গুরুমহারাজ: –
ঘটবেই তো ! বিদ্যা স্ত্রী আর অবিদ্যা স্ত্রী । বিদ্যা স্ত্রী সব সময় স্বামী কে ধর্ম পথে সহায়তা করবে, আর অবিদ্যা স্ত্রী স্বামীকে নানান বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখতে চাইবে। তবে এর উল্টো টাও হয় অর্থাৎ স্ত্রী হয়তো ধর্ম পথে রয়েছে আর স্বামী সেই নিয়ে অশান্তি করছে! আমার এখানেই এ রকম কত মানুষ আসে কেউ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আমার কাছে নালিশ করছে, আবার কেউ কেউ এসে তার স্বামীর নির্যাতনের কথা কাতর কণ্ঠে জানাচ্ছে।তবে এই কথার উত্তরটা আমি এখন অবশ্য নিরপেক্ষ ভাবেই বলবো , শুধু নারীর সপক্ষে বলব না! আর তার জন্য আমাকে যেন তোমরা পুরুষ তান্ত্রিকতার স্বপক্ষে ভেবে বসো না! আমি দেখেছি জগতে নারী পুরুষ উভয়ই সমান নির্যাতিত! প্রকৃতি সব সময়ই একটা ব্যালান্স রাখে বা রাখার চেষ্টা করে। পুরুষ এর গায়ে জোর বেশি _এটা প্রাকৃতিক নিয়মে হয়েছে, তাই তারা স্ত্রী দের মারধোর করে বা জোর করে অর্থাৎ নানা ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। সেই জন্যেই গোটা পৃথিবী_ “নারীরা নির্যাতিত” বলে চেঁচাচ্ছে! অপরপক্ষে বিবাহিত পুরুষরাও তো সুখী নয়! সেখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দাম্পত্য জীবনের লাগাম থাকে স্ত্রী বা নারীর হাতে! শত সহস্র পুরুষ__ নারীর দ্বারা এত ভাবে নির্যাতিত হয় যে অনেকে ঘর ছেড়ে পালায়, হয়তো মনোদুঃখে আত্ম হনন এর পথ বেছে নেয়, আর খুব ধৈর্য এবং সহ্যশক্তি যাদের আছে – তারা কোনো রকমে adjust করে চালিয়ে যায়।
আমাদের এখানে এই আশ্রমে এমন কত মানুষ এসে তার বেহাল জীবনের দুঃখ- দুর্দশার কথা আমাকে বলে । আমি শুনে অনেক সময় চমকে উঠি! দেখে মনে হয় কত ভদ্র লোক এরা! শিক্ষিত, চাকরি-বাকরি করা মানুষ_ অর্থের অভাব নেই, অন্যান্য আরো অনেক কিছু রয়েছে অথচ সংসারে ব্যাপক অশান্তি ভোগ করে।
আমাদের আশ্রমেই ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা বলছি শোন। আশ্রম তৈরির প্রথম দিকের অবস্থায় স্থানীয় এক বয়স্ক ভদ্রলোক প্রায়ই এসে আশ্রমে থাকতো। আশ্রমে কিছু কাজ করে দিত আর এখানে থাকা খাওয়া করত, অবসর সময়ে ধ্যান-জপ করতো। ভদ্র লোকের একটু লম্বা দাড়ি ছিল। একদিন আশ্রমের ঘরে বসে রয়েছি – – শুনতে পেলাম বাইরে এক ভদ্রমহিলা ভীষন চেঁচামেচি করছে। ঘরের বাইরে এসে দেখি ওর স্বামী কোনো ঘরে বয়সে ধ্যান করছিলো- মেয়েটি খবর নিয়ে সেখানে ঢুকে
ঐ বয়স্ক ভদ্রলোকের দাড়ি ধরে হ্যাঁচকা এমন টান মেরেছে যে_ কয়েকগাছা দাড়ি উপড়ে তার হাতে উঠে এসেছে! আর ভদ্রলোক যন্ত্রণায় পরিত্রাহি চিৎকার করছে!
ভাবো একবার-কেমন মহিলা!!
