, তাঁর কথা কেউ শুনছে না, সবাই নিজের নিজের সাম্প্রদায়িক বুদ্ধি বা চরম অজ্ঞতাবশতঃ নিজেদের মধ্যে মারামারি-হানাহানি করে স্বয়ং ঈশ্বরকেই আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে তুলছে। তাইতো গুরুমহারাজ মানবের চেতনার হীন অবস্থা দেখে করূনাদ্র হয়ে বললেন – ” এভাবে প্রত্যেক সম্প্রদায় আপন সাম্প্রদায়িক ঈশ্বরের নাম নিয়ে বিরুদ্ধ মতাবলম্বীগণকে বিনাশ করতে চাইছে। কিন্তু বড়ই আশ্চর্য ! সাম্প্রদায়িক বুদ্ধিবশতঃ ভুলেও তারা কখনও প্রার্থনা করে না যে – সকলের সুমতি হোক, সত্য-ত্যাগ-প্রেম ও শান্তির পথে সকলে চলুক এবং সকলেই পারস্পরিক সম্প্রীতি নিয়ে শান্তিতে থাকুক।
আপন সম্প্রদায়কে বাড়াতে গিয়ে অপর সম্প্রদায়কে আঘাত করছে এবং এর ফলেই জগতে মারামারি, হানাহানি ও সংঘর্ষ বাধছে। তারা যদি মানবের কল্যাণই চায়, তাহলে এরূপ সংঘর্ষ করে কেন !!”
প্রিয় পাঠক ! শুনলেন তো গুরুমহারাজের প্রেমপূর্ণ কথাগুলি ! ঐ যে উনি আগে বলেছিলেন – ” মানুষকে অ-ভাব থেকে স্ব-ভাবে (স্বভাব) উর্ত্তীর্ণ হোতে হবে, কারণ এই অবস্থা থেকেই সর্বোচ্চ স্থিতি অর্থাৎ ‘মহাভাবে’ পৌঁছানো যায়_ আর এটাই হোলো মানবজীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য ! এ সব ছাড়া আমরা এটাও বুঝলাম যে, প্রেম-ই মানুষের সমস্ত অভাববোধ কাটিয়ে মানুষকে স্বভাবে পৌঁছে দেয়। স্বভাব ভালোবাসায় উন্নীত হোলে মানবের তখন আর কেউই পর থাকে না, সকলকেই আপন মনে হয়, সকলকেই ভালোবাসে সে ! গুরুমহারাজ আরো বলেছেন যে, ‘ভালোবাসা’ স্বভাবে এসে গেলে সেই ব্যক্তি যে শুধু সকল মানুষকেই ভালবাসবে তা নয়, তার ভালোবাসা তখন সর্বজীবেই প্রকটিত হয়। এরপর উনি ‘এমন অবস্থা কেন হয়?’ – তার উত্তরে বললেন – ” ভালোবাসায় সবই সম্ভব ! ভালোবাসার মাধুর্যে প্রান শীতল হয়।”
গুরুমহারাজ সিটিং-এ বহুবার বলেছিলেন – সাধকের প্রাণ স্থির হোলেই মন একাগ্র হয় এবং ধ্যান-ধারণা-সমাধি এই ক্রমে সাধকের পূর্ণতা আসে। মহাপ্রেমিক, প্রেমময় গুরুমহারাজ সকল মানুষকে উদ্দেশ্য করে এইসব কথা বলেছেন। দেখছেন তো আপনারা__ তাঁর কথায় প্রেম কেমন ঝরে ঝরে পড়ছে ! আর তিনি নিজে সৎ-সুন্দর এবং সাক্ষাৎ প্রেমস্বরূপ বলেই তো__সকলকে সৎ, সুন্দর এবং প্রেমিক হিসাবে দেখতে চেয়েছেন !!
