গুরুমহারাজ স্বামী পরমানন্দকে ইউরোপের ইউনিভার্সিটির মহা মহা পন্ডিতেরা তাঁর অসাধারণ Intelect Power-কে সম্মান জানিয়েছিল , পৃথিবী গ্রহের যে কোন উন্নত মানবদের তুলনায় গুরু মহারাজের Brain যে উন্নত তা স্বীকার করে নিয়ে ওনাকে একটা মার্কস-ও দিয়েছিল – যেটা পৃথিবীর অন্যান্য যেকোনো উন্নত মেধাসম্পন্ন-ব্যক্তির মার্কস অপেক্ষা প্রায় Double ! ওরা হয়তো গুরু মহারাজকে “শ্রেষ্ঠ ইন্টেলেকচুয়াল পারসন” বলে সার্টিফিকেট দেয়নি – বোধহয় ওনাকে Brain Cell-এর Highest Manifastation যুক্ত ব্যক্তি – এইরকম কিছু একটা বলেছিল ৷ সে যাই বলুক – স্টিফেন স্পিলবার্গ ও তার সহযোগীরা চেয়েছিল যে – গুরু মহারাজ আমেরিকার এই নির্জন দ্বীপে গিয়ে পৃথিবীর সমস্ত গুণী-জ্ঞানীজনেদের ‘গুরু’ বা instructer হিসেবে কাজ করবেন ৷ যিনি ওদেরকে পৃথিবীর বিভিন্ন দর্শন-শাস্ত্রের জ্ঞান , বিভিন্ন ধর্মমতের এবং ধর্মগ্রন্থের জ্ঞান ওই মহাপন্ডিত ব্যক্তিগুলির সাথে আলোচনা করবেন এবং হযতো ওরা এটাও চেয়েছিল যে গুরুমহারাজ ওদেরকে যে কোন ব্যাপারে পরামর্শ দেবেন ৷
ওই দ্বীপে বিভিন্ন নামকরা বিজ্ঞানী বা দার্শনিক-সাহিত্যিক ইত্যাদি উন্নত মেধাসম্পন্ন নারী-পুরুষদের সন্তান জন্মানোর ব্যাপারটা যেটা ওরা পরীক্ষামূলকভাবে করতে চেয়েছিল, ওটাকে গুরুমহারাজ একবার ‘ল্যাবরেটরী থেকে তৈরি’ _এইরকম বলেছিলেন! উনি এই সম্পর্কে যা বলেছিলেন সেটার মানে আমরা যা বুঝেছিলাম তা হল – ওই ধরনের উচ্চশিক্ষিত, উন্নত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন নারীরা হয়তো সন্তান গর্ভে ধারন করতে চাইবেন না । তাই ওরা ওখানে ওই মহাপন্ডিত ব্যক্তিদের Sperm এবং মহা মহা বিদুষী নারীদের Ovum সঞ্চয় করে সেগুলিকে টেস্ট টিউবের মাধ্যমে বা Surrogate Mother-এর মাধ্যমে সন্তান উৎপাদনের Process শুরু করে দিয়েছে ! এদের কথাই গুরুমহারাজ বলেছিলেন যে এদের প্রথম batch টি ৮/১০ বছরের মধ্যেই ১৮ বছরের হয়ে যাবে ! তখন বোঝা যাবে সত্যি সত্যিই এই ব্যাপারটা কার্যকরী হল কি না অর্থাৎ পৃথিবীর সবচাইতে বিদ্বান-বুদ্ধিমান পুরুষ ও বিদুষী নারীদের মিলনে উৎপন্ন জাতকেরা আরো অধিকতর বিদ্বান ও বুদ্ধিমান হিসাবে সমাজে পরিচিতি লাভ করতে পারল কি না! যদি হয় _তাহলে সেটা পৃথিবীতে ওদের একটা বিরাট Successful গবেষণা হবে ! কিন্তু গুরু মহারাজ বলেছিলেন _ওরা 100% Successful হবে না – কারণ এটা Natural নয় , কৃত্রিম পদ্ধতি ! তাই ওরা যা ভাবছে – অমনটা ঘটবে না !
