শ্রী শ্রী গুরুমহারাজ স্বামী পরামানন্দের মহিমাময় জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে কথা হচ্ছিলো ৷ আগের দিন আমরা ছিলাম দক্ষিণ ভারতের একটা আশ্চর্যজনক ঘটনায় অর্থাৎ একটি প্রত্যন্ত গ্রামের অধিকাংশ মানুষের গুরুমহারাজের কাছে দীক্ষাগ্রহণের ঘটনায় ৷ এখনো যখন তপিমা দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের নন্দীয়াল অঞ্চলে যান (তপিমা অর্থাৎ প্রবাজিকা পবিত্রপ্রাণা প্রায় প্রতি বছরই দক্ষিণ ভারতে যান অথবা দক্ষিণ ভারতের ভক্তরাও ওনার কাছে অর্থাৎ সিঙ্গুর আশ্রমে বেড়াতে আসেন।)— তখন গাড়িতে করে ঘোরার সময় তপিমা – সৌরভজী বা অঞ্জুমাকে উক্ত গ্রামটি নির্দেশ করে দেখিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন – “ওই গ্রামটির বেশিরভাগ মানুষই গুরুজীর দীক্ষিত এবং গ্রামের মানুষের ঘরে ঘরে গুরুজী (স্বামী পরমানন্দর)-র ফটো টাঙ্গানো রয়েছে।
এই যে কথাগুলি বলা হোলো — তা শুধু গুরুজীর মহিমা বর্ণনার জন্যেই নয়, কথাগুলি বলার উদ্দেশ্য হোলো এই যে_ অবতারপুরুষ যখন আসেন তখন তাঁর এমন অনেক কাজ থাকে যেগুলি সাধারণ মানুষ কখনোই বুদ্ধি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারে না।
গুরুমহারাজ একবার বলেছিলেন – ” কেউ যদি আমাকে এই শরীরে এক গ্লাস জলও খাওয়ায়, তাহলে পরবর্তী সময়ে যখন আমার পুনরায় শরীর হবে – তখন সেই ব্যক্তির(তার তখন অন্য শরীর) উপকারের কথা আমার স্মরণে থাকবে এবং আমি ঠিক তাকে খুঁজে বের করে প্রতিদান তার কাছে পৌঁছে দেবো।” তাছাড়া গুরুমহারাজ এই কথাও বলেছিলেন – ” অন্য অন্য মহাপুরুষগণের (যাঁরা শুধুমাত্র লোককল্যাণের জন্যই এই পৃথিবীতে অবতীর্ণ হ’ন) সংকল্পও এবার আমাকে সিদ্ধ করতে হবে, বহু পরম্পরার আরব্ধ কর্ম আমাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করতে হবে।”
তাই_ ওই যে দক্ষিণ ভারতের (অন্ধ্রপ্রদেশের) একটি প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষেরা গুরুমহারাজকে খুবই কাছ থেকে দেখলো – তাঁর কৃপা লাভ করলো – তারও কার্যকারণ সম্পর্ক রয়েছে। হয়তো স্বামী বিবেকানন্দ বা অন্য কোনো মহাপুরুষ ওই গ্রামের মানুষের কাছে সেবাগ্রহণ করেছিলেন এবং ওদের প্রতি প্রসন্ন হয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন ৷ তারই ফলস্বরূপ ওই গ্রামের বাহ্যিক এবং পরমার্থিক উন্নতিলাভ সম্ভব হোলো ৷
যাইহোক, আমরা আবার ফিরে যাই রায়নার তপোবন আশ্রমের প্রেসিডেন্ট পূর্ণানন্দ মহারাজের সাথে আমার আলোচনার বিষয়ে ৷ কারণ ওনার আলোচনা থেকেই গুরুমহারাজের সুন্দরবন ভ্রমণ, দক্ষিণ ভারতের ঘটনা এবং আরো নানান প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল ৷ ফলে আমরা এখন সেই প্রসঙ্গে ফিরে যাবো।
