শ্রী শ্রী গুরু মহারাজ স্বামী পরমানন্দ যখন যেখানেই থাকতেন – সেখানেই তাঁকে কেন্দ্র করে বসে যেতো জিজ্ঞাসা-উত্তরের আসর ! সেইসব জিজ্ঞাসাকারীরা যে কোন বয়সের, যে কোন জাতি-ধর্ম-বর্ণের, যে কোনো মানসিক Level-এর ছিল – ফলে জিজ্ঞাসা হতো ভূগোল, ইতিহাস, বিজ্ঞান, ধর্ম-দর্শন ইত্যাদি সব বিষয় থেকে । কিন্তু উপস্থিত সকলকে আশ্চর্য করে দিয়ে সেই অদ্ভুত অধ্যাত্ম বিজ্ঞানী, যুগের প্রয়োজনে অবতরিত সোনার মানুষটি_ অবলীলায় সমস্ত বিষয়ের অনায়াস উত্তর দিতেন! আর শুধু উত্তর-ই দিতেন তাই নয়, যতক্ষণ পর্যন্ত না জিজ্ঞাসাকারীর উত্তরটি মনঃপুত হচ্ছে – ততক্ষণ তিনি সেই জিজ্ঞাসাকারীর দিকে তাকিয়ে – যেন তাকে উদ্দেশ্য করেই উত্তরটি দিচ্ছেন এমন ভাব নিয়ে অর্থাৎ জিজ্ঞাসাকারীকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে উত্তরটা ভালো করে বুঝিয়ে দিতেন । যতক্ষণ তার মন সন্তুষ্ট না হতো – ততক্ষণ গুরুমহারাজ নানাভাবে তাকে বোঝাতেন, প্রয়োজনে কোন না কোন গল্পের অবতারণা করেও তাকে বোঝাতেন ।
গুরুমহারাজ বলতেন – ” আমার যেটা সহজ স্থিতি অর্থাৎ আমি যে স্থিতিতে সব সময় থাকতে চাই, সেখানে অখন্ড নীরবতা ৷ তেমন যদি উপযুক্ত ভক্তরা উপস্থিত থাকে, তাহলে দেখা যাবে আমিও চুপচাপ বসে আছি – তারাও আমার সামনে শান্ত হয়ে বসে আছে ৷ তবে সেখানে চলবে অসম্ভব শক্তির খেলা ! সেই মানুষগুলি ঐ অবস্থায় চরম শক্তিলাভ করতে থাকবে –তাদের মধ্যে দ্রুত শক্তির Transfer ঘটতে থাকবে ৷ কিন্তু এই সহজ পদ্ধতি লাভ করার উপযুক্ততা অর্জন করতে হলে অনেক সাধনার প্রয়োজন।
দ্যাখো, মানুষ আমার কাছে এসে নানাভাবে শক্তি অর্জনের চেষ্টাই তো করে থাকে – তা সে জিজ্ঞাসা-উত্তরের মাধ্যমে জ্ঞানার্জনই হোক বা সাধনা করে শক্তি লাভ-ই হোক ! যে কোনো মহাপুরুষ তাঁর সারা জীবনের অর্জিত সমগ্র আধ্যাত্মিক সম্পদ উপযুক্ত পাত্র পেলে তাকে নিঃশর্তে দিতেই চায় – কিন্তু তেমন পাত্র না পেলে withdraw করে নিয়ে চলে যায় ৷ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ স্বামী বিবেকানন্দ-কে উপযুক্ত পাত্র পেয়ে তাকে সর্বস্ব দিয়ে দিয়েছিলেন ।”
