প্রশ্ন—আপনি পূর্বে আমাকে বললেন— ‘বুদ্ধি, হৃদয় এবং শরীরে বলবান হয়ে উঠ, কারণ বলহীন, কাপুরুষ, অজ্ঞ ও আহাম্মক কখনই সত্যকে বা ঈশ্বরকে জানতে পারে না।’ – আচ্ছা, বুদ্ধি, হৃদয় ও শরীরে বলবান হয়ে ঈশ্বর বা সত্যের বোধে বোধ করতে অথবা পূর্ণতা লাভ করতে ব্রহ্মচর্য পালনের কি কোন ভূমিকা আছে ? যদি থাকে তাহলে কৃপাপূর্বক ব্রহ্মচর্য প্রসঙ্গে সবিস্তারে আলোচনা করলে এই সম্বন্ধে আমার ধারণা পরিষ্কার হয় ।
উত্তর—প্রিয় আত্মন্ ! আমি ব্রহ্মচর্য প্রসঙ্গে সবিস্তারে আলোচনা করছি, তুমি শ্রদ্ধা সহকারে শ্রবণ কর ।
আট হতে কুড়ি বৎসর কাল পর্যন্ত মানব-জীবনের চরিত্র গঠনের সময়। আর এই সময় প্রয়োজন হয়ে পড়ে স্বাস্থ্য, চরিত্র, সংযম ও শিক্ষা—এই চারটি বিষয়ের অনুশীলন বা অভ্যাসের । জীবনের অভিবিকাশ বা পূর্ণতা লাভ করতে হলে এই বিষয়গুলির অনুশীলন অপরিহার্য ।
জীবন বিকাশের ভিত্তিভূমিই হল ব্রহ্মচর্য। একটি ব্যক্তিনিষ্ঠ আদর্শ জীবন গড়ে তুলতে হলে উক্ত বিষয়গুলি-চর্চা অত্যন্ত আবশ্যক হয়ে পড়ে। আদর্শ ব্যক্তি নিয়ে গড়ে উঠে সুসভ্য সমাজ এবং সমগ্র সমাজ নিয়ে গড়ে উঠে মহান রাষ্ট্র । সুতরাং আদর্শ ব্যক্তির অভাবে আদর্শ সমাজ গড়ে উঠতে পারে না এবং আদর্শচ্যুত ভঙ্গুর সমাজ নিয়ে সুসংহত সভ্য রাষ্ট্রও গড়ে উঠে না। সুতরাং সুসংহত সমাজ, রাষ্ট্র ও সভ্যতার উন্মেষের পিছনে রয়েছে আদর্শ মানবসকলের অবদান ।
এখন জিজ্ঞাসা করতে পার—আদর্শ মানবের সংজ্ঞা কি বা আদর্শ মানব কাকে বলে ?
