গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ বলেছিলেন মানুষের শরীর এবং মুখমন্ডল দেখে বোঝা যায় যে সে কোন্ প্রাচীন জনগোষ্ঠীর মানুষ ! উনি বলেছিলেন একমাত্র ভারতবর্ষেই সমস্ত জনজাতির ‘মুখের’ মানুষ পাওয়া যায় । নৃবিজ্ঞানীরা যে কয়টি প্রাচীন জনজাতি গোষ্ঠীর উল্লেখ করেছিলেন সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হ’ল – অষ্ট্রালয়েড , নিগ্রোয়েড , মোঙ্গলয়েড , ককেশীয় ইত্যাদি ! প্রাচীনত্বের নিরিখে বিচার করলে এই নামকরণগুলি অবশ্য অত্যন্ত আধুনিক , তবুও এই নামগুলিকেই ঠিক ধরে আলোচনা আগানো যাক্ ৷ গুরু মহারাজ বলেছিলেন – এখন পৃথিবীতে আর বিশুদ্ধ কোন জনগোষ্ঠী প্রায় পাওয়াই যায় না (ব্যতিক্রম – আফ্রিকার কিছু আদিম জনজাতি , আন্দামানের .জারোয়া , মেরুপ্রদেশের ‘পিগমি’ ইত্যাদিরা – কিন্তু তারাও বর্তমানে লুপ্তপ্রায়) , সবই এখন মিশ্রজাতি বা ‘Proto’ ! যেমন – প্রোটো-অষ্ট্রালয়েড , প্রোটো-মোঙ্গলয়েড , প্রোটো-নিগ্রোয়েড ইত্যাদি !
যদি ভারতীয়রা কেউ চীনাদেরকে দেখে অথবা কোরিয়ানদেরকে দেখে – তাহলে মনে হবে বোধয় সবারই প্রায় একইরকম মুখ বা শারীরিক গঠন! নেপাল , ভুটান ইত্যাদি স্থানের এবং ভারতের (বাংলাদেশ সহ) পাহাড়ি অঞ্চলে ঐ একই ধরণের মুখমন্ডল বা শারীরিক গঠনের মানুষ পাওয়া যায় – এরা প্রোটো-মোঙ্গলয়েড জনগোষ্ঠীর লোক ।
আফ্রিকা মহাদেশের , দক্ষিণ আমেরিকার এবং দক্ষিণ ভারতের মানুষেরা প্রোটো-নিগ্রয়েড জনগোষ্ঠীর মানুষ । অষ্ট্রেলিয়া মহাদেশের মানুষের সাথে বাংলার মানুষের খুবই মিল রয়েছে – তাই নৃবিজ্ঞানীরা বলে আমরা নাকি প্রোটো-অষ্ট্রালয়েড ! যাইহোক , গুরু মহারাজ যেটা বলেছিলেন ভারতবর্ষের প্রাচীনত্বের এটাও একটা বড় প্রমাণ – যে পৃথিবীর সমস্ত প্রাচীন জনগোষ্ঠীর মুখ ও চেহারার মানুষ ভারতেই বিদ্যমান !
আর এই মুখমন্ডল ও চেহারা দেখেই এটাও বোঝা যায় যে ভারতবর্ষে বসবাসকারী খ্রীষ্টান বা ইসলামীয়রা কেউ-ই মরুভূমির দেশ জেরুজালেম বা রোম অথবা আরব দেশ থেকে আসেনি ! এরা সবাই ভারতবর্ষের-ই লোক – কয়েকপুরুষ পিছিয়ে গেলেই দেখা যাবে তাদের পূর্বপুরুষ ভারতবর্ষের-ই মানুষ ছিল এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী-ই ছিল ! যে কোন কারণেই হোক না কেন – তাদের পূর্বপুরুষেরা নিজ ধর্মমত ত্যাগ করে ভিন্ন ধর্মমত গ্রহণ করেছিল বা হয়তো করতে বাধ্য হয়েছিল ! নিজেদের অনিচ্ছায় যারা ধর্মত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল – তারাই Reactionist হয়েছে বেশি ! এটা একটা মানবের মনোস্তাত্ত্বিক ব্যাপার !! তাছাড়া আর একটা কারণ বেশীরভাগ মানুষই emotional! গুরু মহারাজ প্রায়ই বলতেন – ” এখানে (বনগ্রাম আশ্রমে) যারা আসে দেখি – তাদের মধ্যে বেশীরভাগই হয় ‘বেগকুমার’ অথবা ‘বেগকুমারী'(imotional) !”
