গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দের কথা সত্যিই অমৃত সমান ! আর এটাও সত্যি যে পরমানন্দ কথা যে শোনে সে শুধু পূণ্যবানই নয় – মহাপূণ্যবান ! তাইতো স্বামী পরমানন্দের কথা বলতেও ভালো লাগে, আবার শুনতে আরও ভালো লাগে! তাঁর কথার মধ্যেই যে যুগধর্মের শিক্ষা রয়েছে। তাইতো শুনতে ভালো লাগে _তাই তো গুরুমহারাজের কথা শুনলে মনে হয় _আহা! এমনটি যেন আগে কোথাও শুনি নি!!
স্বামী পরমানন্দ নিজশরীরে থাকতেই ভারতবর্ষের নানাস্থানে এবং বিদেশেও কিছু আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে গেলেন বা নতুন করে আশ্রম করার পরিবেশ , পরিস্থিতি তৈরী করে গেলেন ! প্রতিটি আশ্রমের দায়িত্বও তিনি কোন না কোন এক বা একাধিক সন্ন্যাসীর হাতে দিয়ে গিয়েছিলেন ৷ এছাড়াও তিনি নিজে অনেক ত্যাগী তরুণ-তরুণীকে ব্রহ্মচর্য্য বা সন্ন্যাস-সংস্কারও দিয়েছিলেন যাতে পরবর্ত্তীতে তারাও মূল আশ্রমে বা অন্য কোন আশ্রমে কাজ করতে পারে ৷
কিন্তু কাজটা কি ? সমাজ সেবামূলক কাজ – যেমন , অনাথ-আশ্রম প্রতিষ্ঠা , দাতব্য চিকিৎসালয় চালানো , দুঃস্থ-অসুস্থ মানুষের শুশ্রুষা করা , প্রাকৃতিক দূর্যোগে বা যে কোন বিপর্যয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো , শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান তৈরী করে শিক্ষাদান – এইসব ? সাধারণ মানুষের কাছে ২ টাকা , ৫ টাকা অথবা ৫০/১০০/১০০০/৫০০০ টাকা অথবা আরও বেশী বেশী Collection করে __ঐ ধরণের সমাজসেবামূলক কাজ করা ? এতে করে মানুষের উপকার বা মঙ্গলও হোল আর আশ্রমিকদের সেবা বা সাধনাও হোল ! __এটাই কি পরমানন্দের বা যে কোন যুগপুরুষের আরদ্ধ কাজ?
এটাই গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ করতে এসেছিলেন বা এটাই করতে বলে গেলেন ? এর আগের আগের মহাপুরুষগণ , অবতারগণ এই কাজগুলোই করতে বললেন ? এটাই যুগধর্ম ? এটাই কর্তব্য ? ব্যস ! আর কিছুই নয় ?
গুরু মহারাজ একবার বলেছিলেন – অন্নদান , বস্ত্রদান , শিক্ষাদান অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠদান ‘জ্ঞানদান’! ‘জ্ঞানদান’ বলতে – ”এটা করো – ওটা কোরোনা” , “এটা করলে এই হয় – ওটা করলে ওই হয়” – এসব জ্ঞান নয় ৷ ‘জ্ঞান’ অর্থে পরমার্থিক জ্ঞান , আত্মজ্ঞান বা ব্রহ্মজ্ঞান ! তবে গুরু মহারাজ বলেছিলেন – “আগে কান্ডজ্ঞান পরে ব্রহ্মজ্ঞান”।৷ আশ্রমে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ চালানোর সাথে সাথে গুরু মহারাজ প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুবেলা আশ্রম প্রাঙ্গনে বা যখন যেখানে থাকতেন সেখানেই জীবনমুখী আলোচনা করতেন । যেটাকে আমরা ‘সিটিং’ বলি !