প্রিয় আত্মন্—স্বাস্থ্য, চরিত্র, সংযম ও শিক্ষা—এই চারটি বিষয় যে মানব-জীবনে পরিস্ফুট হয়, তাকেই আদর্শ মানব বলা হয়।
অস্বাস্থ্য, চরিত্রহীনতা, অসংযম ও অশিক্ষা – ব্যক্তি, সমাজ এবং রাষ্ট্রকে পঙ্গু করে দেয় । আদর্শভ্রষ্ট অভিশপ্ত মানবসমাজ অবক্ষয়- প্রাপ্ত হয়ে ক্রমশঃ অপমৃত্যুর দিকে অগ্রসর হতে থাকে । পৃথিবীর ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে যে, যেখানেই সভ্যতার বিকাশ হয়েছিল—সেখানেই এই চারটি বিষয়কে কেন্দ্র করেই হয়েছিল। আবার যেখানে সভ্যতার বিনাশ হয়েছিল—তার পিছনে উক্ত চারটি বিষয়ের প্রতি অবহেলার জন্যই হয়েছিল
পূর্বে ভারতবর্ষে। বৈদিক ঋষিগণ গুরুকুল আশ্রমে ব্রহ্মচারী তথাবিদ্যার্থীগণকে এই চারটি বিষয় অতি গুরুত্ব সহকারে অভ্যাসকরাতেন। সেই কারণে আদর্শ মানব, সভ্য সমাজ এবং সুসংহতরাষ্ট্র গড়ে তুলতে হলে ব্রহ্মচর্যের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিতে হতেহবে। কারণ মানব জীবনের বুনিয়াদ বিদ্যার্থী জীবন হতেই গড়েওঠে ৷
প্রিয় আত্মন্—এখন আমরা ঐ চারটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। প্রথমতঃ স্বাস্থ্য—প্রতিটি বিদ্যার্থীকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হতে হবে, কারণ হীনবীর্য—স্বাস্থ্যহীন মানব—সমাজের ভারস্বরূপ হীনবুদ্ধি —দুর্বল মস্তিষ্কসম্পন্ন ব্যক্তিরা কোন বিষয়ের সঠিক ধারণা করতে পারে না—সমস্ত বিষয়কে জট পাকিয়ে ফেলে। সবল মস্তিষ্কসম্পন্ন মানবগণই জগতে বিশাল বিশাল চিন্তা করতে পারেন ।হীনবুদ্ধিযুক্ত ব্যক্তিরা যে কোন বিষয়েই যথার্থতা নির্ণয় করতে অক্ষম হয়ে পরমুখাপেক্ষী হয়ে পরানুকরণ করে থাকে। সুতরাং সু-উন্নত বলিষ্ঠ মেধা বা সৃজনাত্মক প্রতিভার পিছনে রয়েছে সুস্বাস্থ্য। সেইজন্যই প্রত্যেক বিদ্যার্থীর স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া একান্ত কর্তব্য।
এই স্বাস্থ্য সম্পর্কে কতকগুলি নির্দেশ পালন করা অত্যাবশ্যক । প্রথমতঃ সচেতনতার প্রয়োজন পানাহার বিষয়ে। পুষ্টিকর সহজপাচ্য আহার গ্রহণ করা এবং অখাদ্য, বাসী, বিকৃত ও অহিতকর খাদ্য— যাতে দেহ-মনের বিকার উৎপন্ন হয়—তা বর্জন করা এবং হিতকর বিশুদ্ধ পানীয় গ্রহণ অবশ্য কর্তব্য। এছাড়া বিভিন্ন ধরণের অহিতকর নেশা এবং মাদকদ্রব্য বর্জন করা, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা এবং নিয়মিত কিছু ব্যায়াম ও খেলাধুলা করা সুস্বাস্থ্য গঠনের জন্য খুবই প্রয়োজন । অলসতা অস্বাস্থ্যের একটা বড় লক্ষণ। বিশেষ করে বিদ্যার্থী জীবনের সর্বাপেক্ষা বড় অন্তরায় এই অলসতা ৷ সুতরাং অলসতা ত্যাগপূর্বক প্রতিদিন প্রাতঃকালে শয্যাত্যাগ একান্ত কর্তব্য।