প্রকৃতপক্ষে ধর্মজগতে বেশীরভাগ ব্যক্তিই আবেগপ্রবণ বা emotional ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” emotion-কে devotion-এ রূপান্তরিত করতে হবে !”
কিন্তু সেটা আর হচ্ছে কই ! emotion – devotion-এ পরিণত হলেই সেই ব্যক্তি যথার্থ আধ্যাত্মিক হয়ে উঠতে পারবে । তখন সেই ব্যক্তি বা সাধকের মধ্যে ভেদভাব , হানাহানি , হিংসা , অসহিষ্ণুতার লেশমাত্র থাকবে না ! অপরপক্ষে ধর্মজগতের এই emotion-কে – কোন না কোন ধর্মীয় নেতা (এদের ধর্মগুরু বলা ঠিক হবে না) উস্কানি দিয়ে একটু বাড়াতে পারলেই – ব্যস্ , জ্বলে গেল আগুন ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ধর্মজগতে এসে গেছে অর্থাৎ কোন না কোন ধর্মমতের আচরণ করছে এমন ব্যক্তিগণকে – ধর্মভীরু , ধর্মপ্রাণ , ধর্মোন্মাদ এবং ধার্মিক এইরকম কয়েকটি শ্রেনীতে ভাগ করা যায় ! এদের মধ্যে মারাত্মক হোল “ধর্মোন্মাদ” ! এরা মুখে ‘আল্লা’ , ‘ঈশ্বর’ বা ‘গড’-এর নাম উচ্চরণ করতে করতে মানুষের ঘরে আগুন লাগাতে পারে , মায়ের কোল থেকে শিশুকে কেড়ে নিয়ে উদ্যত তরোয়ালের ফলায় গেঁথে দিতে পারে !
যাইহোক, এই কদিন ধরে যে আলোচনা গুলি তুলে ধরা হোল _তার একটা গভীর উদ্দেশ্য রয়েছে! বর্তমানে ভারতবর্ষ এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে যে ছায়াযুদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে চলছে _তার একটা প্রকট রূপ কিন্তু অতি সত্বর দেখতে পাওয়া যাবে। গুরুমহারাজ পরিস্কার ভাষায় এ ব্যাপারে বলে গেছেন! তাঁর বক্তব্যের কথাগুলি যথাযথ এখানে বলা যাবে না _তবু রেখে ঢেকে কিছুটা বলা হয়েছে বা হচ্ছে..।
ভারতবর্ষ 1947_সালে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়েছিল। হিন্দুস্থান পাকিস্তান! পাকিস্তানে হিন্দুসহ কিছু অমুসলিম(হয়তো 1% বা 2%)থেকে গেলেও হিন্দুস্থানে প্রায় 15%_20% অহিন্দুরা_ থেকে গিয়েছিল, তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের বদান্যতায়।
ভারতবর্ষে ধর্মোন্মাদদের দাপাদাপির সেই শুরু! শুরু হয়ে গেল ধর্মের নামে রক্তারক্তি! যত দিন এগিয়েছে, ততই এটা ভিতরে ভিতরে ছাইচাপা গনগনে আগুনের মতো বিস্তারিত হয়েছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে!!
গুরুমহারাজ ছিলেন একেবারে ‘সদা বর্তমানে থাকা’ মানুষ! তাই উনি কল্পনার রাজত্বে বাস না করে practical সমস্যা নিয়ে অনেকবার আলোচনা করেছেন। উনি বলেছিলেন _”স্বাধীনতার পর থেকে, রাজনেতারা চেষ্টা করলে হিন্দু – মুসলিম সমস্যার সমাধান করতে পারতো। কিন্তু কি আশ্চর্য! ওরা অদ্ভূতভাবে এই জ্বলন্ত সমস্যার ব্যাপারে মুখ ফিরিয়ে থাকল। ”
উনি বলেছিলেন _” মুসলিম দেশগুলিতে বসবাসকারী অমুসলিমরা সমান নাগরিক সুযোগ সুবিধা পায় না, কিন্তু ভারতবর্ষে বসবাসকারী অহিন্দুরা এদেশের সমস্তরকম সুবিধা ভোগ করে। অহিন্দু ছাত্র-ছাত্রীরা, হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে একই স্কুলে পড়াশোনা করে, যুবকেরা একই অফিসে সমান বেতন স্কেলে চাকরি করে, গ্রামে শহরে একই রকম নাগরিক পরিষেবা পেয়ে থাকে(রাজনৈতিক স্বার্থে একটু বেশি ই পেয়ে থাকে) একই দোকান বা বাজারে সমমুল্যে জিনিস কেনে, ট্রেনে – বাসে একই ভাড়ায় যাতায়াত করে, অন্যান্য সব facility – ই সবার জন্য একইরকম!!!এদেশে প্রচুর ধনী ব্যবসাদার অহিন্দু, যাদের কোম্পানিতে কত হিন্দুরা চাকরি করে, কত অভিনেতা-অভিনেত্রী-শিল্পী-সংগীতশিল্পী-লেখক-কবি-প্রফেসর-মাষ্টার অহিন্দু, যাদের পায়ে হাত দিয়ে হিন্দু ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন প্রনাম করে! __তবু…….!!!!
