স্বামী বাউলানন্দজীর ভ্রমণকালীন সময়ের ঘটনাসমূহ এখানে আলোচনা করা হচ্ছিলো।স্বামীজীর ভদ্রাচলমে থাকাকালীন ঘটনা এখন আলোচনা করা হচ্ছে। শ্রীনিবাস আচার্যজীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর স্বামীজী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছিলেন । এরপর থেকে যে সমস্ত লোক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসতো_ তিনি তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে শুরু করলেন ! একদিন রাম শাস্ত্রী স্বামীজীর সামনে বসে আছেন, এমন সময় তিনি স্বামীজীকে অম্বা মন্দিরের ঘটনা (যেটি আগেরদিন লেখা হয়েছিল _সেই ঘটনাটি)-টি স্মরণ করালেন । স্বামীজী তাকে জিজ্ঞাসা করলেন _”তুমি জল না দিয়ে আমাকে নদীর ধারে খেয়ে নিতে বললে কেন”? এই কথা শুনে রাম শাস্ত্রী খুবই অনুতপ্ত হোসেন এবং সজল নয়নে তিনি তার সেইদিনকার আচরণের কথা বলতে লাগলেন। জলের পাত্র ছিল না বলেই সে স্বামীজীকে ঐরূপ কথা বলেছিল। কিন্তু স্বামীজী সেদিন তার দিকে তাকাতেই সে জগদম্বা ঘরের সামনে গিয়েছিল। মন্দিরে ঢোকার এমনিতে তার কোন প্রয়োজন ছিল না, তাছাড়া তার সকল সময় মন্দিরে ঢোকার অধিকারও ছিল না। কিন্তু তিনি সেদিন বেহুঁশ অবস্থায় সে দরজা খুলে মন্দিরের ভেতর প্রবেশ করেছিল এবং সেখানেই একপাত্র টাটকা জল দেখতে পেয়ে _ বেহুঁশ অবস্থাতেই সে সেই জলপূর্ণ পাত্র বের করে স্বামীজীকে দিয়েছিল। এসব কিছুই অনিচ্ছাকৃতভাবে এবং বেহুঁশ অবস্থাতেই তার ঘটে যাচ্ছিলো। মন্দিরের ব্যবস্থাপকদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তির ও সম্ভাবনা ছিল না, কারণ এই ঘটনা কারোর দৃষ্টিগোচরই হয় নি !
সেদিন থেকে সে প্রতিদিন স্বামীজীর জন্য তাদের বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসতো। এই কয়েকদিন স্বামীজী তাকে কোন কথাই বলেন নাই, সে স্বামীজীকে নীরবেই সেবা করে যাচ্ছিল এবং স্বামীজি যন্ত্রবৎ সেই সেবা গ্রহণ করেছিলেন। রাম শাস্ত্রী বুঝতে পেরেছিলো যে, ‘মা জগদম্বা স্বামীজীর কোন অনিষ্ট করতে দেবেন না, স্বামীজীর পক্ষে অপমানজনক কোন ঘটনাই তিনি ঘটতে দেবেন না । সে এটাও ভেবে নিয়েছিল যে, মা জগদম্বা নিজেই তাঁর সন্তানের জন্য খাবার আনবার জন্য তাকে পাঠাচ্ছেন ’।
শাশ্ত্রীজীর উত্তর শুনে স্বামীজী হাসলেন এবং তারপরই চুপ করে গেলেন। একদিন সন্ধ্যাবেলায় স্বামীজী নদীতে স্নান করতে গেলেন, রাম শাস্ত্রীও তাঁর পাশে পাশে যাচ্ছিল। স্নান সেরে তাঁরা ফিরছেন_ বালুচরে কিছুদুর হেঁটে এসেছেন, এমন সময় একদল গরু সংখ্যায় হয়তো দুইশ’র বেশি হবে_ সন্ধ্যার পর তারা সেই পথেই নদীতে জল পানের জন্য আসছিল ! এই নদীর জল তাদের একমাত্র পানীয়। তৃষ্ণা নিবারণের নিমিত্ত তারা তীব্রগতিতে বালির উপর দিয়ে ছুটতে লাগলো ! বাছুরগুলিও তাদের মায়ের পিছনে পিছনে ছুটতে লাগলো। তাদের খুরের আঘাতে ধুলোর রাশি উড়তে লাগলো। সেই ধুলোর অন্ধকারে পথ খুঁজে পাওয়া মানুষের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ালো। স্বামীজী এবং শাস্ত্রী গরুগুলিকে পথ ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়ালেন। স্বামীজি অভিনিবিষ্ট চিত্তে সেই দিকে চেয়ে রইলেন। কিন্তু তিনি আর বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেন না _চোখ বন্ধ করে সেখানেই বসে পড়লেন।(ক্রমশঃ)