ওদের বাড়ি বনগ্রাম থেকে ১০/১২-কিমি দুরে, সেখান থেকে ঐ মহিলা এসেছে । আশ্রমে কত লোকজন_ভদ্রমহিলার বয়স ৫০-এর উপরে _তবু কত সংসার- বাসনা! স্বামী সুখের বাসনায় উন্মত্তপ্রায়!! লোকলজ্জা, মান-সন্মান এসবের পরোয়া না করে __সবার সামনে দিয়েই আশ্রমের সকলকে গালাগালি দিতে দিতে স্বামীকে টেনে নিয়ে চলে গেল।
দ্যাখো, এই আশ্রমে এসে এত লোকের সামনে যদি ঐ মহিলা তার স্বামীকে অতো অত্যাচার করতে পারে __তাহলে বাড়িতে ঐ বেচারা স্বামীর কি দশা!!
তবে লোকটি আধ্যাত্মিক ছিল _ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই ওর সংসারের ওই পরিস্থিতি আর নাই _একটু শান্তি এসেছে!
এখনও ভদ্রলোক মাঝেমাঝেই আশ্রমে আসে আর পরিবারের সকলকে নিয়েই আসে।
শাশ্ত্রে স্ত্রীকে বলা হয়েছে ধর্মপত্নী। কিন্তু কজন স্বামীর কপালে আর ধর্মপত্নী জোটে বলো !! স্বামী তার স্ত্রীর সাথেই ঘর করছে কিন্তু মনে হচ্ছে যেন তার রক্ষিতার সঙ্গে ঘর করছে! সম্পর্ক যেন শুধুই দেওয়া-নেওয়ার আর চাওয়া-পাওয়ার। কেউ কারো প্রতি আন্তরিক হতেই পারল না __অপরের ব্যাথায় ব্যথিত হওয়া বা অপরের সুখে সুখী হওয়া তো দূর অস্ত! প্রায় সাড়াজীবন একসাথেই কাটাচ্ছে, এক বিছানায় শুচ্ছে__ অথচ উভয়ের মন পরস্পরের থেকে দূরেই থেকে যাচ্ছে! তাহলে এরা কেমন স্বামী-স্ত্রী!!
জীবনের সমস্ত পদক্ষেপে উভয়ে উভয়কে যদি সাহচর্য-ই না দিল__তাহলে বিবাহের সার্থকতা কোথায়? বরং দেখা যায় বিপরীতটাই হচ্ছে __স্ত্রীকে বঞ্চিত রেখে স্বামী নিজের ভোগ-লালসা ঠিকই মিটিয়ে নিচ্ছে, অথবা এর উল্টোটা__ অর্থাৎ স্ত্রীরা তাদের স্বামী সংসারকে আড়ালে রেখে রুপ-রসাদির জগতে নিজেদেরকে ভাসিয়ে দিচ্ছে!!
আদর্শ দম্পতি, আদর্শ গৃহ বা পরিবার আর কোথায় পাবে বাবা!
সন্ন্যাস আশ্রমে এসে আমরা সংসার-আশ্রমকে আরও ভালো ভাবে দেখতে পাচ্ছি। আমরা সন্ন্যাসী বলে তো সমাজের বাইরে নই!! তাই সবকিছুই চোখে পড়ে। তাছাড়া আশ্রমের ভক্তরা তাদের পারিবারিক সমস্যার কথা তো সবসময়ই জানাচ্ছে__তাই আরও বেশি জানতে পারি!