এবার দ্বিতীয় বিষয় হল চরিত্র। প্রতিটি বিদ্যার্থীকে চরিত্র চেতন হতে হবে। কারণ যার চরিত্র নেই সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। নেই, তার কিছুই নেই । সমস্ত শক্তির বুনিয়াদ হল এই চরিত্র। মানব ব্যক্তিত্বের এটাই চাবিকাঠি। চরিত্রকে কেন্দ্র করে মানবের সমস্ত সদগুণ বিকশিত হয়ে ওঠে । প্রতিটি মানবের ভিতরে আছে অনন্ত সম্ভাবনা । তাকে সম্ভাবিত করে তুলতে হলে চরিত্রের প্রয়োজন। কারণ চরিত্রকে কেন্দ্র করেই জীবনের উৎকর্ষ। সেইজন্য চরিত্রবান হতে হবে প্রতিটি বিদ্যার্থীকে ; যেহেতু তারাই ভাবী সমাজ ও রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ। অন্যথায় এই চরিত্রের অভাবে সমস্ত সম্ভাবনা অঙ্কুরে বিনাশপ্রাপ্ত হয় । উদাহরণ-স্বরূপ বলা যায়—কোন ব্যক্তি যদি শরীরে অনেক ভূষণ ধারণ করে, অথচ কোন বস্ত্র পরিধান না করে, তাহলে মূল্যবান ভূষণধারণ সত্ত্বেও সেই ব্যক্তি যেমন উলঙ্গ মাত্র, সেরূপ কোন ব্যক্তির অনেক গুণ থাকা সত্ত্বেও চরিত্র না থাকলে সমস্তই বৃথা হয়। অনেক গুণের অধিকারী হলেও চরিত্রহীন ব্যক্তি উলঙ্গ মাত্র -আদর্শহীন। এইজন্য চরিত্রই জীবনাদর্শ। চরিত্র বিনা জীবন আদর্শহীন—মৃতবৎ ।
এখন চরিত্রগঠনে নিম্নলিখিত নির্দেশসমূহ অবশ্য পালনীয় :- প্রথমতঃ বিদ্যার্থীগণকে আদর্শ চরিত্রবান কোন মহৎ জীবনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। যদি সৌভাগ্যবশতঃ সেইরূপ কোন ব্যক্তির সাহচর্য পাওয়া যায়, তাহলে অতীব মঙ্গল নতুবা আদর্শজীবন- বিশিষ্ট মহাপুরুষগণের জীবনী ও চিন্তার সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং সৎগ্রন্থপাঠ দ্বারা তাঁদের চিন্তার সাথে চিন্তাযুক্ত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। অসৎ এবং অশ্লীল গ্রন্থ পাঠ না করে বিজ্ঞান, দর্শন, সাহিত্য, গণিত—ইত্যাদি বিষয়ের গ্রন্থপাঠ, সংকীর্ণ চিন্তা পরিহারপূর্বক বিশালতার চিন্তন, বৃথা ফষ্টি-নষ্টিতে সময়ের অপব্যবহার না করে সারবান এবং সত্তাবান বিষয়ের চর্চা করা—চরিত্র গঠনের জন্য অত্যাবশ্যক।
প্রিয় আত্মন্ !অসার তর্ক-বিতর্কে মস্তিষ্কে বিক্ষোভ হয়, কিন্তু সত্তাবান বা সারবান চর্চাতে মস্তিষ্কের উৎকর্ষ হয় ।
এই কারণে অসৎ এবং অশ্লীল সংসর্গ বিষবৎ পরিত্যাগ করবে। কারণ তা ভবিষ্যৎ জীবনকে বিষময় করে তুলবে, তখন জীবন নিজের কাছেই নিজের বোঝাস্বরূপ বোধ হবে।
সুতরাং বিদ্যাৰ্থীগণ সাবধান ! তোমাদের কল্যাণ তোমাদের মধ্যেই নিহিত আছে, আবার তোমাদের অকল্যাণ তোমাদের মধ্যেই রয়েছে। অতএব কল্যাণময় সুন্দর জীবনের পূজারী হও ।