যেন একটা কোথায় অসুবিধা! কিছু ধর্মোন্মাদ এমনভাবে ধর্মশিক্ষা দিচ্ছে যে ‘আমার ধর্মমত’- টাই শ্রেষ্ঠ, অন্যটা নিকৃষ্ট _অন্য ধর্মাবলম্বীদের আমার মতে আনতেই হবে! আনতে পারলে মৃত্যুর পরে পুরস্কারের ব্যবস্থাও করা আছে!! অশিক্ষা এবং অল্পশিক্ষা _অভাবের জন্য, বেরোজগারের জন্য, অজ্ঞতার জন্য _কুশিক্ষায় রূপ নিচ্ছে! তৈরি হচ্ছে জেহাদী, আত্মঘাতী বাহিনী! যাদের কাজ ধর্মের নামে শত শত সাধারণ, নিরীহ মানুষকে মেরে ফেলা!!!
গুরুমহারাজকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল _তাহলে এখন কি হবে? বর্তমানের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কি ‘পরিনতি’-তে রূপ নেবেই?_
উনি উত্তর দিয়েছিলেন _”হ্যাঁ, রূপ নেবে।”
আরও বলেছিলেন _” প্রথমটায় ভীষন রক্তক্ষয় হবে, প্রচুর মানুষ মারা যাবে, তারপর রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি যখন শান্ত হবে _তখন অল্প কয়েকটা মানুষ, কে আর কার বিরোধ করবে?
দু–রে, দু–রে একটা একটা আলো দেখতে পেয়ে একজন মানুষ _অন্য একজন মানুষকে “#ভাই” – বলে জড়িয়ে ধরবে।আর সেদিন সমস্ত Sentiment, সমস্ত বিভেদ, সমস্ত অজ্ঞতার অবসান হবে!”
পরে অবশ্য একদিন সিটিং-এ উনি আশার কথাও শুনিয়েছিলেন! বললেন _” পৃথিবী গ্রহের ভালোমন্দের ভার যাঁদের (গুরুকুল) উপর রয়েছে _তাঁরা এই ব্যাপারে খুব-ই চিন্তিত! আমার সাথে ওনাদের যোগাযোগ হয়। ওনারা অন্যরকমভাবে সমাধান করার চেষ্টা করছেন। বহু শৈব সাধক মুসলিম community-তে শরীর গ্রহণ করে balance আনার চেষ্টা করছেন!!”(ক্রমশঃ)
যদি ভারতীয়রা কেউ চীনাদেরকে দেখে অথবা কোরিয়ানদেরকে দেখে – তাহলে মনে হবে বোধয় সবারই প্রায় একইরকম মুখ বা শারীরিক গঠন! নেপাল , ভুটান ইত্যাদি স্থানের এবং ভারতের (বাংলাদেশ সহ) পাহাড়ি অঞ্চলে ঐ একই ধরণের মুখমন্ডল বা শারীরিক গঠনের মানুষ পাওয়া যায় – এরা প্রোটো-মোঙ্গলয়েড জনগোষ্ঠীর লোক ।
আফ্রিকা মহাদেশের , দক্ষিণ আমেরিকার এবং দক্ষিণ ভারতের মানুষেরা প্রোটো-নিগ্রয়েড জনগোষ্ঠীর মানুষ । অষ্ট্রেলিয়া মহাদেশের মানুষের সাথে বাংলার মানুষের খুবই মিল রয়েছে – তাই নৃবিজ্ঞানীরা বলে আমরা নাকি প্রোটো-অষ্ট্রালয়েড ! যাইহোক , গুরু মহারাজ যেটা বলেছিলেন ভারতবর্ষের প্রাচীনত্বের এটাও একটা বড় প্রমাণ – যে পৃথিবীর সমস্ত প্রাচীন জনগোষ্ঠীর মুখ ও চেহারার মানুষ ভারতেই বিদ্যমান !