ঠিক ঠিক সেইরকম দম্পতি হলে তাদের দাম্পত্য জীবনে একটা নিরবিচ্ছিন্ন শৃঙ্খলা বা harmony বজায় থাকবে। পুরুষ মানুষের ঠিকঠাক ধর্মপত্নী লাভ হোলে সংসার আশ্রমেও ঈশ্বরলাভ সম্ভব হয়! এমন বহু record রয়েছে।
উপনিষদে একটা গল্প রয়েছে, সেইটা বলছি শোন___এক রাজা গার্হস্থ এবং সন্ন্যাস এই দুই আশ্রমের মধ্যে কোনটি শ্রেষ্ঠ তা জানার জন্য রাজদরবারে পন্ডিত ও সাধুসন্তদের ডেকে পাঠালো। যাতে পন্ডিতমহল গার্হস্থ আশ্রমের পক্ষে এবং সাধুসন্তরা তাদের সপক্ষে নিজ নিজ মতামত প্রকাশ করতে পারে। এইভাবে রাজদরবারে বেশ কয়েকদিন ধরে পন্ডিত ও সন্তদের যুক্তি – প্রতিযুক্তি চলতে থাকল। কিন্তু ওদের কারোর বিচারই রাজার মনঃপূত হোল না।
তখন রাজা ঘোষনা করল___ যে ব্যক্তি রাজাকে তার মনে ওঠা জিজ্ঞাসার সমাধান করে দিতে পারবে, রাজা তাকে ধন-সম্পত্তি সব দিয়ে দেবে, তার অনুগত হয়ে থাকবে – প্রয়োজনে তার শিষ্যত্ব গ্রহন করবে।
ফলে এরপর নানান দেশ থেকে অনেক পন্ডিত বা সাধু-সন্তরা আসতে শুরু করল, তারা রাজাকে সহস্র সহস্র যুক্তি দিয়ে, বিচার দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করল___কিন্তু রাজার মনোমত কোনটাই হোল না।
রাজার মনে শান্তি নাই, সদাসর্বদা মনে সেই একই বিচার চলছে __’কোন আশ্রম শ্রেষ্ঠ – গার্হস্থ না সন্ন্যাস?’সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হলে _রাজা সেই আশ্রমের ধারা অবলম্বন করে জীবন কাটাবে ___এটাই রাজার আন্তরিক ইচ্ছা!! এদিকে রাজার এইরকম মানসিক অশান্তির কারণে রাজকার্য অচল হোতে বসেছে __রাজসভায় শুধুমাত্র পন্ডিত বা সাধুসন্তরা আসছে আর তর্কবিতর্ক করছে – – এতে কি আর রাজকার্য হয়?? রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অরাজকতা শুরু হয়ে গিয়েছে। এরপর হয়তো প্রজাবিদ্রোহ হবে কিংবা বহিঃশত্রু আক্রমণ করে বসবে __রাজ্যের মহামন্ত্রী পড়ল মহা বিপদে। সে এই সমস্যার সমাধান করতে একদিন নিজেই বেড়িয়ে পরল সঠিক উত্তরদাতার সন্ধানে!! তারপর একদিন এক পাগলের মতো মানুষকে ধরে নিয়ে এসে হাজির করল রাজার কাছে। লোকটি দেখতে পাগলের মতো হোলে কি হবে _আসলে তিনি ছিলেন একজন মহাজ্ঞানী পরমহংস স্থিতির মানুষ!!!
ঘটবেই তো ! বিদ্যা স্ত্রী আর অবিদ্যা স্ত্রী । বিদ্যা স্ত্রী সব সময় স্বামী কে ধর্ম পথে সহায়তা করবে, আর অবিদ্যা স্ত্রী স্বামীকে নানান বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখতে চাইবে। তবে এর উল্টো টাও হয় অর্থাৎ স্ত্রী হয়তো ধর্ম পথে রয়েছে আর স্বামী সেই নিয়ে অশান্তি করছে! আমার এখানেই এ রকম কত মানুষ আসে কেউ তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আমার কাছে নালিশ করছে, আবার কেউ কেউ এসে তার স্বামীর নির্যাতনের কথা কাতর কণ্ঠে জানাচ্ছে।