================°==========
*MESSAGE TO HUMANITY*
~ _Swami Baulananda_
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
পৃথিবীর অভ্যন্তরে এবং উপরিভাগে যা কিছু আছে এবং বিশ্রামকারী উপাদান যথা__ বস্তু, মৌলিক বস্তু এবং উপাদান অর্থাৎ যেগুলি বিশ্বকাপের মূল সূত্র তাদের নিমজ্জন এর সাথে সাথে_ সমস্ত সত্তা(অহং সহ মন) বিশ্ব সত্তায় (মন এবং অহং) মিলিয়ে গেল। বিশ্ব-মন এবং বিশ্ব-অহং কর্তৃক অপ্রকাশিত হওয়ায় ফলে তারা বিশ্ব-সত্তা এবং এর অহং-এর সাথে এক হয়ে গেল। পুনরায় বিশ্ব-সত্তা তার অহং হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল; যার ফলে পুনরায় তার অপ্রকাশ ঘটলো এবং ফলস্বরূপ বিশ্ব সত্তা সর্বেসর্বা বা ঈশ্বরের সঙ্গে এক হয়ে গেল। প্রলয়ের পূর্ব অবস্থায় শরীরী বা অশরীরী ব্যক্তি সত্তাগুলি অহং সহ বিশ্বসত্তা, পঞ্চভূত এবং তাদের বস্তু, মৌলিক বস্তু সকল সক্রিয় ছিল। বিশ্বশক্তির কাজ চলছিল। তাদের স্থায়িত্ব ছিল _কিন্তু তারা চিরন্তন ছিল না। তারা কেবলমাত্র প্রলয়ের পূর্বে বর্তমান ছিল এবং মিলিয়ে গেল এবং শাশ্বত মহাকাশ ও কালের সাথে এক হয়ে গেল। সাথে সাথে তারা অন্তর্যামীর সঙ্গে এক হয়ে গেল । তাদের জাগরণে পুনরায় বস্তু, মৌল বস্তু, বিশ্বসত্তা এবং শক্তির আবির্ভাব ঘটল কিন্তু তারা সক্রিয় হলোনা। বিশ্বসত্তা প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ বিশ্বসত্তা(যা প্রাকপ্রলয় অবস্থায় অহং হতে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে এবং অন্তর্যামীর সঙ্গে একীভূত হয়ে নিজেকে অপ্রকাশিত রেখেছিল)-র সঙ্গে ব্যক্তিসত্তার মিলন ঘটল,এমনকি বিশ্বসত্তা প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মিশ্রিত সত্তা এবং বিশ্বসত্তায় _ ব্যক্তিসত্তাগুলির কোনো স্বাতন্ত্র্য ছিলনা। প্রলয়ের পূর্বে যে স্বাতন্ত্র্য ছিল প্রলয়ের পরবর্তীকালে তার রইল না। এমনকি প্রলয়ের পূর্বে যে সমস্ত সত্তার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় নাই _তাদেরও একই অবস্থা হোল অর্থাৎ অমানবীয় সত্তা যা মানবিয় সত্তায় পৌঁছাতে পারে নাই এবং মানবীয় সত্তা যা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে নাই! এই অবস্থায় সসীমের কোন অস্তিত্ব রইল না । কারণ সেখানে সসীমের অস্তিত্বের কোনো সূত্রই থাকতে পারে না _ যেহেতু সেখানে রইল একমাত্র চিরন্তন কাল, মহাকাশ, জ্ঞান(সচেতনতা),সজ্ঞান, প্রেম, জ্ঞান এবং শক্তি।