এই গ্রুপটির আর একটা ব্যাপার গুরু মহারাজ আমাদেরকে বলেছিলেন , সেটা হলো – আমেরিকান ওই ধনী গ্রুপটির বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্কিংয়ের কথা । যেটা সত্যি সত্যিই অবাক করার মতো ব্যাপার ! গোটা পৃথিবী জুড়ে ওদের বিভিন্ন Agency সব সময় কাজ করে চলেছে । পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে ব্রেনী ছেলেমেয়েদের-কে ওরা স্কুল বা কলেজ Life থেকেই Target করে রাখে ! তারপর ওদেরকে Tap করে ! যে কোন সমাজের এই ধরনের উন্নত মেধাসম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে ওরা প্রচুর টাকা-পয়সার দ্বারা , সুযোগ-সুবিধা প্রদানের দ্বারা বা আরো উন্নত গবেষণার সুযোগ দিয়ে আমেরিকায় নিয়ে চলে যায় । তারপর ওরা ওদেরকে কাজে লাগায় ।
গুরু মহারাজ আরও বলেছিলেন যে , যখন থেকে ওরা গুরু মহারাজকে target করেছিল , তারপর থেকেই ওদের নেটওয়ার্ক কাজ শুরু করে দিয়েছিল । গুরু মহারাজ বলেছিলেন – ” ওই সুদূর আমেরিকায় বসে ওরা এই বনগ্রামের অর্থাৎ বনগ্রাম আশ্রমের সমস্ত খবর রাখছিল । এখানে আমার কি কি প্রজেক্ট-এর কাজ চলছে , অথবা আরও কিছু বিল্ডিং তৈরি হবে – এই সমস্ত খবর করে রাখছিল । কারণ স্পিলবার্গ পর পর যে কটা চিঠি দিয়েছিল , সেই চিঠিগুলিতে ও এইগুলি উল্লেখ করেছিল ! শেষ চিঠিটায় স্পিলবার্গ লিখেছিল যে , ও বা ওর সংস্থা বনগ্রাম পরমানন্দ মিশনের যাবতীয় খরচ-খরচার দায়িত্ব নেবে , সমস্ত বিল্ডিং ওরাই করে দেবে , এমনকি যে কোনোভাবে ইন্টারনেটের ব্যবস্থা করে দেবে – যাতে করে গুরুমহারাজ আমেরিকায় ওদের ওই দ্বীপটিতে বসে বসেই এখানকার কাজ-কর্ম পরিচালনা করতে পারেন বা এখানকার কর্মীদের নির্দেশ দিতে পারেন (যদিও তখন বনগ্রাম আশ্রমে কেন – কলকাতাতেই তখনও কোনো ইন্টারনেট ব্যবস্থা ছিল কিনা সন্দেহ !) !
এসব ব্যবস্থা ওরাই করে দিতো! তার জন্য যত খরচা হোত_তা ওরাই কোরতো! যে গ্রুপটির কথা বলা হচ্ছে _ওরা গোটা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শ্রেষ্ঠ ধনী ব্যক্তিদের association! ফলে ওদের তো আর টাকাপয়সার অভাব নাই। গুরুমহারাজ একবার বলেছিলেন _”এখন বনগ্রাম আশ্রমে আমার যা project রয়েছে _তা সম্পন্ন করতে ৮/১০-কোটি টাকা লাগতে পারে (গুরুমহারাজের জীবদ্দশায় কি কি কাজ হবে এবং তার পরে কি হবে _সে সব নির্দিষ্ট ছিল।)! ”
ওই গ্রুপটি এই পুরো টাকাটা দিতে রাজি ছিল। কিন্তু গুরুমহারাজ আমাদেরকে বলেছিলেন _” মা জগদম্বা আমাকে বলে দিয়েছিলেন _’তোর এই শরীরটা আমেরিকা(USA)-র মাটিতে পা দেবেনা’__সুতরাং ওদের ডাকে সাড়া দেবার আমার কোন প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া আমার এখানে আশ্রমের কাজসমূহ সাধারণ টাকায় হবে _কোন একজন ধনী ব্যক্তি বা একদল ধনী গ্রুপের টাকায় নয়। বহু মানুষের নিঃশর্ত ও শ্রদ্ধাপূর্বক দেওয়া অর্থে ধীরে ধীরে গড়ে উঠুক এই আশ্রম _তবে তো এটা দীর্ঘস্থায়ী হবে! প্রাচুর্য্য দিয়ে হটাৎ করে গড়ে ওঠা কোন মঠ, মিশন, মন্দির খুব বেশিদিন স্থায়ী হয় না _আর সেগুলি দিয়ে মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতিও করা সম্ভব নয়! সাধারণ মানুষের ঘাম-ঝরানো শ্রমসাধ্য অর্থের অনেক জোর _সেই অর্থ অনেক দামী _কারন সেই অর্থ পবিত্র, কলুষমুক্ত!
এসব ছাড়া অন্য আরও একটা কারন রয়েছে, মঠ-মিশন-মন্দির বহু মানুষের অর্থে নির্মিত হলে _তাতে সবার একটা অধিকার এবং মমত্ববোধ থাকে। এর ফলে বহু মানুষ ঐ প্রতিষ্ঠানটির ভালো-মন্দের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নেয়। আর এতেই সকলের মঙ্গল হয়।”(ক্রমশঃ)