আর এই মুখমন্ডল ও চেহারা দেখেই এটাও বোঝা যায় যে ভারতবর্ষে বসবাসকারী খ্রীষ্টান বা ইসলামীয়রা কেউ-ই মরুভূমির দেশ জেরুজালেম বা রোম অথবা আরব দেশ থেকে আসেনি ! এরা সবাই ভারতবর্ষের-ই লোক – কয়েকপুরুষ পিছিয়ে গেলেই দেখা যাবে তাদের পূর্বপুরুষ ভারতবর্ষের-ই মানুষ ছিল এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী-ই ছিল ! যে কোন কারণেই হোক না কেন – তাদের পূর্বপুরুষেরা নিজ ধর্মমত ত্যাগ করে ভিন্ন ধর্মমত গ্রহণ করেছিল বা হয়তো করতে বাধ্য হয়েছিল ! নিজেদের অনিচ্ছায় যারা ধর্মত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল – তারাই Reactionist হয়েছে বেশি ! এটা একটা মানবের মনোস্তাত্ত্বিক ব্যাপার !! তাছাড়া আর একটা কারণ বেশীরভাগ মানুষই emotional! গুরু মহারাজ প্রায়ই বলতেন – ” এখানে (বনগ্রাম আশ্রমে) যারা আসে দেখি – তাদের মধ্যে বেশীরভাগই হয় ‘বেগকুমার’ অথবা ‘বেগকুমারী'(imotional) !”
প্রকৃতপক্ষে ধর্মজগতে বেশীরভাগ ব্যক্তিই আবেগপ্রবণ বা emotional ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” emotion-কে devotion-এ রূপান্তরিত করতে হবে !”
কিন্তু সেটা আর হচ্ছে কই ! emotion – devotion-এ পরিণত হলেই সেই ব্যক্তি যথার্থ আধ্যাত্মিক হয়ে উঠতে পারবে । তখন সেই ব্যক্তি বা সাধকের মধ্যে ভেদভাব , হানাহানি , হিংসা , অসহিষ্ণুতার লেশমাত্র থাকবে না ! অপরপক্ষে ধর্মজগতের এই emotion-কে – কোন না কোন ধর্মীয় নেতা (এদের ধর্মগুরু বলা ঠিক হবে না) উস্কানি দিয়ে একটু বাড়াতে পারলেই – ব্যস্ , জ্বলে গেল আগুন ! গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ধর্মজগতে এসে গেছে অর্থাৎ কোন না কোন ধর্মমতের আচরণ করছে এমন ব্যক্তিগণকে – ধর্মভীরু , ধর্মপ্রাণ , ধর্মোন্মাদ এবং ধার্মিক এইরকম কয়েকটি শ্রেনীতে ভাগ করা যায় ! এদের মধ্যে মারাত্মক হোল “ধর্মোন্মাদ” ! এরা মুখে ‘আল্লা’ , ‘ঈশ্বর’ বা ‘গড’-এর নাম উচ্চরণ করতে করতে মানুষের ঘরে আগুন লাগাতে পারে , মায়ের কোল থেকে শিশুকে কেড়ে নিয়ে উদ্যত তরোয়ালের ফলায় গেঁথে দিতে পারে !
যাইহোক, এই কদিন ধরে যে আলোচনা গুলি তুলে ধরা হোল _তার একটা গভীর উদ্দেশ্য রয়েছে! বর্তমানে ভারতবর্ষ এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে যে ছায়াযুদ্ধ দীর্ঘদিন ধরে চলছে _তার একটা প্রকট রূপ কিন্তু অতি সত্বর দেখতে পাওয়া যাবে। গুরুমহারাজ পরিস্কার ভাষায় এ ব্যাপারে বলে গেছেন! তাঁর বক্তব্যের কথাগুলি যথাযথ এখানে বলা যাবে না _তবু রেখে ঢেকে কিছুটা বলা হয়েছে বা হচ্ছে..।
ভারতবর্ষ 1947_সালে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ হয়েছিল। হিন্দুস্থান পাকিস্তান! পাকিস্তানে হিন্দুসহ কিছু অমুসলিম(হয়তো 1% বা 2%)থেকে গেলেও হিন্দুস্থানে প্রায় 15%_20% অহিন্দুরা_ থেকে গিয়েছিল, তৎকালীন রাজনৈতিক নেতাদের বদান্যতায়।
ভারতবর্ষে ধর্মোন্মাদদের দাপাদাপির সেই শুরু! শুরু হয়ে গেল ধর্মের নামে রক্তারক্তি! যত দিন এগিয়েছে, ততই এটা ভিতরে ভিতরে ছাইচাপা গনগনে আগুনের মতো বিস্তারিত হয়েছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে!!
