শ্রী শ্রী গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা (কথিত এবং লিখিত) এখানে আলোচনা করা হচ্ছিলো। আমরা ছিলাম ওনার স্বহস্ত রচিত প্রথম গ্রন্থ *সহজতা ও প্রেম*-এর ‘প্রেম’ বিষয়ক কথায়। গুরুমহারাজ বলেছেন – ” প্রিয় আত্মন্ – মানব সচরাচর যা কামনা করে থাকে, তা সিদ্ধ না হোলে কামনা ক্রোধে পরিণত হয়। ক্রমান্বয়ে তা হোতে লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য আপনা হোতে এসে পড়ে এবং মানব পরিণত হয় মতিভ্রমগ্রস্থ অসহজ অবস্থায়।” গুরুমহারাজ বলেছেন ভারতীয় দর্শনশাস্ত্র বর্ণিত ষড়রিপুর কথা অর্থাৎ কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-মদ এবং মাৎসর্য বা ঈর্ষার কথা !
মানবের অন্তর্জগতের স্বাভাবিক নিয়মেই সৃষ্ট কামনা ও বাসনা বিদ্যমান। মানব ইন্দ্রিয়ভোগ, সুখভোগ, বিলাস-ব্যসনে নিজেকে সমাজের কাছে প্রতিষ্ঠা করা – ইত্যাদি নানা কারণের জন্য বস্তু, ব্যক্তি বা বিষয় লাভের জন্য ‘কামনা’ ও ‘বাসনা’ করে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়__ মানবের কিছু কিছু কামনা-বাসনা মেটে, আবার কিছু কিছু মেটে না ! যেগুলো মেটে – তাতেও কিন্তু মানুষ তৃপ্ত হয় না। কারণ, এইজন্যেই শাস্ত্র বলেছে – ” ন জাতুঃ কামঃ-কামানাং উপভোগেন সাম্যতি!” উপভোগের দ্বারা (যেটাকে আমরা ‘ভোগ’ মনে করি, সেটি আসলে উপভোগ। প্রকৃত ‘ভোগ’ হোলো পরমানন্দ প্রাপ্তি!) আবার যেগুলি (কামনা ও বাসনা) মেটে না – তা লাভের জন্য আকাঙ্ক্ষা carry-forward করে জন্ম থেকে জন্মান্তরে ! কিন্তু কামনা যদি না মেটে, যদি বাধাপ্রাপ্ত হয় – তাহলেই তার বিকার সৃষ্টি হয় এবং কামবিকৃতি থেকে সৃষ্টি হয় ক্রোধ, ক্রোধ থেকে মদ, মদ থেকে মোহ বা মাৎসর্য (ঈর্ষা) সৃষ্টি হয়। এইভাবেই মানব ষড়রিপুর তারণাগ্রস্থ হয়, তাদের কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় এবং মহামায়ার সৃষ্ট এই জগৎসংসারের চক্রে আটকে পড়ে জন্ম-জন্মান্তর ধরে ঘুরপাক খেতে থাকে এবং কষ্ট পায়।
শ্রীমদ্ভাগবতগীতাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণী হিসাবে উপরোক্ত কথাগুলিই পাওয়া যায়। তবে গুরুমহারাজ সহজ বাংলায় এটাই বুঝিয়েছেন যে, ‘কামনা’ সিদ্ধ না হোলে বা না মিটলে ক্রম অনুযায়ী অন্যান্য রিপুগুলির প্রভাব পড়ে মানুষের জীবনে এবং মানুষ মতিভ্রমগ্রস্থ হয় এবং অসহজ হয়ে ওঠে।
যাইহোক, এরপর উনি আরো কি বলেছেন সেটাই দ্যাখা যাক্ ! উনি বলেছেন – ” সাধারণ মানবের মূল লক্ষ্যই হোলো সুখলাভ। কিন্তু কামনার ভোগে সুখলাভ হয় কি ? সুখের পরিবর্তে তখন দেখা যায় ভোগান্তি আর দুর্ভোগ। মানবকে পরম প্রেমের স্থিতিতে উপনীত হোতে হবে, তাহলেই তার পূর্ণতা, নতুবা মানব পূর্ণতাকে আলিঙ্গন করতে পারবে না। মানব নিজের সামর্থ্যের সেই স্থিতিতে পৌঁছাতে সক্ষম না হোলে প্রয়োজন হয় পরমেশ্বরের করুণা, আর তখনই (পরমেশ্বরের করুণা লাভ হলে) আসবে জীবনের পূর্ণতা !”