এখানে উনি জীবনের কথা , জীবনমুখী কথা অর্থাৎ Art of Life এবং Art of Living নিয়ে আলোচনা করতেন । Art of Life এবং Art of Living -কেই উনি বলেছিলেন আধ্যাত্মিকতা ! কিসে সমস্ত মানুষের মঙ্গল হবে — সমস্ত শ্রেণীর মানুষের মঙ্গল হবে – এই চেষ্টাই গুরু মহারাজ সদা-সর্বদা করে গেছেন । যতদিন উনি স্থুলশরীরে ছিলেন, আমরা দেখেছি _সবসময়ই উনি মানুষকে আধ্যাত্মিকতার শিক্ষা দিয়ে গেছেন । তিনি নিজে এই কাজ করে – সকলকে এটাই শিখিয়ে গেলেন – যাতে তার শিক্ষায় শিক্ষিত সকলে ওই একই কাজ করে যান ৷
উনি প্রথম দিকে মাঝে মাঝেই বলতেন – “তোরা এক একটা ‘পরমানন্দ’ হয়ে ওঠ দেখি !” এক একটা ‘পরমানন্দ’ – ব্যাপারটা কি ? ‘পরমানন্দ’_তিনিই যিনি সদা-সর্বদা পরম আনন্দে থাকেন এবং বাকি সকলকে(জীবজগতকে এবং অবশ্যই সমস্ত শ্রেনীর মানুষকে) সবসময়ের জন্য পরম আনন্দে রাখতে পারেন !
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনীতে আমরা দেখতে পাই যে তিনি সারাদিন বহু মানুষের সাথে নানান প্রসঙ্গ করতেন ,তাদেরকে নানাভাবে আনন্দ দিতেন। কিন্তু গভীর রাত্রে দরজা বন্ধ করে তাঁর ত্যাগী ভক্তদেরকে নিয়ে বিশেষ বিশেষ নির্দেশ দিতেন , বিশেষ বিশেষ শিক্ষা দিতেন ! দেবেন-ই তো ! ঠিক ঠিক সমাজের কল্যাণ , মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ তো করতে পারেন সর্বত্যাগী , সংযমী , যোগী_সন্ন্যাসীরাই ! তাই সকলকে ভালো রাখার দায়িত্বটা দিয়ে গেলেন তাদেরই! কেন সাধু-সন্ত , যোগী-সন্ন্যাসীদের অধিক সুবিধাটা কি ? সেইটা আলোচনা হোক্ !
গুরু মহারাজ একবার বলেছিলেন – পুরুষ অপেক্ষা নারীরা অধিক অন্তর্মুখী, তারা জন্ম থেকেই ব্রহ্মচারীনী ৷ তাই যোগশাস্ত্রে বা বিভিন্ন মহাপুরুষের কথায় নারীদের ব্রহ্মচর্য্য , সংযম নিয়ে খুব বেশী আলোচনা নাই ! কারণ এর প্রয়োজনই নাই ! প্রয়োজন আছে পুরুষের ক্ষেত্রে ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন কোন পুরুষ যদি যৌবনে শুধুমাত্র ঠিক ঠিক বীর্য ধারণ করতে পারে – তাহলেই সে জীবনে কিছু করে দেখাবেই দেখাবে — এতটাই জোর দিয়েছিলেন উনি ! আর শুধু গুরু মহারাজই বা কেন – যে কোন মহাপুরুষ বারবার ব্রহ্মচর্য্যের উপরেই খুব বেশী জোর দিয়েছেন ৷ কিন্তু বেশি কি হয় ব্রহ্মচর্য্য পালনে?
ব্রহ্মচর্য্য পালনকারীর শরীর শক্ত-সমর্থ হয়! রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা অসম্ভব বেড়ে যায়(দেখতে রোগা-পাতলা হলেও) ! এর বিজ্ঞানসম্মত কারণ এই যে, শরীরের হাড়ের মধ্যে যে মজ্জা থাকে _ তা শরীরের রক্ত, পেশী, বসা(চর্বি) এবং হাড়, সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করে, মজবুত করে । ঠিক ঠিক ব্রহ্মচর্য্য পালনকারীর মজ্জা হাড়ের মধ্যে ঘন অবস্থায় ঠাসা থাকে। এর ফলেই ঐ ব্যক্তির শক্তি ও রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা সাধারণ মানুষ অপেক্ষা অনেক বেশি থাকে।” ব্রহ্মচর্য্য হীন মানুষের মজার ক্ষয় হয়ে যায়, ঘনত্ব কমে যায়, মজ্জার রঙও ফিকে হয়ে যায় _কালচে লাল থাকে না!
