শ্রী শ্রী গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের সংক্ষিপ্ত (1954 – 1999 Nov) জীবনের প্রতিটি পদে ঘটা অসংখ্য ঘটনাবলীর কিছু কিছু অংশ নিয়ে আমরা এখানে আলোচনা করছিলাম। কিছুদিন আগে (2022) যখন রায়না তপোবন আশ্রমে গেছিলাম, তখন স্বামী পূর্ণানন্দ মহারাজের সাথে আমার গুরুমহারাজের ‘স্বয়ংপ্রকাশ রূপ’ বিষয়ে কথা হচ্ছিলো ৷ উনি নানান কথা বলতে গিয়ে উল্লেখ করেছিলেন – দক্ষিণ ভারতের (South India) একটি প্রত্যন্ত গ্রামের কথা, যেখানকার অধিকাংশ অধিবাসীই গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দের দীক্ষিত ৷ এই কথা তপিমা-র কাছ থেকে উনি শুনেছিলেন – এটাও উল্লেখ করেছিলেন ৷
এই ব্যাপারে যখন খোঁজখবর নেওয়া হোলো – তখন যা জানতে পারা গেল, তা হোলো এই যে, ঘটনাটি একদমই সত্যি ! গুরুমহারাজ যখন প্রথম প্রথম (১৯৮৩/৮৪) দক্ষিণ ভারতের অন্ধপ্রদেশে নন্দীয়ালে সত্যমজীর বাড়িকে কেন্দ্র করে যাওয়া-আসা শুরু করেন – তখন ওইসব অঞ্চলের বহু মানুষ গুরুজীর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল ৷ এদের মধ্যে যেমন সত্যমজীদের বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনেরা ছিল, তেমনি অনেক সাধারণ মানুষও ছিল ৷ এদের মধ্যে দু-একজন শিক্ষকমশায় এমন ছিলেন – যাঁরা ওই পূর্বে উল্লেখিত গ্রামটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল।
আসলে ব্যাপারটা কি ছিল – নন্দীয়ালের নিকটবর্তী হোলেও ওইসব গ্রামগুলিতে তখনও (৮৩ – ৮৪ সাল) খুব একটা শিক্ষার আলো প্রবেশ করে নি। ফলে গ্রামের মানুষের শিক্ষা সম্বন্ধে তেমন কোনোরূপ অনুরাগ বা আগ্রহই ছিল না। এই ব্যাপারটি ওই শিক্ষানুরাগী মাস্টারমশাই-এর মনে খুবই রেখাপাত করেছিল। এর ফলে গুরুমহারাজের যে সিটিং-এ ওই শিক্ষকমশায় উপস্থিত ছিলেন, সেখানে ‘শিক্ষা’-র প্রসারের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক আলোচনার সময় ওই শিক্ষক গুরুমহারাজকে ওইসব গ্রামে গিয়ে মানুষের শিক্ষার প্রতি অনীহা সম্বন্ধে পরিচিত হোতে এবং অশিক্ষার অন্ধকার থেকে ওইসব মানুষদের শিক্ষার আলোকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে অনুরোধ করেন ৷
গুরুমহারাজ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলেন এবং ভক্ত-পরিবৃত হয়ে ওই শিক্ষক মহাশয়ের আহ্বানে এবং তাঁরই ব্যবস্থাপনায় ওই গ্রামে গিয়েছিলেন। গুরুমহারাজের সাথে সত্যমজীরা যেমন ছিলেন ঠিক তেমনি তপিমাও ছিলেন ৷ ওই শিক্ষকমশাই গুরুমহারাজের যাবার অনুমতি আদায় করে নেবার পর – ওখানে গিয়ে কিছু যুবকদের সহায়তায় আগে থাকতেই একটা ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। পূর্ণানন্দ মহারাজ আমাকে বলেছিলেন – ওরা গুরুমহারাজকে একটা ক্লাবঘরের মতো জায়গায় বসতে দিয়েছিল ৷ কিন্তু সৌরভজী [সৌরভ পুন্ডীর বা স্বামী বিবিদিষানন্দ গিরি, যিনি বর্তমানে সিঙ্গুর তত্ত্বমসি যোগাশ্রমেই থাকেন ৷ ওখানেই তপিমা এবং বাবু মহারাজও থাকেন৷ এই প্রসঙ্গে বলে রাখি বর্তমানে (2023) ওখানে একটা ৫৫০০ (সাড়ে পাঁচ হাজার) বর্গফুটের area বিশিষ্ট একটি তিনতলা construction হচ্ছে।] এই ব্যাপারে একটা ভুল সংশোধন করে দিয়েছিল ৷