প্রিয় পাঠকবৃন্দ ! সত্যিই তো আমরা সাধারন মানুষেরা আনন্দ খুঁজি না, শান্তি খুঁজি না – আমরা সুখ খুঁজি ! কি মূর্খ আমরা ! ভালোটা না খুঁজে, সত্য না খুঁজে, নিত্যকে না খুঁজে – যেটা খারাপ-যেটা মিথ্যা-যেটা অনিত্য – সেইগুলোকে নিয়ে থাকতেই ভালোবাসি। কিন্তু আমাদের চাহিদা সেই সুখটাও আমরা লাভ করতে পারি না। কারন পদ্ধতিগত ভুল অর্থাৎ আমরা চাই সুখ ভোগ করতে, কিন্তু ভোগের দ্বারা ‘সুখ’লাভ তো হয় না ! আর মানবের জীবনে সুখ লাভ না হওয়ার অর্থই হোলো সেই জীবনে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি নেমে আসা !
গুরুমহারাজের কথা অনুযায়ী মানবজীবনে পূর্ণতা আসে একমাত্র পরম প্রেমের স্থিতিতে উপনীত হোলে – অন্যথায় জন্ম-জন্মান্তর ধরে যা কিছু লাভ হয় সবই আংশিক__পূর্ণতা নয়! গুরু মহারাজের বলা_ এরপরের কথাগুলো আমরা অর্থাৎ সাধারণ মানুষেরা তাঁর কাছ থেকে পাওয়া অকৃপণ ‘আশ্বাসবার্ত্তা’ হিসাবে নিতে পারি ! কারণ ধ্যানী-জ্ঞানী-যোগীরা হোলেন সামর্থ্যবান মানব ! তাঁরা নিজের সামর্থ্যেই মানবজীবনের উদ্দেশ্য (পূর্ণতালাভ) সফল করতে পারেন। কিন্তু আমাদের মতো যারা সাধারণ মানুষ, যারা দুর্বল, সাধন-ভজনে হয় অপটু অথবা অনীহাগ্রস্ত – তাদের কি গতি হবে ? তাদের জন্যই তো রয়েছেন পরম প্রেমময় গুরুজীর ন্যায় বিভিন্ন মহাত্মা-মহাপুরুষগণ! যাঁরা গুরুরূপে-পথপ্রদর্শকরূপে আমাদের সামনে হাজির হয়ে থাকেন (মহাপুরুষের সাক্ষাৎকার পাওয়াটাও অবশ্য জন্ম-জন্মান্তরের শুভসংস্কারেরই ফল) যুগে যুগে। এইবার তাঁদের চরণে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে উজাড় করে দিতে পারলেই সদগুরু-রূপী ঐ মহাপুরুষদের করুণালাভ বা কৃপালাভ করা যায়। আর সদ্গুরুর কৃপা হোলেই পরমেশ্বরের কৃপা বা করুণালাভ করা সম্ভব হয়। এইজন্যেই বলা হয়েছে “অধরা-কে ধরবি যদি ‘ধরা’-র চরণ ধর!”– এখানে ‘ধরা` মানে যিনি কৃপাপরবশ হয়ে স্থূলশরীর ধারণ করে(সদগুরু) ধরার বুকে ধরা দিয়েছেন, আর ‘অধরা’ অর্থে পরমেশ্বর – যাঁকে লাভ করার অর্থই মানবজীবনের পূর্ণতাপ্রাপ্তি !