স্বামী পূর্ণানন্দ মহারাজ বলছিলেন – ওনার বন্ধুস্থানীয় পরমানন্দের ভক্ত, সিঙ্গুরের সব্যসাচী মান্নার কথা ! প্রসঙ্গক্রমে উঠলো — পুরীর সমুদ্রে স্নান করার সময় সব্যদার স্ত্রী রাণুদির under Current-এ পড়ে হাবুডুবু খাবার কথা ! উনি বলছিলেন – ‘সেইদিন রাণু-কে বাঁচাতে গিয়ে একে একে তিন-চার জন ওই ঘূর্ণিপাকে পড়ে গিয়েছিল – তাদের মধ্যে মুরারী মহারাজ, বিপ্লব দাস (কলকাতার পুলিশে কাজ করতো) – প্রমুখরাও ছিল ৷ প্রত্যেকে প্রত্যেককে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছিল, কিন্তু কিছুতেই পাড়ে পৌঁছাতে পারছিল না ৷ এই অবস্থায় সকলেই গুরুমহারাজের কাছে গিয়ে ওই দৃশ্যটি দেখিয়েছিল (সেবারও গুরুমহারাজকে নিয়ে সিঙ্গুর তত্ত্বমসি যোগাশ্রম থেকে তিনটি বাস পুরী ভ্রমণে গিয়েছিল ৷ তাই গুরুমহারাজও সমুদ্র স্নানে নেমে ওনার গর্ভধারিনী মা, জগাদার মা এবং অন্যান্য মাতৃস্থানীয়াদের হাত ধরে ধরে স্নান করাচ্ছিলেন।) ৷
ওই দৃশ্য দেখার সাথে সাথেই গুরুমহারাজের দুই চোখ থেকে আলোর রশ্মির মতো দুটি ray ঐ ডুবন্ত লোকগুলির উপর গিয়ে পড়েছিল ৷ তারপরেই সবাই দেখেছিল যে, গুরুমহারাজ ওখানে পৌঁছে গেছেন এবং ডুবন্ত মানুষগুলিকে একসাথে টেনে নিয়ে আসছেন। পূর্ণানন্দ মহারাজ এরপরেই বলেছিলেন পরে গুরুমহারাজ সব্যদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন – ” রাণু (সব্যদার স্ত্রী) যখন ডুবে যাচ্ছিলো তখন তুমি পাড়ে বসে বসে দেখলে – কিন্তু তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে না কেন ?” সব্যদা উত্তর দিয়েছিলেন – “দেখলাম মুরারী মহারাজ, বিপ্লব সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লো – তাই গেলাম না ! তারপরে দেখলাম ওরাই তুলতে পারছে না ! তাহলে আমি কি করে পারতাম গুরুমহারাজ !’
তাছাড়া পূর্ণানন্দ মহারাজ আরো উল্লেখ করলেন হরিদ্বারের কথা ! যেখানে সব্যদা, রাণুদি এবং গুরুমহারাজের সাথে পূর্ণানন্দ মহারাজও ছিলেন ৷ সেবার হরিদ্বারে কুম্ভমেলা হয়েছিল – সেই উপলক্ষেই গুরুজী ওদেরকে সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ ওখানে গঙ্গার জল খুবই ঠান্ডা, প্রায় বরফগলা জল বলা যেতে পারে ! সেই ঠান্ডাজলে গুরুমহারাজ দিব্যি সাঁতার কেটে কেটে স্নান করছিলেন ৷ পূর্ণানন্দ মহারাজ বা রাণুদি ঠান্ডার ভয়ে পাড়েই বসেছিল_স্নান করার চেষ্টা করেন নি, কিন্তু সব্যদা গুরুমহারাজের সাথে স্নান করার লোভ সামলাতে না পেরে ওই ঠান্ডা জলে লাফিয়ে পড়েছিল ৷ ব্যস্ – খানিকটা যেতেই body collapse ! ফলে ডুবে যাচ্ছিলো সব্যদা – গুরুমহারাজ সাথে সাথেই সব্যাদার চুল ধরে ওনাকে পাড়ে নিয়ে এসে তুলেছিলেন। “সেদিন সব্য ডুবে যাচ্ছিলো। রানু পারে বসে বসে দেখছিল।”– মজা করে বললেন পূর্ণানন্দ মহারাজ ৷ বললেন — “এরই নাম সংসার রে শ্রীধর ! এখানে ঈশ্বরই সত্য, বাকি সব মিথ্যা(অনিত্য) !”