প্রিয় আত্মন্—দেখ, জগতে যেখানে যা কিছু মহৎ এবং কল্যাণকর কর্ম হয়েছে, তা সম্ভব হয়েছে আত্মশক্তির দ্বারা । আর আত্মশক্তির উৎস চরিত্র। সুতরাং চরিত্রবান হও। চারিত্রিক দুর্বলতাহেতু হীনমন্যতা আসে এবং হীনবোধ হতে আত্মগ্লানি উপস্থিত হয়। আৰু আত্মগ্লানি আত্মশক্তিকে ক্ষীণ করে দেয়। চরিত্রহীন ব্যক্তিরা যেন মৃততুল্য আর চরিত্রবানরা যেন জীবন্তবিগ্ৰহ ।
প্রিয় আত্মন্, মানবের যদি চারিত্রিক দুর্বলতা না থাকে, তাহলে মানব আত্মশক্তিতে ভরপুর এবং আত্মতেজে বলীয়ান হয়ে উঠবে। একমাত্র প্রতিবন্ধকতা মানবের চারিত্রিক দুর্বলতা—যা মানবের সমস্ত কিছুকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করছে প্রতি পদে পদে। সুতরাং তোমরা চরিত্রকে সুন্দর কর। তোমরাই ভবিষ্যৎ সুন্দর সমাজ এবং সুসভ্য রাষ্ট্রের রূপকার
এবার তৃতীয় বিষয় হল সংযম। সংযমহীন জীবন যেন একটা অভিশাপ । অসংযমতার প্রবণতা হতে মানব মুক্ত না হলে — সমাজ শরীরটা ক্রমশ পচে গলে যাবে। সমাজ-জীবনের অবক্ষয়ের পিছনে রয়েছে সংযমহীনতা। সংযমের মধ্য দিয়ে আসে শৃঙ্খলা। কারণ সংযমহীনতায় জীবন বিশৃঙ্খল হয়ে পড়ে। আর বিশৃঙ্খল—নিয়ন্ত্রণহীন জীবন বড়ই এলোমেলো। সেইজন্য সঠিক জীবনের পূর্ণ মূল্যায়ন করতে হলে সংযম একান্ত প্রয়োজন। সংযমহীন ব্যক্তিরা অশেষ ক্লেশ ও অশান্তি ভোগ করে থাকে এবং সমাজ জীবনেও বিপর্যয় ডেকে আনে ৷
প্রিয় আত্মন্—সভ্যতার পরিভাষা হল সংযম। অসংযম, অসভ্যতা—বর্বরতারই নামান্তর। সাহিত্য, শিল্পকলা, দর্শন, সঙ্গীত ইত্যাদি যদি সংযম হারিয়ে ফেলে, তাহলে এ সমস্তকে অশ্লীল আখ্যা দেওয়াহয়। সংযমহীন সমস্ত কিছুই যেন অশ্লীল – বর্বর।
সেইহেতু জীবনের মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে হলে সংযম একান্ত প্রয়োজন । – তোমরা সংযমী হও—অসংযমী হয়ো না। অশান্তি হতে যদি মুক্তি পেতে চাও, তাহলে সংযত জীবনে বিশ্বাসী হও।
এই সংযম সম্পর্কে নিম্নলিখিত নির্দেশসমূহ অবশ্য পালনীয় :-
প্রথমেই অনিয়ন্ত্রিত জীবনকে নিয়মিত করতে হবে। কারণ নিয়মিত জীবনেই আসে মনের শৃঙ্খলা। অনিয়মিত জীবন-যাপনে মন বিশৃঙ্খল হয়ে চিত্তচাঞ্চল্য ঘটায়। আর যে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তার অসাধ্য কিছুই নেই। জগতে সমস্ত সফলতার পিছনে রয়েছে সুশৃঙ্খল মনের ভূমিকা। বিশৃঙ্খল মনের দ্বারা সাফল্য তো আসেই না, উপরন্তু নানারকম জটিলতার সৃষ্টি করে ।
জগতে প্রতিভাধর শক্তিশালী ব্যক্তিগণ নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। আর এই আত্মনিয়ন্ত্রণের মূল রহস্যই হল সংযম । তাই অনিয়মিত জীবনকে একটা নিয়মিত ছকে ফেলতো হবেন নিযেমন সময়মত আহার, স্নান, অধ্যয়ন, খেলাধুলা, ব্যায়াম এবং বিশ্রামের দিকে যত্নবান হতে হবে । এর মধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল প্রাতে শয্যাত্যাগ। আর দিবানিদ্রা কখনও যাবে না। তাতে মস্তিষ্কেজড়তা আসে এবং মানুষ কাপুরুষ হয়ে পড়ে।