অভীষ্ট সিদ্ধ না হওয়ার ফলে ব্যক্তির শরীর ধারণের যে নিয়ম_ শরীরের মৃত্যুর পর ব্যক্তির অগ্রগতি অনুযায়ী প্রতি ক্ষেত্রেই তা চলতে লাগলো। মহাপ্রলয় না হওয়া পর্যন্ত এবং বিশ্বসত্তায় তাদের মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এই নিয়ম চলতে থাকল। মহাপ্রলয়ের ঠিক পূর্বে সমস্ত ব্যক্তিসত্তা বিশ্ব সত্তায় মিশে গেল এবং বিশ্ব সত্তা অহং-কে পশ্চাতে ফেলে সর্বান্তর্যামীর সাথে মিলে গেল। এই সর্বান্তর্যামীই বিশ্বসত্তার আদি বা মূল।
জাগরণের মুহূর্ত থেকে পৃথিবীর আবির্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত মৌলিক বস্তু, বস্তু এবং পঞ্চভূত নিষ্ক্রিয় ছিল। পৃথিবীর জাগরণের মুহূর্ত থেকে বিশ্বচৈতন্য(Universal dynamism)কাজ করতে শুরু করে। এরপর থেকে অহং মৌলিক বস্তু, বস্তু, এবং পঞ্চভূতের মাধ্যমে বিশ্বসত্তার কাজ শুরু হলো। … [ক্রমশঃ]
সেদিন থেকে সে প্রতিদিন স্বামীজীর জন্য তাদের বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসতো। এই কয়েকদিন স্বামীজী তাকে কোন কথাই বলেন নাই, সে স্বামীজীকে নীরবেই সেবা করে যাচ্ছিল এবং স্বামীজি যন্ত্রবৎ সেই সেবা গ্রহণ করেছিলেন। রাম শাস্ত্রী বুঝতে পেরেছিলো যে, ‘মা জগদম্বা স্বামীজীর কোন অনিষ্ট করতে দেবেন না, স্বামীজীর পক্ষে অপমানজনক কোন ঘটনাই তিনি ঘটতে দেবেন না । সে এটাও ভেবে নিয়েছিল যে, মা জগদম্বা নিজেই তাঁর সন্তানের জন্য খাবার আনবার জন্য তাকে পাঠাচ্ছেন ’।
শাশ্ত্রীজীর উত্তর শুনে স্বামীজী হাসলেন এবং তারপরই চুপ করে গেলেন। একদিন সন্ধ্যাবেলায় স্বামীজী নদীতে স্নান করতে গেলেন, রাম শাস্ত্রীও তাঁর পাশে পাশে যাচ্ছিল। স্নান সেরে তাঁরা ফিরছেন_ বালুচরে কিছুদুর হেঁটে এসেছেন, এমন সময় একদল গরু সংখ্যায় হয়তো দুইশ’র বেশি হবে_ সন্ধ্যার পর তারা সেই পথেই নদীতে জল পানের জন্য আসছিল ! এই নদীর জল তাদের একমাত্র পানীয়। তৃষ্ণা নিবারণের নিমিত্ত তারা তীব্রগতিতে বালির উপর দিয়ে ছুটতে লাগলো ! বাছুরগুলিও তাদের মায়ের পিছনে পিছনে ছুটতে লাগলো। তাদের খুরের আঘাতে ধুলোর রাশি উড়তে লাগলো। সেই ধুলোর অন্ধকারে পথ খুঁজে পাওয়া মানুষের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়ালো। স্বামীজী এবং শাস্ত্রী গরুগুলিকে পথ ছেড়ে দিয়ে সরে দাঁড়ালেন। স্বামীজি অভিনিবিষ্ট চিত্তে সেই দিকে চেয়ে রইলেন। কিন্তু তিনি আর বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারলেন না _চোখ বন্ধ করে সেখানেই বসে পড়লেন।(ক্রমশঃ)
================°==========
*MESSAGE TO HUMANITY*
~ _Swami Baulananda_
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