সৌরভজী বলেছিলেন যে, দক্ষিণ ভারতের গ্রামগুলিতে club culture তেমন খুব একটা নাই, ওটা West Bengal-এর culture ! প্রতিটি গ্রামে আর কিছু থাক বা না থাক – দুটি একটি ক্লাব বা সংঘ রয়েছে ! যাইহোক, গুরুমহারাজকে ওরা এমন একটা স্থানে বসিয়েছিল যেখানে গ্রামের মানুষেরা সকলেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বসে ৷ ওই শিক্ষকমশাই সম্ভবতঃ voluntary ওই স্থানটিতেই দু-চারজনকে নিয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছিলেন – কিন্তু উনি ওই কর্মে successful হোতে পারছিলেন না।
গুরুজী ওই গ্রামে গিয়ে বসার পর থেকেই একটি-দুটি করে গ্রামবাসী ওখানে ভিড় করেছিল ৷ তারপর তো শুধুই অন্যরকম গল্প ! গুরুমহারাজের শ্রীকন্ঠের অপূর্ব আলোচনা(দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায়) শুনে ওই গ্রামবাসীরা একেবারে অভিভূত হয়ে গেছিলো ! তাছাড়া শ্রোতারা তো আর সবাই ‘জিজ্ঞাসু’ বা ‘জ্ঞানী’ ছিল না – অনেকেই ‘আর্ত’ বা ‘অর্থার্থী’-ও ছিল ৷ ফলে তারাও তাদের প্রাপ্যটুকু বুঝে নিতে কসুর করে নি ৷ এইভাবে পরমেশ্বরের কোনো অদৃশ্য ইঙ্গিতে ওই গ্রামের বহু মানুষ বুঝতে পেরেছিল – এই মানুষটিই তাদের জীবনের ধ্রুবতারা ! তাই তাদের অনেকেই গুরুমহারাজকে অনুরোধ করে যেন তিনি তাদের ভবপারের কান্ডারী হ’ন অর্থাৎ তারা গুরুমহারাজের কাছে দীক্ষা প্রার্থনা করে ৷
পরম করুণাময় গুরুদেব (স্বামী পরমানন্দ) তাদের প্রতি করুণাপরবশ হয়ে – ওই সময়েই কয়েকজনকে দীক্ষাদান করেন ৷ পরবর্তীতে আরো অনেকে (যেহেতু গুরুমহারাজ বৎসরান্তে একবার বা দুই-তিন বৎসর অন্তর দক্ষিণভারতে ভক্তদের কাছে যেতেন) গুরুমহারাজের কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন ৷ এইভাবে নন্দীয়াল (অন্ধপ্রদেশ) থেকে অনেকটা দূরবর্তী স্থানের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে গেলে দেখা যাবে – সেখানে ঘরে ঘরে গুরুমহারাজের ছবি টাঙানো রয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে গ্রামটিতে শুধু প্রাইমারীই নয় – বড় বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। গ্রামের ছেলেদের বা আশেপাশের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার মান অনেকগুণে বেড়েছে ৷ সর্বোপরি, গ্রামটির অধিকাংশ মানুষের অর্থনৈতিক development হয়েছে ৷৷
এই ব্যাপারে যখন খোঁজখবর নেওয়া হোলো – তখন যা জানতে পারা গেল, তা হোলো এই যে, ঘটনাটি একদমই সত্যি ! গুরুমহারাজ যখন প্রথম প্রথম (১৯৮৩/৮৪) দক্ষিণ ভারতের অন্ধপ্রদেশে নন্দীয়ালে সত্যমজীর বাড়িকে কেন্দ্র করে যাওয়া-আসা শুরু করেন – তখন ওইসব অঞ্চলের বহু মানুষ গুরুজীর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল ৷ এদের মধ্যে যেমন সত্যমজীদের বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনেরা ছিল, তেমনি অনেক সাধারণ মানুষও ছিল ৷ এদের মধ্যে দু-একজন শিক্ষকমশায় এমন ছিলেন – যাঁরা ওই পূর্বে উল্লেখিত গ্রামটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল।
আসলে ব্যাপারটা কি ছিল – নন্দীয়ালের নিকটবর্তী হোলেও ওইসব গ্রামগুলিতে তখনও (৮৩ – ৮৪ সাল) খুব একটা শিক্ষার আলো প্রবেশ করে নি। ফলে গ্রামের মানুষের শিক্ষা সম্বন্ধে তেমন কোনোরূপ অনুরাগ বা আগ্রহই ছিল না। এই ব্যাপারটি ওই শিক্ষানুরাগী মাস্টারমশাই-এর মনে খুবই রেখাপাত করেছিল। এর ফলে গুরুমহারাজের যে সিটিং-এ ওই শিক্ষকমশায় উপস্থিত ছিলেন, সেখানে ‘শিক্ষা’-র প্রসারের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ক আলোচনার সময় ওই শিক্ষক গুরুমহারাজকে ওইসব গ্রামে গিয়ে মানুষের শিক্ষার প্রতি অনীহা সম্বন্ধে পরিচিত হোতে এবং অশিক্ষার অন্ধকার থেকে ওইসব মানুষদের শিক্ষার আলোকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে উৎসাহিত করতে অনুরোধ করেন ৷