যাইহোক, আমরা গুরুমহারাজের লেখনীর সাথে সাথে আরও একটু এগিয়ে যাই। উনি এরপর বললেন – ” প্রিয় আত্মন্ – সংসারে আমরা দেখতে পাই ধর্মের নানা ধরনের ক্রিয়া-কলাপ। যেমন হিন্দুগণ ঈশ্বরকে তাদের প্রতিনিধি করে, ম্লেচ্ছ নিধনের জন্য কল্কি অবতারকে আহ্বান করছে। কোনো কোনো হিন্দু আবার শ্রীকৃষ্ণ কুরুকুলকে এবং শ্রীরামচন্দ্র যিনি রক্ষকুলকে ধ্বংস করেছিলেন, নারী অপহরণকারী রাবণ এবং পরদ্রব্য আত্মসাৎকারী দুর্যোধন ইত্যাদিকে যেমন নিধন করেছিলেন – সেইরূপ শ্রীকৃষ্ণ ও রামচন্দ্রের আবির্ভাব কামনা করে থাকে।
অপরদিকে মুসলমানেরা আল্লা, মহম্মদ ও কোরাণকে অবলম্বন করে অ-মুসলমান বা কাফেরদের হত্যা করতে অগ্রসর হয়। আবার খ্রিস্টানরা যীশুখ্রীষ্ট ও বাইবেলকে অবলম্বন করে ভাবছে – অ-খ্রীষ্টানগণ (অর্থাৎ পাপীরা) জগৎ হোতে বিলুপ্ত হোক ! যে কোনো উপায়ে, ছলে-বলে-কৌশলে অ-খ্রিস্টানদের খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করাতে হবে – নতুবা তাদের মুক্তি নাই।
এরূপ এক সম্প্রদায় অপর এক সম্প্রদায়ের বিলুপ্তি বা বিনাশ চাইছে অহরহ।”
এইসব কথাগুলির দ্বারা গুরুমহারাজ আমাদেরকে বলতে চাইলেন হিন্দু-মুসলমান-খ্রিস্টান ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মমতের মানুষজনেরা চেতনার level-এ চরম অজ্ঞান অবস্থায় রয়েছে এবং সেইজন্যেই সাম্প্রদায়িক বুদ্ধিবশতঃ তারা নিজ নিজ ধর্মমতকে শ্রেষ্ঠ ভাবছে, নিজেদের উপাস্য বা আরাধ্যকেই সর্বশ্রেষ্ঠ বা একমাত্র শ্রেষ্ঠ ভাবছে ! আর শুধু এটাতেই তারা থেমে থাকছে না – তারা আপন সম্প্রদায়ভুক্ত ছাড়া অপর সম্প্রদায়ের লোকদের বিনাশ চাইছে ! এটাই বর্তমান পৃথিবীর সবচাইতে বড় সমস্যা !
এইজন্যেই গুরুমহারাজ বললেন – ” প্রত্যেকে আপন আপন সাম্প্রদায়িক ঈশ্বরকে (আল্লা, হরি, গড ইত্যাদি বিভিন্ন নামে) নেতা করে সাম্প্রদায়িক যুদ্ধে লিপ্ত হোচ্ছে। এইভাবে সম্প্রদায়ে-সম্প্রদায়ে,, গোষ্ঠীতে-গোষ্ঠীতে, শ্রেণীতে-শ্রেণীতে – এমনকি ব্যক্তিতে-ব্যক্তিতে বিবাদ ও সংঘর্ষ বাধিয়ে তুলছে। আর প্রত্যেকে আপনার প্রতিনিধি বা নেতারূপে__ “ঈশ্বর”-এর দোহাই দিচ্ছে। প্রতিনিয়তই একে অন্যের ধ্বংস কামনা করছে – ঈশ্বরের নিকট প্রার্থনা করছে অপরের বিনাশ !”
প্রিয় পাঠকবৃন্দ – গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দ হলেন হরির অবতার – ঈশ্বরের অবতার ! তাই তিনি যেন জগতের মানুষের এই চরম মূর্খতায় নিজেই চরম লজ্জায় পড়ে গেছেন ! তাঁর ব্যাথা কেউ বুঝছে না, তাঁর কথা কেউ শুনছে না, সবাই নিজের নিজের সাম্প্রদায়িক বুদ্ধি বা চরম অজ্ঞতাবশতঃ নিজেদের মধ্যে মারামারি-হানাহানি করে স্বয়ং ঈশ্বরকেই আঘাতে আঘাতে জর্জরিত করে তুলছে। তাইতো গুরুমহারাজ মানবের চেতনার হীন অবস্থা দেখে করূনাদ্র হয়ে বললেন – ” এভাবে প্রত্যেক সম্প্রদায় আপন সাম্প্রদায়িক ঈশ্বরের নাম নিয়ে বিরুদ্ধ মতাবলম্বীগণকে বিনাশ করতে চাইছে। কিন্তু বড়ই আশ্চর্য ! সাম্প্রদায়িক বুদ্ধিবশতঃ ভুলেও তারা কখনও প্রার্থনা করে না যে – সকলের সুমতি হোক, সত্য-ত্যাগ-প্রেম ও শান্তির পথে সকলে চলুক এবং সকলেই পারস্পরিক সম্প্রীতি নিয়ে শান্তিতে থাকুক।
আপন সম্প্রদায়কে বাড়াতে গিয়ে অপর সম্প্রদায়কে আঘাত করছে এবং এর ফলেই জগতে মারামারি, হানাহানি ও সংঘর্ষ বাধছে। তারা যদি মানবের কল্যাণই চায়, তাহলে এরূপ সংঘর্ষ করে কেন !!”