পৃথিবীর অভ্যন্তরে এবং উপরিভাগে যা কিছু আছে এবং বিশ্রামকারী উপাদান যথা__ বস্তু, মৌলিক বস্তু এবং উপাদান অর্থাৎ যেগুলি বিশ্বকাপের মূল সূত্র তাদের নিমজ্জন এর সাথে সাথে_ সমস্ত সত্তা(অহং সহ মন) বিশ্ব সত্তায় (মন এবং অহং) মিলিয়ে গেল। বিশ্ব-মন এবং বিশ্ব-অহং কর্তৃক অপ্রকাশিত হওয়ায় ফলে তারা বিশ্ব-সত্তা এবং এর অহং-এর সাথে এক হয়ে গেল। পুনরায় বিশ্ব-সত্তা তার অহং হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ল; যার ফলে পুনরায় তার অপ্রকাশ ঘটলো এবং ফলস্বরূপ বিশ্ব সত্তা সর্বেসর্বা বা ঈশ্বরের সঙ্গে এক হয়ে গেল। প্রলয়ের পূর্ব অবস্থায় শরীরী বা অশরীরী ব্যক্তি সত্তাগুলি অহং সহ বিশ্বসত্তা, পঞ্চভূত এবং তাদের বস্তু, মৌলিক বস্তু সকল সক্রিয় ছিল। বিশ্বশক্তির কাজ চলছিল। তাদের স্থায়িত্ব ছিল _কিন্তু তারা চিরন্তন ছিল না। তারা কেবলমাত্র প্রলয়ের পূর্বে বর্তমান ছিল এবং মিলিয়ে গেল এবং শাশ্বত মহাকাশ ও কালের সাথে এক হয়ে গেল। সাথে সাথে তারা অন্তর্যামীর সঙ্গে এক হয়ে গেল । তাদের জাগরণে পুনরায় বস্তু, মৌল বস্তু, বিশ্বসত্তা এবং শক্তির আবির্ভাব ঘটল কিন্তু তারা সক্রিয় হলোনা। বিশ্বসত্তা প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অর্থাৎ বিশ্বসত্তা(যা প্রাকপ্রলয় অবস্থায় অহং হতে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে এবং অন্তর্যামীর সঙ্গে একীভূত হয়ে নিজেকে অপ্রকাশিত রেখেছিল)-র সঙ্গে ব্যক্তিসত্তার মিলন ঘটল,এমনকি বিশ্বসত্তা প্রকাশিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত মিশ্রিত সত্তা এবং বিশ্বসত্তায় _ ব্যক্তিসত্তাগুলির কোনো স্বাতন্ত্র্য ছিলনা। প্রলয়ের পূর্বে যে স্বাতন্ত্র্য ছিল প্রলয়ের পরবর্তীকালে তার রইল না। এমনকি প্রলয়ের পূর্বে যে সমস্ত সত্তার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় নাই _তাদেরও একই অবস্থা হোল অর্থাৎ অমানবীয় সত্তা যা মানবিয় সত্তায় পৌঁছাতে পারে নাই এবং মানবীয় সত্তা যা তাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে নাই! এই অবস্থায় সসীমের কোন অস্তিত্ব রইল না । কারণ সেখানে সসীমের অস্তিত্বের কোনো সূত্রই থাকতে পারে না _ যেহেতু সেখানে রইল একমাত্র চিরন্তন কাল, মহাকাশ, জ্ঞান(সচেতনতা),সজ্ঞান, প্রেম, জ্ঞান এবং শক্তি।
অভীষ্ট সিদ্ধ না হওয়ার ফলে ব্যক্তির শরীর ধারণের যে নিয়ম_ শরীরের মৃত্যুর পর ব্যক্তির অগ্রগতি অনুযায়ী প্রতি ক্ষেত্রেই তা চলতে লাগলো। মহাপ্রলয় না হওয়া পর্যন্ত এবং বিশ্বসত্তায় তাদের মিলিত না হওয়া পর্যন্ত এই নিয়ম চলতে থাকল। মহাপ্রলয়ের ঠিক পূর্বে সমস্ত ব্যক্তিসত্তা বিশ্ব সত্তায় মিশে গেল এবং বিশ্ব সত্তা অহং-কে পশ্চাতে ফেলে সর্বান্তর্যামীর সাথে মিলে গেল। এই সর্বান্তর্যামীই বিশ্বসত্তার আদি বা মূল।
জাগরণের মুহূর্ত থেকে পৃথিবীর আবির্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত মৌলিক বস্তু, বস্তু এবং পঞ্চভূত নিষ্ক্রিয় ছিল। পৃথিবীর জাগরণের মুহূর্ত থেকে বিশ্বচৈতন্য(Universal dynamism)কাজ করতে শুরু করে। এরপর থেকে অহং মৌলিক বস্তু, বস্তু, এবং পঞ্চভূতের মাধ্যমে বিশ্বসত্তার কাজ শুরু হলো। … [ক্রমশঃ]