এই যে কথাগুলি বলা হোলো — তা শুধু গুরুজীর মহিমা বর্ণনার জন্যেই নয়, কথাগুলি বলার উদ্দেশ্য হোলো এই যে_ অবতারপুরুষ যখন আসেন তখন তাঁর এমন অনেক কাজ থাকে যেগুলি সাধারণ মানুষ কখনোই বুদ্ধি দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারে না।
গুরুমহারাজ একবার বলেছিলেন – ” কেউ যদি আমাকে এই শরীরে এক গ্লাস জলও খাওয়ায়, তাহলে পরবর্তী সময়ে যখন আমার পুনরায় শরীর হবে – তখন সেই ব্যক্তির(তার তখন অন্য শরীর) উপকারের কথা আমার স্মরণে থাকবে এবং আমি ঠিক তাকে খুঁজে বের করে প্রতিদান তার কাছে পৌঁছে দেবো।” তাছাড়া গুরুমহারাজ এই কথাও বলেছিলেন – ” অন্য অন্য মহাপুরুষগণের (যাঁরা শুধুমাত্র লোককল্যাণের জন্যই এই পৃথিবীতে অবতীর্ণ হ’ন) সংকল্পও এবার আমাকে সিদ্ধ করতে হবে, বহু পরম্পরার আরব্ধ কর্ম আমাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করতে হবে।”
তাই_ ওই যে দক্ষিণ ভারতের (অন্ধ্রপ্রদেশের) একটি প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষেরা গুরুমহারাজকে খুবই কাছ থেকে দেখলো – তাঁর কৃপা লাভ করলো – তারও কার্যকারণ সম্পর্ক রয়েছে। হয়তো স্বামী বিবেকানন্দ বা অন্য কোনো মহাপুরুষ ওই গ্রামের মানুষের কাছে সেবাগ্রহণ করেছিলেন এবং ওদের প্রতি প্রসন্ন হয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন ৷ তারই ফলস্বরূপ ওই গ্রামের বাহ্যিক এবং পরমার্থিক উন্নতিলাভ সম্ভব হোলো ৷
যাইহোক, আমরা আবার ফিরে যাই রায়নার তপোবন আশ্রমের প্রেসিডেন্ট পূর্ণানন্দ মহারাজের সাথে আমার আলোচনার বিষয়ে ৷ কারণ ওনার আলোচনা থেকেই গুরুমহারাজের সুন্দরবন ভ্রমণ, দক্ষিণ ভারতের ঘটনা এবং আরো নানান প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল ৷ ফলে আমরা এখন সেই প্রসঙ্গে ফিরে যাবো।
স্বামী পূর্ণানন্দ মহারাজ বলছিলেন – ওনার বন্ধুস্থানীয় পরমানন্দের ভক্ত, সিঙ্গুরের সব্যসাচী মান্নার কথা ! প্রসঙ্গক্রমে উঠলো — পুরীর সমুদ্রে স্নান করার সময় সব্যদার স্ত্রী রাণুদির under Current-এ পড়ে হাবুডুবু খাবার কথা ! উনি বলছিলেন – ‘সেইদিন রাণু-কে বাঁচাতে গিয়ে একে একে তিন-চার জন ওই ঘূর্ণিপাকে পড়ে গিয়েছিল – তাদের মধ্যে মুরারী মহারাজ, বিপ্লব দাস (কলকাতার পুলিশে কাজ করতো) – প্রমুখরাও ছিল ৷ প্রত্যেকে প্রত্যেককে ধরে