তারপর বীর্যধারণ করবে। অনৈতিক কু-অভ্যাস পরিত্যাগ করবে। ইচ্ছাকৃতভাবে বীর্যপাত কখনও করবে না । কখনও যদি সহজভাবে স্বপ্নদোষ হয় তাতে পশ্চাত্তাপ করবে না। কারণ ওটা স্বাভাবিক—কোন দোষের নয় বা ইচ্ছাকৃত কোন অন্যায় নয়। কিন্তু কুঅভ্যাসবশতঃ বীর্য নষ্ট করবে না। কারণ বীর্য বা শুক্র, শরীরের R সার বস্তু—বৈদ্যুতিক শক্তিসম্পন্ন। । উহা ধারণ করে রূপান্তর করতে পারলে জীব শরীরের কোষে কোষে ছড়িয়ে পড়ে এবং তড়িৎশক্তিসম্পন্ন হয়ে মিশে যায়। আর তা রোগ-ব্যাধি, আলস্য-জড়তা ইত্যাদি অন্যান্য উপসর্গ গুলিকেও দূরীভূত করে দেয়। শরীর পরিপুষ্ট হয়ে ওঠে, চিত্তে দৃঢ়তা আসে এবং ধীশক্তি। ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পায় । সু-উন্নত মেধা ও প্রখর স্মৃতিশক্তির পিছনে রয়েছে এই ব্রহ্মা চর্যের রহস্য। ব্রহ্মচর্যের অভাবে আজ জগতে উদ্ভাবনী শক্তির বড় অভাব। সুতরাং এই বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক হবে।
এখন চতুর্থ বিষয় ‘শিক্ষা’ সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হচ্ছে। মানবের অন্তর্নিহিত স্বভাবের শুভ ও অশুভ সংস্কার মানবকে প্রতিনিয়ত প্রভাবিত করে থাকে তার ব্যবহারিক জীবনে। শিক্ষার ফল হল অশুভ সংস্কারগুলিকে শুভতে পরিণত করা। অন্তর্নিহিত শুভ ও অশুভ উভয়বিধ সংস্কারকে মহত্বের আদর্শে অনুপ্রাণিত করতে হবে। আর তাই শিক্ষা, যা মানবের অন্তর্নিহিত স্বভাবের সংস্কারগুলিকে মহত্বের আদর্শে অনুপ্রাণিত করে। বাইরের শিক্ষাটা কেবল ভিতরের ঐ মহৎ ভারগুলিকে বিকশিত করতে সাহায্য করে।
শিক্ষা বিষয়ে কতকগুলি নির্দেশ পালনীয় :— গভীর অন্তর্মুখীনতা,গভীর মননশীলতা, সুতীক্ষ্ণ অনুসন্ধান এবং নিরীক্ষণযুক্ত মনোনিবেশ—এইগুলির দ্বারাই মানবের আত্মশক্তি জাগ্রত হয় । কোন কিছু শিখতে বা জানতে এগুলির একান্ত প্রয়োজন ।
গভীর মনোযোগ বা নিরীক্ষণযুক্ত মনোনিবেশে মানবের আত্মশক্তি জাগ্রত হয় । মানব তখন চিৎশক্তির সন্ধান পায় এবং আবিষ্কার করে—অনন্ত জ্ঞান ভাণ্ডার তার ভিতরেই রয়েছে।
প্রিয় আত্মন্—পরম ঋষিবা অবহেলা করো না। নিজের ক্ষুদ্র বুদ্ধির সিদ্ধান্তে মত্ত হয়োনা। শ্রদ্ধাশীল হও। ঋষিবাক্য অবহেলা করলে অবশেষে নিজেকেই হতাশ হতে হবে। স্বাস্থ্যবান হও। চরিত্রবান হও। সংযমী হও। সুশিক্ষিত হও । সৎ—সুন্দর—নিষ্কপট হও। অমূল্য অমৃতময় জীৱনৰোধে সহজ সাবলীল ধারায় পূর্ণতার দিকে অগ্রসর হও।