তবে এই কথার উত্তরটা আমি এখন অবশ্য নিরপেক্ষ ভাবেই বলবো , শুধু নারীর সপক্ষে বলব না! আর তার জন্য আমাকে যেন তোমরা পুরুষ তান্ত্রিকতার স্বপক্ষে ভেবে বসো না! আমি দেখেছি জগতে নারী পুরুষ উভয়ই সমান নির্যাতিত! প্রকৃতি সব সময়ই একটা ব্যালান্স রাখে বা রাখার চেষ্টা করে। পুরুষ এর গায়ে জোর বেশি _এটা প্রাকৃতিক নিয়মে হয়েছে, তাই তারা স্ত্রী দের মারধোর করে বা জোর করে অর্থাৎ নানা ভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। সেই জন্যেই গোটা পৃথিবী_ “নারীরা নির্যাতিত” বলে চেঁচাচ্ছে! অপরপক্ষে বিবাহিত পুরুষরাও তো সুখী নয়! সেখানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দাম্পত্য জীবনের লাগাম থাকে স্ত্রী বা নারীর হাতে! শত সহস্র পুরুষ__ নারীর দ্বারা এত ভাবে নির্যাতিত হয় যে অনেকে ঘর ছেড়ে পালায়, হয়তো মনোদুঃখে আত্ম হনন এর পথ বেছে নেয়, আর খুব ধৈর্য এবং সহ্যশক্তি যাদের আছে – তারা কোনো রকমে adjust করে চালিয়ে যায়।
আমাদের এখানে এই আশ্রমে এমন কত মানুষ এসে তার বেহাল জীবনের দুঃখ- দুর্দশার কথা আমাকে বলে । আমি শুনে অনেক সময় চমকে উঠি! দেখে মনে হয় কত ভদ্র লোক এরা! শিক্ষিত, চাকরি-বাকরি করা মানুষ_ অর্থের অভাব নেই, অন্যান্য আরো অনেক কিছু রয়েছে অথচ সংসারে ব্যাপক অশান্তি ভোগ করে।
আমাদের আশ্রমেই ঘটে যাওয়া একটা ঘটনা বলছি শোন। আশ্রম তৈরির প্রথম দিকের অবস্থায় স্থানীয় এক বয়স্ক ভদ্রলোক প্রায়ই এসে আশ্রমে থাকতো। আশ্রমে কিছু কাজ করে দিত আর এখানে থাকা খাওয়া করত, অবসর সময়ে ধ্যান-জপ করতো। ভদ্র লোকের একটু লম্বা দাড়ি ছিল। একদিন আশ্রমের ঘরে বসে রয়েছি – – শুনতে পেলাম বাইরে এক ভদ্রমহিলা ভীষন চেঁচামেচি করছে। ঘরের বাইরে এসে দেখি ওর স্বামী কোনো ঘরে বয়সে ধ্যান করছিলো- মেয়েটি খবর নিয়ে সেখানে ঢুকে
ঐ বয়স্ক ভদ্রলোকের দাড়ি ধরে হ্যাঁচকা এমন টান মেরেছে যে_ কয়েকগাছা দাড়ি উপড়ে তার হাতে উঠে এসেছে! আর ভদ্রলোক যন্ত্রণায় পরিত্রাহি চিৎকার করছে!
ভাবো একবার-কেমন মহিলা!!
ওদের বাড়ি বনগ্রাম থেকে ১০/১২-কিমি দুরে, সেখান থেকে ঐ মহিলা এসেছে । আশ্রমে কত লোকজন_ভদ্রমহিলার বয়স ৫০-এর উপরে _তবু কত সংসার- বাসনা! স্বামী সুখের বাসনায় উন্মত্তপ্রায়!! লোকলজ্জা, মান-সন্মান এসবের পরোয়া না করে __সবার সামনে দিয়েই আশ্রমের সকলকে গালাগালি দিতে দিতে স্বামীকে টেনে নিয়ে চলে গেল।
দ্যাখো, এই আশ্রমে এসে এত লোকের সামনে যদি ঐ মহিলা তার স্বামীকে অতো অত্যাচার করতে পারে __তাহলে বাড়িতে ঐ বেচারা স্বামীর কি দশা!!
তবে লোকটি আধ্যাত্মিক ছিল _ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই ওর সংসারের ওই পরিস্থিতি আর নাই _একটু শান্তি এসেছে!
এখনও ভদ্রলোক মাঝেমাঝেই আশ্রমে আসে আর পরিবারের সকলকে নিয়েই আসে।
শাশ্ত্রে স্ত্রীকে বলা হয়েছে ধর্মপত্নী। কিন্তু কজন স্বামীর কপালে আর ধর্মপত্নী জোটে বলো !! স্বামী তার স্ত্রীর সাথেই ঘর করছে কিন্তু মনে হচ্ছে যেন তার রক্ষিতার সঙ্গে ঘর করছে! সম্পর্ক যেন শুধুই দেওয়া-নেওয়ার আর চাওয়া-পাওয়ার। কেউ কারো প্রতি আন্তরিক হতেই পারল না __অপরের ব্যাথায় ব্যথিত হওয়া বা অপরের সুখে সুখী হওয়া তো দূর অস্ত! প্রায় সাড়াজীবন একসাথেই কাটাচ্ছে, এক বিছানায় শুচ্ছে__ অথচ উভয়ের মন পরস্পরের থেকে দূরেই থেকে যাচ্ছে! তাহলে এরা কেমন স্বামী-স্ত্রী!!