গুরুমহারাজ আরও বলেছিলেন _”ব্রহ্মচারী বা সন্ন্যাসীর যেহেতু ইন্দ্রিয়লিপ্সা, ভোগাকাঙ্খা থাকে না এবং বিবাহ হয় না, তাই তার স্ত্রী-পুত্রকন্যা বা সংসার না থাকায় সংসারের বন্ধন, মায়া বা মোহের বন্ধন, ইত্যাদি থাকে না। এতে করে এঁদের মানসিক শক্তিও সাধারণ মানুষ অপেক্ষা বেশি হয়। সংসারের ঝামেলা না থাকায় তাঁদের প্রচুর সময়! তাঁদের নিজের সাধন-ভজনের জন্য, সমাজের কাজের জন্য যে সময় দরকার তা তাঁরা অনায়াসে পেয়ে যান! গুরুমহারাজ বলেছিলেন _”সেই অর্থে ব্রহ্মচারী – সন্ন্যাসীরা সাধারণের চেয়ে বেশি চালাক। অনেক ঝামেলা মুক্ত!”
নিস্বার্থভাবে দুঃস্থ, পীড়িত, বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে একমাত্র সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীরাই! মানুষের দুঃখের দিনে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারে স্বার্থ – সুখ-ভোগ-কামনা-বাসনা ত্যাগী সন্ন্যাসীরাই!!
এদের শরীরে রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা অধিক হওয়ায় এঁরা সহজে রোগাক্রান্ত হয় না, তাই মহামারীর সময়েও এঁরা রোগীদের মাঝে থেকে তাদের সেবা করতে পারেন। নিজস্ব ভোগ-বাসনা না থাকায় এঁরাই পারেন ঠিক ঠিক অপরের সুখ বা শান্তির কারণ হয়ে উঠতে!
সমাজের মঙ্গল করার জন্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, কিছু ভালো মানুষ বা সংস্থা, বিভিন্ন NGO __কাজ করে চলেছে, কিন্তু সমাজের প্রকৃত কল্যাণ করে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীরাই! (ক্রমশঃ)
স্বামী পরমানন্দ নিজশরীরে থাকতেই ভারতবর্ষের নানাস্থানে এবং বিদেশেও কিছু আশ্রম প্রতিষ্ঠা করে গেলেন বা নতুন করে আশ্রম করার পরিবেশ , পরিস্থিতি তৈরী করে গেলেন ! প্রতিটি আশ্রমের দায়িত্বও তিনি কোন না কোন এক বা একাধিক সন্ন্যাসীর হাতে দিয়ে গিয়েছিলেন ৷ এছাড়াও তিনি নিজে অনেক ত্যাগী তরুণ-তরুণীকে ব্রহ্মচর্য্য বা সন্ন্যাস-সংস্কারও দিয়েছিলেন যাতে পরবর্ত্তীতে তারাও মূল আশ্রমে বা অন্য কোন আশ্রমে কাজ করতে পারে ৷
কিন্তু কাজটা কি ? সমাজ সেবামূলক কাজ – যেমন , অনাথ-আশ্রম প্রতিষ্ঠা , দাতব্য চিকিৎসালয় চালানো , দুঃস্থ-অসুস্থ মানুষের শুশ্রুষা করা , প্রাকৃতিক দূর্যোগে বা যে কোন বিপর্যয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো , শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান তৈরী করে শিক্ষাদান – এইসব ? সাধারণ মানুষের কাছে ২ টাকা , ৫ টাকা অথবা ৫০/১০০/১০০০/৫০০০ টাকা অথবা আরও বেশী বেশী Collection করে __ঐ ধরণের সমাজসেবামূলক কাজ করা ? এতে করে মানুষের উপকার বা মঙ্গলও হোল আর আশ্রমিকদের সেবা বা সাধনাও হোল ! __এটাই কি পরমানন্দের বা যে কোন যুগপুরুষের আরদ্ধ কাজ?