গুরুমহারাজের কাছে সেদিনকার এই ব্যাপারে যে ঘটনাটার কথা শুনেছিলাম সেটা আপনাদের কে বলি ! ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের শরীরের তখন খুব খারাপ অবস্থা! ঠাকুরের গলার ঘা দিয়ে সব সময় রস গড়াতো ! সেইজন্য ভক্তরা তাঁর গলায় একটা ছোট ভাঁড়ের মতো পাত্র বেঁধে রাখতো, যাতে রসটা গড়িয়ে জামা-কাপড় না ভেজায় – যাতে সেটা ওই ভাঁড়ে জমে ৷ সেদিন ঠাকুরের খুব বাড়াবাড়ি – ডাক্তার সরকার ব্রহ্মচারীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলে গেছেন যে ঠাকুরের রোগটি মারাত্মক, আর ওই ঘা-থেকে নির্গত রস ছোঁয়াচেও হতে পারে! সুতরাং ঐ সব ছোট ছোট ছেলেরা (ব্রহ্মচারীরা) যেন ঐ ঘরে বড় একটা না ঢোকে! এই কথা শুনে স্বামী বিবেকানন্দের গুরুভ্রাতাদের মধ্যে ঐদিন ঠাকুরের সেবার দায়িত্বে যারা ছিল – তারা ভয়ে আর ঠাকুরের ঘরেই ঢুকতে চাইছিল না।
সেদিন স্বামীজী কোন কারনে অনেকক্ষণ মঠের বাইরে ছিল – ফলে এসব ঘটনা কিছুই জানতো না ৷ ফিরে এসে ঠাকুরের ঘরের বাইরে সবাই দাঁড়িয়ে আছে দেখে জিজ্ঞাসা করায় গুরুভ্রাতারা ওনাকে ডাক্তারের নিষেধাজ্ঞার কথা জানায় । সব শুনে নরেন্দ্রনাথ হনহন করে ঘরে ঢুকে ঠাকুরের গলা থেকে রস-রক্তপূর্ণ ভাঁড়টা খুলে নিয়ে গুরুভাইদের উদ্দেশ্য করে বলেছিল – ” তোরা ঠাকুরকে এই চিনলি ? যার নাম স্মরণ করলে ভবরোগে দূর হয়ে যায় – তার কাছে এলে তোরা রোগ হবার ভয় করলি ! ঠিক আছে – যা হবার আমার-ই হোক, তোরা সবাই সুস্থ থাক ৷” এই কথাগুলি বলে উনি “জয় রামকৃষ্ণ” “জয় রামকৃষ্ণ” বলতে বলতে ঢকঢক করে ওই রস-রক্ত খেয়ে নিয়েছিলেন । ব্যস ! আর যায় কোথায় ! দীর্ঘদিন রোগশয্যায় মিশে থাকা ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ , যাঁর ওঠার-নড়ার ক্ষমতাটুকুও ছিল না – সেই ঠাকুর হঠাৎ স্প্রিং-এর মতো উঠেই নরেনকে অনেকক্ষণ বুকে জড়িয়ে ধরে রাখলেন ৷ কিছুক্ষণ ওইভাবে থাকার পর – ধীরে ধীরে বিছানায় একেবারে নেতিয়ে পড়ে গেলেন ! তখনই অস্ফুটে তিনি বলেছিলেন –”তোকে সর্বস্ব দিয়ে আজ ফতুর হয়ে গেলাম রে নরেন !”