গুরুমহারাজ ছিলেন একেবারে ‘সদা বর্তমানে থাকা’ মানুষ! তাই উনি কল্পনার রাজত্বে বাস না করে practical সমস্যা নিয়ে অনেকবার আলোচনা করেছেন। উনি বলেছিলেন _”স্বাধীনতার পর থেকে, রাজনেতারা চেষ্টা করলে হিন্দু – মুসলিম সমস্যার সমাধান করতে পারতো। কিন্তু কি আশ্চর্য! ওরা অদ্ভূতভাবে এই জ্বলন্ত সমস্যার ব্যাপারে মুখ ফিরিয়ে থাকল। ”
উনি বলেছিলেন _” মুসলিম দেশগুলিতে বসবাসকারী অমুসলিমরা সমান নাগরিক সুযোগ সুবিধা পায় না, কিন্তু ভারতবর্ষে বসবাসকারী অহিন্দুরা এদেশের সমস্তরকম সুবিধা ভোগ করে। অহিন্দু ছাত্র-ছাত্রীরা, হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে একই স্কুলে পড়াশোনা করে, যুবকেরা একই অফিসে সমান বেতন স্কেলে চাকরি করে, গ্রামে শহরে একই রকম নাগরিক পরিষেবা পেয়ে থাকে(রাজনৈতিক স্বার্থে একটু বেশি ই পেয়ে থাকে) একই দোকান বা বাজারে সমমুল্যে জিনিস কেনে, ট্রেনে – বাসে একই ভাড়ায় যাতায়াত করে, অন্যান্য সব facility – ই সবার জন্য একইরকম!!!এদেশে প্রচুর ধনী ব্যবসাদার অহিন্দু, যাদের কোম্পানিতে কত হিন্দুরা চাকরি করে, কত অভিনেতা-অভিনেত্রী-শিল্পী-সংগীতশিল্পী-লেখক-কবি-প্রফেসর-মাষ্টার অহিন্দু, যাদের পায়ে হাত দিয়ে হিন্দু ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন প্রনাম করে! __তবু…….!!!!
যেন একটা কোথায় অসুবিধা! কিছু ধর্মোন্মাদ এমনভাবে ধর্মশিক্ষা দিচ্ছে যে ‘আমার ধর্মমত’- টাই শ্রেষ্ঠ, অন্যটা নিকৃষ্ট _অন্য ধর্মাবলম্বীদের আমার মতে আনতেই হবে! আনতে পারলে মৃত্যুর পরে পুরস্কারের ব্যবস্থাও করা আছে!! অশিক্ষা এবং অল্পশিক্ষা _অভাবের জন্য, বেরোজগারের জন্য, অজ্ঞতার জন্য _কুশিক্ষায় রূপ নিচ্ছে! তৈরি হচ্ছে জেহাদী, আত্মঘাতী বাহিনী! যাদের কাজ ধর্মের নামে শত শত সাধারণ, নিরীহ মানুষকে মেরে ফেলা!!!
গুরুমহারাজকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল _তাহলে এখন কি হবে? বর্তমানের এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কি ‘পরিনতি’-তে রূপ নেবেই?_
উনি উত্তর দিয়েছিলেন _”হ্যাঁ, রূপ নেবে।”
আরও বলেছিলেন _” প্রথমটায় ভীষন রক্তক্ষয় হবে, প্রচুর মানুষ মারা যাবে, তারপর রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি যখন শান্ত হবে _তখন অল্প কয়েকটা মানুষ, কে আর কার বিরোধ করবে?
দু–রে, দু–রে একটা একটা আলো দেখতে পেয়ে একজন মানুষ _অন্য একজন মানুষকে “#ভাই” – বলে জড়িয়ে ধরবে।আর সেদিন সমস্ত Sentiment, সমস্ত বিভেদ, সমস্ত অজ্ঞতার অবসান হবে!”
পরে অবশ্য একদিন সিটিং-এ উনি আশার কথাও শুনিয়েছিলেন! বললেন _” পৃথিবী গ্রহের ভালোমন্দের ভার যাঁদের (গুরুকুল) উপর রয়েছে _তাঁরা এই ব্যাপারে খুব-ই চিন্তিত! আমার সাথে ওনাদের যোগাযোগ হয়। ওনারা অন্যরকমভাবে সমাধান করার চেষ্টা করছেন। বহু শৈব সাধক মুসলিম community-তে শরীর গ্রহণ করে balance আনার চেষ্টা করছেন!!”(ক্রমশঃ)