এটাই গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ করতে এসেছিলেন বা এটাই করতে বলে গেলেন ? এর আগের আগের মহাপুরুষগণ , অবতারগণ এই কাজগুলোই করতে বললেন ? এটাই যুগধর্ম ? এটাই কর্তব্য ? ব্যস ! আর কিছুই নয় ?
গুরু মহারাজ একবার বলেছিলেন – অন্নদান , বস্ত্রদান , শিক্ষাদান অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠদান ‘জ্ঞানদান’! ‘জ্ঞানদান’ বলতে – ”এটা করো – ওটা কোরোনা” , “এটা করলে এই হয় – ওটা করলে ওই হয়” – এসব জ্ঞান নয় ৷ ‘জ্ঞান’ অর্থে পরমার্থিক জ্ঞান , আত্মজ্ঞান বা ব্রহ্মজ্ঞান ! তবে গুরু মহারাজ বলেছিলেন – “আগে কান্ডজ্ঞান পরে ব্রহ্মজ্ঞান”।৷ আশ্রমে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ চালানোর সাথে সাথে গুরু মহারাজ প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুবেলা আশ্রম প্রাঙ্গনে বা যখন যেখানে থাকতেন সেখানেই জীবনমুখী আলোচনা করতেন । যেটাকে আমরা ‘সিটিং’ বলি !
এখানে উনি জীবনের কথা , জীবনমুখী কথা অর্থাৎ Art of Life এবং Art of Living নিয়ে আলোচনা করতেন । Art of Life এবং Art of Living -কেই উনি বলেছিলেন আধ্যাত্মিকতা ! কিসে সমস্ত মানুষের মঙ্গল হবে — সমস্ত শ্রেণীর মানুষের মঙ্গল হবে – এই চেষ্টাই গুরু মহারাজ সদা-সর্বদা করে গেছেন । যতদিন উনি স্থুলশরীরে ছিলেন, আমরা দেখেছি _সবসময়ই উনি মানুষকে আধ্যাত্মিকতার শিক্ষা দিয়ে গেছেন । তিনি নিজে এই কাজ করে – সকলকে এটাই শিখিয়ে গেলেন – যাতে তার শিক্ষায় শিক্ষিত সকলে ওই একই কাজ করে যান ৷
উনি প্রথম দিকে মাঝে মাঝেই বলতেন – “তোরা এক একটা ‘পরমানন্দ’ হয়ে ওঠ দেখি !” এক একটা ‘পরমানন্দ’ – ব্যাপারটা কি ? ‘পরমানন্দ’_তিনিই যিনি সদা-সর্বদা পরম আনন্দে থাকেন এবং বাকি সকলকে(জীবজগতকে এবং অবশ্যই সমস্ত শ্রেনীর মানুষকে) সবসময়ের জন্য পরম আনন্দে রাখতে পারেন !
ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জীবনীতে আমরা দেখতে পাই যে তিনি সারাদিন বহু মানুষের সাথে নানান প্রসঙ্গ করতেন ,তাদেরকে নানাভাবে আনন্দ দিতেন। কিন্তু গভীর রাত্রে দরজা বন্ধ করে তাঁর ত্যাগী ভক্তদেরকে নিয়ে বিশেষ বিশেষ নির্দেশ দিতেন , বিশেষ বিশেষ শিক্ষা দিতেন ! দেবেন-ই তো ! ঠিক ঠিক সমাজের কল্যাণ , মানুষের সামগ্রিক কল্যাণ তো করতে পারেন সর্বত্যাগী , সংযমী , যোগী_সন্ন্যাসীরাই ! তাই সকলকে ভালো রাখার দায়িত্বটা দিয়ে গেলেন তাদেরই! কেন সাধু-সন্ত , যোগী-সন্ন্যাসীদের অধিক সুবিধাটা কি ? সেইটা আলোচনা হোক্ !