যাইহোক, আমরা আগের দিন গুরুমহারাজের শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধের গল্প-কথায় ছিলাম । গুরু মহারাজ বলেছিলেন ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে চলা ওই যুদ্ধটি “গোঁফের যুদ্ধ” নামেও পরিচিত । আসলে ঘটনাটা ঘটেছিল ইংল্যান্ডের এক রাজকুমারের সাথে তৎকালীন ফ্রান্সের রাজকন্যার বিবাহ হয়েছিল এবং এই বিবাহের যৌতুক হিসাবে ফ্রান্সের রাজা তাদের অধিকৃত “ব্রিটানিকা” প্রদেশটা জামাতাকে দিয়ে দিয়েছিল । ওই রাজকুমারের সুন্দর পরিপাটি এবং পেল্লাই একটি গোঁফ ছিল, আর ফ্রান্সের রাজকুমারী তার স্বামীর গোঁফ-টিকে খুবই পছন্দ করতো ! শুধু পছন্দই নয় _স্বামীর গোঁফ নিয়ে তার গর্বের অন্ত ছিল না! কিন্তু কান্ড ঘটল কি – কোন একটা যুদ্ধে ইংল্যান্ডের রাজকুমার এমনভাবে আহত হলো যে, রাজবৈদ্য ক্ষতস্থানে চিকিৎসার সুবিধার জন্য তার গোঁফটাকে কেটে উড়িয়ে দিল ।
কিছুদিনের মধ্যেই সেই যুদ্ধ জয় করে রাজকুমার প্রবল পরাক্রমে রাজ্যে ফিরে আসছে খবর পেয়ে সবার সাথে ফ্রান্সের রাজকুমারীও স্বামীকে বরণ করার জন্য ফুল-মালা নিয়ে তোরণদ্বারে উপস্থিত হোল৷ কিন্তু যেই রাজকুমার রাজকুমারীর হাত থেকে মালা পড়ার জন্য ঘোড়ার পিঠ থেকে নামলো, অমনি রাজকুমারী দেখল তার স্বামীর মুখে সুদৃশ্য প্রকাণ্ড গোঁফটি আর নেই – অমনি সে রাগে দুঃখে মালা ফেলে দিয়ে সোজা ঘরে গিয়ে দুয়ার বন্ধ করে দিল । রাজকুমার শতচেষ্টাতেও বউ-এর রাগ ভাঙাতে পারল না। বউ চলে গেল বাপের বাড়ি _স্বামী-স্ত্রীর হোল ছাড়াছাড়ি!
এদিকে মেয়ের বিয়েই যখন টিকল না, তখন ফ্রান্সের রাজা মেয়ের বিয়ের যৌতুক হিসাবে দেওয়া ‘ব্রিটানিকা প্রদেশ’-টি ইংল্যান্ডের রাজার কাছে ফেরত চাইল। কিন্তু তারা কোনোমতেই ঐ প্রদেশ ফেরত দিতে চাইল না। ফলস্বরূপ লেগে গেল যুদ্ধ! এই যুদ্ধ পরিণত হয়ে গেল Prestigious fight-এ! বংশানুক্রমিকভাবে ৩/৪-generation ধরে এই যুদ্ধ চলতেই থাকল প্রায় ১০০ – বছর ধরে। তাই এই যুদ্ধ কে ‘শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধ’ বলা হয়। যার এক এবং একমাত্র কারণ ছিল শুধু রাজকুমারের গোঁফ কেটে ফেলা!!
গুরুমহারাজ গল্পটি বলার পর আমাদের বলেছিলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে যত যুদ্ধ-যত রক্তপাত-যত হানাহানি-মারামারি, সেগুলোর উৎস খুঁজতে গেলে দেখা যাবে _এইরকমই নগন্য বা তুচ্ছাতিতুচ্ছ কোন কারণ থেকেই তার সৃষ্টি। এই প্রসঙ্গে গুরুমহারাজ ভগবান বুদ্ধের সময়কার একটি ঘটনা বলেছিলেন _সেটি পরের দিন। (ক্রমশঃ)
গুরুমহারাজ বলতেন – ” আমার যেটা সহজ স্থিতি অর্থাৎ আমি যে স্থিতিতে সব সময় থাকতে চাই, সেখানে অখন্ড নীরবতা ৷ তেমন যদি উপযুক্ত ভক্তরা উপস্থিত থাকে, তাহলে দেখা যাবে আমিও চুপচাপ বসে আছি – তারাও আমার সামনে শান্ত হয়ে বসে আছে ৷ তবে সেখানে চলবে অসম্ভব শক্তির খেলা ! সেই মানুষগুলি ঐ অবস্থায় চরম শক্তিলাভ করতে থাকবে –তাদের মধ্যে দ্রুত শক্তির Transfer ঘটতে থাকবে ৷ কিন্তু এই সহজ পদ্ধতি লাভ করার উপযুক্ততা অর্জন করতে হলে অনেক সাধনার প্রয়োজন।