বাঁচার চেষ্টা করছিল, কিন্তু কিছুতেই পাড়ে পৌঁছাতে পারছিল না ৷ এই অবস্থায় সকলেই গুরুমহারাজের কাছে গিয়ে ওই দৃশ্যটি দেখিয়েছিল (সেবারও গুরুমহারাজকে নিয়ে সিঙ্গুর তত্ত্বমসি যোগাশ্রম থেকে তিনটি বাস পুরী ভ্রমণে গিয়েছিল ৷ তাই গুরুমহারাজও সমুদ্র স্নানে নেমে ওনার গর্ভধারিনী মা, জগাদার মা এবং অন্যান্য মাতৃস্থানীয়াদের হাত ধরে ধরে স্নান করাচ্ছিলেন।) ৷
ওই দৃশ্য দেখার সাথে সাথেই গুরুমহারাজের দুই চোখ থেকে আলোর রশ্মির মতো দুটি ray ঐ ডুবন্ত লোকগুলির উপর গিয়ে পড়েছিল ৷ তারপরেই সবাই দেখেছিল যে, গুরুমহারাজ ওখানে পৌঁছে গেছেন এবং ডুবন্ত মানুষগুলিকে একসাথে টেনে নিয়ে আসছেন। পূর্ণানন্দ মহারাজ এরপরেই বলেছিলেন পরে গুরুমহারাজ সব্যদাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন – ” রাণু (সব্যদার স্ত্রী) যখন ডুবে যাচ্ছিলো তখন তুমি পাড়ে বসে বসে দেখলে – কিন্তু তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে না কেন ?” সব্যদা উত্তর দিয়েছিলেন – “দেখলাম মুরারী মহারাজ, বিপ্লব সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লো – তাই গেলাম না ! তারপরে দেখলাম ওরাই তুলতে পারছে না ! তাহলে আমি কি করে পারতাম গুরুমহারাজ !’
তাছাড়া পূর্ণানন্দ মহারাজ আরো উল্লেখ করলেন হরিদ্বারের কথা ! যেখানে সব্যদা, রাণুদি এবং গুরুমহারাজের সাথে পূর্ণানন্দ মহারাজও ছিলেন ৷ সেবার হরিদ্বারে কুম্ভমেলা হয়েছিল – সেই উপলক্ষেই গুরুজী ওদেরকে সাথে করে নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ ওখানে গঙ্গার জল খুবই ঠান্ডা, প্রায় বরফগলা জল বলা যেতে পারে ! সেই ঠান্ডাজলে গুরুমহারাজ দিব্যি সাঁতার কেটে কেটে স্নান করছিলেন ৷ পূর্ণানন্দ মহারাজ বা রাণুদি ঠান্ডার ভয়ে পাড়েই বসেছিল_স্নান করার চেষ্টা করেন নি, কিন্তু সব্যদা গুরুমহারাজের সাথে স্নান করার লোভ সামলাতে না পেরে ওই ঠান্ডা জলে লাফিয়ে পড়েছিল ৷ ব্যস্ – খানিকটা যেতেই body collapse ! ফলে ডুবে যাচ্ছিলো সব্যদা – গুরুমহারাজ সাথে সাথেই সব্যাদার চুল ধরে ওনাকে পাড়ে নিয়ে এসে তুলেছিলেন। “সেদিন সব্য ডুবে যাচ্ছিলো। রানু পারে বসে বসে দেখছিল।”– মজা করে বললেন পূর্ণানন্দ মহারাজ ৷ বললেন — “এরই নাম সংসার রে শ্রীধর ! এখানে ঈশ্বরই সত্য, বাকি সব মিথ্যা(অনিত্য) !”