জীবনের সমস্ত পদক্ষেপে উভয়ে উভয়কে যদি সাহচর্য-ই না দিল__তাহলে বিবাহের সার্থকতা কোথায়? বরং দেখা যায় বিপরীতটাই হচ্ছে __স্ত্রীকে বঞ্চিত রেখে স্বামী নিজের ভোগ-লালসা ঠিকই মিটিয়ে নিচ্ছে, অথবা এর উল্টোটা__ অর্থাৎ স্ত্রীরা তাদের স্বামী সংসারকে আড়ালে রেখে রুপ-রসাদির জগতে নিজেদেরকে ভাসিয়ে দিচ্ছে!!
আদর্শ দম্পতি, আদর্শ গৃহ বা পরিবার আর কোথায় পাবে বাবা!
সন্ন্যাস আশ্রমে এসে আমরা সংসার-আশ্রমকে আরও ভালো ভাবে দেখতে পাচ্ছি। আমরা সন্ন্যাসী বলে তো সমাজের বাইরে নই!! তাই সবকিছুই চোখে পড়ে। তাছাড়া আশ্রমের ভক্তরা তাদের পারিবারিক সমস্যার কথা তো সবসময়ই জানাচ্ছে__তাই আরও বেশি জানতে পারি!
ঠিক ঠিক সেইরকম দম্পতি হলে তাদের দাম্পত্য জীবনে একটা নিরবিচ্ছিন্ন শৃঙ্খলা বা harmony বজায় থাকবে। পুরুষ মানুষের ঠিকঠাক ধর্মপত্নী লাভ হোলে সংসার আশ্রমেও ঈশ্বরলাভ সম্ভব হয়! এমন বহু record রয়েছে।
উপনিষদে একটা গল্প রয়েছে, সেইটা বলছি শোন___এক রাজা গার্হস্থ এবং সন্ন্যাস এই দুই আশ্রমের মধ্যে কোনটি শ্রেষ্ঠ তা জানার জন্য রাজদরবারে পন্ডিত ও সাধুসন্তদের ডেকে পাঠালো। যাতে পন্ডিতমহল গার্হস্থ আশ্রমের পক্ষে এবং সাধুসন্তরা তাদের সপক্ষে নিজ নিজ মতামত প্রকাশ করতে পারে। এইভাবে রাজদরবারে বেশ কয়েকদিন ধরে পন্ডিত ও সন্তদের যুক্তি – প্রতিযুক্তি চলতে থাকল। কিন্তু ওদের কারোর বিচারই রাজার মনঃপূত হোল না।
তখন রাজা ঘোষনা করল___ যে ব্যক্তি রাজাকে তার মনে ওঠা জিজ্ঞাসার সমাধান করে দিতে পারবে, রাজা তাকে ধন-সম্পত্তি সব দিয়ে দেবে, তার অনুগত হয়ে থাকবে – প্রয়োজনে তার শিষ্যত্ব গ্রহন করবে।
ফলে এরপর নানান দেশ থেকে অনেক পন্ডিত বা সাধু-সন্তরা আসতে শুরু করল, তারা রাজাকে সহস্র সহস্র যুক্তি দিয়ে, বিচার দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করল___কিন্তু রাজার মনোমত কোনটাই হোল না।
রাজার মনে শান্তি নাই, সদাসর্বদা মনে সেই একই বিচার চলছে __’কোন আশ্রম শ্রেষ্ঠ – গার্হস্থ না সন্ন্যাস?’সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হলে _রাজা সেই আশ্রমের ধারা অবলম্বন করে জীবন কাটাবে ___এটাই রাজার আন্তরিক ইচ্ছা!! এদিকে রাজার এইরকম মানসিক অশান্তির কারণে রাজকার্য অচল হোতে বসেছে __রাজসভায় শুধুমাত্র পন্ডিত বা সাধুসন্তরা আসছে আর তর্কবিতর্ক করছে – – এতে কি আর রাজকার্য হয়?? রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অরাজকতা শুরু হয়ে গিয়েছে। এরপর হয়তো প্রজাবিদ্রোহ হবে কিংবা বহিঃশত্রু আক্রমণ করে বসবে __রাজ্যের মহামন্ত্রী পড়ল মহা বিপদে। সে এই সমস্যার সমাধান করতে একদিন নিজেই বেড়িয়ে পরল সঠিক উত্তরদাতার সন্ধানে!! তারপর একদিন এক পাগলের মতো মানুষকে ধরে নিয়ে এসে হাজির করল রাজার কাছে। লোকটি দেখতে পাগলের মতো হোলে কি হবে _আসলে তিনি ছিলেন একজন মহাজ্ঞানী পরমহংস স্থিতির মানুষ!!!