দ্যাখো, মানুষ আমার কাছে এসে নানাভাবে শক্তি অর্জনের চেষ্টাই তো করে থাকে – তা সে জিজ্ঞাসা-উত্তরের মাধ্যমে জ্ঞানার্জনই হোক বা সাধনা করে শক্তি লাভ-ই হোক ! যে কোনো মহাপুরুষ তাঁর সারা জীবনের অর্জিত সমগ্র আধ্যাত্মিক সম্পদ উপযুক্ত পাত্র পেলে তাকে নিঃশর্তে দিতেই চায় – কিন্তু তেমন পাত্র না পেলে withdraw করে নিয়ে চলে যায় ৷ ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ স্বামী বিবেকানন্দ-কে উপযুক্ত পাত্র পেয়ে তাকে সর্বস্ব দিয়ে দিয়েছিলেন ।”
গুরুমহারাজের কাছে সেদিনকার এই ব্যাপারে যে ঘটনাটার কথা শুনেছিলাম সেটা আপনাদের কে বলি ! ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের শরীরের তখন খুব খারাপ অবস্থা! ঠাকুরের গলার ঘা দিয়ে সব সময় রস গড়াতো ! সেইজন্য ভক্তরা তাঁর গলায় একটা ছোট ভাঁড়ের মতো পাত্র বেঁধে রাখতো, যাতে রসটা গড়িয়ে জামা-কাপড় না ভেজায় – যাতে সেটা ওই ভাঁড়ে জমে ৷ সেদিন ঠাকুরের খুব বাড়াবাড়ি – ডাক্তার সরকার ব্রহ্মচারীদেরকে উদ্দেশ্য করে বলে গেছেন যে ঠাকুরের রোগটি মারাত্মক, আর ওই ঘা-থেকে নির্গত রস ছোঁয়াচেও হতে পারে! সুতরাং ঐ সব ছোট ছোট ছেলেরা (ব্রহ্মচারীরা) যেন ঐ ঘরে বড় একটা না ঢোকে! এই কথা শুনে স্বামী বিবেকানন্দের গুরুভ্রাতাদের মধ্যে ঐদিন ঠাকুরের সেবার দায়িত্বে যারা ছিল – তারা ভয়ে আর ঠাকুরের ঘরেই ঢুকতে চাইছিল না।
সেদিন স্বামীজী কোন কারনে অনেকক্ষণ মঠের বাইরে ছিল – ফলে এসব ঘটনা কিছুই জানতো না ৷ ফিরে এসে ঠাকুরের ঘরের বাইরে সবাই দাঁড়িয়ে আছে দেখে জিজ্ঞাসা করায় গুরুভ্রাতারা ওনাকে ডাক্তারের নিষেধাজ্ঞার কথা জানায় । সব শুনে নরেন্দ্রনাথ হনহন করে ঘরে ঢুকে ঠাকুরের গলা থেকে রস-রক্তপূর্ণ ভাঁড়টা খুলে নিয়ে গুরুভাইদের উদ্দেশ্য করে বলেছিল – ” তোরা ঠাকুরকে এই চিনলি ? যার নাম স্মরণ করলে ভবরোগে দূর হয়ে যায় – তার কাছে এলে তোরা রোগ হবার ভয় করলি ! ঠিক আছে – যা হবার আমার-ই হোক, তোরা সবাই সুস্থ থাক ৷” এই কথাগুলি বলে উনি “জয় রামকৃষ্ণ” “জয় রামকৃষ্ণ” বলতে বলতে ঢকঢক করে ওই রস-রক্ত খেয়ে নিয়েছিলেন । ব্যস ! আর যায় কোথায় ! দীর্ঘদিন রোগশয্যায় মিশে থাকা ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ , যাঁর ওঠার-নড়ার ক্ষমতাটুকুও ছিল না – সেই ঠাকুর হঠাৎ স্প্রিং-এর মতো উঠেই নরেনকে অনেকক্ষণ বুকে জড়িয়ে ধরে রাখলেন ৷ কিছুক্ষণ ওইভাবে থাকার পর – ধীরে ধীরে বিছানায় একেবারে নেতিয়ে পড়ে গেলেন ! তখনই অস্ফুটে তিনি বলেছিলেন –”তোকে সর্বস্ব দিয়ে আজ ফতুর হয়ে গেলাম রে নরেন !”