গুরুমহারাজ এরপরে ‘প্রেম’-এর বিপরীত ‘কাম’-র বিকার নিয়ে কিছু কথা বলেছেন – ” কামবিকার মানবজীবনে প্রাণক্রিয়ার নিম্ন লক্ষণ। প্রেমই উৎকৃষ্ট এবং পূর্ণ ! যাদের মধ্যে এই কামবিকার পরিলক্ষিত হয়, তারা এখনও আদিমতাকে কাটিয়ে উঠতে পারেনি৷ নিশ্চিত তারা প্রাণীকুলের সর্বনিম্নে রয়েছে।”
পাঠকবৃন্দ ! দেখুন – এখানে গুরুমহারাজ কিন্তু ‘কাম’-কে প্রাণক্রিয়ার নিম্নলক্ষণ বলেন নি – ‘কামবিকার’-কে বলেছেন !! ‘কাম’ স্বাভাবিক ও সহজ, এটি সমস্ত জীবের স্বাভাবিকতা। কিন্তু জীব বিবর্তনের ধারায় সবচাইতে উন্নত জীব মানুষ-শরীরেই কামের অধিক বিকৃত ঘটে। এটিকেই গুরুমহারাজ বলেছেন ‘কামবিকার’ ! ওনার ব্যাখা অনুযায়ী__ আমাদের মধ্যে যাদেরই (বেশিরভাগের) কামবিকার রয়েছে, জেনে রাখতে হবে যে, আমরা কিন্তু আদিমতাকে অতিক্রম করতে পারিনি এবং আমরা প্রাণীকুলের (মানুষ্যেতর প্রাণীসহ) সর্বনিম্ন স্তরে বিরাজ করছি।
কি সাংঘাতিক কথা ! মানুষ শরীর লাভ করেও আমাদের কি অবস্থা দেখেছেন !! যাইহোক, এরপর গুরুমহারাজ প্রেম সম্বন্ধে আরও কি বলছেন সেটাই শোনা যাক্। – “প্রেম মানবজীবনকে রূপান্তর করে দেয় – মানবজীবন ও মানবসমাজের মহত্ব সূচনা করে। প্রেম মানবকে পাশবিক প্রবৃত্তির নিম্নস্তর হোতে পরমেশ্বরের দিকে অগ্রসর করে। আত্মবিস্মৃত, স্বার্থপর, নরপিশাচ হয়ে ওঠে চৈতন্যময় দিব্য মানব।প্রেম সব অভাবকে দূরীভূত করে। যেখানে ভাবের ঘরে চুরি, সেখানে প্রেম থাকতে পারে না।”
মানবের অন্তর্জগতের স্বাভাবিক নিয়মেই সৃষ্ট কামনা ও বাসনা বিদ্যমান। মানব ইন্দ্রিয়ভোগ, সুখভোগ, বিলাস-ব্যসনে নিজেকে সমাজের কাছে প্রতিষ্ঠা করা – ইত্যাদি নানা কারণের জন্য বস্তু, ব্যক্তি বা বিষয় লাভের জন্য ‘কামনা’ ও ‘বাসনা’ করে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়__ মানবের কিছু কিছু কামনা-বাসনা মেটে, আবার কিছু কিছু মেটে না ! যেগুলো মেটে – তাতেও কিন্তু মানুষ তৃপ্ত হয় না। কারণ, এইজন্যেই শাস্ত্র বলেছে – ” ন জাতুঃ কামঃ-কামানাং উপভোগেন সাম্যতি!” উপভোগের দ্বারা (যেটাকে আমরা ‘ভোগ’ মনে করি, সেটি আসলে উপভোগ। প্রকৃত ‘ভোগ’ হোলো পরমানন্দ প্রাপ্তি!) আবার যেগুলি (কামনা ও বাসনা) মেটে না – তা লাভের জন্য আকাঙ্ক্ষা carry-forward করে জন্ম থেকে জন্মান্তরে ! কিন্তু কামনা যদি না মেটে, যদি বাধাপ্রাপ্ত হয় – তাহলেই তার বিকার সৃষ্টি হয় এবং কামবিকৃতি থেকে সৃষ্টি হয় ক্রোধ, ক্রোধ থেকে মদ, মদ থেকে মোহ বা মাৎসর্য (ঈর্ষা) সৃষ্টি হয়। এইভাবেই মানব ষড়রিপুর তারণাগ্রস্থ হয়, তাদের কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় এবং মহামায়ার সৃষ্ট এই জগৎসংসারের চক্রে আটকে পড়ে জন্ম-জন্মান্তর ধরে ঘুরপাক খেতে থাকে এবং কষ্ট পায়।
শ্রীমদ্ভাগবতগীতাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত বাণী হিসাবে উপরোক্ত কথাগুলিই পাওয়া যায়। তবে গুরুমহারাজ সহজ বাংলায় এটাই বুঝিয়েছেন যে, ‘কামনা’ সিদ্ধ না হোলে বা না মিটলে ক্রম অনুযায়ী অন্যান্য রিপুগুলির প্রভাব পড়ে মানুষের জীবনে এবং মানুষ মতিভ্রমগ্রস্থ হয় এবং অসহজ হয়ে ওঠে।
যাইহোক, এরপর উনি আরো কি বলেছেন সেটাই দ্যাখা যাক্ ! উনি বলেছেন – ” সাধারণ মানবের মূল লক্ষ্যই হোলো সুখলাভ। কিন্তু কামনার ভোগে সুখলাভ হয় কি ? সুখের পরিবর্তে তখন দেখা যায় ভোগান্তি আর দুর্ভোগ। মানবকে পরম প্রেমের স্থিতিতে উপনীত হোতে হবে, তাহলেই তার পূর্ণতা, নতুবা মানব পূর্ণতাকে আলিঙ্গন করতে পারবে না। মানব নিজের সামর্থ্যের সেই স্থিতিতে পৌঁছাতে সক্ষম না হোলে প্রয়োজন হয় পরমেশ্বরের করুণা, আর তখনই (পরমেশ্বরের করুণা লাভ হলে) আসবে জীবনের পূর্ণতা !”
প্রিয় পাঠকবৃন্দ ! সত্যিই তো আমরা সাধারন মানুষেরা আনন্দ খুঁজি না, শান্তি খুঁজি না – আমরা সুখ খুঁজি ! কি মূর্খ আমরা ! ভালোটা না খুঁজে, সত্য না খুঁজে, নিত্যকে না খুঁজে – যেটা খারাপ-যেটা মিথ্যা-যেটা অনিত্য – সেইগুলোকে নিয়ে থাকতেই ভালোবাসি। কিন্তু আমাদের চাহিদা সেই সুখটাও আমরা লাভ করতে পারি না। কারন পদ্ধতিগত ভুল অর্থাৎ আমরা চাই সুখ ভোগ করতে, কিন্তু ভোগের দ্বারা ‘সুখ’লাভ তো হয় না ! আর মানবের জীবনে সুখ লাভ না হওয়ার অর্থই হোলো সেই জীবনে দুর্ভোগ ও ভোগান্তি নেমে আসা !