গুরুমহারাজ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েছিলেন এবং ভক্ত-পরিবৃত হয়ে ওই শিক্ষক মহাশয়ের আহ্বানে এবং তাঁরই ব্যবস্থাপনায় ওই গ্রামে গিয়েছিলেন। গুরুমহারাজের সাথে সত্যমজীরা যেমন ছিলেন ঠিক তেমনি তপিমাও ছিলেন ৷ ওই শিক্ষকমশাই গুরুমহারাজের যাবার অনুমতি আদায় করে নেবার পর – ওখানে গিয়ে কিছু যুবকদের সহায়তায় আগে থাকতেই একটা ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। পূর্ণানন্দ মহারাজ আমাকে বলেছিলেন – ওরা গুরুমহারাজকে একটা ক্লাবঘরের মতো জায়গায় বসতে দিয়েছিল ৷ কিন্তু সৌরভজী [সৌরভ পুন্ডীর বা স্বামী বিবিদিষানন্দ গিরি, যিনি বর্তমানে সিঙ্গুর তত্ত্বমসি যোগাশ্রমেই থাকেন ৷ ওখানেই তপিমা এবং বাবু মহারাজও থাকেন৷ এই প্রসঙ্গে বলে রাখি বর্তমানে (2023) ওখানে একটা ৫৫০০ (সাড়ে পাঁচ হাজার) বর্গফুটের area বিশিষ্ট একটি তিনতলা construction হচ্ছে।] এই ব্যাপারে একটা ভুল সংশোধন করে দিয়েছিল ৷
সৌরভজী বলেছিলেন যে, দক্ষিণ ভারতের গ্রামগুলিতে club culture তেমন খুব একটা নাই, ওটা West Bengal-এর culture ! প্রতিটি গ্রামে আর কিছু থাক বা না থাক – দুটি একটি ক্লাব বা সংঘ রয়েছে ! যাইহোক, গুরুমহারাজকে ওরা এমন একটা স্থানে বসিয়েছিল যেখানে গ্রামের মানুষেরা সকলেই প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বসে ৷ ওই শিক্ষকমশাই সম্ভবতঃ voluntary ওই স্থানটিতেই দু-চারজনকে নিয়ে শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছিলেন – কিন্তু উনি ওই কর্মে successful হোতে পারছিলেন না।
গুরুজী ওই গ্রামে গিয়ে বসার পর থেকেই একটি-দুটি করে গ্রামবাসী ওখানে ভিড় করেছিল ৷ তারপর তো শুধুই অন্যরকম গল্প ! গুরুমহারাজের শ্রীকন্ঠের অপূর্ব আলোচনা(দক্ষিণ ভারতীয় ভাষায়) শুনে ওই গ্রামবাসীরা একেবারে অভিভূত হয়ে গেছিলো ! তাছাড়া শ্রোতারা তো আর সবাই ‘জিজ্ঞাসু’ বা ‘জ্ঞানী’ ছিল না – অনেকেই ‘আর্ত’ বা ‘অর্থার্থী’-ও ছিল ৷ ফলে তারাও তাদের প্রাপ্যটুকু বুঝে নিতে কসুর করে নি ৷ এইভাবে পরমেশ্বরের কোনো অদৃশ্য ইঙ্গিতে ওই গ্রামের বহু মানুষ বুঝতে পেরেছিল – এই মানুষটিই তাদের জীবনের ধ্রুবতারা ! তাই তাদের অনেকেই গুরুমহারাজকে অনুরোধ করে যেন তিনি তাদের ভবপারের কান্ডারী হ’ন অর্থাৎ তারা গুরুমহারাজের কাছে দীক্ষা প্রার্থনা করে ৷
পরম করুণাময় গুরুদেব (স্বামী পরমানন্দ) তাদের প্রতি করুণাপরবশ হয়ে – ওই সময়েই কয়েকজনকে দীক্ষাদান করেন ৷ পরবর্তীতে আরো অনেকে (যেহেতু গুরুমহারাজ বৎসরান্তে একবার বা দুই-তিন বৎসর অন্তর দক্ষিণভারতে ভক্তদের কাছে যেতেন) গুরুমহারাজের কাছে দীক্ষা গ্রহণ করেন ৷ এইভাবে নন্দীয়াল (অন্ধপ্রদেশ) থেকে অনেকটা দূরবর্তী স্থানের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে গেলে দেখা যাবে – সেখানে ঘরে ঘরে গুরুমহারাজের ছবি টাঙানো রয়েছে। তাছাড়া বর্তমানে গ্রামটিতে শুধু প্রাইমারীই নয় – বড় বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। গ্রামের ছেলেদের বা আশেপাশের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার মান অনেকগুণে বেড়েছে ৷ সর্বোপরি, গ্রামটির অধিকাংশ মানুষের অর্থনৈতিক development হয়েছে ৷৷