যাইহোক, আমরা আগের দিন গুরুমহারাজের শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধের গল্প-কথায় ছিলাম । গুরু মহারাজ বলেছিলেন ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের মধ্যে চলা ওই যুদ্ধটি “গোঁফের যুদ্ধ” নামেও পরিচিত । আসলে ঘটনাটা ঘটেছিল ইংল্যান্ডের এক রাজকুমারের সাথে তৎকালীন ফ্রান্সের রাজকন্যার বিবাহ হয়েছিল এবং এই বিবাহের যৌতুক হিসাবে ফ্রান্সের রাজা তাদের অধিকৃত “ব্রিটানিকা” প্রদেশটা জামাতাকে দিয়ে দিয়েছিল । ওই রাজকুমারের সুন্দর পরিপাটি এবং পেল্লাই একটি গোঁফ ছিল, আর ফ্রান্সের রাজকুমারী তার স্বামীর গোঁফ-টিকে খুবই পছন্দ করতো ! শুধু পছন্দই নয় _স্বামীর গোঁফ নিয়ে তার গর্বের অন্ত ছিল না! কিন্তু কান্ড ঘটল কি – কোন একটা যুদ্ধে ইংল্যান্ডের রাজকুমার এমনভাবে আহত হলো যে, রাজবৈদ্য ক্ষতস্থানে চিকিৎসার সুবিধার জন্য তার গোঁফটাকে কেটে উড়িয়ে দিল ।
কিছুদিনের মধ্যেই সেই যুদ্ধ জয় করে রাজকুমার প্রবল পরাক্রমে রাজ্যে ফিরে আসছে খবর পেয়ে সবার সাথে ফ্রান্সের রাজকুমারীও স্বামীকে বরণ করার জন্য ফুল-মালা নিয়ে তোরণদ্বারে উপস্থিত হোল৷ কিন্তু যেই রাজকুমার রাজকুমারীর হাত থেকে মালা পড়ার জন্য ঘোড়ার পিঠ থেকে নামলো, অমনি রাজকুমারী দেখল তার স্বামীর মুখে সুদৃশ্য প্রকাণ্ড গোঁফটি আর নেই – অমনি সে রাগে দুঃখে মালা ফেলে দিয়ে সোজা ঘরে গিয়ে দুয়ার বন্ধ করে দিল । রাজকুমার শতচেষ্টাতেও বউ-এর রাগ ভাঙাতে পারল না। বউ চলে গেল বাপের বাড়ি _স্বামী-স্ত্রীর হোল ছাড়াছাড়ি!
এদিকে মেয়ের বিয়েই যখন টিকল না, তখন ফ্রান্সের রাজা মেয়ের বিয়ের যৌতুক হিসাবে দেওয়া ‘ব্রিটানিকা প্রদেশ’-টি ইংল্যান্ডের রাজার কাছে ফেরত চাইল। কিন্তু তারা কোনোমতেই ঐ প্রদেশ ফেরত দিতে চাইল না। ফলস্বরূপ লেগে গেল যুদ্ধ! এই যুদ্ধ পরিণত হয়ে গেল Prestigious fight-এ! বংশানুক্রমিকভাবে ৩/৪-generation ধরে এই যুদ্ধ চলতেই থাকল প্রায় ১০০ – বছর ধরে। তাই এই যুদ্ধ কে ‘শতবর্ষব্যাপী যুদ্ধ’ বলা হয়। যার এক এবং একমাত্র কারণ ছিল শুধু রাজকুমারের গোঁফ কেটে ফেলা!!
গুরুমহারাজ গল্পটি বলার পর আমাদের বলেছিলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে যত যুদ্ধ-যত রক্তপাত-যত হানাহানি-মারামারি, সেগুলোর উৎস খুঁজতে গেলে দেখা যাবে _এইরকমই নগন্য বা তুচ্ছাতিতুচ্ছ কোন কারণ থেকেই তার সৃষ্টি। এই প্রসঙ্গে গুরুমহারাজ ভগবান বুদ্ধের সময়কার একটি ঘটনা বলেছিলেন _সেটি পরের দিন। (ক্রমশঃ)