গুরুমহারাজের কথা অনুযায়ী মানবজীবনে পূর্ণতা আসে একমাত্র পরম প্রেমের স্থিতিতে উপনীত হোলে – অন্যথায় জন্ম-জন্মান্তর ধরে যা কিছু লাভ হয় সবই আংশিক__পূর্ণতা নয়! গুরু মহারাজের বলা_ এরপরের কথাগুলো আমরা অর্থাৎ সাধারণ মানুষেরা তাঁর কাছ থেকে পাওয়া অকৃপণ ‘আশ্বাসবার্ত্তা’ হিসাবে নিতে পারি ! কারণ ধ্যানী-জ্ঞানী-যোগীরা হোলেন সামর্থ্যবান মানব ! তাঁরা নিজের সামর্থ্যেই মানবজীবনের উদ্দেশ্য (পূর্ণতালাভ) সফল করতে পারেন। কিন্তু আমাদের মতো যারা সাধারণ মানুষ, যারা দুর্বল, সাধন-ভজনে হয় অপটু অথবা অনীহাগ্রস্ত – তাদের কি গতি হবে ? তাদের জন্যই তো রয়েছেন পরম প্রেমময় গুরুজীর ন্যায় বিভিন্ন মহাত্মা-মহাপুরুষগণ! যাঁরা গুরুরূপে-পথপ্রদর্শকরূপে আমাদের সামনে হাজির হয়ে থাকেন (মহাপুরুষের সাক্ষাৎকার পাওয়াটাও অবশ্য জন্ম-জন্মান্তরের শুভসংস্কারেরই ফল) যুগে যুগে। এইবার তাঁদের চরণে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে উজাড় করে দিতে পারলেই সদগুরু-রূপী ঐ মহাপুরুষদের করুণালাভ বা কৃপালাভ করা যায়। আর সদ্গুরুর কৃপা হোলেই পরমেশ্বরের কৃপা বা করুণালাভ করা সম্ভব হয়। এইজন্যেই বলা হয়েছে “অধরা-কে ধরবি যদি ‘ধরা’-র চরণ ধর!”– এখানে ‘ধরা` মানে যিনি কৃপাপরবশ হয়ে স্থূলশরীর ধারণ করে(সদগুরু) ধরার বুকে ধরা দিয়েছেন, আর ‘অধরা’ অর্থে পরমেশ্বর – যাঁকে লাভ করার অর্থই মানবজীবনের পূর্ণতাপ্রাপ্তি !
গুরুমহারাজ এরপরে ‘প্রেম’-এর বিপরীত ‘কাম’-র বিকার নিয়ে কিছু কথা বলেছেন – ” কামবিকার মানবজীবনে প্রাণক্রিয়ার নিম্ন লক্ষণ। প্রেমই উৎকৃষ্ট এবং পূর্ণ ! যাদের মধ্যে এই কামবিকার পরিলক্ষিত হয়, তারা এখনও আদিমতাকে কাটিয়ে উঠতে পারেনি৷ নিশ্চিত তারা প্রাণীকুলের সর্বনিম্নে রয়েছে।”
পাঠকবৃন্দ ! দেখুন – এখানে গুরুমহারাজ কিন্তু ‘কাম’-কে প্রাণক্রিয়ার নিম্নলক্ষণ বলেন নি – ‘কামবিকার’-কে বলেছেন !! ‘কাম’ স্বাভাবিক ও সহজ, এটি সমস্ত জীবের স্বাভাবিকতা। কিন্তু জীব বিবর্তনের ধারায় সবচাইতে উন্নত জীব মানুষ-শরীরেই কামের অধিক বিকৃত ঘটে। এটিকেই গুরুমহারাজ বলেছেন ‘কামবিকার’ ! ওনার ব্যাখা অনুযায়ী__ আমাদের মধ্যে যাদেরই (বেশিরভাগের) কামবিকার রয়েছে, জেনে রাখতে হবে যে, আমরা কিন্তু আদিমতাকে অতিক্রম করতে পারিনি এবং আমরা প্রাণীকুলের (মানুষ্যেতর প্রাণীসহ) সর্বনিম্ন স্তরে বিরাজ করছি।
কি সাংঘাতিক কথা ! মানুষ শরীর লাভ করেও আমাদের কি অবস্থা দেখেছেন !! যাইহোক, এরপর গুরুমহারাজ প্রেম সম্বন্ধে আরও কি বলছেন সেটাই শোনা যাক্। – “প্রেম মানবজীবনকে রূপান্তর করে দেয় – মানবজীবন ও মানবসমাজের মহত্ব সূচনা করে। প্রেম মানবকে পাশবিক প্রবৃত্তির নিম্নস্তর হোতে পরমেশ্বরের দিকে অগ্রসর করে। আত্মবিস্মৃত, স্বার্থপর, নরপিশাচ হয়ে ওঠে চৈতন্যময় দিব্য মানব।প্রেম সব অভাবকে দূরীভূত করে। যেখানে ভাবের ঘরে চুরি, সেখানে প্রেম থাকতে পারে না।”