গুরু মহারাজ একবার বলেছিলেন – পুরুষ অপেক্ষা নারীরা অধিক অন্তর্মুখী, তারা জন্ম থেকেই ব্রহ্মচারীনী ৷ তাই যোগশাস্ত্রে বা বিভিন্ন মহাপুরুষের কথায় নারীদের ব্রহ্মচর্য্য , সংযম নিয়ে খুব বেশী আলোচনা নাই ! কারণ এর প্রয়োজনই নাই ! প্রয়োজন আছে পুরুষের ক্ষেত্রে ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন কোন পুরুষ যদি যৌবনে শুধুমাত্র ঠিক ঠিক বীর্য ধারণ করতে পারে – তাহলেই সে জীবনে কিছু করে দেখাবেই দেখাবে — এতটাই জোর দিয়েছিলেন উনি ! আর শুধু গুরু মহারাজই বা কেন – যে কোন মহাপুরুষ বারবার ব্রহ্মচর্য্যের উপরেই খুব বেশী জোর দিয়েছেন ৷ কিন্তু বেশি কি হয় ব্রহ্মচর্য্য পালনে?
ব্রহ্মচর্য্য পালনকারীর শরীর শক্ত-সমর্থ হয়! রোগ-প্রতিরোধক ক্ষমতা অসম্ভব বেড়ে যায়(দেখতে রোগা-পাতলা হলেও) ! এর বিজ্ঞানসম্মত কারণ এই যে, শরীরের হাড়ের মধ্যে যে মজ্জা থাকে _ তা শরীরের রক্ত, পেশী, বসা(চর্বি) এবং হাড়, সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করে, মজবুত করে । ঠিক ঠিক ব্রহ্মচর্য্য পালনকারীর মজ্জা হাড়ের মধ্যে ঘন অবস্থায় ঠাসা থাকে। এর ফলেই ঐ ব্যক্তির শক্তি ও রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা সাধারণ মানুষ অপেক্ষা অনেক বেশি থাকে।” ব্রহ্মচর্য্য হীন মানুষের মজার ক্ষয় হয়ে যায়, ঘনত্ব কমে যায়, মজ্জার রঙও ফিকে হয়ে যায় _কালচে লাল থাকে না!
গুরুমহারাজ আরও বলেছিলেন _”ব্রহ্মচারী বা সন্ন্যাসীর যেহেতু ইন্দ্রিয়লিপ্সা, ভোগাকাঙ্খা থাকে না এবং বিবাহ হয় না, তাই তার স্ত্রী-পুত্রকন্যা বা সংসার না থাকায় সংসারের বন্ধন, মায়া বা মোহের বন্ধন, ইত্যাদি থাকে না। এতে করে এঁদের মানসিক শক্তিও সাধারণ মানুষ অপেক্ষা বেশি হয়। সংসারের ঝামেলা না থাকায় তাঁদের প্রচুর সময়! তাঁদের নিজের সাধন-ভজনের জন্য, সমাজের কাজের জন্য যে সময় দরকার তা তাঁরা অনায়াসে পেয়ে যান! গুরুমহারাজ বলেছিলেন _”সেই অর্থে ব্রহ্মচারী – সন্ন্যাসীরা সাধারণের চেয়ে বেশি চালাক। অনেক ঝামেলা মুক্ত!”
নিস্বার্থভাবে দুঃস্থ, পীড়িত, বিপর্যস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে একমাত্র সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীরাই! মানুষের দুঃখের দিনে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পারে স্বার্থ – সুখ-ভোগ-কামনা-বাসনা ত্যাগী সন্ন্যাসীরাই!!
এদের শরীরে রোগপ্রতিরোধক ক্ষমতা অধিক হওয়ায় এঁরা সহজে রোগাক্রান্ত হয় না, তাই মহামারীর সময়েও এঁরা রোগীদের মাঝে থেকে তাদের সেবা করতে পারেন। নিজস্ব ভোগ-বাসনা না থাকায় এঁরাই পারেন ঠিক ঠিক অপরের সুখ বা শান্তির কারণ হয়ে উঠতে!
সমাজের মঙ্গল করার জন্য সরকারি বিভিন্ন দপ্তর, কিছু ভালো মানুষ বা সংস্থা, বিভিন্ন NGO __কাজ করে চলেছে, কিন্তু সমাজের প্রকৃত কল্যাণ করে সর্বত্যাগী সন্ন্যাসীরাই! (ক্রমশঃ)